নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী
বিষয় : সাহাবীদের জীবনী
পৃষ্ঠা: ৮৬
নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন’ মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আরবী গ্রন্থ ‘সুওয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়্যাত’ এর অনুদিত গ্রন্থ। অনুবাদক আরবী সাহিত্যমান ও রস অনুবাদে পরিপূর্ণভাবে তুলে আনতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি।
‘নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত’ গ্রন্থে ইসলামের ইতিহাসের যেসব মহীয়সী নারীদের জীবনী আলোচিত হয়েছে:
(১)প্রিয় নবীর দুধমা হালীমা
(২) নবীজীর ফুফু ছফিয়্যাহ
(৩) প্রিয় নবীর কন্যা ফাতিমা তুয যাহরা
(৪)আবু বকর রাযি. এর কন্যা আসমা
(৫)নাসীবা আল মাযেনিয়্যা,
(৬) উম্মে হাবীবা(রমলা) বিনতে আবু সুফিয়ান
(৭) গুমাইছা বিনতে মিলহান
(৮) উম্মে সালামা
পৃষ্ঠা: ৮৬
নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন' মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আরবী গ্রন্থ 'সুওয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়্যাত' এর অনুদিত গ্রন্থ। অনুবাদক আরবী সাহিত্যমান ও রস অনুবাদে পরিপূর্ণভাবে তুলে আনতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি... আরো পড়ুন
-
-
hotজীবন যদি হতো নারী সাহাবীর মত
লেখক : ড. হানান লাশিনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন186 ৳136 ৳অনুবাদ: আব্দুল্লাহ মজুমদার সম্পাদনা: উস্তায আবুল হাসানাত ...
-
hotকোটিপতি সাহাবি
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : ইলহাম ILHAM310 ৳232 ৳‘সাহাবিরা গরিব’ ছিলেন এমন ধারণা অনেকের ...
-
hotপ্রিয়তমা
লেখক : সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীরপ্রকাশনী : নবপ্রকাশ415 ৳311 ৳আয়েশার সঙ্গে রাসুল মুহাম্মদের (সা.) দাম্পত্যজীবন ...
-
hotগল্পে আঁকা মহীয়সী খাদিজা
লেখক : ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভীপ্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী360 ৳198 ৳পৃষ্ঠা: ২২৪ কভার: হার্ড কভার খাদিজা বেরিয়ে এলেন ...
-
hotসীরাতে আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা
লেখক : সাইয়েদ সুলাইমান নদভী রহ:প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী700 ৳385 ৳লেখক: সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী রহ. অনুবাদক: মাওলানা ...
-
hotসাহাবায়ে কেরামের ঈমানদীপ্ত জীবন (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) ১ম এবং ২য় খণ্ড
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী440 ৳ – 935 ৳আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারককে (রহঃ) যখন উনার ...
-
hotতারা ঝলমল
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন320 ৳240 ৳নিরীক্ষণ: মাওলানা আসাদ আফরোজ সাহাবীরা হলেন নববী ...
-
hotউম্মুল মুমিনিন (অখণ্ড)
লেখক : ড. ইয়াসির ক্বাদিপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন460 ৳345 ৳অনুবাদক : আলী আহমাদ মাবরুর ও ...
-
save offখাদিজা (রাঃ) প্রথম মুসলমান এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বিবি
লেখক : ড. রাশীদ হাইলামাযপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান240 ৳132 ৳পৃষ্ঠা: ১৩৬ ইতিহাসের প্রতিটি ক্রন্তিলগ্র্নেই সময়োপযুগি মহান ...
