ইউটার্ন
লেখক : জাফর বিপি
প্রকাশনী : নিয়ন পাবলিকেশন
বিষয় : ইসলামী সাহিত্য
পৃষ্ঠা : 160, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 3rd Edition, 2020
আইএসবিএন : 9789843458162, ভাষা : বাংলা
নিদ্রা বিভোর শিশুতোষ হৃদয়ে জাগরণের পরশ বুলিয়ে যে আহ্বান- সে তো ‘ইউটার্ন’।
নাস্তিকতা, সুশীল বিড়ম্বনা, নষ্ট চেতনা, জীর্ণ ঈমান ও শীর্ণ আমলের বলয় থেকে ব্যক্তি ও সমাজকে ‘টার্ন’ এনে দিতেই ‘ইউটার্ন’-এর সৃষ্টি।
গল্পের মোড়কে লেখক এই বইতে কথা বলেছেন বহুবিদ বিষয় নিয়ে। সমাজ, পরিবার, কুসংস্কার, অপপ্রচার সহ নানান বিষয়ে আলোচনা পর্যালোচনা। কথা বলেছেন, যুবক, বৃদ্ধ, স্বামী, স্ত্রী, বিভিন্ন শ্রেণির পাঠকদের উদ্দেশ্যে।
গল্পের আদলে যারা কুরআন সুন্নাহর শিক্ষা অর্জন করতে চান, সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান, তাদের জন্য চমৎকার একটি বই হতে পারে ‘ইউটার্ন।’
নিদ্রা বিভোর শিশুতোষ হৃদয়ে জাগরণের পরশ বুলিয়ে যে আহ্বান- সে তো 'ইউটার্ন'।
নাস্তিকতা, সুশীল বিড়ম্বনা, নষ্ট চেতনা, জীর্ণ ঈমান ও শীর্ণ আমলের বলয় থেকে ব্যক্তি ও সমাজকে 'টার্ন' এনে দিতেই 'ইউটার্ন'-এর... আরো পড়ুন
-
-
hotকুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সত্যায়ন প্রকাশন330 ৳231 ৳এককথায়— কুরআন কীভাবে আমাদের জীবনের কথা ...
-
hotজীবন যেখানে যেমন
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন275 ৳179 ৳আরিফ আজাদের নতুন বই 'জীবন যেখানে ...
-
hotগল্পগুলো অন্যরকম
লেখক : সিহিন্তা শরীফা, আনিকা তুবা, আফিফা আবেদিন সাওদা, আরমান ইবন সোলাইমান, আরিফ আজাদ, আরিফ আবদাল চৌধুরী, আরিফুল ইসলাম, আলী আবদুল্লাহ, জাকারিয়া মাসুদ, নুসরাত জাহান, মাহমুদুর রহমান, যাইনাব আল-গাযি, শারিন সফি, শিহাব আহমেদ তুহিন, শেখ আসিফ, সাদিয়া হোসাইন, সানজিদা সিদ্দীক কথাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন350 ৳227 ৳জীবনের কাছে মাঝে মাঝে গল্পও তুচ্ছ ...
-
save offফেরা ২
লেখক : বিনতু আদিলপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন190 ৳123 ৳জাগতিক নিয়মে, সব পাখি নীড়ে ফেরে। ...
-
hotপ্রদীপ্ত কুটির
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : সত্যায়ন প্রকাশন192 ৳142 ৳মাহির আর লাফিজা। ভার্সিটিতে পড়াবস্থায় দুজনের ...
-
save offদুজন দুজনার
লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার240 ৳120 ৳এক ছাদের নিচে একত্রে অনেক বছর ...
-
hotআই লাভ ইউ
লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার260 ৳130 ৳বাজারে অশ্লীল প্রেম আর রগরগে বর্ণনার ...
-
hotআই লাভ কুরআন
লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার600 ৳420 ৳প্রতিটি মুমিনই কুরআন কারীমকে ভালোবাসে। সবাই ...
