মেন্যু
amirul muminin omor ibnul khattab

খলিফাতুল মুসলিমিন উমর ইবনুল খাত্তাব ( দুই খণ্ড একত্রে)

পৃষ্ঠা : 1072, কভার : হার্ড কভার
তাঁর জন্ম ও বাল্যকাল সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা যায় না। ইবন আসাকির তাঁর তারীখে ’আমর ইবন ’আস রা. হতে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বর্ণিত হয়েছে, একদিন ’আমর ইবন ’আস কয়েকজন... আরো পড়ুন
পরিমাণ

700  1,000 (30% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

11 রিভিউ এবং রেটিং - খলিফাতুল মুসলিমিন উমর ইবনুল খাত্তাব ( দুই খণ্ড একত্রে)

5.0
Based on 11 reviews
5 star
100%
4 star
0%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    Ahmed Nadif:

    #কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
    ভূমিকা :
    উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)। তার নাম শুনতেই আমাদের সামনে ভেসে উঠে ন্যায়পরায়ন এক শাসক যিনি সত্য এর ক্ষেত্রে অবিচল, জনদরদি ও মহানুভব।এই মহান সাহাবিকে নিয়েই লিবিয়ার প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড.আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি রচনা করেছেন তার বিখ্যাত কিতাব “ফাসলুল কিতাব ফি সিরাতিল আমিরিল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব “।
    বইটির বিশেষত্ত্ব :
    উমর (রা) এর জীবনী নিয়ে গ্রন্থের অভাব নেই কিন্তু ড. সাল্লাবির বইটি অন্যসকল বই থেকে এই বইটি অনন্য বেশ কিছু কারণে।সর্বপ্রধান কারণ হলো শায়খ উমর (রা) এর জীবনের ঘটনাসমূহ হতে এই উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মূল্যবান শিক্ষা বের করেছেন। একই সাথে উমর (রা) এর আধ্যাত্মিক উন্নয়ন কি কি উপায়ে সাধিত হয়েছিলো সেগুলোরও সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ।পাশাপাশি ইসলাম এর বিভিন্ন সময়ে উমর (রা) যে খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন তা চমৎকারভাবে আলোচনা করা হয়েছে।এই গ্রন্থে শুধু উমর (রা) এর ধারাবাহিক আলোচনা করেই লেখক ক্ষান্ত হননি বরং তাঁর জীবনের মূল্যবান অনেক ঘটনার শিক্ষা বইয়ে সংযোজন করেছেন ।
    বইটিতে আলোচ্য বিষয়সমূহ :
    ১। জাহেলি যুগে উমর (রা) কেমন ছিলেন,উনার নানা গুণাবলি সুবিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
    ২। রাসুল (ﷺ) কে হত্যাচেষ্টা ও ইসলামগ্রহণের ঘটনা বর্ণনার পর উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আলোচনা করা হয়েছে।
    ৩। মাক্কি জীবনে ইসলামে উমর (রা) এর অপরিসীম ভূমিকার কথা চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে।
    ৪। উমর (রা) এর হিজরত এর ঘটনা বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে।
    ৫। মাদানি জীবনে উমর (রা) এর গুরুত্বপূর্ণ নানা কর্মকাণ্ড এবং বদর,উহুদ সহ বিভিন্ন জিহাদে তাঁর অবদান আলোচনার পর শাইখ অনেক গুলো তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষা আলোচনা করছেন।
    ৬।রাসুল (ﷺ) এর প্রতি তাঁর অপরিসীম ভালোবাসা ও রাসুল (ﷺ) কে দেয়া নানা পরামর্শ সুন্দরভাবে আলোচিত হয়েছে।একইসাথে তাঁর মেয়ে হাফসা (রা) এর সাথে রাসুল (ﷺ) এর বিবাহের ঘটনাও সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে।
    ৭।রাসুল(ﷺ) এর ওফাত এর সময় তাঁর অবস্থা ও পরবর্তী সময়ে আবু বকর (রা) কে খলিফা নির্বাচনে তাঁর অবদানের কথা আলোচিত হয়েছে।
    ৮। একজন শাসক হিসেবে জনগনের প্রতি উমর (রা) যেসকল দায়িত্ব পালন করেছেন তা শায়খের আলোচনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা থেকে সকল মুসলিমের শাসকের জন্য মূল্যবান শিক্ষা রয়েছে।
    ৯। ইলমের বিস্তারে উমর (রা) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সবকটি পাঠশালা ও সেগুলোর পাঠদান পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে।উমর (রা) নিজেও সমকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ ছিলেন। যেমন সাল্লাবি তার বইয়ে তার ওফাতের পর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) এর বিখ্যাত উক্তি সংযোজন করেছেন।সেটি হলো : “সাহাবায়ে কেরাম মনে করতেন যে হযরত উমর (রা) ইলমের নয়-দশমাংশ সাথে নিয়ে গেছেন।”বিভিন্ন শহর যেমন কুফা,মক্কা,মদিনা,বসরা ও সিরিয়া এবং মিশরের শহরসমুহে উমর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নানা পাঠশালা, সেগুলোর শিক্ষাদান পদ্ধতি লেখক বইটিতে তুলে ধরেছেন।
