সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ
অনুবাদক : ইমরান রাইহান
ইতিহাস বিজয়ী আর বিজয়কেই ফলাও করে; পরাজয় আর পরাজিতকে ঢেকে রাখে বিস্মৃতির আড়ালে; কিন্তু কোনো কোনো পরাজয় ও পরাজিত পক্ষ এতই মহিয়ান হয়, তা গৌরবের দিক দিয়ে অনেক বিজয়কে ছাড়িয়ে যায়—দূর বহু দূর। ইতিহাসের তেমনই পরাজিত এক মহানায়ক সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ।
জালালুদ্দিন ছিলেন খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের শেষ সুলতান। তিনিই তাতারদের প্রথম প্রতিরোধকারী। গ্রন্থটি তাঁকে নিয়েই রচিত। তবে খাওয়ারিজম সাম্রাজের ইতিহাসও সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণিত হয়েছে গ্রন্থটিতে।
তাতারঝড়ে যখন গোটা মুসলিম বিশ্ব লন্ডভন্ড, ঠিক সে মুহূর্তে ধুমকেতুর ন্যায় আবির্ভূত হয়েছিলেন মুসলিমবিশ্বের ত্রাতা হিসেবে। তাতারদের মোকাবিলায় তাঁর প্রতিরোধযুদ্ধ অসফল হলেও ব্যর্থ ছিল না মোটেও। অন্তত সাত-আটটি বছর তিনি আটকে রেখেছিলেন তাদের বিজয়ের স্রোত। দৌড়ের উপর রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন সেই বিশ্বত্রাস শক্তিকে। অনেক ক্ষেত্রে নাকানি-চুবানিও খাইয়েছিলেন পিশাচ তাতারদের। এই রক্তপিপাসুদের নিজের সঙ্গে ব্যস্ত রেখে দিয়ে গেছেন বাগদাদের খিলাফত, হারামাইন, মুসলিমবিশ্বসহ মানবসভ্যতার সুরক্ষা। সিন্ধু নদের তীরে বীরত্বের যে মহাকাব্য রচনা করেছিলেন এই অমর বীর, তা চিরকাল মুসলিম মুজাহিদদের জন্য হয়ে থাকবে প্রেরণার উৎস। ইতিহাসের মাজলুম সেই মহান সুলতানের জীবনালেখ্যই ফুটে উঠেছে এই গ্রন্থে।
গ্রন্থটি রচনা করেছেন পাকিস্তানের খ্যাতনামা আলিম, ইতিহাসবিদ ইসমাইল রেহান। দীর্ঘদিন তিনি জামিয়াতুর রশিদ করাচিতে অধ্যাপনা করেছেন। লিখেছেন ইতিহাস বিষয়ে জনপ্রিয় অনেক গ্রন্থ। তাঁর রচিত আফগানিস্তানের ইতিহাস গ্রন্থটিসহ আরও কিছু গ্রন্থ প্রকাশ করবে কালান্তর প্রকাশনী।
গ্রন্থটি অনুবাদ করেছেন ইমরান রাইহান। পড়াশোনা কওমি মাদরাসায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে লেখালেখিকেই ব্যস্ততা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আগ্রহ ইতিহাস বিষয়ে। তার রচিত ও অনূদিত আরও কিছু গ্রন্থ কালান্তর থেকে প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।
Out of stock
-
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳318 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotইসলামের ইতিহাস (নববী যুগ থেকে বর্তমান)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ470 ৳343 ৳অনুবাদক: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক সম্পাদক: মীযান ...
-
save offইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা
লেখক : হেদায়াতুল্লাহ মেহমান্দপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন414 ৳306 ৳'ইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা' বইটি মূলত ...
-
hotভারতবর্ষে মুসলিম শাসন : হাজার বছরের ইতিহাস
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম770 ৳447 ৳ভাষান্তর : মুহাম্মাদুল্লাহ ইয়াহইয়া অতিরিক্ত টীকা সংযোজন ...
-
hotঅবাধ্যতার ইতিহাস
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন385 ৳281 ৳যেভাবে আর যে কারণে ধ্বংস হয়েছে ...
-
hotসীরাত বিশ্বকোষ (১১ খণ্ড)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার11,000 ৳5,940 ৳মোট খণ্ড ১১ এবং পৃষ্ঠাসংখ্যা : ...
-
save offলস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি (ইসলামের হারানো ইতিহাস) (পেপার ব্যাক)
লেখক : ফিরাস আল খতিবপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন260 ৳190 ৳অনুবাদক: আলী আহমাদ মাবরুর পৃষ্ঠা: ২৮৬ লস্ট ইসলামিক ...