-
save offজীবন জাগার গল্প ১৩ঃ ওগো শুনছো
লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার260 ৳130 ৳বইটি পড়লে অবিবাহিতদের মনে হবে এখনি ...
-
Tamanna aktar – :
জাযাকাল্লাহ খয়রন
Wafilife কে বইগুলো উপহার দেওয়ার জন্য। আমার বাড়িটা শহর থেকে অনেকটা দূরে থাকা সত্যেও বইগুলো পৌঁছে দিয়েছে। এতে তাদেরকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আমি সুন্দরভাবেই বইগুলো হাতে পেয়েছি।
firozaayat214 – :
নাস্তিকদের যুক্তিকে পরাজিত করতে আমাদের বিজ্ঞান সম্পর্কে ও যে জ্ঞান থাকা দরকার তার ই বহিঃপ্রকাশ নাস্তিকতার রঙ্গমঞ্চ।
সাহিত্যের গিরিপথে প্রকৃত সাহিত্য পাঠের আনন্দ উপভোগ করেছি আলহামদুলিল্লাহ।
আমাদের প্রতিটি ক্ষুদ্রাদিক্ষুদ্র বিষয়ের হিসেব দিতে হয়ে এই কথাটির বোধ হয়েছে আমার হিসেব আমার কাছে পড়ার পরে।
ধর্ষন শব্দের সাথে আমরা সবাই পরিচিত কিন্তু শব্দ ধর্ষন এরূপ মারাত্মক শব্দ কখনো কল্পনাতেও আসেনি। কিন্তু আমরা কত পবিত্র কিছু শব্দ কে ভীষণ ভাবে ধর্ষন করে মৃতপ্রায় করে দিচ্ছি তা আয়ানের এই অবিশ্বাস্য শব্দ ধর্ষনের গল্প না পড়লে অজানাই থেকে যেতো।
প্রকৃত সফলতা কোথায় এবং কিসে সেটাই বোধ করি আগে জানতাম না। আলহামদুলিল্লাহ এখন অনুধাবন করতে পারি সফলতার নিক্তিতে।
সুযোগের সৎ ব্যবহার করলে আশানুরূপ ফল শতভাগ নিশ্চিত সুযোগের ব্যবহার আয়ানের ঘটনা তার ই প্রতিছবি ।
আমরা সবাই ব্যস্ত!বড্ড বস্ত!নিজের জীবনের ক্যালকুলেশনটা করার মতো সময় ও আমাদের হয়ে উঠেনা।আলহামদুলিল্লাহ আয়ানের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনের ক্যালকুলেশন করতে শুরু করে দিয়েছি।
ব্রজ কন্ঠে আয়ান যেভাবে সবাই কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছে তা গ্রহন করতে পারলে নাস্তিকতা আর অশ্লীলতা গুলো দৌড়ে পালায়ন করবে বলে মনে হয়েছে।
খুন রাঙ্গা চিঠি যেনো খুন করে দিয়েছে আমার ভাবনা কে।শরীরের রক্তকনিকা যেনো হিম হয়ে গেছে।এখনো মনে হলে খুন হয়ে যাই।
পরিশেষে হতাশা, হীনমন্যতা নিয়ে এক যুবকের নরকের জীবন পেরিয়ে আলোর জীবনের সূচনা নিয়ে ইতি হয়েছে ইউটার্নের।
কামরুল হাসান – :
বিসমিল্লাহ..