    ১০।আমরা জানি,উমর (রা) এর খিলাফতকাল ছিল ইসলামের বিস্তারের সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ।বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে তাঁর আমলে সংঘটিত সবকটি যুদ্ধের অত্যন্ত বিশদ ও সুন্দরভাবে আলোচনা করা হয়েছে।বিশেষত কাদেসিয়া যুদ্ধের এত বিশদ বর্ণনা পাঠককে মুগ্ধ করবে।পাশাপাশি মাদায়েন,নিহাওয়ান্দ,দামেস্ক এর যুদ্ধ,মিসর ও লিবিয়া বিজয়,জেরুজালেম বিজয়,তুর্কিদের সাথে যুদ্ধসহ ইত্যাদি যুদ্ধের চমৎকার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে ।
    ১১।এরপর খিলাফতের প্রত্যেক রাজ্যের আলাদা আলাদা বর্ণনা করা হয়েছে ।একইসাথে উমর (রা) কর্তৃক আবাদকৃত নতুন শহরের
    ও গভর্নরদের পরিচয় প্রদান পূর্বক পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করেছে যা লেখকের দক্ষতার পরিচয় বহন করে।
    ১২। নির্মাণকৌশল, ইলমি অগ্রগতিতে গৃহীত পদক্ষেপের কথা সাজানোভাবে তুলে ধরেছেন যা প্রশংসা যোগ্য।
    ১৩। বিচারবিভাগের আলোচনায় বিচারপতি কিভাবে নিয়োগ করা হতো,বিচারের পদ্ধতি কেমন ছিল,কিভাবে বিচারের সাম্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
    ১৪।রাজস্ব খাতের আলোচনায় রাজস্ব আদায়ের শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত সবকটি পদ্ধতি ও ব্যয়ের খাতসমূহ লেখক বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।
    ১৫।উমর (রা) কর্তৃক খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) কে অপসারনের ঘটনা লেখক এত প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরেছেন যে সত্যিই যে কাউকেই অবাক করবে।পাশাপাশি এই ঘটনা থেকে লেখকের বের করা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাও উম্মাহর জন্য জরুরি।
    ১৬।ড.সাল্লাবি ইতিহাসের মোড় পরিবতনকারী এই সমাজ সংস্কারকের সামাজিক নানা সংস্কারের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
    ১৭।সমাজে দুর্বল, নির্যাতিত, জিম্মি, দাসসহ সর্বস্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্টায় তার নিরলস পরিশমের কথা তুলে ধরেছেন।
    ১৮।বায়তুলমালকে তিনি কিভাবে বিশেষ গোষ্ঠির ব্যক্তিগত সম্পদ না বানিয়ে সকলের জন্য উম্মুক্ত করেছিলেন তা অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
    ১৯।১৮ হিজরির আমুর রামাদাহ দুর্বিক্ষের চমৎকার আলোচনা বক্ষ্যমান বইটিকে অনন্য করে তুলেছে।এ সময় হযরত উমর (রা) এর খাবারের বর্ননা পড়লে যে কারোর চোখের জল ধরে রাখা কঠিন হবে।
    ২০।একইসাথে ১৮ হিজরিয় তাউন আমওয়াস অর্থাৎ সিরিয়ার প্লেগ মহামারির ঘটনাও শায়খ বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেছেন।সিরিয়ার প্লেগে শাহাদাত বরণকারী আবু উবায়দা (রা) ,মুয়াজ (রা) এর মৃত্যুকালীন চরম শিক্ষণীয় ঘটনাসমূহ এই গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে।একইসাথে উমর (রা) কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমুহ বর্ণিত হয়েছে ।
    বইটি যে কারণে পড়বেন :
    জীবনীগ্রন্থটি ফারুকি জীবন নিয়ে পাঠকের তৃষ্ণা মেতাবে বলে আমি মনে করি। কারণ শাইখ যেভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে বিস্তারিতভাবে ঘটনাগুলো উপস্থাপন করেছেন তা খুবই কম বইয়ে পাওয়া যাবে।আল্লাহ লেখককে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
    কালান্তর প্রকাশনীকে ধন্যবাদ বইটির এত সুন্দর প্রচ্ছদের জন্য।সত্যিই প্রচ্ছদটি উমর (রা) এর সাথে যথার্থ হয়েছে।ইসলামি খিলাফতের মানচিত্র আসলেই ফারুকি খিলাফতের প্রতীক ধারন করে।আল্লাহ কালান্তর প্রকাশনীকে এত সুন্দর একটি বই উপহার দেওয়ার জন্য উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং এ মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট ওয়াফি লাইফকেও এগিয়ে যাওয়ার তৌফিক দান করুন ।আমিন।
    বই পরিচিতি :
    নাম : উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)।
    লেখক : ড.আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি।
    পৃষ্ঠা সংখ্যা : প্রথম খণ্ড=৪৯৬, দ্বিতীয় খণ্ড=৫৭৬,মোট=১০৭২
    লেখক : ড.আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি।
    দাম:৳ ৭৫০
    3 out of 3 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    Fabiha binte kashem:

