সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগির
সম্পাদক:
১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে পানিপথের যুদ্ধে ইবরাহিম লোদিকে পরাজিত করে সম্রাট বাবরের হাতে প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দুস্থানের ইতিহাসে সবচেয়ে সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী সাম্রাজ্য—ইতিহাসের পাতায় যা ‘মোগল সাম্রাজ্য’ নামে চির ভাস্বর হয়ে আছে। হিন্দুস্থানের বুকে সর্বশেষ নেতৃত্ব দেওয়া তৈমুরের বংশোদ্ভূত এ মোগলদের হাতেই তদানীন্তন সময়ে জ্ঞানবিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা-দীক্ষা ও সমরবিদ্যা—এককথায় সবকিছুতেই উন্নতি ও সমৃদ্ধির শীর্ষ শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল হিন্দুস্থান।
বাবর, হুমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের পর সালতানাতের বাগডোর হাতে নিয়েছিলেন এই সাম্রাজ্যের সবচেয়ে ন্যায়পরায়ণ, বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও আলোচিত শাসক সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগির—যিনি দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে সুদীর্ঘ ৫১ বছর সাম্রাজ্য পরিচালনা করেছিলেন।
বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি এ ন্যায়পরায়ণ সুলতানেরই বর্ণাঢ্য শাসনামলের ঐতিহাসিক ধারাভাষ্য। জন্ম, বেড়ে ওঠা ও সিংহাসনে আরোহণের প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর ‘জিহাদি-জীবন’-এর প্রতিটি অধ্যায় এতে আলোচিত হয়েছে। বাঙলার কট্টর হিন্দুসম্প্রদায়, আফগানের খাইবার ও আফ্রিদি গোত্রসমূহ, সৎনামি, জাট আর রাজপুতদের বিদ্রোহ দমনসহ প্রাসঙ্গিক সব আলোচনা স্থান পেয়েছে। ইতিহাসের এ মজলুম সুলতানের ওপর উত্থাপিত সব অভিযোগ নিয়েও সরল আলোচনা করা হয়েছে। ধুলোবালি ঝেড়ে আড়ালে থেকে যাওয়া বাস্তবতাগুলো সামনে আনা হয়েছে। সর্বোপরি সুলতানের মৃত্যুর পর সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণও বাদ যায়নি।
-
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳314 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotঅবাধ্যতার ইতিহাস
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন400 ৳292 ৳যেভাবে আর যে কারণে ধ্বংস হয়েছে ...
-
save offইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা
লেখক : হেদায়াতুল্লাহ মেহমান্দপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন414 ৳310 ৳'ইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা' বইটি মূলত ...
-
hotইসলামের ইতিহাস (নববী যুগ থেকে বর্তমান)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ500 ৳365 ৳অনুবাদক: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক সম্পাদক: মীযান ...
-
hotইসলামের চার নক্ষত্র: চার ইমাম
লেখক : ড. সালমান আল আওদাহপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন335 ৳248 ৳অনুবাদ: ওয়াফি অনুবাদক টিম সম্পাদনা: মুফতী মাহমুদুল ...
-
hotবিলিয়ন ডলার মুসলিম
লেখক : খুরাম মালিকপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন200 ৳146 ৳হালাল পন্থায় অঢেল সম্পদ গড়ে তোলার ...
-
save offইমাম সিরিজ (৬টি বই)
প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন1,436 ৳1,048 ৳জ্ঞানের রাজ্যে ডুব দেবার এক নিরন্তর ...
-
hotভারতবর্ষে মুসলিম শাসন : হাজার বছরের ইতিহাস
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম770 ৳423 ৳ভাষান্তর : মুহাম্মাদুল্লাহ ইয়াহইয়া অতিরিক্ত টীকা সংযোজন ...
-
save offলস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি (ইসলামের হারানো ইতিহাস) (পেপার ব্যাক)
লেখক : ফিরাস আল খতিবপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন300 ৳216 ৳লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’র ভাষা প্রাঞ্জল ও ...