আমরা মানুষরা হলাম এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী।সৃষ্টির সেরা জীব।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে সবচেয়ে সুন্দর আকৃতির সৃষ্টি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।আবার সেই তিনিই মানুষকে চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন।আরও বলেছেন নিশ্চয়ই মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।
আমাদের প্রতি মহান মনিবের এই দ্বিমুখীতার জন্য আমরাই দায়ী।আমাদেরকে সৃষ্টির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো তার আনুগত্য করা,দাসত্ব করা,প্রভুর স্থানে একমাত্র তাকেই অধিষ্ঠিত করা।তার নির্দেশিত পথে চলা, তার প্রেরণকৃত রাসূল (সা) এবং তার নাযিলকৃত গ্রন্থের অনুসরণ করা।যদি এগুলো থেকে কোনো বান্দা মুখ ফিরিয়ে নেয় তখনই অকৃতজ্ঞ হশে যায়।আমাদের রব্ব চান না আমরা যেন অকৃতজ্ঞের মতো কাজ করে চিরস্থায়ী জান্নাকে হারিয়ে ফেলি।তবুও কেন আমরা বুঝতে চেষ্টা করি না, কেন এখনো নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি,কেন শিশুর মতো আচারণ করছি!আর এই বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখেই লেখক বইটির পরিচয় তুলে ধরেছেন;নিদ্রা বিভোর শিশুতোষ হ্রদয়ে জাগরণের যে আহবান সে তো ‘ইউটার্ন’।
আমার অনুভূতিঃ
———————–
নাস্তিক এবং ইসলাম সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞানসম্পূর্ন মানুষদের উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে গিয়ে তিনি গৎবাঁধা প্রবন্ধ রচনা না করে,লেখক সেগুলোকে গল্পে রুপ দিয়েছেন।পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে সেই গল্গুগুলোতে রেখেছেন টানটান উত্তেজনা।আয়ান চরিত্রটিকে গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে তিনি সাজিয়েছেন সবগুলো গল্পের রহস্যময়ী চিত্রপট।শুধু তাই নয় গল্পগুলোর যে পরিবেশ আর কাহিনীপট,তা দেখলে যে-কারও মনে, ওই গল্পের তিনিও একজন অংশীদা। সাহিত্যের মোড়কে প্রতিটি পাঠকের মনকে তিনি মুখরিত করতে চেয়েছেন।আমার কাছে সবছেয়ে কষ্টকর অধ্যায়টি ছিল ‘খুন রাঙা চিঠি’। তিনি এই অধ্যায়টিতে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন মসলুমের আর্তনাদ,চিৎকার,হাহাকার।পাশ্চাত্যের বোমারু বোম্বিং এর তোপে সিরিয়া,ইরাক,ফিলিস্তিন, সোমালিয়ার দুধের শিশুটির বিছিন্ন হওয়া পা থেকে ফিনকি যে রক্তের ফোয়ারা বয়ছিল, ওগুলো রক্ত নয় ওগুলো ওদের নির্মম পতনের চূড়ান্ত দামামা।
বইটিতে আরো বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।লেখক কেন ইউটার্ন কে সৃষ্টি করেছেন সেটাও তিনি পাঠকদের কাছে প্রকাশ করেছেন – নাস্তিকতা,সুশীল বিড়ম্বনা,নষ্ট চেতনা,জীর্ণ ঈমান ও শীর্ণ আমলের বলয় থেকে ব্যক্তি ও সমাজকে টার্ন এনে দিতেই ইউটার্ন এর সৃষ্টি।
পাঠকের চোখে বইটিঃ
——————————
ইতিমধ্যে জাফর বিপির বেশ কিছু বই বাজারে প্রকাশিত হয়েছে। আপনারা যদি কেউ তার বই পড়ে থাকেন তাহলে দেখবেন যে তিনি কত সাবলীলভাবে তার রচনা গুলো পাঠকের সামনে উপস্থিত করেন। সাবলীল, প্রাঞ্জল,আর যোক্তিক লেখার মাধ্যমে তিনি পাঠকের মনে শক্ত জায়গা করে নিয়েছেন।এই বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়।নিজের ভাষাকে লেখক সাবলীলভাবে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করেন। বইটির বানান ঝরঝরে এবং প্রাঞ্জল।বইয়ের প্রচ্ছদ মোটামুটি অনেক সুন্দর।
সর্বোপুরি যারা দীর্ঘ সময় নিয়ে বইয়ের পেছনে শ্রম দিয়েছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁদের প্রচেষ্টা কবুল করুন,উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং বারাকাহ দান করুন। আমিন__
আব্দুর রহমান – :
.
