স্ত্রীদের সাথে নবী ও মনিষীদের আচরণ
অনুবাদ: মাওলানা যায়েদ আলতাফ
আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি প্রতিটি দম্পতির বইটি পড়া উচিত, এবং অবশ্যই বইটি পড়া জরুরি। কারণ দাম্পত্য জীবন হচ্ছে পরকালের পাথেয়, বিবাহ কে শরিয়তে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে। দাম্পত্য জীবন মানেই হচ্ছে, সুখ দুঃখে একে অপরের পাশে থাকা, স্বামী রেগে গেছেন তো স্ত্রী চুপ থাকবেন,আবার স্ত্রী রেগে গেছেন তো স্বামী সহনশীলতার সাথে পরিস্থিতি শামলাবেন। কিন্তু বর্তমান সমাজের চিত্র পুরাই ভিন্ন। বিশেষ করে ঢাকা শহরের অবস্থা তো খুব ভয়াবহ। আমি যদি আপনাদের কে একটা রিপোর্টের কথা বলি,তাহলে যে কারো গা শিউরে উঠবে।
শুধু মাত্র ঢাকা শহরে, গত জুন থেকে অক্টোবর ৫৯৭০ টি তালাক পরেছে। উত্তর সিটিতে ২৭০৬ টি। আর দক্ষিণ সিটিতে ৩২৬৪ টি।
এবার চিন্তা করুন আমাদের সমাজের কি অবস্থা। সামান্য কিছুতেই আমরা সুন্দর সাজানো সংসার কে ভেঙ্গে চূরমার করে দিচ্ছি।
আসলে আমরা নারী পুরুষ উভয়েই, ধৈর্যের পরীক্ষায় হেরে যাচ্ছি, অথচ আমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যেও স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া-বিবাদ হত, তারা কখনো সহসাই এত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেন না। তখন তারা কি করতেন, এসব বিষয় জানতে অবশ্যই আপনাকে বইটি পড়তে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবার দাম্পত্য জীবনকে, সুখময় করে দিন আমিন।
-
-
hotকুররাতু আইয়ুন (যে জীবন জুড়ায় নয়ন)
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ175 ৳119 ৳এই লেখা শুধুমাত্র যারা ইসলাম অনুযায়ী ...
-
hotনবীজির সংসার ﷺ
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ267 ৳182 ৳অনুবাদ: আয়াতুল্লাহ নেওয়াজ পৃষ্ঠা: ১৬৭ হার্ড কভার নবীজি! আমাদের ...
-
hotকুররাতু আইয়ুন ২ (যে জীবন জুড়ায় মনন)
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ247 ৳168 ৳ডা. শামসুল আরেফীনের পেশা চিকিৎসা। কিন্তু ...
-
hotলাভ ক্যান্ডি (হার্ডকভার)
লেখক : জাফর বিপিপ্রকাশনী : নিয়ন পাবলিকেশন330 ৳238 ৳পৃষ্ঠা ১৭৬ কভার: হার্ড কভার একজন স্বামী কী ...
-
hotভালোবাসার চাদর
লেখক : ড.আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন195 ৳185 ৳একটি গল্প শুনেছিলাম। দাম্পত্য অশান্তির তিক্ত ...
-
hotপারিবারিক বিপর্যয়ের কারণ
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন80 ৳58 ৳অনুবাদক : আব্দুল্লাহ ইউসুফ সম্পাদক : মুফতি ...
-
hotবিয়ের আগে : ফ্যান্টাসি নয়, হোক বাস্তব প্রস্তুতি
প্রকাশনী : উমেদ প্রকাশ147 ৳96 ৳স্পিডব্রেকারের কাজ কি মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছতে ...
-
hotপরিবার প্যাকেজ
লেখক : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী, মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী, মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ, আরিফ আজাদ, উম্মে মুসআব, কবীর আহমদ কাসেমি, ফয়সাল বিন আলম, শাইখ ওয়াজদি গুনাইম1,324 ৳967 ৳পরিবার—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম। পরিবারই হচ্ছে ...