-
hotমাযহাব অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত
লেখক : ড.আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন333 ৳ – 400 ৳মাযহাবঃ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বইটিতে ...
-
hotনবীজির পাঠশালা ﷺ
লেখক : ড. আদহাম আশ শারকাবিপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ415 ৳303 ৳অনুবাদক – মুজাহিদুল ইসলাম মাইমুন সম্পাদনা – ...
-
featureমুসলিমজাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে (চার খণ্ড)
লেখক : ড. রাগিব সারজানীপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল হাসান1,450 ৳অনুবাদক : আবদুস সাত্তার আইনী (১ম, ...
-
jannatul mawa taslima – :
বইঃ সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ (‘শেরে খাওয়ারিজম জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ আওর তাতারি ইয়ালগার’ বইয়ের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ)
লেখকঃ মাওলানা ইসমাইল রেহান
অনুবাদ ও তথ্য সংযোজনঃ ইমরান রাইহান
প্রকাশকঃ কালান্তর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৭২
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
ইতিহাসের একজন পাঠক হিসেবে সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ কে নিয়ে নানা বাজে মন্তব্য শুনেছি ও পড়েছি।
ইতিহাসে পরাজিতিরা কখনো মহনায়ক হয় না, সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ ব্যাতিত।যুগে যুগে পরাজিতরা নত হয়ে সবার আড়ালে গিয়ে ধুকে ধুকে মরে। বিপরীতে বীর প্রতাপে এগিয়ে চলে বিজয়ীরা। কিন্ত ঠিক ৮০০ বছর আগে মধ্য এশিয়ায় এমন একজন সুলতান ছিলেন যার আতঙ্কে বিজিয়ীরা পর্যন্ত কাঁপতো। সেই পরাজিত সুলতানের নাম জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ। ইতিহাস কেবল বিজয় এবং বিজয়ীদেরকে তুলে ধরে। ফলে এর নিচে চাপা পড়ে যায় পরাজিতরা। কিন্তু কিছু কিছু পরাজিতরা এতই মহীয়ান, যে বিজয়ীদেরকেও ছাড়িয়ে যায়। সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ অধিকাংশ যুদ্ধে মোঙ্গলদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু সুলতান জালালুদ্দীনের কাছে মোঙ্গলরা কম পরাজয়ের স্বাদ আস্বাদন করে নি। এক বছরেই তিনি ৭টি যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাজিত করেন। সিন্ধু তীরের বাগ নিলাবের যুদ্ধে একবার স্বয়ং চেঙ্গিস খানকে পলায়ন করতে বাধ্য করেন। তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন, মোঙ্গলদের ত্রাস হয়েই বেঁচে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর মোঙ্গলরা তাঁদের দেবতার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত এই বলে যে জালালুদ্দীন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
ইমরান রাইহান হাফি. লেখা পড়েছি বেশ কয়েকটা। । উনার অনুবাদে সম্ভ্রান্তের ছাপ স্পষ্ট। কৃতিত্বের ভারী বোঝা দেওয়া যায় তার উপর। বর্তমান সময়ে বাঙলা ভাষায় মুসলিম ইতিহাসের হারানো জৌলুস ফিরাতে যে কয়জন কাজ করছেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁদের লেখার মান পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত এবং তাদের লেখা ইতিহাস গ্রন্থগুলো নির্ভরযোগ্যও। আমার আর কিছু বলার নেই। ইতিহাসের আঁধারে হারিয়ে যাওয়া এই মহান সুলতানকে যথার্থভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। বইটি সকল শ্রেণীর পাঠকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।