▶ সার-সংক্ষেপ:-
বইতে মোট এগারোটি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্পই বইয়ের প্রধান চরিত্র আব্দুল্লাহ আয়ান কে ঘিরে আবর্তিত । সবাই তাকে আয়ান নামে ডাকে । সে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের ছাত্র। প্রতিনিয়ত সে ইসলামের বিধান মেনে চলতে প্রানপণে চেষ্টা করে। সমাজের যাবতীয় অশ্লীলতা, নাস্তিকতা, কুসংস্কার, ও মিথ্যা গোড়ামীকে যৌক্তিক ভাবে রুখে দিতে সে সর্বদা বদ্ধ পরিকর। এক্ষণে আমি বইতে থাকা কয়েকটি গল্প সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবো। ইনসাআল্লাহ-
,
বইয়ের প্রথম গল্পের নাম জেনুইন চাচা। এখানে গল্পে যেখা যায় এক বদমেজাজি তাহের চাচাকে। যে কিনা বিভিন্নভাবে তার স্ত্রীর উপর শাসন, ও অত্যাচার নির্যাতন করে। আয়ান কত সুন্দর নসিহতের মাধ্যমে তাহের চাচার এই অবস্থা থেকে তাকে ফিরে আসতে সহায়তা করলো ! আয়ানের বন্ধুর এক হৃদয়বিদারক কাহিনী ও মসজিদের ইমাম মুফতি ওয়ালিউল্লাহর যুক্তিসঙ্গত কিছু নসিহতও এই গল্পের গতিময়তা ধরে রেখেছে। পৃথিবীতে স্বামী -স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধন কত যে মধুর হয় তা এ-ই গল্প পড়েই যেন বুঝতে পারলাম ।
,
এর পরের গল্পের নাম নাস্তিকতার রঙ্গমঞ্চ। এখানে স্রষ্টা ও পরকাল অস্বীকারকারী নাস্তিক প্রফেসর মশিউর স্যারের ইসলামে ফিরে আসার কাহিনী। আয়ান কি সন্দর বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ইসলামকে উপস্থাপনের কৌশল সত্যিই নজর কাড়ার মত ।
,
সাহিত্যের গিরিপথ। এখানে আয়ান ও তার বন্ধুদের বিভিন্ন আলাপ ও কথাবার্তায় ফুটে উঠেছে সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয়। যেমন, সাহিত্য কি,সাহিত্যের গুরুত্ব, সাহিত্যের লেখার উদ্দেশ্য, ,লেখক পাঠকের সম্পর্ক। এছাড়াও সাহিত্যের প্রতি মুসলিম লেখকদের কিছুটা উদাসীনতা ও গুরুত্বহীনতার ফলে ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে তা ফুটে এসেছে। সাহিত্য নিয়ে এত সুন্দর আলোচনা মনে হয় আমি আর কোথাও দেখিনি।
,
অন্য লোকদের দ্বারা দেশে তো হাজারো কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের দ্বারা মাত্র কিছু টাকা ক্ষতি হলে আর কিই বা হবে। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এ-ই বিষয়গুলোর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানা যাবে ” আমার রাজ্যে আমার হিসেব ” গল্পে। এখানে আয়ান যেন সততা ও ন্যায়নিষ্ঠতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