-
hotআদর্শ পরিবার গঠনে ৪০টি উপদেশ
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন175 ৳128 ৳অনুবাদ : হাসান মাসরুর সম্পাদনা : মুফতি ...
-
hotদ্য কেয়ারিং ওয়াইফ
লেখক : মোঃ মতিউর রহমানপ্রকাশনী : মিফতাহ প্রকাশনী300 ৳219 ৳শরঈ সম্পাদক : মুফতি নাজমুল ইসলাম কাসিমী বর্তমান ...
-
Ruponti Shahrin – :
সংসারে রাগ-অভিমান নিত্যনৈমিত্তিক ও স্বাভাবিক ব্যাপার। অভিমান কিংবা একটুতে ভেঙ্গে পড়া নারীর স্বভাবসুলভ একটি বৈশিষ্ট্য। নারীর অভিমানের পাল্লা ভারী হয়ে গেলে কিংবা পুরুষের বোঝার ভুলের কারণে তৈরি হয় ভুল বোঝাবুঝি। আর এভাবেই সম্পর্কের টানাপোড়নে বিচ্ছেদের মত নিকৃষ্ট বিষয়গুলো এখন প্রতিনিয়ত ঘটছে। একটু ভালোবাসা, ধৈর্য ও বাস্তবতা বদলে দিতে পারে সমাজের এই চিত্র। স্বামীকে ভালোবাসা স্ত্রীর কর্তব্য ও ইবাদাতের অংশ। এই দায়িত্ব কি শুধুই স্ত্রীর। নবী, রাসুলগণ (আঃ) ও মনীষীদের জীবনের নানা টুকরো ঘটনা ও শিক্ষা থেকে স্ত্রীর প্রতি আচরণের রুপরেখা জেনে নেয়া শ্রেয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষগণ নারীদের প্রতি দায়িত্বশীল, যেহেতু আল্লাহ একের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং তারা তাদের সম্পদ হতে ব্যয়ও করে।’ (সুরা: ৪ নিসা, আয়াত: ৩৪)।
কুরআনুল কারীমে নারীদের প্রতি পুরুষদের আচরণের বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বহু আয়াত নাযিল করেছেন। সংসার টিকিয়ে রাখাকেও আল্লাহ পাক অধিক পছন্দ করেন। যদিও তালাক একটি অপছন্দনীয় হালাল। বিবাহ হলো অর্ধেক দ্বীন। আর বিবাহের পরেই বাকি অর্ধেক দ্বীন পালনের অঙ্গীকার শুরু হয়ে যায় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে। স্ত্রীর সকল ভরণপোষণ, দেনমোহর, সাংসারিক চাহিদা পূরণ তো আর্থিক দায়িত্ব। কিন্তু একজন নারীর মন সবসময় ভালোবাসা আশা করে। তার খেয়াল রাখা, তার পছন্দ, অপছন্দের হিসেব রাখা, স্বামীর সামান্য হাসিমুখের জন্য সে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত।
আধুনিক সমাজে পুরুষেরা কর্মব্যস্ত। স্ত্রীর দিকে একটু সুন্দর করে তাকিয়ে মিষ্টি সুরে কথা বলার সময় নেই বললেই চলে। আর স্ত্রীরাও সংসারের নানা ঝামেলা সম্পুর্ণ একলা সামলে উঠে কেমন খিটখিটে মেজাজের হয়ে যাচ্ছেন। স্বামীর জন্য নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার অবকাশ নেই। দাম্পত্য জীবনে কলহ থাকবে না, এটা অসম্ভব। মনমালিন্য, রাগ-অভিমান ঝেড়ে ফেলে জানতে হবে ভালোবাসার ম্যাজিক মসলা।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাদের স্ত্রীদের জন্য উত্তম। ’ -তিরমিজি
এখনকার স্বামীরাও স্ত্রীদের ভালোবাসের। কিন্তু আলেম, মনীষী, নবী-রাসুলগণের সাথে পার্থক্যটা কোথায়? আমাদের পূর্বসূরীরা ভালোবাসতেন আল্লাহর খুশির জন্য। আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীকে ভালোবাসা ইবাদাতের শামিল বলে গণ্য করেছেন। স্ত্রীর প্রতি এই ভালোবাসা গভীর হওয়া উচিত। শুধু কাজে ও কর্মে নয়, বরং মুখেও প্রকাশ করতে হবে। স্ত্রীরা অন্তরের উপলব্ধির চেয়েও স্বীকারোক্তি পছন্দ করে।
