মেন্যু
sirate ayesha (r:)

সীরাতে আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা

লেখক: সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী রহ.  অনুবাদক: মাওলানা মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম সম্পাদক: মাওলানা মাসউদুর রহমান পৃষ্ঠা: ৫২২ (ক্রিম পেপার) হার্ডকভার নবন সংস্করণ: আগষ্ট ২০১৯ হযরত আয়েশা রাযি.-এঁর প্রাথমিক অবস্থা, শিক্ষা-দীক্ষা, সামাজিক ও দাম্পত্য জীবন, সৎ ছেলেমেয়ে ও সতিনদের... আরো পড়ুন
পরিমাণ

330  600 (45% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

6 রিভিউ এবং রেটিং - সীরাতে আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা

4.8
Based on 6 reviews
5 star
83%
4 star
16%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    Sheikh Israt:

    উম্মুল মুমিনিনদের মধ্যে হযরত আয়েশা (রা.) থেকে অধিক হাদিস বর্ণনা কেউ করেননি।
    তার মোট হাদিস সংখ্যা ২০১০ টি।
    আমাদের অনেকের মনে নানা প্রশ্ন থাকে ৫০ বছরের প্রিয়নবী (স.) কেনো ৬ বছর বয়সী আয়েশা কে বিয়ে করল?
    গোটা আরবে কি আর কোনো নারী ছিলো না? হ্যাঁ অবশ্যই ছিলো কিন্তু হযরত আয়েশার মতো তাকওয়া,পরহেজগার,সৎ,সত্যানিষ্ঠা, জ্ঞানী,তার চারিত্রিক সৌন্দয্য গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অমূল্য প্রাপ্তি।
    তার জন্ম থেকে শুরু করে বিয়ে, সংসারিক কর্ম, ইলম শিক্ষাদিক্ষা,হাদিসে তার অবদানসহ, আরব নারী,অমর নারী,মুসলিম নারী,নারী অধিকারের বৈশিষ্ট্য ব্যাখা করা হয়েছে।
    বইটিতে খুঁটিনাটি সমস্তকিছু বিষদ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে
    এমনকি সাহাবারা কোনো মাসায়ালা ভুল করলে আয়েশা (রা.) যৌক্তিকতার সাথে তার বিবরণ দিতেন।
    তার ঘরটি মসজিদুল নববির পাশে থাকায় তিনি বিশ্বনবী (স.) সমস্ত কথা মুখস্ত করে রাখতেন।
    কোনো মাসায়ালা তার বুঝতে সমস্যা হলে তিনি বার বার প্রশ্ন করে জানতেন।
    বইয়ের ব্যাখায় :
    আয়েশা (রা.) এর ব্যাপারে যাদের মতবিরোধ আছে তাদের জন্য এই বইটিই যথেষ্ট বলে আমি মনে করি। যারা আয়েশা (রা.) এর ব্যাপারে জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এর থেকে ভালো বই আর নেই।
    4 out of 4 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    কামরুননাহার মীম:

    আমরা চাই দাম্পত্য জীবনে আমাদের অর্ধাঙ্গী-অর্ধাঙ্গিনী আমাদের ভালবাসুক, যেমন টা মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেসেছিলেন তার প্রিয় আয়েশা (রাঃ) কে। কিন্তু সেই ভালবাসার মানুষটি কেমন ছিলেন, কেন তাঁদের সংসারে এত প্রীতির বন্ধন ছিল – তা জানা হয়না আমাদের। আর এ নিয়ে জানতেই প্রয়োজন সীরাতে আয়েশা (রাঃ) বইটি। আয়েশা (রাঃ) এর জন্ম থেকে শুরু করে আনুসাঙ্গিক প্রায় সকল বিষয়ই রয়েছে এতে। সীরাত বলতে তো প্রকৃতপক্ষে জীবনীগ্রন্থই বুঝায়।