-
Zabin Tasmin – :
বইঃ নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন
মূল লেখকঃ ড. আব্দুর রহমান রাফাত পাশা
অনুবাদঃ মাওলানা মাসউদুর রহমান
প্রকাশনীঃ রাহনুমা প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্যঃ ১০০
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৮০
———————————–
ইসলামের প্রথম শহীদ একজন মহিলা, একজন “নারী সাহাবী “। প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীও একজন নারী। সমাজের অর্ধেক অংশ নারী, নারীর উন্নয়ন ব্যতিরেকে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ইসলামের ইতিহাসে নারীদের ভূমিকাও কম নয়। তাদের ঈমান, আমল,ধৈর্য, ইসলামের প্রতি ত্যাগের গল্পগুলো আমাদের মনে দাগ কাটে। ঈমানকে আরও প্রজ্জ্বলিত করে। ” নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন ” বইটি পড়ে এই বিষয় গুলোই দৃশ্য পটে ভেসে উঠে। বইটির লেখক কয়েকজন নারী সাহাবিয়ার জীবনী তুলে ধরেছেন, যারা তাদের জীবদ্দশায় প্রিয় নবী (সাঃ) এর সংস্পর্শ পেয়েছেন। যারা জীবন অতিবাহিত করেছেন ইসলামের সেই ইস্পাত কঠিন যুগে।
———————————–
বিষয়বস্তুঃ
বইটিতে নবীর দুধমা হালীমা সা’দিয়া, ছফিয়্যাহ বিনতে আবদুল মুত্তালিব; নবীর স্নেহ ভালোবাসার ফুল (ফুফু), প্রিয় কন্যা ফাতিমাতুয যাহরা, আসমা বিনতে আবু বকর ( দুই ফিতাওয়ালী), নাসীবাহ আল মাযেনিয়্যা, রমলা বিনতে আবু সুফিয়ান, গুমাইছা বিনতে মিলহান ( উম্মে সুলাইম), উম্মে সালামা ( আরবের বিধবা) সম্পর্কে লেখা হয়েছে।
ছফিয়া(রাঃ) প্রথম মুসলিম নারী যিনি একজন মুশরিক হত্যা করেছেন, আসমা (রাঃ) মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও যুদ্ধের ময়দানে নিজের সন্তানকে ঠেলে দিয়েছিলেন, নাসীবাহ(রাঃ) যুদ্ধের ময়দানে দুর্বার সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, গুমাইছা(রাঃ) যার বিয়ের মোহরানা ছিল ইসলাম, রমলা(রাঃ) ইসলামের জন্য বাবা ও প্রিয়তম স্বামী ত্যাগ করেছিলেন, কিভাবে?? এসব জানা যাবে বইটি পড়ার মাধ্যমে।
———————————–
লেখক পরিচিতিঃ
ড. আব্দুর রাহমান রাফাত পাশার জীবনী নির্ভর বিশ্ব সমাদৃত জনপ্রিয় তিনটি বইয়ের মধ্যে এটি একটি। উনার জনপ্রিয়তা আরব বিশ্ব ছাড়িয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলেও বিস্তার লাভ করেছে। উনার লেখনী সম্পর্কে বলা হয় – উনার লেখা গল্প মধুর চেয়ে মিষ্টি, অশ্রুর চেয়ে সিক্ত,পর্বতের চেয়ে সুদৃঢ় এবং ভালোবাসার চেয়ে আকর্ষণীয়। বইয়ের অনুবাদক মাওলানা মাসউদুর রহমান উনার লেখা পড়ে ভালো লাগা থেকে বইটি অনুবাদ করেন।বইটির অনুবাদক অনুবাদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার করেছেন। ফলে অনুবাদ পড়ার সময় যে সাহিত্য রসের অভাব দেখা যায় তা এখানে দেখা যায় নি এবং সেটা বিবেচনা করে অনুবাদকের প্রশংসা করতেই হয়।
———————————–
অভিব্যক্তিঃ