পৃথিবীতে আল্লাহ পাক স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসাকে বিবাহের মাধ্যমে বৈধতা দান করেছেন। হারাম সম্পর্ক, ফিতনা থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন। আর এই মধুর সম্পর্ক আমাদের জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তাই রক্ষা করার জন্য আচরণগুলো জেনে নেয়া আবশ্যক। সেই সকল আলোচনাই বইটিতে করা হয়েছে।
পাঠ পর্যালোচনা ও মতামতঃ
সম্পদের প্রাচুর্য আমাদের দুনিয়ার মোহে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এত প্রাচুর্যের ভিড়ে সুখ-শান্তি আর বাসা বাধে না। নেই মায়া, নেই মমতার চাদর। আন্তরিকতা, অন্তরঙ্গতা, ভালোবাসা, সৌহার্দ, সম্প্রীতি, মূল্যায়ণ, কোমলতা দাম্পত্য জীবনে রুপকথার নামান্তর। বিলাসিতার নিচে যেন চাপা পড়ে গেছে হৃদয়ের সব সুর। স্ত্রী জানে না স্বামীর মনের খবর। স্বামী জানে না স্ত্রীর মনের অভিপ্রায়। কে কার কাছে কী চায়, কতটুকু চায় না- এ যেন অলীক, অবাস্তব, ধূসর গল্প। ইসলামী শরীয়াহ এই সম্পর্কে মধুর করতে কত রসদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে এ ধরণের একটি বই না পড়লে হয়ত অনেক পাঠক জানতেই পারবেন না।
ইসলাম দাবী করে নারীর পরিপূর্ণ অধিকার ও সম্মান শুধু ইসলামিক আইনই দিয়েছে। নবী-রাসুলগণ, মুসলিম মনীষী ও আমাদের পূর্বসুরীদের দাম্পত্য জীবনের এই খুঁটিনাটি গল্পগুলোই আপনার প্রেয়সীর মন জয় করতে সাহায্য করবে। স্ত্রীরা সংসারের অনেক দায়িত্ব সামলে নিয়ে সুখের নীড় তৈরি করেন। প্রত্যেকটি জিনিস মমতায় আগলে রাখেন। সকলের পছন্দ অপছন্দের খেয়াল রাখেন। স্ত্রীদের সাথে তাই স্বামীর চমকপ্রদ আচরণ করা কাম্য। স্ত্রীকে সম্মানজনক অবস্থানে রাখলে তিনি সত্যিকার অর্ধাঙ্গীনিতে পরিণত হতে পারেন।
এমনকি সংসার সুখের জন্য নারীপুরুষ দুজনের অবদান সমান। সেদিক থেকে নিজের পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য না দিয়ে ইসলামিক শিক্ষা হতে নিজের কল্যাণ ও মঙ্গল চিন্তা করে হলেও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জোর চেষ্টা করতে হবে। স্ত্রীগণের যেসব বিষয় অপছন্দ সেগুলো না দেখে, গুণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। ভালোবাসার উপাদান তো অবশ্যই রয়েছে। যে স্ত্রী তার এতদিনের পিতৃলয় ছেড়ে, পেছনের সব সম্পর্ক ছেড়ে নতুন একটি সংসারের সদস্যদের আপন করে নিচ্ছে, তার দিকে করূণা নয়, প্রেমের দৃষ্টিতে দেখা সুন্নাহ। এক লোকমা ভাত তুলে দেওয়া সুন্নাহ। মুহাব্বতের আমলেও কত আশ্চর্যজনক সওয়াব হাসিল হচ্ছে।
আল্লাহ নারী ও পুরুষকে একে অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আর পুরুষকে করেছেন নারীর কর্তা ব্যক্তি। তাই বৈবাহিক জীবনে গুরুদায়িত্বগুলো পুরুষের কাঁধে এসে পড়ে। এই চালিকাশক্তি হয়েও পুরুষকে ঘরের দিকটাও দেখতে হয়। নারীর অবুঝ মনের আড়ালে বেড়ে ওঠা শিশু সুলভ চরিত্রের পালে হাওয়া দিতে কর্তা ব্যক্তিটিকেই এগিয়ে আসতে হয়। কঠিন সময়ে ধরতে হয় হাত। ধৈর্য ধরে স্ত্রীর সমস্যা সমাধানে পাশে থাকাটাও অনেক চ্যালেঞ্জিং। আল্লাহ পাক বলেন-
“তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ করো,তবে এমন হতে পারে যে,আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখে দিয়েছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছো।” (সূরা নিসা : ১৯)
ধৈর্যধারণের পরেও সমাধানে না এলে শাসন বারণের কথাও উঠে এসেছে। কিছু স্ত্রীরাও পীড়াদায়ক। সেক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করলেও আল্লাহ পাক সেই স্বামীকে বিরাট প্রতিদান দিবেন। এমনকি অন্য ব্যক্তিকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে স্ত্রীর নিপীড়ন সহ্য করার উদাহরণও রয়েছে। হযরত নুহ ও লুত আঃ, ইব্রাহিম আঃ, ইউনুস আঃ, জাকারিয়া আঃ এবং সর্বপরি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে নজিরবিহীন ঘটনাপঞ্জি আপনার দাম্পত্য জীবনে নিয়ে আসবে অনাবিল শান্তি। বিভিন্ন বিশিষ্ট বুজুর্গ, বিখ্যাত শায়খ, আল্লাহর মারেফাত লাভকারী বুজুর্গ, দুনিয়াবিমুখ দার্শনিক সকলেই সংসার করেছেন। সংসারবিরাগী বা সন্ন্যাসী হওয়াকে ইসলাম প্রাধান্য দেয় না। তাই স্ত্রী জাতির প্রতি সদাচার সর্বাবস্থায় কল্যাণকর।
তরুণদের চোখে বিবাহ হলো রঙ্গিন চশমা লাগানো ফ্যান্টাসির জগৎ। বাস্তব প্রেক্ষাপট পুরোই উলটো। দাম্পত্য জীবন আল্লাহর পরীক্ষাস্বরুপ। তাই কাপুরুষের মত অবজ্ঞা না করে, সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়া পুরুষের জন্য ব্যক্তিত্ব বহন করে। বৈবাহিক জীবনের ভাঙ্গন শয়তানের ওয়াসওয়াসা। তাই শয়তানের কর্মপরিকল্পনাকে সফল হতে দিবেন না।
আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। মজার অনেক গল্পের ছলে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পাঠ। কিছু জায়গায় তো স্ত্রীদের আচরণে ও শিশুসুলভ বোকামি দেখে অনেক হাসি পেয়েছে। নবীপত্নী ও মনীষীদের স্ত্রীদের মাঝেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো তারা কীভাবে সমঝোতা করেছেন সেগুলোই বইটির প্রধান বিষয়বস্তু। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের সাথেও সেসব ঘটনার অনেকাংশে মিল খুঁজে পাওয়া যায় বলেই সমাধান মলাটের ভেতরে।
ছোট পরিসরে হলেও খুব সযতনে সাজানো গোছানো বইটির প্রচ্ছদ ও সুচীপত্রই প্রথমে পাঠকের নজর কাড়বে। দাম্পত্য জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন, কিংবা সুখী সংসারের মূলমন্ত্র জানতে আগ্রহী পাঠকের জন্য অবশ্যপাঠ্য। বক্ষমাণ বইটিতে বর্ণিত ঘটনাবলী স্ত্রীদের দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনে সান্ত্বনার পরশ বুলাবে। অন্তরে মহব্বত ও ভালোবাসা জাগাবে। পরিশুদ্ধ নিয়তে স্ত্রীর সাথে সদাচার আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের পথ সুগম করে ও জীবনকে ত্রুটিমুক্ত করে প্রশান্তি এনে দেয়।
একজন প্রেমময় স্বামীই পারেন একজন নারীকে প্রিয়তমারুপে আগলে রাখতে। প্রেমময় হতে আপনি কতখানি প্রস্তুত?