    বইটিতে আয়েশা (রাঃ) সীরাত কে কয়েক খন্ডে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থা খন্ডে জন্ম, শৈশব, মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁর বিবাহের ঘটনা, হিজরতের বিষয়াবলি, কুসংস্কারের বিপক্ষে গিয়ে বিবাহ এবং রোখসতের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
    দ্বিতীয়ত, তালিম ও তারবিয়াত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ এইক্ষেত্রে আয়েশা রাঃ এর জন্মসূত্রে পাওয়া কাব্যিক জ্ঞান আর বংশবিদ্যার কথা আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া পারিবারিক জীবনে মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সান্নিধ্যে এসে পড়াশোনা করেছেন এই বিষয় টাও এসেছে। তাঁর জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ এবং রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাঁকে শুধরে দেওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুই এখানে এসেছে। তৃতীয় খন্ডে তাঁর সাংসারিক জীবনের আলোচনা এসেছে। সহজ সরল এক অনাড়ম্বর জীবনের সেই সংসার টি কতই না ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিল! চতুর্থ খন্ডে এসেছে তাঁদের দাম্পত্যের চিত্র। ভালবাসাময় সেই গৃহে দু’জনের ভালবাসা আর দ্বীনের আলোর ছোঁয়া এই আলোচনাকে আরও সুন্দর করে দিয়েছে। পঞ্চম খন্ডে রয়েছে সতীনদের সাথে তাঁর ব্যবহার আর পরিবারে তাঁদের আন্তরিক ভালবাসার প্রতিফলন। ষষ্ঠ খন্ডে সৎ সন্তানদের প্রতি তাঁর অসাধারণ ভালবাসার কথা এসেছে। যদিও এই নিয়ে অনেকের বানোয়াট কিছু কথার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন লেখক। এভাবেই আরও অনেক বিষয় গুলোর যুক্তিতর্ক আর ইসলামের আলোকে সত্যতা যাচাই করে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়ে লেখা এই সীরাতে আয়েশা বইটি।

    নারী সাহাবীদের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বান্দীদের খাতায় নাম লিখিয়ে নেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে কে না চায়! নারীদের আদর্শ সেই নারী সাহাবাদের নিয়ে যখন কোনো জীবনী প্রকাশিত হয়, অবশ্যই একজন মুসলিম নারী হিসেবে আমাদের তা পড়ে নিজের জীবনে প্রতিফলন করাই তো জরুরি। নারীদের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন বইটি। আর সেসকল বিভ্রান্তি ছড়ানো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এই বই – যারা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাঁর বিয়ে হওয়া নিয়ে নোংরা মন্তব্য ছুঁড়তে লেগে থাকে।

    বইটি পড়ে বড্ড হীনমন্যতায় ভুগছিলাম। কত দ্বীনদারিত্ব আর সহজ-সরল জীবন ছিল তাঁদের! আমরা তো কেবল দুনিয়ায়-ই সব অর্জন করে ফেলছি। অবশেষে আখিরাতে কিছু বাকি রইবে কি? আত্মশুদ্ধির জন্য বইটিকে রিমাইন্ডার হিসেবে বেছে নিলাম।।

    6 out of 6 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    Eshita Jannat Tasneem:

    মুসলিম ইতিহাসের সেরা নারী আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা। হাদিস বর্ননায় তার ভুমিকা অনবদ্য। তিনি অসম্ভব মেধাবী নারী। হযরত আয়েশা রাযি.এর জীবন ও কর্মের একটি গৌরবময় অঙ্গন হলো ইলম ও ইজতিহাদ- অর্থাৎ ধর্মিয় বিধান প্রনয়নের গবেষণামূলক প্রয়াস।

    একজন মুসলিম নারীর জন্য বইটিতে রয়েছে জীবনের সার্বিক দিক নির্দেশনা।জীবনের সকল পরিবর্তন, উত্থান পতন, উন্নতি – অবগতি,শোক-সুখ,বিবাহ – বিরহ,পিত্রালয় -শশুরালয়, স্বামি-সতিন,বৈধব্য, আপত্যহীনতা,পরবাস রান্নাবান্না, সন্তানপালন সহ সংসার জীবনের হাসি-কান্না,আবেগ-অনুভূতি, অভিমান -অভিরোষ– এক কথায় জীবন জগতের সর্বক্ষেত্রে,সর্বাবস্থায় আদর্শ অনুসরণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে ভরপুর হযরত আয়েশা রাযি. এর জীবনচরিত।
    আর জ্ঞান -গুণ, ধর্ম-কর্ম ও চরিত্রমাধুরীর অনুপমতা তো বলাই বাহুল্য। হযরত আয়েশা রাযি. এর মাসাইল- দক্ষতা, ইজতিহাদ-ক্ষমতা,ধর্মীয় বিধি বিধানের জ্ঞান শুধু নারী নয়,পুরুষদেরকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পবিত্র স্ত্রীগনের তুলনায় তার বিশিষ্টতা এখানেই।এজন্যই তিনি রাসুল সা. এর বেশি প্রিয় ছিলেন। তিনি রাসুল সা. কে অনেক ভালোবাসতেন।শুধু তাই নয় রাসুল সা. এর প্রতি তার ভীষন অনুরাগ অ আসক্তি ছিল। তিনি দৃঢ় মনবলের অধিকারী ছিলেন।