    📖 বই : আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব রা.
    🖊 মূল : শায়খ ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি
    📁 অনুবাদ : কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক
    🔸 প্রকাশনায় : কালান্তর প্রকাশনী

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আসসালাতু ওয়াসসালামু আ’লা রাসূলুল্লাহি।
    যুগে যুগে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বান্দাগণ তাঁদের তাকওয়া আর ইখলাস দিয়ে এই দুনিয়ার বুকে রাজ করেছেন। শয়তানের চক্রান্তকে করেছেন ধুলিস্মাৎ । এমন এক বীরপুরুষ আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব,যাকে শয়তানও ধোঁকা দিতে পারেননি কখনও।শাসক কেমন হওয়া উচিত, শৌর্য-বীর্যময় বীরপুরুষ কাকে বলে মুসলিম উম্মাহের কাছে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হযরত উমর (রা)। যে উমর কাফির থাকা অবস্থায় কালামুল্লাহ ও রাসূলুল্লাহের প্রতি ছিলেন অগ্নিশর্মা,দ্বীনে প্রত্যাবর্তনের পর রাসূলুল্লাহের সার্বক্ষণিক সান্নিধ্যে তিনিই হয়ে উঠলেন এক আলোকোজ্জ্বল মানব।
    উমর ইবনুল খাত্তাব সেই মহাবীর যিনি ন্যায়নিষ্ঠার আলোকে শাসন করেছেন অর্ধপৃথিবী।যিনি নিদ্রা ত্যাগ করে গভীর রাতে জনগণের অবস্থা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়তেন,পাছে তাঁর দায়িত্বে কোন গাফেলতি না হয়ে যায় ; যার কারণে আল্লাহর দরবারে তিনি কঠিন জবাবদিহির সম্মুখীন হন। উমর সেই কঠোর শাসক যিনি নিজ হাতে মদ্যপানের অপরাধে নিজ সন্তানকে প্রহারে নিঃশেষ করেন। মহত্ব,মর্যাদা,নিষ্ঠা,রাসূলপ্রেম,তাকওয়া,জিহাদ ও দাওয়াতে উমর ইবনুল খাত্তাব ইসলামের ইতিহাসে এক আলোকোজ্জ্বল অধ্যায়।
    ইসলামের সেই অধ্যায়কে মজবুত শব্দ গাঁথুনিতে বাঁধাই করেছেন ড. শায়খ আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি।আর সেই গাঁথুনিতে মাতৃভাষার সজীবতা ঢেলে দিয়েছেন কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক। সজীব এই পান্ডুলিপি মনোরম মলাটে পাঠকের টেবিলে পৌঁছে দিয়েছে কালান্তর প্রকাশনী। একজন পাঠক হিসেবে এটুকুই বলবো “উমর” নামক ইসলামের উজ্জ্বল সেই অধ্যায়ে ভ্রমণ করতে চাইলে অনন্য সাধারণ এই বইটি অবশ্যই একবার পড়তে হবে।