Azmin Akther Eva – :
∎বইটি কেন পড়বেন?
বিবাহ করেছেন, এমন খুব কম পুরুষই আছেন- যিনি বলতে পারবে, আমার পরিবারে কোনো অশান্তি নেই। বেশিরভাগের অভিযোগ পরিবারের শান্তি নেই, নেই কোনো আরাম-আয়েশ। কেনই বা এমন অশান্তি? কি করবেন? যদি আপনার জীবনে আপনার প্রিয়তমা অশান্তির কারণ হয়! বইটিতে আছে এ সকল প্রশ্নের উত্তর। যদি তার সমাধান তবে অবশ্যই বইটি আপনাকে পড়তে হবে।
∎পাঠ্যনুভূতি:
“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম।”
আমাদের সমাজের পুরুষেরা মনে করেন, স্ত্রীর নিপীড়ন সহ্য করা ও সবর করা লাঞ্চনা বা কাপুরুষতা। অথচ নবী-রাসূল ও মুসলিম মনীষীদের জীবনী অন্য কথা বলছে। আমাদের পুরুষ সমাজের কাছে দূরুহ মনে হওয়া কাজগুলো ই মূলত ‘স্ত্রীদের সাথে নবী ও মনীষীদের আচরণ’ বইটি তুলে ধরা হয়েছে।
বইটি পড়া শুরু করলে শেষ না করা অব্দি শান্তি পাওয়া যাবেনা। রসাত্মক বইটি যতক্ষণ পড়েছি হাসি থামিয়ে রাখতে পারিনি। যেহেতু, বইটিতে স্ত্রীলোকদের শিশুসুলভ আচারণ এবং স্বামীদের ধৈর্যের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে তাই স্বাভাবিক ভাবে মেয়েরা তা পড়ে ভীষণ হাসবে।
ভাইদের উদ্দেশ্যে দু কথা বলি যে,
বদকার স্ত্রীর সাথে সদাচরণ করুন। সর্বোচ্চ ধৈর্যধারন করে সহানুভূতিশীল হতে চেষ্টা করুন। যদি স্ত্রীর নিকট আপনার প্রাণনাশের আশংকা থাকলে তবে তালাকের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অন্যথায় সহ্য করে যেতে হবে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে। কারন তালাক হচ্ছে আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট হালাল বিষয় ।
∎ভালোলাগা- মন্দলাগাঃ
বইটি নিঃসন্দেহে উপকারী এবং উপভোগ্য একটি বই। প্রচ্ছদও মা শা আল্লাহ। এছাড়াও বইটির মলাট হার্ডকভারের যার আরো ভালো লেগেছে। কারণ দাম তুলনামূলক ভাবে খুব ই কম। গ্রন্থটি যেহেতু অনূদিত তাই এ কথাটি না বললেই নয় যে বইটির ভাষা ছিল সহজ সাবলীল। প্রতিটি পাতায় অতিরিক্ত লাভ কাটিং করা ডিজাইন টিও খুব ভালো লেগেছে। বইটি মূলত শুরু হয়েছে ভূমিকা দিয়ে এবং শেষ হয়েছে উপসংহার দিয়ে। তবে বইটিতে অনুবাদক বা লেখকের কোনো কথা ছিল না। এত চমৎকার একটি বইটিতে আমি লেখক এবং অনুবাদকের দু’কথা আশা করেছিলাম। এছাড়াও বইটিতে লেখক পরিচিতি বা অনুবাদক পরিচিত ছিল না। যদি তা থাকতো তবে আমরা তাদের সম্পর্কেও জানতে পারতাম। পরবর্তী সংস্কারে লেখক এবং অনুবাদক পরিচিতি আশা করছি।
∎বইটি কাদের জন্য?