স্বল্প দৈর্ঘ্যের বইটি পড়ার সময় সাহাবিয়াদের জীবনী পড়ে কখনও চোখে পানি এসেছে, কখনও ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটেছে আবার কখনও মন বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছে। আমার নড়বড়ে ঈমানে নাড়া দিয়েছে তাদের ঘটনা গুলো। বইটি পড়ে নিজেকে, নিজের জীবনকে ইসলামের সৌন্দর্য্যের সাজানোর অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
তারা যে কতটা মজবুত ঈমানের অধিকারী ছিলেন তা শহীদ সুমাইয়া (রাঃ) ঘটনা থেকে বুঝা যায়। নবীজীর প্রতি তাদের ভালোবাসার নিদর্শন, ইসলামের প্রমে নিজের সন্তানকেও কুরবানী দিতে দ্বিধা না করা, কখনও যুদ্ধের ময়দানে নিজে যোদ্ধা হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করা আবার কখনও সেবা, সুশ্রষা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে যোদ্ধাদের সাহায্য করা, স্বামীর প্রতি তাদের একনিষ্ঠ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আনুগত্য দেখে সত্যিই বিমোহিত হতে হয়।
এককথায় অসাধারণ একটি বই।
———————————–
মন্তব্যঃ
বইটি তে নারী জাতির জন্য অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে। হযরত ফাতিমা, খাদিজা, আয়েশা (রাঃ) দের একক জীবনী গ্রন্থ পড়ার পাশাপাশি অন্যান্য সাহাবিয়াদের জীবনী জানার জন্য বইটির জুড়ি নেই। প্রত্যেক নারীর ই উচিত বইটি পড়া।
mahfuzasreya1507 – :
#আলোচ্য_বিষয়ঃ
ইসলামের ইতিহাসে নারী সাহাবীগণ জীবনপথের চরম অসহায় মুহূর্তে ত্যাগ- তিতিক্ষা, ধৈর্যের পরকাষ্ঠায় ছিলেন সর্বোত্তম। ঈমানি চেতনায় যারা ছিলেন গৌরবান্বিত- তাদের অপূর্ব সব ইতিহাস নিয়ে রচিত হয়েছে “নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন।”
#আলোচনাঃ
“নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন” বইটিতে যে ক’জন মহীয়সী নারীদের জীবনী আলোচিত হয়েছে, তারা হলেন-
নবীজির দুধমাতা হালীমা সা’দিয়া, নবীজির ফুপু ছফিয়্যাহ, নবীকন্যা ফাতিমাতুয যাহরা, আসমা বিনতে আবু বকর, নাসীবাহ আল মাযেনীয়া,
রমলা বিনতে আবু সুফিয়ান, গুমাইছা বিনতে মিলহান, উম্মে সালমা।
১. হালীমা সা’দিয়া-
যার পবিত্র স্তন থেকে দুধপান করেছেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যার স্নেহ- মমতায় তারঁ শৈশব ছিল ভালোবাসাপূর্ণ, যার মহত্ত্ব ও দিক নির্দেশনা নবীজিকে সজ্জিত করেছিল নৈতিকতা ও মর্যাদার অলঙ্কারে তিনিই জগদ্বিখ্যাত মহিয়সী হালীমা সা’দিয়া।
এই মহিয়সী নারী যখন বার্ধক্যের সীমা পেরিয়েছিলেন, তখন তিনি নিজের চোখেই দেখতে পেলেন সেই পিতৃহীন শিশু হয়েছে আরবজাতির অবিসংবাদিত নেতা, ইনসানিয়্যাতের রাহবার, দিশারি আর মানবতার নবী। তিনি তাঁর রবের প্রতি, তাঁর উপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি।
২. ছফিয়্যাহ বিনতে আব্দুল মুত্তালিব-