    বইয়ের ভাষা সরল সহজ। বর্ননা নিখুঁত। প্রতিটা পৃষ্ঠা পড়ে ভালো লেগেছে। আলহামদুলিল্লাহ। আমার পড়া সেরা বইগুলোর মাঝে একটি বই সিরাতে আয়েশা রা.
    প্রতিটি মেয়ের বইটি পড়া উচিত।

    রিভিউ পড়ে ১০ এর মধ্যে রেটিং দিবেন।
    জাযাকুমুল্লাহ

    4 out of 5 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    Mansura Chowdhury:

    ছোট্ট আয়েশাকে ডানাওয়ালা পুতুল ঘোড়া নিয়ে খেলতে দেখে রাসূলুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, “ঘোড়ার কি ডানা হয়?” প্রত্যুতপন্নমতি আয়েশার জবাব,”কেন?নবী সুলাইমান(আ)এর ঘোড়ায়ও তো ডানা ছিল!”

    সিদ্দীকে আকবরের ঘরে যার জন্ম,তার উত্তর তো এমন হবেই!সীরাতে আয়েশা(রা) বইটি পড়েছি মুগ্ধ হয়ে!হযরত খাদিজা(রা)এর ইন্তেকালের পর রাসূলের(স) সাথে আয়েশার(রা) বিবাহ,হিজরতের পর রাসূলের ঘরে আয়েশার গমন,বেড়ে উঠা,সংসার জীবন থেকে শুরু করে হযরতে আয়েশার গোটা জীবন লেখক সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী রহ. বর্ণনা করেছেন অত্যন্ত সহজ সরল প্রাঞ্জল ভাষায়।

    ধর্মগুরু যেখানে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল,নববী আদর্শে বেড়ে ওঠা আয়েশার(রা) শিক্ষা,দীক্ষা,জ্ঞান-প্রজ্ঞা তবে কেমন হবে তা পাঠক মাত্রই উপলব্ধি করতে পারবেন।একজন অনুগত স্ত্রীর কেমন হওয়া উচিত তা আয়েশা(রা) এর সংসার জীবন জানলে সহজেই অনুমিত হবে।

    রাসূলের প্রতি তীব্র ভালবাসা থেকে
    আয়েশার(রা) নারীসুলভ অভিমান,অন্যান্য উম্মুল
    মুমিনীনদের প্রতি ঈর্ষার কিছু মজার ঘটনা
    লেখক তুলে ধরেছেন বইটিতে।এ বই পাঠে এক
    অন্য আয়শা(রা) খুজে পাওয়া যায়,যার
    ব্যক্তিত্বের মাঝে নারী চরিত্র পূর্ণ মাত্রায়
    বিদ্যমান ছিল,যার বহি:প্রকাশ তিনি সব সময়
    করতেন।আবার রাসূলের কাছে সরল
    স্বীকারোক্তিও দিতেন।যদি বলা হয় প্রেমের
    ছলনায় খুব কম নারীই তার সমকক্ষ, তবে ভুল হবে
    না। তার ঈর্ষা ও বিদ্বেষের দৃশ্য দেখে রাসূল
    (স) কখনো অসন্তুষ্টিও প্রকাশ করতেন তবে
    সেটার উদ্দেশ্য ছিল তাকে সংশোধন করে
    দেওয়া।