এই বইটি বিশেষ করে পুরুষদের জন্য। কারণ বইটি পুরুষদের জন্য বড় একটি সবক। বইটি পাঠের মাধ্যমে পুরুষ ভাইরা স্ত্রীদের প্রতি সহনশীল আচারণ করবে বলে আশা রাখি। ঝামেলা, অশান্তির সময় তারা স্বরণ করবে স্ত্রীদের দুর্ব্যবহার এবং নিপীড়ন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ।
∎যে জন্য বইটি পাঠ করতে অন্যকেও উৎসাহিত করবেন :
বর্তমানের যুবক যুবতীরা বিয়ের আগে প্রচুর ফ্যান্টাস্টিতে ভোগে। আর বিয়ের পর যখন মন মতো হয় না শুরু হয় ঝামেলা, অশান্তি। অথচ দুঃখ কষ্ট আনন্দ বেদনা নিয়েই দাম্পত্য জীবন। কেউ বলতে পারবেন না ১০০% কোনো ঝামেলা ছাড়া সংসার জীবন পার করেছে বা করছে। তবে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহুর সন্তুষ্টির জন্যই সব কিছু।
মোছাঃ আতিকা সুলতানা – :
❝ স্ত্রীদের সাথে নবী ও মনীষীদের আচরণ ❞ বইটিতে আমরা ধৈর্যের অনন্য নিদর্শন দেখতে পাই নবী রসূল, সালাফদের জীবনে যেটা আমাদের জীবন প্রয়োগ করলে আমরা সফলকাম হব ইংশা আল্লহ।
ইমাম আবুল আসওয়াদ র. একটি সুন্দর কথা বলেছেন, বিবাহিত প্রত্যেকের এর উপর আমল করা উচিত। পঙক্তি দুটি ইমাম শাফেয়ী রাহিমাহুল্লাহ- এর খুব পছন্দের ছিল।
১. “তুমি আমায় ক্ষমা করা শেখো, তাহলে আমার স্থায়ী ভালোবাসা পাবে। আমি যখন প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হই তখন তুমি কথা বলো না।
২. কারন আমি দেখেছি ভালোবাসা ও ঘৃণা কোনো বুকে একসঙ্গে হলে, ভালোবাসা টিকতে পারে না”।
মুহাম্মাদ আনাস – :
নারী-পুরুষের মাঝে সৃষ্টিগত ভাবেই বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। নারীজাতি সৃষ্টিগতভাবেই শক্তি-সামর্থের বিবেচনায় পুরুষের তুলনায় দুর্বল। স্বভাবত কোমল হৃদয়ের অধিকারী। এটাই তাদের সৌন্দর্য। কিন্তু তাদের এই দুর্বলতা আর কোমলতার সুযোগ নিয়ে কিছু পুরুষ তাদের উপর অত্যাচার করে থাকে। যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমণকারী আল্লাহর প্রিয় বান্দারা কিন্তু এমন ছিলেন না। নারীজাতিকে তারা দিয়েছেন তাদের প্রাপ্য অধিকার এবং দিয়েছেন যথাযথ মর্যাদা। আর এটাই তাদেরকে করেছে কল্যাণময়। বস্তুত একজন মানুষ পারিবারিক জীবনে সুখী হলে তার গোটা জীবনটাই আনন্দময় হয়।