    2 out of 2 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    nazmussakibsun1996:

    মাশাল্লাহ অনেক ভালো বই।
    1 out of 1 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    Md Zaman:

    বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
    মহানবী সাঃ যে সময় পৃথিবীতে আগমন করেন সে সময়টি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে সঙ্কটময় অধ্যায়। ঘুনে ধরা একটি পতিত সমাজকে আলোর পথে নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল তার উপর। যখন থেকে রাসূল সাঃ অন্ধকার সমাজে আলোর দাওয়াত দিতে থাকেন তখন কিছু মানুষ তার ডাকে সাড়া দেয় সেই সাথে কিছু মানুষ আলোর সন্ধান পাওয়া মানুষদের জীবনকে সব রকমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ করে তুলে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন অন্যতম, যিনি কাউকে ইসলাম গ্রহণের কথা শুনলে নির্যাতন করতে চলে যেতেন। একবার তো এমন হয়েছিল একজন মহিলার (সাহাবী) দ্বীনে ইসলামের প্রবেশের কথা শুনে তিনি তাকে মারতে চলে যান এবং এতটাই তার উপর অত্যাচার করেন যে সেই সাহাবীর (রাঃ) চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সেই ব্যক্তির সম্পর্কে রাসূল সাঃ এর কাছে বলা হলে তিনি আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তির জন্য দু’আ করেন আল্লাহ যেন তাকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে নিয়ে আসেন। কিন্তু এর অল্প কিছুদিন না যেতেই সেই লোক দো-জাহানের বাদশা রাসূলে পাক সাঃ কে হত্যার উদ্দেশ্য তরবারি হাতে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। আপনার এই লোক সম্পর্কে কি মনে হয় তিনি কি ইসলাম কবুল করতে পারেন? হ্যাঁ যেই লোক মুসলমানদের কষ্ট দেয়াকে নিজের একমাত্র লক্ষ্য বানিয়ে নিয়েছিলেন, যে আল্লাহর রাসূল সাঃ কে হত্যার উদ্দেশ্য কোষমুক্ত তরবারি হাতে নিয়ে গৃহত্যাগ করেছিলেন সেই ব্যক্তি ইসলামে আলোয় প্রবেশ করেন। শুধু প্রবেশই করেননি তার ইসলাম কবুলের মাধ্যমে মক্কার নির্যাতিত মুসলিমরা নতুন ভাবে জেগে উঠেছিল। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেই প্রকাশ্য সালাতের প্রচলন করেন যা এতদিন মক্কার মুশরিকদের ভয়ে কেউ করার সাহস পাননি। রাসূল সাঃ তার সম্পর্কে বলেছিলেন তার পর সেই ব্যক্তিই ইসলামের নবী হতেন যদি না রাসূল সাঃ নিজে আল্লাহর শেষ নবী হতেন। তিনি আর কেউ নয় মুসলিম উম্মাহের দ্বিতীয় খলিফা আমিরুল মুমিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ। আজ আমরা যেই বই নিয়ে লিখছি তা এই বীর সিংহের জীবনি। যিনি অর্ধেক পৃথিবীতে উড়িয়েছিলেন কালিমার ঝান্ডা। বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক “ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী” প্রণীত “কাজী আবুল কালাম সিদ্দিক” অনুদিত “আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ “। যা প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের ইসলামি প্রকাশনী জগতের সনামধন্য প্রতিষ্ঠান ” কালান্তর প্রকাশনী” থেকে।