    নি:সন্দেহে জ্ঞানে,বুদ্ধিমত্তায়,রাসূলের
    ভালবাসা ও সাহচর্যে হযরত আয়েশা তাকওয়া
    ও পবিত্রতায় এত উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছেন
    যে খুব কম নারীরই সে সৌভাগ্য হয়েছিল।
    বইটি পড়ে কখনো সরল চপলা
    আয়েশার রাসূলের প্রতি অভিমান দেখে
    হেসেছি,কখনও দৃষ্টি সজল হয়েছে
    মুনাফিকদের মিথ্যা অপবাদে আয়েশার কুকড়ে
    যাওয়া অবস্থা অনুভব করে।স্বয়ং আল্লাহ তার
    ব্যাপারে সাফাই গেয়ে ওহি নাযিল করেছেন,
    আয়েশার ভাষায় সে অনুভূতি পড়ে অভিভূত
    হয়েছি।তিনিই একমাত্র স্ত্রী,যার বিছানায় ওহী নাযীল হয়েছে,তায়াম্মুমের বিধান যার ঘটনার মাধ্যমে এসেছে।’জংগে জামাল’ নিয়ে বিস্তারিত বর্ণণা করেছেন লেখক যা এ বিষয় নিয়ে অনেক ভুল ধারণার অবসান ঘটাতে সাহায্য করেছে।

    আল্লাহর রাসূল(স) আয়েশার প্রতি ভালবাসা প্রকাশে কখনো কার্পণ্য করতেন না।আয়েশা যে তার কত প্রিয় তা তিনি ভরা মজলিশে প্রকাশ করতেন।তিনি যে ছিলেনই এমন ভালবাসার যোগ্য!আর কোন নবীই তাদের স্ত্রীর কোলে মাথা রেখে মারা যাননি।হযরত মুহাম্মদ(স)এর ইন্তেকাল হয়েছে মা আয়েশার সিনায় হেলান দিয়ে থাকা অবস্থায়।

    অল্পবিদ্যা যে কত ভয়ংকর বইটা পড়ে উপলব্ধি করলাম!নিন্দুকেরা আয়েশা(রা)এর সাথে রাসূলের বিয়ে নিয়ে কুৎসা রটনা করে।এ বিষয়ে কারো সংশয় থাকলেই বইটি পড়তে পারেন।নিঃসন্দেহে খাদিজার(রা) পর আয়েশার মত একজন
    বুদ্ধিমান সাহচর্যের প্রয়োজন ছিল রাসূলের,
    যিনি দ্বীনি কাজে রাসূলকে সাহায্য
    করেছেন।রাসূলের পবিত্র জীবন তিনি
    গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন,প্রয়োজন
    মত বর্ণনা করেছেন নির্ভুলভাবে।আল্লাহর অশেষ রহমত যে তিনি আয়েশাকে(রা) রাসূলের জীবনসঙ্গী করেছেন।
    মুগ্ধ হয়েছি
    তার ইলমে দীনের দক্ষতা দেখে!
    জ্ঞান,বিদ্যা,ফিকহ,ইজতিহাদে তার কোন
    জুড়ি ছিলনা।তিনি শুধু দু’হাজারেরও বেশি
    হাদিস মুখস্থই করেননি,সে সবের মাসলা
    মাসায়েল,ব্যাখ্যাও স্মরণে রেখেছিলেন
    চমৎকারভাবে।এই মহিয়সীর কল্যাণে নারী জাতি পেয়েছে জীবনের দিক নির্দেশনা।

    আয়শা (রা)
    প্রায় দশ বছর রাসূলের সংসার করেছেন।বাকি
    পঞ্চাশ বছর তিনি রাসূলের স্মৃতি লালন করে
    বেঁচে ছিলেন।কোন সন্তান ছিলো না তার।১৮ বছর বয়সে বিধবা হোন।এই উম্মাহ যে কী পরিমাণ উপকৃত হয়েছে তার দ্বারা! দীন ইলম শিক্ষা গ্রহণ ও
    শিক্ষাদানে তিনি ব্যস্ত ছিলেন।!সুবহানাল্লাহ!নারীজাতির অনেক কিছু শেখার আছে মা আয়েশা রাযী. সীরাত থেকে।