ঐতিহাসিকদের মতে, ইসলামে প্রথম মুসলিম মহিলা, যিনি একজন মুশরিককে হত্যা করেছিলেন- আল্লাহর দ্বীনকে বাঁচানোর জন্য। যিনি ছিলেন ইসলাম গ্রহণকারী, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নকারী মুমিনদের প্রথম কাতারে। তিনি হলেন নবীজির ফুপু, আব্দুল মুত্তালিবের ছফিয়্যাহ হাশেমী ও কুরায়শী।
তিনি ওহুদের যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। শত্রুর আক্রমণে নিহত ভাইয়ের ছিন্নভিন্ন লাশ দেখেও তিনি ধৈর্য হারাননি। খন্দকের যুদ্ধে মুশরিককে হত্যা করে অসাধারণ বীরত্ব দেখিয়েছেন।
৩. ফাতিমাতুয যাহরা-
নবীজির স্নেহ ভালোবাসার ফুল, ফাতিমাতুয যাহরা। তিনি জান্নাতী নারীদের সর্দারনী, জান্নাতী যুবকদের দুই সর্দার পুত্রের জননী। তবু তাঁর জীবন প্রণালি ছিল সরল ও সাধারণ। চাকচিক্য ও বিলাসিতা কখনও তাকে স্পর্শ করতে পারেনি।
৪.আসমা বিনতে আবু বকর-
তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর সিদ্দীকের কন্যা। তাঁর পিতা, দাদা, স্বামী, পুত্র সবাই ছিলেন সাহাবী। আর বোন একজন সাহাবীয়া। তাকে ডাকা হতো “দুই ফিতাওয়ালী” নামে।
৫. নাসীবাহ আল মাযেনিয়া-
এই নারী সাহাবী ওহুদের ময়দানে প্রথম লড়াইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রিয় নবীজিকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে সর্বশক্তি চালিয়ে গেছেন। ইয়ামামার যুদ্ধেও তাঁর বীরত্ব অসাধারণ। এ যুদ্ধে তিনি তাঁর একটি হাত হারান তিনি।
৬. রমলা বিনতে আবু সুফিয়ান-
রমলা ছিলেন আবু সুফিয়ানের মেয়ে। আর আবু সুফিয়ান ছিলেন ইসলামের ঘোর বিরোধী। ইসলামের গ্রহণের জন্য এই নারী সাহাবী ও তাঁর স্বামীকে পড়তে হয় চরম দুর্দিনে। জীবনের অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পরবর্তীতে তিনিই নবীজির সহধর্মিণী হিসেবে সৌভাগ্য লাভ করেন।
৭. গুমাইছা বিনতে মিলহান-
তাঁর ডাকনাম ছিল উম্মে সুলাইম। মদিনাবাসীর মতে, সকল নারীদের চেয়ে মোহর ছিল অধিক মর্যাদাপূর্ণ কারণ তাঁর মোহর ছিল ইসলাম।
স্বামী সফরে থাকাকালীন তাঁর পুত্রের মৃত্যুতে তাঁর ছবর আর স্বামী ফিরে এলে সেই খবর দেয়ার ধরণ পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
৮. উম্মে সালমা-
এই নারী সাহাবীকে বলা হতো আরবের বিধবা। কিন্তু পরে রাসূলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তিনি হয়ে গেলেন উম্মুল মুমিনীন অর্থাৎ সকল মুমিনের মা।
#মন্তব্যঃ
“নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবনী”- বইটি থেকে জানা যায় এমন সব নারী সাহাবীদের বীরত্ব গাঁথা ঘটনাবলী, যারা দুনিয়া এবং আখিরাতে বিপুল সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হয়েও কত কষ্ট-ক্লেশ ভাবে জীবন অতিবাহিত করেছেন। বিপদে-আপদে ধৈর্যহারা না হয়ে ছবর করেছেন। ইসলামের কল্যাণে নিজেদের, পুত্রদের বিলিয়ে দিয়েছেন। এসব থেকে শিক্ষা নিতে হয় আমাদেরও। আর এজন্য প্রত্যেকেরই বইটি পড়া উচিত।
মেহেরুন নেছা – :
আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা তাদেরকে এমন অবস্থায় নিয়ে গেছে তা যে কোনো পাঠকের মনে ঈমানী শক্তির সঞ্চার করবে এরকম কিছু ঘটনা স্থান পেয়েছে। কিছু ঘটনা এরকম কথা স্বরণ করিয়ে দেয় যে নারী সাহাবীরাও কোনো দিক থেকে কম যান না। তারা তাদের ঈমানী শক্তি ও ইসলামের প্রতি ভালোবাসা দ্বারা তাদের পরিবারকে যেভাবে গড়ে তুলেছেন সেটাও পাঠক হৃদয়ে নাড়া দিতে সক্ষম। ঘরে বাইরে যুদ্ধের ময়দানে সকল জায়গায় তাদের অবাধ বিচরণ। তাদের উত্তম ধৈর্য সবাইকে ভাবিয়ে তুলবে ইনশাআল্লাহ।
Mohammad Junayed – :
ইসলাম বিদ্বেষী সমাজ বরাবরই মুসলমানদের ব্যাপারে আঙুল উঁচিয়ে বলে যে, ইসলাম নারীদের অধিকার হরণ করেছে। অথচ ইতিহাস বলে ভিন্নকথা। ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, অগ্নিপূজারিসহ যতো ধর্ম পৃথিবীতে রয়েছে সব ধর্ম থেকে এখনও ইসলাম নারীদের অধিকারের ময়দানে সর্বাগ্রে রয়েছে।
কারণ ইসলাম মানবতার ধর্ম, ইসলাম সব ধর্মের প্রতি সব সময় উদার ও পরমসহিষ্ণু।
আপনি ইতিহাসের রৌদ্দোজ্জ্বল পাতা উল্টালে দেখবেন, ইসলামের নারীরা সব দিক দিয়ে এগিয়ে ছিলো। সমাজ, রাষ্ট, নেতৃত্ব, বিজ্ঞান, শিক্ষাসহ ধর্মের সকল শাখায় নারীর অবস্থান অবদান ছিলো চোখের পড়ার মতো। ইসলাম নারীকে যতোটা অধিকার দিয়েছে এই পুরুষতান্ত্রিক ঠিক ততোটাই কেড়ে নিয়েছে। নারী আজ সবখানে বঞ্চিত হচ্ছে। একশ্রেণীর পুরুষ নিজেদের লিপ্সা ও লোভার্ত মনের বাগাড়ম্বর পুরণ করার জন্য নারীদেরকে ঘরের বাইরে নিয়ে এসেছে। তাদেরকে দিয়ে যাচ্ছেতাই করাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইসলাম তোমাদের ঘরে আটকে রাখতে চাই আমরা তোমাদের মুক্ত পৃথিবীতে দাওয়াত দিচ্ছি। ওরা নারী স্বাধীনতার নামে নারীদের ব্যক্তিত্ব হরণ করছে। এ হেন মুহূর্তে নারীরা যদি তাদের প্রকৃত স্বাধীনতা ফিরে পেতে চায় তাহলে হযরত মহিলা সাহাবিদের জীবনাদর্শে তাদের জন্য রয়েছে আবে হায়াত।
মহিলা সাহাবিরা কিভাবে ইসলাম পালন করেছেন, ভারসাম্য রক্ষা করেছেন সংসার সমাজ ও ঘরকন্যা তারই বাস্তব আলেখ্য ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা রহ.-এর সুয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়্যাত বা মহিলা সাহাবিদের ঈমানদীপ্ত জীবন। এই বইয়ে আপনিÑ
১.রাসুল সা.-এর দুধ মা হালিমা সাদিয়া
২.সফিয়্যাহ বিনতে আবদুল মুত্তালিব
৩.নবীজীর স্নেহ ভালোবাসার ফুল হযরত ফাতিমাতুয যাহরা
৪. হযরত আসমা বিনতে আবু বকর (দুই ফিতাওয়ালি)
৫. নাসিবাহ আল মাযোনিয়া
৬. রমলা বিনতে আবি সুফিয়ান
৭. গুমাইছা বিনতে মিলহান (উম্মে সুলাইম)
৮. উম্মে সালমা (আরবের বিধবা)
রাদিয়াল্লাহু আনহুন্নাদের মতো মহান কজন মহিলা সাহাবিদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। রমজান আগত। আসুন আমরা এইসব মহিলা সাহাবিদের জীবনী পড়ি। তাঁদের ত্যাগের কথা হৃদয় দিয়ে অনুভব করি। আমরা ইসলামের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় হোন, যাতে সবাই নিজেদেরকে ইসলামের আদলে গড়ে তুলতে পারি। আমীন।
Mahira – :
.