-
save offআফিয়া সিদ্দিকী (গ্রে লেডি অব বাগরাম) (পেপারব্যাক)
প্রকাশনী : প্রজন্ম পাবলিকেশন220 ৳169 ৳সংকলন: টিম প্রজন্ম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চলা কথিত ...
-
Md. Deen Islam – :
নামঃ দ্য গ্রেটেস্ট সুলতান অফ দ্য মুঘল এম্পায়ার আওরঙ্গজেব আলমগির
লেখকঃ ফাহাদ আবদুল্লাহ
প্রকাশনীঃ কালান্তর
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
রেটিং ৪.৮/৫
সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগির রহ.-এর ব্যাপারে প্রথম জেনেছি প্রাইমারি স্কুলের বই থেকে। ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ নামক কবিতাটি থেকে তাঁর মহানুভবতা, শিক্ষানুরাগী মনোভাব, উন্নত চরিত্র প্রভৃতি আন্দাজ করা যায়। পরবর্তীতে তাঁর সম্পর্কে আরো কিছু টুকরো তথ্য জেনেছিলাম। যেমন- তিনি হাফিজে কুরআন ছিলেন, কুরআনের অনুলিপি তৈরি করতেন, ফাতওয়ায়ে আলমগিরি তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয় ইত্যাদি। অর্থাৎ তাঁর ব্যাপারে একটা সুধারণা আমার সবসময়ই ছিলো। তবে এই মহান মানুষটিকে বিতর্কিত ও খলনায়ক বানানোর অপচেষ্টার চূড়ান্ত করেছে ইংরেজ, শিয়া ও ভারতীয় হিন্দু ইতিহাসবিদরা। বিনয় ঘোষ এর মতো ইতিহাসবিদরা তো তাঁর নামকে পর্যন্ত ব্যঙ্গ করে ‘ঔরঙ্গজীব’ লিখতে ছাড়েনি! (সূত্রঃ চেপে রাখা ইতিহাস, গোলাম আহমদ মোর্তজা)। আলোচ্য বইটি থেকে আমি দুইটি বিষয় ভালোভাবে জানতে পেরেছি-
ক. শাহজাহান পরবর্তী ভাইদের (দারা, মুরাদ, সুজা) সাথে আওরঙ্গজেবের ভ্রাতৃঘাতী লড়াইয়ের স্বরূপ। অর্থাৎ আওরঙ্গজেব কি ক্ষমতা দখলের জন্য অন্যায়ভাবে ভাইদের হত্যা করেছিলেন কিনা? বিশেষত এই বিষয়টি নিয়ে সুলতানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অনেক ইতিহাসবিদ।
খ. মারাঠা নেতা শিবাজির স্বরূপ। বাস্তবতা হলো, হিন্দুরা শিবাজিকে সাহিত্য ও সিনেমায় গ্লোরিফাই করলেও প্রকৃতার্থে সে আহামরি কোনো বীর ছিলো না! বরং সে ছিলো একজন কট্টরপন্থী মুসলিম বিদ্বেষী। পাশাপাশি একজন গণহত্যাকারী, ডাকাত, লুটেরা এবং আওরঙ্গজেবের উদারতার সুযোগে বারবার ওয়াদা ভঙ্গকারী!
বইটিতে রয়েছে মোট ৫টি অধ্যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে পঞ্চম অধ্যায়টিকে। যারাই বইটি সংগ্রহ করেছেন বা পড়বেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো এই অধ্যায়টি খুব ভালোভাবে পড়বেন। এখানে সুলতান আওরঙ্গজেবের উপর অন্যায়ভাবে আরোপিত অনেকগুলো অপবাদের খণ্ডন করা হয়েছে। যেমন-মূর্তি ভাঙ্গা ও উপাসনালয় বিধ্বস্ত করা, পিতাকে বন্দি করে রাখা, জিজিয়া কর আরোপ করা ইত্যাদি। আসলে কোনো একটি ঘটনাকে দেখেই বিচার করতে হয় না বরং এর প্রেক্ষাপট আমলে নিতে হয়; অন্যথায় অবিচার/বেইনসাফির আশঙ্কা থাকে! আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে হয়েছেও তাই। আওরঙ্গজেব বিদ্বেষী ইতিহাসবিদরা নির্দিষ্ট কিছু ঘটনাকে তিলকে তাল বানিয়ে প্রচার করেছেন, পাশাপাশি কোন প্রেক্ষাপটে সুলতান এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন—তা উল্লেখ করেননি। সুতরাং একথা বলাই বাহুল্য, এই নীতি অবলম্বন করলে দুনিয়ার যেকোনো ন্যায়পরায়ণ শাসককে প্রশ্নবিদ্ধ ও কলংকিত করা সম্ভব!