    সত্যবাদী আয়েশা ,সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত
    মোহাম্মদ (স) প্রিয় স্ত্রী আয়শা সিদ্দীকা
    (রা)সম্পর্কে জানার যে আগ্রহ ছিল তার তৃষ্ণা বইটি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।আলহামদুলিল্লাহ।পরম
    করুণাময় আল্লাহ লেখক এবং অনুবাদককে উত্তম
    প্রতিদান দান করুন।আমীন।

    15 out of 17 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 4 out of 5

    বৃষ্টি জলি:

    ? লেখকের পরিচয় :

    আল্লামা সাইয়্যেদ সু্লাইমান নদভী রাহ. (১৮৮৪-১৯৫৩) ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা, বিরল ও অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। সে যুগেও এবং এ যুগেও তাঁর তুলনা শুধু তিনিই। যে কাজেই হাত দিয়েছেন আল্লাহর মেহেরবাণীতে ও আপন যোগ্যতায় শীর্ষস্থানটি দখল করছেন তিনিই। যে বিষয়েই কলম ধরেছেন, তাঁর রচনাই পেয়েছে, ‘সেরা রচনা’র স্বীকৃতি। তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে উস্তাদ আল্লামা শিবলী নুমানী রাহ. প্রচন্ড উৎসাহে নিজের পাগড়ি খুলে তাঁর মাথায় পরিয়ে দিয়েছিলেন।

    ? তাঁর সম্পর্কে মাওলানা শাহ মুঈনুদ্দীন নদভী লিখেছেন—
    পরিপূর্ণ ইলমের অধিকারী ছিলেন তিনি। তিনি একাই ছিলেন তাঁর উদাহরণ। তাঁর মধ্যে ফুটে উঠেছিল ইবনে রুশদ ও ইবনে খালদুন, ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়্যিম, গাযালী, রূমী, শাহওয়ালিউল্লাহ এবং মুজাদ্দিদে আলফেসানী প্রমুখের (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) ইলমী আমলী নূর ও নূরের ঝলক। তাঁর রচনাবলী থেকে মুসলিম জাতি যে পরিমাণ উপকৃত হয়েছে তার উদাহরণ খুবই বিরল।

    ? ড. ইকবাল তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন —
    আজ সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী আমাদের ইলমী জগতের সর্বোচ্চস্হানে অধিষ্ঠিত আছেন। তিনি শুধু আলেমই নন; তিনি আমীরুল উলামা। শুধু মুসান্নিফই (লেখক) নন; বরং সকল মুসান্নিফের সরদার। তাঁর অস্তিত্ব ইলম ও ফযলের এক প্রবাহমান সমুদ্র- যে সমুদ্র থেকে শত শত নদীর শাখা বের হয়েছে এবং হাজারও শুকনো খেত-জমিন তরু-তাজা ও সজীব হয়েছে।

    সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী রাহ.-এর অপ্রসিদ্ধ আরও এক বিরল মর্যাদা হল- তিনি ছিলেন হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. এর মুজাজ ও খলীফা। তিনি ১৯৩৮ ইং এর আগষ্টে হযরত থানভী রাহ. এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আধ্যাত্নিক সাধনা পূর্ণ করার পর থানভী রাহ. ২২ অক্টোবর ১৯৪২ তাঁকে খিলাফত প্রদান করে তাঁর প্রতি প্রচন্ড খুশি ও আস্থা প্রকাশ করে বলেন- আলহামদুলিল্লাহ! এই কাজ নিয়ে আমার আর কোনো চিন্তা নেই। কারণ আমার পর এমন সুযোগ্য লোক আমি রেখে যাচ্ছি।

    ❄️ ?❄️ সিরাত কি?
    সিরাত একটি আরবি শব্দ। এর বহুবচন হচ্ছে সিয়ার। অর্থ হচ্ছে চাল-চলন,গতি ইত্যাদি।আরবি ভাষার বিখ্যাত অভিধান ‘আল মুজাম আল আজম’ ও ‘মিসবাহুল লুগাত’-এ সিরাত শব্দের অর্থ করা হয়েছে—
    ১. যাওয়া, প্রস্থান করা, চলা।
    ২. গতি, পথ, পদ্ধতি, ধারা।
    ৩. আকার, আকৃতি।
    ৪.অবস্থা।
    ৫. কর্ম-নৈপুণ্য, চাল।
    ৬. সুন্নত।
    ৭. জীবন চলার ধরণ, প্রকৃতি, কাজকর্ম করার ধরণ।
    ৮. কাহিণী, ঘটনাবলীর বর্ণনা ইত্যাদি।