রেটিংঃ ৫/৫
rafiahmeeeed0909 – :
আজ একজন জালালুদ্দিন শাহ এর প্রয়োজন
যে একা হলেও লড়বে প্রয়োজনে দিবে আত্মবিসর্জন
সুলতান জালালুদ্দিন খাওরিজম শাহ।একজন বীরের নাম।তাতার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক সিপাহসালার।যে দেওয়াল হলে দাড়িয়ে ছিলো তাতার আর মুসলিম উম্মাহর মাঝে।এমন একজন সুলতানের জীবনি সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরি।কিন্তু তার জীবনি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইতিহাস যে অবিচার করেছে তা নিত্যান্তই দুঃখজনক।সেই সাথে তার উপর আরোপ করা হয়েছে নানান অপবাদ।এক্ষেত্রে দুঃখজনক বিষয় হলো পশ্চিমা ইতিহাসবিদদের সাথে সাথে মুসলিম ইতিহাসবিদদেরোও কেউ কেউ তার উপর সমালোচনার বান চুড়ে মেরেছেন।আর সেসব অপবাদের ভীড়ে সুলতানের ত্যাগ,জিহাদি জজবা,আত্মবিসর্জনের নমুনা সবকিছু ঢাকা পড়ে রয়ে গেছিলো। আর সুলতানের সেই ত্যাগ,বিসর্জন আর জিহাদি জজবার ইতিহাসকে সবার সামনে তুলে ধরেছেন বর্তমান সময়ের একজন বিশিষ্ঠ ইতিহাসবিদ মাওলানা ইসমাইল রেহান তার “শেরে খাওয়ারিজম জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ অওর তাতারি ইয়ালগার” গ্রন্থে আর সেই গ্রন্থেরই সংক্ষিপ্ত অনুবাদ হলো বক্ষমান বইটি।বইটির অনুবাদ করেছেন আরেকজন প্রিয় লেখক ও অনুবাদক ইমরান রাইহান ভাই।বইটির অনুবাদ করা হয়েছে খুবই সাবলীলভাবে। বইটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রাচীন সূত্র থেকে সুলতানের জীবনকে বর্ণনা করা হযেছে। সুলতানের নিজের পরিবারকে নদীতে বিসর্জন দেবার বর্ণনাটি পড়ার সময় চোখ দিয়ে আনমনে বেড়িয়ে এসেছিলো অশ্রুর ফোঁটা।আপনজন ও বিশ্বস্ত বন্ধুদের থেকেও সুলতান হয়েছেন বিশ্বাসঘাতকতার শিকার।তারপরও উম্মাহর জন্য তাতারদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন নিরুদ্ধেশ হবার আগপর্যন্ত।
বইটির গুনাবলীর মধ্যে একটি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে আর তা হল এই বইয়ে উল্লেখিত ঘটনার প্রাচীন ও নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আহোরন।
এই বইটি পড়ে আপনি যেমন সুলতান সম্পর্কে জানতে পারবেন তেমনই তার উপর আরোপিত অভিযোগ সমুহেরও জবাব পাবেন। লেখক আরোপিত অভিযোগের উপর খুবই সুন্দর ও যৌক্তিকভাবে আলোকপাত করেছেন।
বইটির বাইন্ডিং ও কাগজের মানও আমার ব্যাক্তিগতভাবে ভালো লেগেছে।
বইটি কেনো পড়বেনঃ
১)বইটি পড়ার প্রধান কারণ হবে সুলতানের জীবন সম্পর্কে জেনে নিজেদের মধ্যে তারমতো জিহাদি জজবা ও উম্মাহর তরে জীবন বিসর্জনের ইচ্ছা লালিত করতে পারি
২)বইটি পড়ার আরেকটি বড় কারন হলো সুলতানের উপর আরোপিত অভিযোগের যথার্থতা সম্পর্কে অবগত হওয়া।
৩)আর বইটি পড়ার সবচেয়ে বড় কারন হবে আমার মতে,উম্মাহর পতনের কারণ সম্পর্কে জেনে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া।কেননা,সুলতানের পরাজয়ের সবচাইতে বড় কারন যেটি ছিলো তা হলো উম্মাহর মধ্যে একতা না থাকা।তিনি একা হয়ে লড়েছিলন সারাজীবন।আর সেই সমস্যাটা বর্তমানে আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। আর তাই সুলতানের ইতিহাস পড়ে তার পতন থেকে শিক্ষা নেওয়া আমাদের একান্ত দায়িত্ব
আতহার তানিম – :
ধরণঃ ইতিহাস
মূল্যঃ ৩০০৳
লেখকঃ ইসমাঈল রেহান
অনুবাদকঃ ইমরান রাইহান
প্রকাশনীঃ কালান্তর