,
শব্দধর্ষন: আমার মতো অনেকেই হয়তো মনে করছেন যে শব্দদূষণ লিখতে গিয়ে শব্দধর্ষন লিখেছি কি না? কিন্তু না এটা শব্দধর্ষণ। কিছু কিছু শব্দও যে ধর্ষণের স্বীকার হয় এ-ই গল্প না পড়লে হয়তো বুঝতামই না। জঙ্গি, জিহাদ, পর্দার বিধান, এগুলো কত সুন্দর অর্থপূর্ণ শব্দ হলেও সংবাদ সম্মেলন, টকশো, পত্র-পত্রিকা, সামাজিক যযোগাযোগ মাধ্যম, কলেজ ইউনিভার্সিটি, ও সাহিত্যে সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ক্রমাগত বিরুপ ব্যবহারের ফলে এ-ই শব্দ গুলো শুনতে খারাপ লাগে। পক্ষান্তরে নায়িকা, মডেল, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রভৃতি শব্দ খারাপ হলেও আমাদেরচকাছে শুনতে ভালো লাগে। যা এ-ই শব্দধর্ষণের কারনেই। আর হ্যা এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে কিন্তু ইউটার্ন বইয়ের এই গল্পটি পড়তেই হবে।
,
এছাড়াও বইতে রয়েছে সফলতার নিক্তি, সুযোগের সদ্যবহার, খুন রাঙা চিঠি, ক্যালকুলেশল, বজ্রমুষ্টি, ব্রেক দ্যা সার্কেল শিরোনামের দূর্দান্ত সব গল্প।
▶ স্বরণীয় উক্তি:-
(ক) কলমের মাধ্যমে একজন মানুষ মৃত্যুর পরও কথা বলতে পারে।
(খ) রক্ষক যখন ভক্ষক হয়, আইন তখন ক্যানভাসের বুলি।
(গ) আমি আকাশের ভিতর আব্বুকে খুজি, আর মেঘের ভিতর আম্মুকে। আর ঝরে বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায় খুজি ফিরছি তাদের আদরকে।
.
▶ ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ-
বইয়ের কভার ও পৃষ্ঠাসজ্জা খুব ভালো লেগেছে।
প্রত্যেকটি গল্প পড়ার পর ভিন্ন রকম স্বাদ ছিল। কোন গল্প পড়ে মুচকি হেসেছি। কোন গল্প পড়ে চোখ অশ্রুসিক্ত হয়েছে। শব্দচয়ন আর উপমার ব্যবহার ছিলো অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। বইটি পড়ে মনে হয়েছে আমি প্রকৃত সাহিত্যের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করলাম। অনেক কিছু শিক্ষণীয় বিষয় ছিলো । একটি কথা জোর দিয়ে বলতে পারি বইটি পড়ে কেউ হতাশ হবে না।
.
▶ সমালোচনা:-
বইতে সমালোচনা করার মত তেমন কিছু নেই। তবে
(ক) খুব অল্প কিছু জায়গায় টাইপিং মিসটেকের কারনে শব্দগুলো পড়তে সমস্যা হচ্ছিলো।
(গ) প্রত্যেক বইতে দেখা যায় বইয়ের প্রতি পৃষ্ঠায় উপরে এক পাতায় বইয়ের নাম এবং অপর পাতায় গল্পের নাম থাকে। যেটা ইউটার্ন বইতে না থাকায় কেমন জানি খাপছাড়া লাগছিলো।
.