    ? অন্যদিকে ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’ সিরাতের অর্থ লিখেছে—
    ❇️ যাওয়া, যাএা করা, চলা।
    ❇️ মাজহাব বা তরিকা।
    ❇️ সুন্নাহ।
    ❇️ আকৃতি।
    ❇️ অবস্থা।
    ❇️ কীর্তি।
    ❇️ কাহিনী, প্রচীনদের জীবন ও ঘটনাবলীর বর্ণনা।

    মোটকথা, সিরাতের আভিধানিক অর্থ হলো, কোনো ভালো মানুষের বা নেককার মানুষের চাল-চলন,ওঠাবসা, কাজ, মেজাজ-মর্জি। এককথায় জীবন পদ্ধতি বা জীবন চরিত।

    ?⏩ সিরাত পাঠের প্রয়োজনীয়তা :
    সিরাত পাঠের মাধ্যমে আমরা একজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন সম্পর্কে জানতে পারি। যাকে আমরা পছন্দ করি তার সম্পর্কে আমাদের জানার আগ্রহ থাকলে যেমন আমরা তার জীবনী অধ্যায়ন করি সেই মানুষটি সম্পর্কে অধিক জানার জন্য। ঠিক তেমনি, সিরাত পাঠে আমরা আমাদের প্রিয় মানুষটি সম্পর্কে তাঁর সম্পূর্ণ জীবন চক্র থেকে অধিক জানতে পারবো। জানতে পারবো তাঁর পূর্ণ জীবনী থেকে-হাসি, কান্না, প্রিয় কোন বিশেষ কাজ, অধিক পছন্দীয় বিষায়াবলী, সূক্ষ্ণাতি সূক্ষ্ণ বিভিন্ন বিষয় এছাড়াও আরো বহু কিছু। সিরাত পাঠ আমাদের শিখিয়ে দেয়, আমাদের প্রিয় মানুষটি সম্পর্কে আরোও বেশী জানার ও মানার পথ এবং কৌশলগত বিদ্যা।

    ??? পাঠ-প্রতিক্রিয়া :
    একজন মুসলিম নারীর জন্য ‘সীরাতে আয়েশা রাযি.’-তে রয়েছে জীবনের সার্বিক দিক-নির্দেশনা। জীবনের সকল পরিবর্তন, উত্থান-পতন, উন্নতি-অবনতি, শোক-সুখ, বিবাহ-বিরহ, পিএালয়-শ্বশুরালয়, স্বামী-সতিন, বৈধব্য, অপত্যহীনতা, ঘরবাস-পরবাস, রান্নাবান্না, সন্তানপালনসহ সংসার জীবনের হাসিকান্না, আবেগ-অনুভূতি, অভিমান অভিরোষ— এক কথায় জীবন ও জগতের সর্বক্ষেএে, সর্বাবস্থায় আদর্শ অনুসরণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে ভরপুর হযরত আয়েশা রাযি.-এর জীবনচরিত। আর জ্ঞান-গুণ, ধর্ম-কর্ম ও চরিএমাধুরীর অনুপমতা তো বলাই বাহুল্য। প্রকৃতপ্রস্তাবে তাঁর পবিএ জীবনচরিত হল সেই স্বচ্ছ আয়না, যাতে ফুটে ওঠে— একজন মুসলিম নারীর প্রকৃত জীবনের চিএ।

    ?✨? এই সিরাত থেকে আমি পাঠকদের আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য একটি ছোট ঘটনা উল্লেখ করছি—