ভালো লাগার কয়েকটি দিকঃ
ক. বইয়ের শুরুতে মোঘল সাম্রাজ্যের একটি মানচিত্র যোগ করা হয়েছে; যা দেখে পাঠক বুঝতে পারবে—কত বিশাল ভূখণ্ড জুড়ে ছিলো এই সাম্রাজ্য।
খ. লেখক ভূমিকায় আওরঙ্গজেব সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বই সম্পর্কে পরিচয় করে দিয়েছেন; যা পরবর্তীতে এই বিষয়ক লেখালেখিতে গবেষকদের জন্য সহায়ক হবে।
গ. বইটির বানান নির্ভুলতা, পেইজ, মজবুত বাঁধাই।
সবশেষ কথা হলো, ধুলোকালি সরিয়ে বিশুদ্ধ ইতিহাস উপস্থাপনের অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটা চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের উচিত নিজেদের এই ইতিহাস পড়া, প্রচার করা। বইয়ের লেখক ও প্রকাশককে যাজাকাল্লাহ।
আতহার তানিম – :
একজন খোদাভীরু আলেম। দক্ষ শাসক। অকুতোভয় মুজাহিদ ও নিপুন সমরবিদ। ইতিহাসের মজলুম ব্যক্তিত্ব। অর্ধশতাব্দী সাম্রাজ্যের জন্য একের পর এক বিদ্রোহের মোকাবেলা করেছেন। অশ্বপৃষ্ঠে একবার কাবুল আরেকবার দক্ষিণাত্যে, এভাবে প্রজাদের নিরাপত্তা রক্ষায় অক্লান্ত সেবা করে গেছেন।
তার মৃত্যুর তিন শতাব্দীতে ভারতবর্ষের ইতিহাস নিয়ে রচিত হয়েছে শত গ্রন্থ। বাংলা ভাষায় “সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগীর” তার মধ্যে একটি মৌলিক গ্রন্থ। বইটি পড়ে বুঝলাম সঠিক তথ্য ও বর্ণনার জন্য লেখকের খাটুনি হয়েছে বেশ। কেননা ইতিহাসের সেই মহানায়ককে নিয়ে এ পর্যন্ত ডজনখানেক গ্রন্থ রচনা হয়েছে। যার প্রসিদ্ধগুলো হলো তথ্যের আস্তাকুঁড়। তার থেকে বেছে বেছে লেখক সত্যকে উঠিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন।
“আওরঙ্গজেব আলমগীর ”গ্রন্থে তার জন্ম থেকে শিক্ষাজীবন, সুবেদারি, ভাতৃযুদ্ধ, সর্বশেষ সিংহাসন লাভ। এই দীর্ঘ সোপান বেয়ে ইতিহাসের উচ্চতায় পৌঁছার ধারাবাহিক বর্ণনার সাথে সাথে পিতার বিরুদ্ধে গিয়ে সিংহাসন লাভের উদ্দেশ্য,এবং পরবর্তী সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা। এবং পরবর্তীতে তার শাসনামলে প্রশাসনিক অর্থনৈতিক সামাজিক ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও অগ্রগতি। সুলতানের মৃত্যু পরবর্তী উত্তরাধিকার লাভের ভাতৃযুদ্ধের বিবরণ। ইত্যাকার বিষয় লেখক তাঁর মজবুত লেখনীর মাধ্যমে তুলে এনেছেন বইটিতে।
একশ্রেণীর বিদ্বেষী ঐতিহাসিকদের কারণে অধিকাংশ ইতিহাস পাঠক তার প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করে। তারমধ্যে জিযয়া, দক্ষিণাত্য অভিযান, হিন্দু বিদ্বেষের অভিযোগ অন্যতম। উক্ত গ্রন্থে দলিল ও যুক্তির আলোকে এসব অভিযোগ খণ্ডন করা হয়েছে। এ কারণে বইটি একটি অসাধারণ গুরুত্ব বহন করে।