    ⚫বইয়ের বিষয়বস্তুঃ জীবনি গ্রন্থের ক্ষেত্রে আমরা যেমনটি দেখি যে ব্যক্তির জন্ম, বংশ, শৈশব, কৈশোর, যুবককালের ঘটনা, ব্যক্তির জীবনের সম্পূর্ণ কর্মজীবন, সেখান থেকে শিক্ষা এবং ব্যক্তির মৃত্যু ঠিক তেমনটিই ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী রচিত উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ এর জীবন ও কর্ম বইতে মুসলিমদের দ্বিতীয় খলিফা আমিরুল মুমিনিন উমর রাঃ এর জন্ম, তার শিশুকালের ঘটনা, কৈশোরের দূরন্তপনা, জাহেলিয়াতে অন্ধকার থেকে আলোর ভুবনে ফিরে আসা, সেখান থেকে রাসূল সাঃ এর কাছের সাহাবাদের একজন হয়ে উঠা। জি হা দের ময়দানে সাহসিকতা দেখানো থেকে মুসলিমদের খলিফা এবং অর্ধেক বিশ্বে আল্লাহর কালিমাকে পৌঁছে দেয়া সবই উল্লেখ আছে এই বইতে।

    ⚫কেন পড়বেনঃ বইটি কেন পড়বেন সেই বিষয়ে লিখতে গেলে লেখা শেষ হবে না তাই পর্যায়ক্রমে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় বর্ণনা করছি, আশা করি এতে বইটি সম্পর্কে ধারণা পেতে সহজ হবে ইন শা আল্লাহ।

    ১. সবার প্রথম কথা উমর রাঃ ছিলেন একজন সাহাবী। যে কোনো মানুষের জন্যই সাহাবিদের জীবনি পাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর উমর রাঃ তো ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবিদের একজন। তাছাড়া তার চিন্তাধারার বেশ কিছু প্রতিফলন কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা উল্লেখ করেছেন।

    ২. উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা। বইটিতে উমর রাঃ এর কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যর কথা বলা আছে এর মধ্যে তার শহী দের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়া, রাতের আঁধারে আলিতে গলিতে ঘুরে মানুষের জীবনমানের অবস্থা যাচাই করা, ভাত্যৃকে উটের পিঠে বসিয়ে নিজে হেঁটে চলা, প্রতিটি বিষয়ে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা, জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়ার পরও আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

    ৩. বইটির একটি বড় অংশ জুড়ে আছে উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ এর খিলাফতের জীবন। আমার কাছে এই অংশটুকুকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। আমরা বর্তমানে এক সংকটপূর্ণ পথ পারি দিচ্ছি। যেখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা যোগ্য নেতাহীনতা। আর উমর রাঃ এর নেতৃত্বগুণ ছিল অসাধারণ। তাই আমাদের বর্তমানে সকল মুসলিমদের জন্য এই অংশটি পাঠ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    ৪. শেষ করব রাসূল সাঃ এর একটি হাদিস দিয়ে যেখানে রাসুল (সা.) ওমরের দিকে ইশারা করে বলেন, ‘যতদিন ওমর তোমাদের মাঝে থাকবে ততদিন ফেতনা মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারবে না। ওমর যখন থাকবে না তখন চতুর্দিক থেকে তোমাদের মাঝে ফেতনা দেখা যাবে।’ বুঝতে পারছেন ভাই। এই বইটি পাঠ এখনকার সময়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চারপাশে এখন শুধু ফেতনা আর ফেতনা, কারণ উমর রাঃ আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি হয়তো সত্যি নেই কিন্তু তার জীবনি তো আমাদের মাঝে রয়েছে। তার জীবনি পাঠের মাধ্যমে আমরা উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ কে আমাদের ব্যক্তিজীবনে জিন্দা করতে পারি। আর আমরা যদি সেটা পারি তাহলে আশা করা যায় অসংখ্য ফেতনা থেকে আমরা হেফাজত থাকতে পারবো ইন শা আল্লাহ।