    অন্য আরও একটি সফরে হযরত আয়েশা রাযি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভে ধন্য হয়েছিলেন। এই সফরেও ওই হারটিই গলায় ছিল। কাফেলা ফেরার পথে যখন যাতুল জায়শ নামক স্থানে পৌঁছল তখন হারটি গলা থেকে কোথাও পড়ে গেল। পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা উম্মুল মুমিনীন রাযি.-কে যথেষ্ট সচেতন করেছে। তিনি বিষয়টি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবহিত করলেন। ভোর হতে সামান্য সময় বাকী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাএা বিরতির নির্দেশ দিলেন এবং একজন সাহাবীকে উম্মুল মুমিনীনের হারানো হারটি খুঁজতে পাঠালেন। ঘটনাচক্রে যেখানে যাএাবিরতি দেওয়া হল সেখানে পানি বলতে কিছু ছিল না। ফজরের সময় হয়ে গেল। সাহাবা কেরাম ঘাবড়ে গিয়ে হযরত আবূ বকর রাযি.-এর কাছে আরজ করলেন, হযরত আয়েশা রাযি. আমাদেরকে এ কোন বিপদে ফেলে দিলেন। হযরত আবূ বকর রাযি. সোজা হযরত আয়েশা রাযি.-এর কাছে চলে গেলেন। দেখলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আয়েশা রাযি.-এর কোলে মাথা রেখে বিশ্রাম করছেন। মেয়েকে লক্ষ্য করে বললেন- কী হল তোমার! প্রতিদিন কোন না কোন ঝামেলা বাধিয়েই থাক। তিঁনি ক্রোধবশত হযরত আয়েশা রাযি.-এর বাহুতে সজোড়ে খোঁচা মারলেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটবে দেখে তিঁনি (আয়েশা রাযি.) একটুও নড়লেন না।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন এবং সমস্যাটি অবগত হলেন। ইসলামের যাবতীয় বিধানের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই যে, তা সবসময়ই কোন না কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অবতীর্ণ হয়। ইসলামে নামাযের জন্য ওযু করা ফরয। কিন্তু এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, কোন একস্থানে ওযুর জন্য পানির কোন ব্যবস্থা নেই। এমতাবস্থায় কী করা উচিৎ সে দিক-নির্দেশনা দেবার জন্যই মহান আল্লাহর ঐশী ইশরায় এই প্রেক্ষাপটের অবতারণা।
    ? ওহী এল :
    “আর যদি তোমরা অসুস্থ হও, কিংবা সফরে থাক, কিংবা ইস্তিঞ্জা থেকে আস, কিংবা স্ত্রীসহবাস কর; কিন্তু পানি না পাও, তবে পবিএ মাটিতে তায়াম্মুম কর—তা দিয়ে তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তযুগল মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী।“ (সুরা নিসা : ৪৩)

    সাহাবা কেরামের অবসাদগ্রস্ত মুজাহিদ বাহিনী, যারা ওযুর পানির অভাবে হতভম্ব হয়েছিলেন, মহান আল্লাহর করুণাধারায় সিক্ত হয়ে তাজা হয়ে উঠলেন। হর্ষে আনন্দে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সম্মানিতা মাতার জন্য কল্যাণ ও বরকতের দুআ করতে লাগলেন। হযরত উসায়েদ ইবনে হুযায়ের রাযি. অত্যন্ত বড় মাপের সাহাবী ছিলেন। আনন্দের আতিশায্যে তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন- “সিদ্দীক পরিবার ওহে, ইসলামে এ তোমাদের প্রথম দান নহে।“

    সিদ্দিকে আকবর রাযি.— যিনি একটু আগেও নয়নমণিকে শিষ্টাচার শেখানোর জন্য অস্থির হয়ে উঠেছিলেন— ছুটে গেলেন প্রিয়তমা কন্যার কাছে, আবেগাপ্লুত কন্ঠে বললেন- “আমার কলিজার টুকরা, তুমি যে এত কল্যাণী, এত বরকতময়ী, তা আমার জানা ছিল না। আল্লাহ তোমার ওসিলায় মুসলমানদেরকে কত আসনি ও সহজতা দান করেছেন!”

    ? পরিশেষে বলতে চাই, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযি.-এর জীবনচরিত অধ্যয়ন শুধু এ জন্য আবশ্যক নয় যে, তা নবীপরিবারের এক মহীয়সী নারীর পবিএ জীবনধারার সমষ্টি বরং এ জন্যও এটা পড়া জরুরি যে, তা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের শ্রেষ্ঠতম জীবনের এমন অর্ধাঙ্গিনীর জীবন, যা সত্যিকারের পূর্ণাঙ্গ সুসজ্জিত স্বরূপ তুলে ধরে আমাদের সামনে।

    ? বইটার রেটিং ৯ /১০

    5 out of 5 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No