কেউ ভারতবর্ষের ইতিহাস অধ্যায়ন করতে চাইলে সুলতান আলমগীর সম্পর্কে জানার জন্য আবশ্যক। আর তাকে নিয়ে বাংলা ভাষায় মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে “আওরঙ্গজেব আলমগীর” পাঠককে তৃপ্ত করবে বলে আশা করি। তাছাড়া তাঁর ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে উক্ত বইটি তার গাইড হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
বইপোকার বইপ্রেমীদের আমি হলফ করে বলতে পারব সাহিত্য, ইতিহাসের অনন্য যে বইসমূহ, যেগুলো পড়ার আর চলচ্চিত্র বা টাইম মেশিনে পাঠক ঘটনা চরিত্র হয়ে যাওয়া একই কথা। ফাহাদ আব্দুল্লাহর রচিত বইটি তেমনিভাবে পাঠক কে আপন করে নিবে। সর্বশেষে হিন্দুস্তানে আমাদের পূর্বসূরীর বাস্তব জানতে আমাদের শিকড় বিবরণ উদঘাটন করতে আপনার প্রতি আমার আহ্বান
“এসো ভাই তাদের পথে চলি তাদের মত জীবন গড়ি
অতীতের নমুনায় একবার যদি ভাই জাগাতে পারি,
দেখিবে দুনিয়া করিবে চুম্বন আমাদের পায়ে পরি ”
Md. Deen Islam – :
লেখকঃ ফাহাদ আবদুল্লাহ
প্রকাশনীঃ কালান্তর
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
রেটিং ৪.৮/৫
সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগির রহ.-এর ব্যাপারে প্রথম জেনেছি প্রাইমারি স্কুলের বই থেকে। ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ নামক কবিতাটি থেকে তাঁর মহানুভবতা, শিক্ষানুরাগী মনোভাব, উন্নত চরিত্র প্রভৃতি আন্দাজ করা যায়। পরবর্তীতে তাঁর সম্পর্কে আরো কিছু টুকরো তথ্য জেনেছিলাম। যেমন- তিনি হাফিজে কুরআন ছিলেন, কুরআনের অনুলিপি তৈরি করতেন, ফাতওয়ায়ে আলমগিরি তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয় ইত্যাদি। অর্থাৎ তাঁর ব্যাপারে একটা সুধারণা আমার সবসময়ই ছিলো। তবে এই মহান মানুষটিকে বিতর্কিত ও খলনায়ক বানানোর অপচেষ্টার চূড়ান্ত করেছে ইংরেজ, শিয়া ও ভারতীয় হিন্দু ইতিহাসবিদরা। বিনয় ঘোষ এর মতো ইতিহাসবিদরা তো তাঁর নামকে পর্যন্ত ব্যঙ্গ করে ‘ঔরঙ্গজীব’ লিখতে ছাড়েনি! (সূত্রঃ চেপে রাখা ইতিহাস, গোলাম আহমদ মোর্তজা)। আলোচ্য বইটি থেকে আমি দুইটি বিষয় ভালোভাবে জানতে পেরেছি-
ক. শাহজাহান পরবর্তী ভাইদের (দারা, মুরাদ, সুজা) সাথে আওরঙ্গজেবের ভ্রাতৃঘাতী লড়াইয়ের স্বরূপ। অর্থাৎ আওরঙ্গজেব কি ক্ষমতা দখলের জন্য অন্যায়ভাবে ভাইদের হত্যা করেছিলেন কিনা? বিশেষত এই বিষয়টি নিয়ে সুলতানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অনেক ইতিহাসবিদ।
খ. মারাঠা নেতা শিবাজির স্বরূপ। বাস্তবতা হলো, হিন্দুরা শিবাজিকে সাহিত্য ও সিনেমায় গ্লোরিফাই করলেও প্রকৃতার্থে সে আহামরি কোনো বীর ছিলো না! বরং সে ছিলো একজন কট্টরপন্থী মুসলিম বিদ্বেষী। পাশাপাশি একজন গণহত্যাকারী, ডাকাত, লুটেরা এবং আওরঙ্গজেবের উদারতার সুযোগে বারবার ওয়াদা ভঙ্গকারী!