ইতিহাস পরাজয় আর পরাজিতদের প্রশ্রয় দেয় না। সে পছন্দ করে বিজেতার বিজয় মালার পাপড়ি গুনতে। কিন্তু পরাজিত হয়েও অনেক বিজেতা বনে বনে যায় ইতিহাসের পাতায়। ঐতিহাসিকগণ লুকোচুরি আর নাক সিঁটকে যাকে অবহেলা করতে পারেন না। তাঁর সম্পর্কে লিখতেই হয়। এ ধরনের কালজয়ী মহাবীরদের একজন সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ।
পিতা আলাউদ্দিন খাওয়ারিজম শাহের খোয়ানো সাম্রাজ্যকে ফের ট্রান্স অক্সিয়ানা থেকে ককেশাস অবধি বিস্তৃত করেন।বিধ্বস্ত শহরগুলোকে উন্নতির দ্বারা আবাদ করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন রণাঙ্গনে। তৎকালীন নরখাদক সাম্রাজ্যের জোয়ারের বিপরীতে অটল মানবঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন।
বহু ঐতিহাসিক তাকে সাধারণ বীরের মর্যাদা দিয়ে ক্ষ্যান্ত হয়েছেন। তবে এমন ঐতিহাসিক ছিলেন এবং আছেন, যারা ইতিহাসের পাতায় তাঁর অবদানকে সগর্বে তুলে এনেছেন।
“খাওয়ারিজম শাহ ”গ্রন্থটি এই মহাবীরের জীবন উপাখ্যান নিয়ে রচিত,।যিনি তৎকালীন মোঙ্গল সাম্রাজ্যের স্থপতি চেঙ্গিস খানের অজেয় বাহিনী কে থমকে দিয়েছিলেন। চেংগিসপুত্র পর্যন্ত সন্ধি করে তার থেকে বেঁচে থাকতে চাইতো। গায়ে পরে যুদ্ধ বাঁধিয়ে বাবার মতো ভুল করতে চায়নি সে। সুলতান জালালুদ্দিন এর কারণে মধ্যপ্রাচ্য অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় মঙ্গল তাণ্ডব থেকে মুক্ত ছিল।
কিন্তু নিয়তির পরিহাস আর কাকে বলে। মুসলিম ভ্রাতৃত্বের শিকল ভেঙ্গে অন্যান্য মুসলিম সাম্রাজ্যের অধিপতিরা তার ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করে। গাদ্দারী ও শারীরিক অসুস্থতায় ভেঙে পড়ে তের শতাব্দীর সংগ্রামী তলোয়ার। অবশ্য মঙ্গল জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর তারাও সুলতানকে স্মরণ করেছিল। কিন্তু ততক্ষণে কুড়াল পা পর্যন্ত চলে যায়।
কতক ইতিহাস গ্রন্হে সুলতান জালালুদ্দিন সম্পর্কে বানোয়াট কিছু বর্ণনা রয়েছে। উক্ত বইয়ে সেগুলোর অগ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে।
সবমিলিয়ে মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে বইটি চমৎকার। বোদ্ধা অনুবাদকের কলমের ছোঁয়ায় বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য বইটি এক অনন্য কীর্তি।
shakilahammed2a – :
.
আর এভাবেই তাতারদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারী হিসাবে উঠে আসেন সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ। জ্বলে ওঠে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যে ইতিহাস থেকে যাবে সবার হৃদয়ে।
.
বইটাতে মানচিত্র সংযোগ করে দেওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। পাঠক বইটা পড়ার সময় এজন্য খুব সহজে সেই সময়ের ভৌগলিক অবস্থান ও রাজনীতিটা সাবলীল ভাবে বুঝতে পারবে। এটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।
.
বইটির অনুবাদ যথেষ্ট ভালো হয়েছে। বইটি পড়তে লাগল কোথাও এক ঘিয়েমি লাগবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় পুরো বই পড়তে লেগে কোথাও মনে হয় নি যে তথ্যর ঘাটতি রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো আলাপ-ই বাদ দেয়নি লেখক।
.
বইয়ের পেজের মান ও বাধায় খুবই ভালো ও মানসম্মত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। সব মিলিয়ে রেটিং ৫ এ ৫ না দিয়ে পারলাম না।
.