    ⚫কালান্তরের বইটি যে কারণে কিনবেনঃ উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ এর সবথেকে বিশুদ্ধতম জীবনি মনে হয়েছে আমার কাছে। আর বইটির অনুবাদ করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অনুবাদক কাজী আবুল কালাম সিদ্দিক। তার অনুবাদ সবসময়ই সাবলীল, যেকোনো পাঠকের জন্যই তার অনুবাদ হয় সুখপাঠ্য। তাই বেশি কিছু লিখছি না বাকিটা এবার আপনাদের বই থেকে দেখে নেয়ার পালা।

    2 out of 3 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 5 out of 5

    Rezwan:

    উমার ইবনুল খাত্তাব রা. খিলাফতে রাশেদিনের ২য় খলিফা এবং রাসুল সা. ২য় সবথেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একজন বীর ও হেদায়তের উপর থাকা রাষ্ট্রনায়ক।তার সময়কালেই ইসলাম অনেক বিস্তৃতি লাভ করে।তার মতো সাহাবিদের জীবনি আমাদের জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

    ড. সাল্লাবি তার বইটিতে সবথেকে বিশুদ্ধ উৎস থেকে বইটি লিখেন।তার বইগুলো যারা পড়েছেন পড়লেই বুঝবেন তিনি একজন খুব ভালো লেখক।তার লেখা পড়লেই মনে হয় ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভাসছে।তিনি একজন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ।বইটি লেখার সময় তিনি সব ভেজাল উদ্বৃতিসমূহ বইয়ে লেখা থেকে বিরত থেকেছেন।

    উমর ইবনুল খাত্তাব রা. মক্কায় তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন।দিনে কুস্তি খেলতেন আর রাতে মদ খেয়ে শেষ!কে জানতো যে তার মতো একজন মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আসবে?কে জানতো তিনি অর্ধ জাহানের শাসনকর্তা হবেন?সবই আল্লাহর ইচ্ছা তিনি যা চান তাই হয়।ইসলাম গ্রহনের আগে তিনি নবি সা. এর শত্রু ছিলেন এমনকি মারতেও এসেছিলেন।তবে তার ভাগ্যে হেদায়েত ছিল বলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।

    তার চরিত্র সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক কিছু বলা যায়।তিনি ছিলেন খুবই আল্লাহ ভিরু,যুদ্ধের ময়দানে বীরের মতো যুদ্ধ করতেন,দান-খয়রাতেও ছিলেন অনেক দয়ালু।তিনি কবর দিয়ে যাওয়ার সময় কান্নায় তার দাড়ি ভিজে যেত।তিনি কখনো কখনো বলতেন,”ধ্বংস আমার যদি আমার এবং আমার মায়ের ক্ষমা করে না দেওয়া হয়।”তিনি আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে বলতেন,”হে খাত্তাবের বেটা তুমি এই আগুনকে ভয় কর।”

    তার ছিলেন ৪ হেদায়েতপাপ্ত খলিফাদের মধ্যে একজন।তার সময় ছিল ইসলামের সোনালি যুগ।তাই তার এবং আরো সাহাবিদের জীবনি সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা আমাদের কর্তব্য।
    নবি সা. বলেছেন, জ্ঞান অর্জন তোমাদের উপর ফরজ।

    আর এই বইটি পড়ে ইনশাআল্লাহ আপনি উমর রা. এর জীবনি সবথেকে বিশুদ্ধ উৎস থেকে পাবেন।

    1 out of 1 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No