বইটিতে রয়েছে মোট ৫টি অধ্যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে পঞ্চম অধ্যায়টিকে। যারাই বইটি সংগ্রহ করেছেন বা পড়বেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো এই অধ্যায়টি খুব ভালোভাবে পড়বেন। এখানে সুলতান আওরঙ্গজেবের উপর অন্যায়ভাবে আরোপিত অনেকগুলো অপবাদের খণ্ডন করা হয়েছে। যেমন-মূর্তি ভাঙ্গা ও উপাসনালয় বিধ্বস্ত করা, পিতাকে বন্দি করে রাখা, জিজিয়া কর আরোপ করা ইত্যাদি। আসলে কোনো একটি ঘটনাকে দেখেই বিচার করতে হয় না বরং এর প্রেক্ষাপট আমলে নিতে হয়; অন্যথায় অবিচার/বেইনসাফির আশঙ্কা থাকে! আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে হয়েছেও তাই। আওরঙ্গজেব বিদ্বেষী ইতিহাসবিদরা নির্দিষ্ট কিছু ঘটনাকে তিলকে তাল বানিয়ে প্রচার করেছেন, পাশাপাশি কোন প্রেক্ষাপটে সুলতান এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন—তা উল্লেখ করেননি। সুতরাং একথা বলাই বাহুল্য, এই নীতি অবলম্বন করলে দুনিয়ার যেকোনো ন্যায়পরায়ণ শাসককে প্রশ্নবিদ্ধ ও কলংকিত করা সম্ভব!
ভালো লাগার কয়েকটি দিকঃ
ক. বইয়ের শুরুতে মোঘল সাম্রাজ্যের একটি মানচিত্র যোগ করা হয়েছে; যা দেখে পাঠক বুঝতে পারবে—কত বিশাল ভূখণ্ড জুড়ে ছিলো এই সাম্রাজ্য।
খ. লেখক ভূমিকায় আওরঙ্গজেব সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বই সম্পর্কে পরিচয় করে দিয়েছেন; যা পরবর্তীতে এই বিষয়ক লেখালেখিতে গবেষকদের জন্য সহায়ক হবে।
গ. বইটির বানান নির্ভুলতা, পেইজ, মজবুত বাঁধাই।
সবশেষ কথা হলো, ধুলোকালি সরিয়ে বিশুদ্ধ ইতিহাস উপস্থাপনের অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটা চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের উচিত নিজেদের এই ইতিহাস পড়া, প্রচার করা। বইয়ের লেখক ও প্রকাশককে যাজাকাল্লাহ।
Asif Ahmad – :
লেখক- ফাহাদ আবদুল্লাহ
সম্পাদক- আবদুর রশীদ তারাপাশী
প্রচ্ছদ- আবুল ফাতাহ
পৃষ্ঠাসংখ্যা- ২৪০
প্রথম প্রকাশ- একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০
মোগল শাসকদেরকে সম্রাট হিসেবে জেনে আসা যেকোনো ব্যক্তির কাছে সর্বপ্রথম বইটির পূর্ণাঙ্গ নাম “দ্য গ্রেটেস্ট সুলতান অব দ্য মোগল এম্পায়ার- আওরঙ্গজেব আলমগির” আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। কেননা মোগল শাসকদেরকে সচরাচর সুলতান বলে অভিহিত করা হয় না। আওরঙ্গজেব ছিলেন এমন একজন সুলতান যিনি মসনদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর মক্কার আমির থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের আমিরগণ, আফ্রিকার শাসকবৃন্দ এমনকি উসমানীয় সুলতান পর্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছেন। পূর্বসূরি আকবর যেখানে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে ইসলামী মূল্যবোধকে কবর দিতে চেয়েছিলেন, আওরঙ্গজেব তা পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হয়েছিলেন।