▶ শেষ কথাঃ-
আল্লাহ তা’আলা লেখক ও প্রকাশক সহ বইটির সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন। দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য দান করুন। এ কাজে বারাকাহ দিন এবং আমাদের সবাইকে বইটি পড়ে তার থেকে ভালো বিষয়সমূহ জানার এবং মানার তৌফিক দান করুন….।
ফররুখ শিয়ার – :
বিপ্লবী এই ছেলেটির এসকল কর্মকাণ্ড নিয়েই ইউটার্ন বইটির বহমানতা।
এগারোটি গল্পের মাধ্যমে আয়ানের সমাজসংস্কার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। নিচে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো।
১.জেনুইন চাচা:
তাহের চাচা। খুবই বদমেজাজী প্রকৃতির লোক। বউ পেটানো তার একটা অভ্যাসই বলা যায়। তার এই এহেন কর্মকাণ্ড দেখে আয়ানের খুবই খারাপ লাগে। আয়ান তাহের চাচাকে স্বামী স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলে। স্বামী-স্ত্রীর মিলবন্ধন যে সুস্থ্য পরিবার গঠণের মূল উপাদান আহান তা তার চাচাকে বুঝায়। এছাড়াও তার বন্ধুর হৃদয়বিদারক কাহিনী এবং মসজিদের ইমাম সাহেবের নসিহত তাহের চাচাকে সঠিক পথ পেতে সাহায্য করে। এভাবেই আয়ান তাহের চাচাকে সঠিক পথে ফিরে আসতে সাহায্য করে।
২.নাস্তিকতার রঙ্গমঞ্চ:
এই গল্পটি নাস্তিকতার স্বরুপ উদঘাটনে লেখা। প্রফেসর মশিউর রহমান নাস্তিকতার বেড়াজালে বন্দি। কিন্তু তিনি সত্যসন্ধানী। আয়ান তাকে সত্যটা বুঝায় এবং সঠিক পথে ফিরে আসার দাওয়াত দেয়। আয়ানে যৌক্তিক আর বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনায় মশিউর স্যারের মনে দাগ কাটে। একসময় তিনি সঠিকপথে ফিরে আসেন।
৩.সাহিত্যের গিরিপথ:
এ গল্পে উঠে এসছে সাহিত্যের লক্ষ্য,উদ্দেশ্য,প্রয়োজনীয়তা এবং সুসাহিত্যের আজকের এই দুরবস্তার কারণ,তা থেকে উত্তরণের উপায় এবং লেখক পাঠকদের মধ্যকার সম্পর্কও উঠে এসেছে।
৪.আমার রাজ্যে আমার হিসেব:
ভুল যত ক্ষুদ্রই হোক,তাকে ভুলই বলতে হবে,একে সঠিক বলার উপায় নেই। তাই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভুলকেও এড়িয়ে যেতে হবে। এই গল্পটিতে আয়ান,তার মা এবং বোনের আলোচনায় এ সম্পর্কেই জানা যাবে।
৫.শব্দধর্ষণ: পর্দা,জিহাদ,জঙ্গি বিভিন্ন ভাষার খুব সুন্দর কিছু শব্দ। কিন্তু বর্তমানে পত্রপত্রিকায়,বইপত্রে,সংবাদে,বক্তৃতায়,কট-শোকে শব্দগুলোকে এত খারাপভাবে উপস্থাপন করা হয়,যে আমাদের তা শুনতেই খারাপ লাগে। অন্যদিকে মডেল,সেক্যুলারিজম ইত্যাদি শব্দগুলোকে ভালো শব্দরূপে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইউটার্ন বইয়ের লেখক একেই শব্দধর্ষন বলে উল্লেখ করেছেন এবং শব্দগুলোর প্রকৃত অর্থ পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।
৬.সফলতার নিক্তি:
শান্ত। আয়ানের কাজিন। বায়োলজি নিয়ে পড়ালেখা করছে। আয়ানের সাথে তার সফলতা বিষয়ে কথোপকথন হয়। সফলতা কি? কিভাবে সফলতা লাভ করা সম্ভব? কোথায় পাওয়া যাবে সফলতার দেখা? ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে আলোচনা হয়। গল্পটা পড়ে পাঠক সফলতা বিষয়ে খুব সহজেই জ্ঞানলাভ করতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ।