বই: সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজম শাহ
লেখক : ইমরান রাইহান, ইসমাইল রেহান
প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী
বিষয় : ইতিহাস ও ঐতিহ্য
পৃষ্ঠা : 272 টি
অনুবাদক : ইমরান রাইহান
ruhan46094 – :
লেখকঃ মাওলানা ইসমাইল রেহান
অনুবাদ ও তথ্য সংযোজনঃ ইমরান রাইহান
প্রকাশকঃ কালান্তর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৭২
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
ইতিহাসের একজন পাঠক হিসেবে সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ কে নিয়ে কিছু কিছু জেনেছি। তবে এই বইটি পড়ার আগে এরকম ব্যাপক আকারে জানা হয় নি। যা জেনেছি, তা হচ্ছে সুলতান জালালুদ্দীন ছিলেন উচ্চাকাঙ্খী, ক্ষমতালোভী, জালিম একজন শাসক। বক্ষ্যমাণ এই বইটি সুলতান জালালুদ্দীন এর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরেছে।
ত্রয়োদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে গোবির বুকে জেগে উঠা মোঙ্গল ঝড়ে বিপর্যস্ত মুসলিম উম্মাহর পক্ষ হতে যিনি সর্বপ্রথম হুঙ্কার দিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে জুলকারনাইনের সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় রুখে দাঁড়িয়েছেন, তিনি হলেন এই সুলতান জালালুদ্দীন। তখন মুসলিম উম্মাহর অবস্থা ছিলো সংকটাপন্ন। পূর্বের খাওয়ারিজম সাম্রাজ্য মোঙ্গলদের হাতে তছনছ হয়ে গিয়েছিলো। পশ্চিমের আইয়ুবী ও সেলজুকরা হয়ে গিয়েছিলো ক্ষমতালোভী। মাঝখানে ছিলো অপদার্থ আব্বাসী খলিফারা, যাদের কাজই ছিল শুধু ক্ষমতার গদি আঁকড়ে রাখা এবং সম্পদ জমা করা। সুলতান জালালুদ্দীন এদের কারো কাছে সাহায্য চাইলে কেউ তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। পুরো ঘুমন্ত মুসলিম উম্মাহর পক্ষ থেকে জাগ্রত হয়ে তিনি একাই ফরজে আইন আদায় করেছিলেন। মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে তিনি টানা দশ দশটি বছর যুদ্ধ করে গেছেন।
ইতিহাস কেবল বিজয় এবং বিজয়ীদেরকে তুলে ধরে। ফলে এর নিচে চাপা পড়ে যায় পরাজিতরা। কিন্তু কিছু কিছু পরাজিতরা এতই মহীয়ান, যে বিজয়ীদেরকেও ছাড়িয়ে যায়। সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ অধিকাংশ যুদ্ধে মোঙ্গলদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু সুলতান জালালুদ্দীনের কাছে মোঙ্গলরা কম পরাজয়ের স্বাদ আস্বাদন করে নি। এক বছরেই তিনি ৭টি যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাজিত করেন। সিন্ধু তীরের বাগ নিলাবের যুদ্ধে একবার স্বয়ং চেঙ্গিস খানকে পলায়ন করতে বাধ্য করেন। তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন, মোঙ্গলদের ত্রাস হয়েই বেঁচে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর মোঙ্গলরা তাঁদের দেবতার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত এই বলে যে জালালুদ্দীন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
সুলতান জালালুদ্দীনকে যদি পুরো মুসলিম উম্মাহ সাহায্য করত অথবা তাঁর পাশে দাঁড়াত। তাহলে হয়ত ইতিহাসের পাতা অন্যরকম হত। কিন্তু কেউ তাঁর পাশে না দাঁড়িয়ে সবাই তাঁর সাথে শত্রুতা ক্রয় করেছে।ফলে বিভিন্ন সময় তাঁকে আব্বাসীদের, সেলজুকদের, আইয়ুবীদের এবং দিল্লী সালতানাতের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। সব বাঁধা অতিক্রম করে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ আইয়ুবীদের হাতে তিনি পরাস্ত হন। কারণ আইয়ুবীরা ছিলো তখনকার বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বাহিনী। তারা বিগত অর্ধশতাব্দী ধরে ক্রুসেডে লড়াই করে আসছিল। বিশ্বের যেকোনো বাহিনীকে পরাজিত করার সামর্থ্য তাঁদের ছিলো। আইয়ুবীদের হাতে পরাস্ত হবার পর সুলতান জালালুদ্দীন এর সকল শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। অবশেষে জনৈক কুর্তি আততায়ীর হাতে শাহাদত বরণ করেন।
মাওলানা ইসমাইল রেহান প্রত্যেক বিষয়ের খুটিনাটি আলোচনা করেছেন। মুল বইটি ৬০০ পৃষ্ঠার মতো হলেও এই বইয়ে(সংক্ষিপ্ত অনুবাদে) গুরুত্বপূর্ণ কোনো আলোচনাই বাদ যায় নি। আবার কোথাও বিস্তৃত আলোচনাও আসে নি। অনুবাদক এমনভাবে বইটি সংক্ষিপ্ত করেছেন, কোনো পাঠকই একঘেয়েমি অনুভব করবে না, ধৈর্যহারা হবে না। অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও সহজ ভাষায় তিনি বইটি অনুবাদ জরেছেন। ইতিহাসের আঁধারে হারিয়ে যাওয়া এই মহান সুলতানকে যথার্থভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। বইটি সকল শ্রেণীর পাঠকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।