বই সম্পর্কেঃ
বইয়ের ভাষা সহজ ও বোধগম্য। বইটিতে মূলত আওরঙ্গজেবের সমগ্র জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে বিভিন্ন অধ্যায় এবং পরিচ্ছেদাকারে তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে সুবেদারি ও সুলতানি জীবন, মৃত্যু এমনকি মৃত্যুপরবর্তীকালে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার লড়াই পর্যন্ত সমস্ত ঘটনাসমূহকে পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হয়েছে। লেখক বইটিতে বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করার ক্ষেত্রে যেমন অমুসলিম লেখকদের লেখনী গ্রহণ করেছেন, ঠিক তেমনি তাদের মিথ্যাচার এবং কতিপয় মুসলিম ও শিয়া লেখকদের অপব্যাখ্যাসমূহকে বর্জন করে সেগুলোর জবাবও দিয়েছেন। অবশ্য কাল-নির্ঘন্ট অধ্যায়ে মারাঠা-ইংরেজ বন্ধুত্ব এবং ইংরেজ ও অন্যান্য ইউরোপীয়দের সাথে শান্তিচুক্তি ও ভারত-সাগর পাহারা চুক্তির কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলেও এসব বিষয় সম্পর্কে বইতে বিস্তারিত কোনো কিছু বলা হয়নি।
যেসকল কারণে বইটি পড়বেনঃ
১. বইটিতে আওরঙ্গজেব সম্পর্কে প্রাঞ্জল ভাষায় এবং ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করার রীতিকে অনুসরণ করা হয়েছে।
২. একজন মোগল শাসক পরিচয়ের পাশাপাশি ইসলামের খেদমতকারী হিসেবে তাঁর জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
৩. তাঁর সম্পর্কে প্রচলিত অপব্যাখ্যা, মিথ্যাচার এবং ভুলসমূহের ব্যাপারে আলাদাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
nameiseyahiaislam – :
বর্তমানে সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় তরুণ লেখক ফাহাদ আবদুল্লাহ মহান সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগীর নামক মৌলিক গল্প ভিত্তিক বইটিতে তিক্ষ্ণ মেধা খাটিয়ে ইতিহাসের চরম বাস্তবতা ও সব অভিযোগের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
পাঠ প্রতিক্রিয়া : লেখক আওরঙ্গজেব আলমগীর _এর জীবনকে কেন্দ্র করে বইটিতে যে ঐতিহাসিক চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, সেখানে উঠে এসেছে সুলতানের জন্ম বেড়ে ওঠা এবং সিংহাসনে ওঠার প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে আমৃত্যু পর্যন্ত , তার সংগ্রামী জীবন নিয়ে প্রতিটি অধ্যায়ে হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। এবং আলোচনা করা হয়েছে এই মহান সুলতানকে নিয়ে আনিতো সব মিথ্যা অভিযোগ সম্পর্কে। তাই আসুন, আওরঙ্গজেব আলমগীর ইতিহাসে ডুব দিয়ে সত্য সন্ধানী হয়ে উঠি।
ফাহাদ আবদুল্লাহ “সুলতান আওরঙ্গজেব আলমগীর ”
বইটির মাধ্যমে পাঠকমহলে বেশ সাড়া ফেলেছেন। এমন একটি বই পাঠকদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য ,পাঠকরা তার কাছে কৃতজ্ঞ । আল্লাহ তাকে উত্তম জাযা দান করুন। সেই সাথে কালান্তর প্রকাশনীর জন্যও রইল অজস্র শুভ কামনা।