গল্পের শেষটা খুব হৃদয়বিদারক। লঞ্চ দূর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে পরপারের পথে পাড়ি জমায় শান্ত। যা আয়ানের পাশাপাশি পাঠকের মনেও ক্ষত সৃষ্টি করতে বাধ্য।
৭.সুজোগের সদ্যবহার:
নৌকায় এক ভন্ড পীরের মুরিদের সাথে আয়াত কথা হয়। আয়ান কথায় কথায় বুঝতে পারে লোকটি শিরক বিদআতে আক্রান্ত। আয়ান লোকটিকে সঠিক ইসলাম সম্পর্কে বুঝায় এবং কবরের প্রশ্ন ও তার জবাব সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে। লোকটি বুঝতে পারে যে তিনি ভুল পথে আছেন। আয়ান লোকটিকে সঠিক পথে ফিরে আসার দাওয়াত দেয়।
৮.খুন রাঙা চিঠি:
পৃথিবীর দেশে দেশে চলছে আজ মুসলিম নিধন। ইরাক,সিরিয়া,ফিলিস্তান,কাশ্মির,আরাকান সহ আরো অনেক দেশে। জঙ্গিবাদ দমনের নামে প্রায় বিশ বছর যাবৎ আফগানিস্তানে চলছে শান্তির ধ্বজাধারী মার্কিনীদের মুসলিম গনহত্যা।
নির্যাতিত মুসলিমদের এক রক্তভেজা উপাখ্যান তুলে ধরা হয়েছে এই গল্পে।
৯.ক্যালকুলেশন:
এই পৃথিবী বেঁচে থাকার জায়গা না। সবাইকেই একদিন মরতে হবে। অথচ আমরা এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্য কত খারাপ কাজ করছি। তেমনি একটি খারাপ কাজ জুয়ায় খেলরত থাকা এক দোকানিকে আয়ান চিরস্থায়ী সত্যের এই নসিহত প্রদান করে। গল্পটি পড়লে আমাদেরও চিরস্থায়ী জীবন সম্পর্কে বোধোদয় হবে বলে আমি মনে করি।
১০.বজ্রমুষ্টি:
মুসলিমরা আজ নানা দল,উপদলে বিভক্ত।সবাই নিজেদের হক এবং অন্যদের ভ্রান্ত প্রমাণ করা নিয়ে পরে আছি। আর এর ফায়দা লুটছে কাফিররা। আয়ান এসকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে এক হয়ে থাকার আহ্বান জানায়।
১১.ব্রেক দ্য সার্কেল:
আকাশ,হতাশায় জর্জরিত একজন ছেলে। সে তার জীবনে অতিষ্ট। তার তৃষ্ণার্ত মন চায় একটু আশার বানী। কিন্তু কে শোনাবে সে বানী। আগমণ ঘটে আয়ানের। তার হৃদয়স্পর্শী বক্তব্যে বেচেঁ থাকার সঠিক পথ খুঁজে পায় আকাশ,এবং পাবে তুমিও হে পাঠক।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
ইউটার্ন বইটিকে আমি বাংলা মুসলিম সাহিত্যের এক নতুন সংস্করণ বলেই মনে করি। কারণ একই বইয়ে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা তাও আবার গল্পের আঁকারে এবং সহিত্যের ছন্দময় গাঁথুনির সাহায্যে যা বাংলা মুসলিম সাহিত্যে সাধারণত দেখা যায় না।
বইয়ের গল্পগুলো পড়ে কারো মুগ্ধ না হওয়ার উপায় নেই। যেমন তার শব্দভান্ডার তেমনি সুসাহিত্য এবং লেখকের দরদ আর ভালোবাসায় ভরপুর। অসাধারণ সব যুক্তি,শব্দ,গল্প স্থান পেয়েছে বইটিতে।
বইটিতে যেমন স্বামী-স্ত্রীর অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তেমনি নাস্তিকতার উপযুক্ত জবাব দেয়া হয়েছে,যেমন দুনিয়ার সফলতার উপায় বর্ণিত হয়েছে তেমনি আখিরাতের সফলতার উপায়ও বর্ণিত হয়েছে।
এক কথায় অসাধারণ একটি বই।
বইটির প্রচ্ছদ,বানান,পৃষ্ঠা সবকিছুই উন্নতমানের।।
গল্পগুলিও অসাধারণ এবং সাহিত্যমানও উচ্চ পর্যায়ের। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।
বইটি আপনাকেও ভালো কিছু দিবে বলে আমি মনে করি,হে পাঠক ভাই।