সেই সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগের কথা! মক্কাবাসীর ‘আল-আমিন’এর রিসালাত প্রাপ্তির পরের সময়কাল! বনী আদমের জন্য মহামানবের মাধ্যমে রাব্ব পাঠালেন ঐশীবাণীর নির্দেশিকা। সেই আলোর বিচ্ছুরণে চরম সত্যকে চিনতে দলেদলে ছুটে আসলো তৃষিত সব প্রাণ।সেই প্রাণগুলোর মধ্যে বিশাল একটা অংশ ছিলো নারী সাহাবিদের।
তাদের জন্য সত্যের পথে হাঁটার এই রাস্তা মোটেও কুসুমাস্তীর্ণ ছিলোনা। নবীজির ডাকে সাড়া দিয়ে কেউবা ছেড়েছেন মাতৃভূমি। কেউ হারিয়েছেন প্রিয়জন-প্রিয়মুখ!কেউ আবার মৃত্যুকে গ্রহণ করেছেন হাসিমুখে। তবু তাঁরা যে মহাসত্যের রঙ মেখেছিলেন তনুমনে, তার থেকে একচুল ও বিচ্যুত হননি। এতটাই দৃঢ় ঈমানের অধিকারীনী ছিলেনে তারা।
.
রব্বের সান্নিধ্যে লাভে এমনই কিছু নারী সাহাবীদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথাই “নারী সাহাবীদের ঈমানদৃপ্ত জীবন” বইটির উপজীব্য।
.
|বইয়ের আলোচনাঃ| বইটি ‘সুওয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়্যাত’ এর অনুদিত গ্রন্থ। আটজন নারী সাহাবিদের আলোকিত জীবন নিয়ে ৯৪ পৃষ্ঠার এই বইয়ের ব্যপ্তি।
বইয়ের অবতারণা নবীজির দুধমাতা হযরত হালিমা (রঃ) জীবনী দিয়ে।
.
(২) হযরত ছফিয়্যাহ (রাঃ)। জগদ্বিখ্যাত সেই প্রথমা মুসলিম বীরাঙ্গনা, যিনি এক মুশরিককে হত্যা করে ইতিহাস রচিত করেছিলেন।এই দুঃসাহসী নারী উহুদ যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। আপন ভাই শহীদ হামজার বিকৃত লাশ দেখেও রবের সন্তুষ্টির আশায় তিনি ধৈর্য হারা হননি।
.
(৩) নবীজির কলিজা, জান্নাতের নেত্রী দু’জাহানের আইডল ফাতেমা তুয যাহরা (রাঃ) ‘র জীবন।
.
(৪,৫) আবুবকর (রাঃ) এর দু’কন্যা আসমা ও উম্মে উমারা। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এই দুই নারীর তিতিক্ষার তুলনা করা দুরূহ।
(৬) তারপরে,রাসূল (সঃ) এর প্রিয় খালা উম্মে সুলাইম এর জীবনবৃত্তান্ত।
.
(৭,৮) উম্মে হাবিবা ও উম্মে সালমা (রাঃ)। যারা জীবন নিয়ে পড়েছিলেন চরম বিপাকে। আর সেই অসহায়ত্বই হয়ে যায় তাদের জীবনের রবের রাহমাহ। প্রিয় নবী তাদের বিয়ে করে নিশ্চিত করেছিলেন নিরাপত্তা আর আকাশসম মর্যাদা।
.
|ভালোলাগা-মন্দলাগাঃ|
বইয়ের সবচেয়ে ভালোলাগার দিক হলো- শব্দের গাঁথুনি দিয়ে কাহিনীর প্রাণবন্ত চিত্রায়ন। যেন সবক’টি ঘটনা চোখের সামনে ঘটছে। অনুবাদ প্রাঞ্জলতা আনয়ন কিংবা সাহিত্যমানে কোনো ত্রুটি রাখেননি। বাইন্ডিং-কোয়ালিটি ঠিক আছে।তবে বানানবিভ্রাট চোখে পড়ার মতো।প্রচ্ছদটাও আরেকটু ভালো হলে
পারতো।
.
|পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ| রবের সাকুল্য লাভে রাযিয়াল্লাহু আনহুন্না’দের কণ্টকাকীর্ণ রাস্তার দুর্বোধ্য পথচলার কাহিনী শুনলেই নিজের জীবনোপলব্ধির অন্তঃসারশূন্যতা খুঁজে পাই! বইটা পড়ে চোখের পানি ফেলেছি,বিস্মিত হয়েছি, কখনোবা হেসেছিও। সত্য আর সুন্দরের জন্য তাদের ত্যাগগুলো আমাদের খুঁজে দিতে পারে জীবনের রসদ। ইনশাআল্লাহ।