“স্ত্রীদের সাথে নবী এবং মনীষীদের আচরণ” বইটিতে আল্লাহ প্রেরিত প্রিয় বান্দা এবং তাদের পদাংক অনুসরণে সফল মনীষীদের জীবন থেকে কিছু কথা তুলে ধরা হয়েছে। শুরুতে রয়েছে অসাধারণ একটি ভূমিকা। ভূমিকাটিতে ফুটে উঠেছে স্ত্রীদের ব্যাপারে ইসলামের চমৎকার দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি। এরপর রয়েছে সূচিপত্র। যা দেখে খুব সহজেই অনুমান করা যায় বইটি বর্তমান সময়ের জন্য কতটা প্রসঙ্গিক। চমৎকার উপস্থাপনা, আকর্ষণীয় শব্দচয়ন এবং বিন্যস্ত নির্মাণশৈলীতে পরিপূর্ণ একটি বই।
পারিবারিক অধঃপতনের এই দুঃসময়ে নবী-মনীষীদের জীবন থেকে নেওয়া এই টুকরো কথাগুলী ভীষণ প্রয়োজন ছিল। স্ত্রীদের সাথে নবী-মনীষীদের ইনসাফপূর্ণ আচরণ সম্পর্কিত এই মুক্তা-কথাগুলো পুরুষের জন্য হবে দারুণ কিছু শিক্ষা, আর নারীদের জন্য হবে চমৎকার কিছু উপহার। নানা রকম পারিবারিক সংঘাত, সাংসারিক কলোহে মুষড়ে পড়া পরিবারে এই বইটি এনে দিবে সুখের আবহ। শ্রেষ্ঠদের পরিবার কথা এই বইটি সাংসারিক ঝামেলায় জর্জরিত পরিবারে প্রজ্জ্বলিত করবে আনন্দের দ্যুতি। ইসলামবিদ্বেষী নারীবাদীরা হবে শিহরিত। নব দম্পতি পাবে সুখময় জীবনের সুরভিত পাঠ। ইনশা-আল্লাহ!
ওয়া মা-তাওফিকী ইল্লা-বিল্লাহ!
muhammad ashraful – :
মা’কে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে স্ত্রী’কে মনের বিরুদ্ধে তালাক দেয়া যাবে না। কেন যাবে না সে সকল উত্তর সালাফকথন থেকে জানতে হলে এ বইটা পড়তে হবে। স্ত্রী’র কয়েকটা ভুলের কথা শুধু মনে রেখে তাকে অবহেলা বা একেবারে পরিত্যাগ করা কোনোভাবে যাবে না। স্বামী’কে এটা মনে রাখতে হবে, দোষে-গুণে সকল মানুষ। দোষ ছাড়া কোনো মানুষ নাই। আর স্ত্রী ও একজন মানুষ। তারও ভুল হবে। সে কোনো ফেরেশতা না। এর সাথে এটাও মনে রাখতে হবে, স্ত্রী’কে ভালোবাসার জন্য অনেক কারণও আছে। শুধু দোষ মনপ রেখে তার গুণগুলো ভুলে গেলে চরম অকৃতজ্ঞ হবেন।
অভিভাবকের কথায় স্ত্রী’কে তালাক না দেয়া প্রসঙ্গে সালাফদের মুক্ত সমতুল্য উপদেশ জানতে হলে এ বইটা সবার পড়ার প্রয়োজন আছে মনে করি।
বইয়ের প্রচ্ছদ খুব পছন্দ হয়েছে। সূচীপত্র, শিরোনাম নির্ধারণ হয়েছে বেশ দুর্দান্ত। প্রয়োজনীয় টিকা ব্যবহারের কারণে বইটার গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। আশাকরি বইটা যথেষ্ট পাঠকপ্রিয় হবে ইন শা আল্লাহ।