শিয়া মতবাদ ধারণা ও বাস্তবতা
লেখক : ড. রাগিব সারজানী
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী
বিষয় : ঈমান ও আকীদা
অনুবাদক : আল আমীন ফেরদৌস
পৃষ্ঠা : 160, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 2nd edition, 2021
অনেকের মনেই ভুল ধারণা যে, শিয়ারা আর দশটা মুসলিম উপদলের মতোই ইসলামের একটি শাখা মাত্র। আসলেই কি তারা অন্য আর দশটা উপদলের মতো কোনো উপদল? নাকি তাদের অনেকগুলো শাখা-উপশাখার মাঝে বেশিরভাগই শাখা-উপশাখাই কুফরি আকিদা-বিশ্বাসে পরিপূর্ণ?
.
এই বইয়ে শিয়াদের, উৎপত্তি ও প্রভাব বিস্তার, অতীত ও বর্তমান ইতিহাস, তাদের বিভিন্ন শাখা- উপশাখা ও সেসব শাখা-উপশাখার আকিদা-বিশ্বাস যেমন স্পষ্ট করা হয়েছে তেমনিভাবে আরব ও ইসলামি দেশগুলোতে শিয়াদের ভয়াবহতা, বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিধনে তাদের আগ্রাসী ভূমিকা ও অব্যাহত ষড়যন্ত্র নিয়ে তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
.
শিয়াদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ড. রাগেব সারজানীর এই বইটি বেশ ফলপ্রদ হবে ইন শা আল্লাহ।
অনেকের মনেই ভুল ধারণা যে, শিয়ারা আর দশটা মুসলিম উপদলের মতোই ইসলামের একটি শাখা মাত্র। আসলেই কি তারা অন্য আর দশটা উপদলের মতো কোনো উপদল? নাকি তাদের অনেকগুলো শাখা-উপশাখার মাঝে... আরো পড়ুন
-
-
save offকুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স550 ৳374 ৳আমাদের বিশ্বাস যে আকীদার ক্ষেত্রে কুরআন ...
-
hotআল-ফিকহুল আকবার
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স480 ৳326 ৳“আল-ফিকহুল আকবার” ইমাম আবু হানীফা (রহ) ...
-
শিশু আকিদা (১-১০ খন্ড)
লেখক : মাওলানা আবু তাহের মেসবাহপ্রকাশনী : দারুল কলম300 ৳শিশু আকিদা ১ - আল্লাহ শিশু আকিদা ...
-
hotঈমানের দুর্বলতা
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন108 ৳79 ৳দুর্বল ঈমানদার তার অন্তরের কাঠিন্যের বিষয়টা ...
-
featureতাওহিদের মূলনীতি -১ম খন্ড
লেখক : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিলপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন360 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা - প্রায় ৪০০ ছোটবেলায় শোনা ...
-
hotঈমান ধ্বংসের কারণ
লেখক : আব্দুল আযীয আত-তারীফীপ্রকাশনী : সত্যায়ন প্রকাশন192 ৳142 ৳ইসলামের বিশ্বাস ও চেতনা নিয়ে আজকাল ...
-
save offউসূলুল ঈমান
প্রকাশনী : সবুজপত্র পাবলিকেশন্স420 ৳302 ৳'আপনি যদি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আকাশসমূহ ...
-
hotএক (Ek)
লেখক : ড.আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন395 ৳288 ৳অনেকের ধারণা একসময় সবকিছু শূন্য ছিল, ...
-
Md. Kawsar Hossain Khan – :
এই নিয়ে বইটি দ্বিতীয়বার পড়া শেষ করলাম। যদিও শিয়া-সুন্নি বিভেদ অস্বস্থিকর, তাই এই সংক্রান্ত আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তারপরও কৌতুহলকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কার। প্রথমবার বইটি পড়ে তেমন বুঝে আসেনি তাই কয়েক মাসের ব্যবধানে আবার শুরু করলাম।
আমি বইটি থেকে সংক্ষেপে কিছু বিষয় সকলের সাথে এখানে উপস্থাপন করছি, যারা আরো জানতে ইচ্ছুক তাদের বইটি সংগ্রহ করে পড়া উচিত।
যায়েদী মাযহাব:
হযরত যায়েদ ইবনে আলী যাইনুল আবিদীন ইবনে হুসাইন রা. এর অনুসারীবৃন্দ তার মতবাদ এর উপর ভিত্তি করে একটি মাযহাবের গোড়াপত্তন ঘটায় যেটি যায়েদিয়া মাযহাব নামে পরিচিত। এই মাযহাবটিতে হযরত আলী রা. কে তিন খলিফার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়ার মতবাদ ব্যতীত সর্বক্ষেত্রেই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের সাথে পুরোপুরি একমত পোষণ করে।
রাফেজী মতবাদের সৃষ্টি:
একবার যায়েদ ইবনে আলী রহ. এর ভক্তদের মাঝে একদল তাঁর কাছে হযরত আবু বকর রা. ও ওমর রা. এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তাঁদের উপর আল্লাহর রহমাত কামনা করে দুয়া করেন। এতে এই উগ্র দলটি হযরত যায়েদ ইবনে আলী রহ এর তাদের প্রতি রহমত কামনার দুআকে প্রত্যাখ্যান করে তার দল থেকে বেরিয়ে যায়। ইতিহাসে তাদেরকেই ‘ রাফেজাহ’ বা রাফেজি বলা হয়। কেননা একদিকে তারা হযরত আবু বকর রা. ও ওমর রা. এর ইমামত কে অস্বীকার করেছে আরেক দিকে যায়েদ ইবনে আলী রহ. এর মতামতটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর এই রাফেজী দলটি থেকেই শীয়াদের সর্ববৃহৎ ‘ইছনা আশারিয়া’ দলটির উৎপত্তি।
ইসমাঈলা সম্প্রদায়:
মায়মূন আল-কাদ্দাহ নামের এক কট্টর ইহুদি মুসলিম সেজে মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে জা’ফর সাদেকের ঘনিষ্ট হয়ে তার সাহচর্য গ্রহণ করেন। এই লোকটি এক অদ্ভুদ কাজ করেছিলো। তার এক ছেলের নাম রেখেছিলো আব্দুল্লাহ সেই সাথে সে মৃত্যুর পূর্বে অসিয়ত করে যায় যে, তার সন্তানাদি ও নাতিদের নাম হুবহু মাহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈলের সন্তানাদি ও নাতীদের নামের সাথে মিল রেখে রাখা হয়। যাতে ইতিহাসের কোন এক স্তরে গিয়ে এ সমস্ত ইহুদীরা দাবি করে বসবে যে, তাদের বংশধারা আহলে বাইত বা নবী বংশের সাথে সম্পর্কিত। তার উদ্দেশ্য সফল হয়, সৃষ্টি হয় ইসমাঈলিয়া সম্প্রদায়। (৩৩)
কারামিতা সম্প্রদায়:
শীয়াদের মধ্যে আরেকটি চরমপন্থি গ্রুপ ছিলো যারা অন্যান্য শীয়া দল থেকে সবচেয়ে নিষ্ঠুর, দাঙ্গাবাজ ও সহিংস ছিলো। তারা সবচেয়ে বড় অঘটন যেটি ঘটিয়েছিলো তা হলো ৩১৭ হিজরীতে মসজিদে হারামের উপর হামলা করে সমস্যা হাজীদের হত্যা করে এবং পবিত্র হাজরে আসওয়াদকে লুট করে নিয়ে যায়, যা উদ্ধার করা হয় ২২ বছর পর ৩৩৯ হিজরিতে।
ইমামত:
ইমাম খোমেনী তার লিখিত কিতাব আল-হুকূমাতুল ইসলামিইয়্যায় উল্লেখ্য করেছেন, ‘ ইমামগণ এমন মর্যাদার স্তরে পৌছে যান যে স্তরে কোন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা কিংবা প্ররিত নবীও পৌঁছাতে পারে না।’ তাদের মত অনুযায়ী ইমামত অস্বীকারকারী কাফের এবং তাদের হত্যা করা হালাল মনে করে যদিও তারা মুসলিম হউন।
ইরাকের সুন্নী মুসলিম সংগঠন জাবহাত ওলামাউস সুন্নাহ এর মহাসচিব হারেছ আদ-দারী বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়টিতে প্রায় একলক্ষ্ সুন্নী মুসলিম হত্যা করা হয়েছে আর বিতারন ও উচ্ছেদ এখনও অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ইরানে সুন্নী মুসলমানরা খুবেই শোচনিয় অবস্থায় দিনযাপন করে আসছে, তাদের অনকে মসজিদ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। ভাবা যায় ইরানের রাজধানি তেহরানে নাকি সু্ন্নিদের কোন মসজিদ তৈরী করার অনুমতিও দেওয়া হয়নি যদিও তারা অনুমতির জন্য অনেক বছর ধরে চেষ্টা করে আসছে। শুধু তাই নয় তাদের প্রজন্মকে ইসনে আশারিয়া আকিদায় পাঠ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
উক্ত বইটিতে বর্তমান সিরিয়ার শাসক গোষ্ঠির অতীত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। নুছাইরি আলাবি সস্প্রদায়ের হাফেজ আল-আসাদ এর কথাও আলোচনায় এনেছেন যারা হযরত আলী রা. কে খোদা মনে করে থাকে, আর এই আকিদার কারনে তাদেরকে মুসলিম হিসেবে খারিজ করে দিয়েছে তৎকালীন আলেমরা। আরো আলোচনা করা হয়েছে বর্তমান লেবানন ও হিজবুল্লাহ আন্দোলন, হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠাতা মুসা আস-সদর, হাসান নাসুরুল্লাহর কার্যপদ্ধতি, ইয়েমেন ও হুতি আন্দোলন, ইরানের ইমাম এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে।
বাংলাদেশী মুসলিমদের জন্য এই বইটি কি উপকারে আসতে পারে?
আমাদের বাংলাদেশীদের মূল দুর্বলতা হলো জানতে না চাওয়ার আগ্রহ এবং অন্ধ আবেগ নিয়েই জীবন অতিবাহিত করা। যেহেতু বাংলাদেশে শীয়ার সংখ্যা খুবেই কম ফলে প্রভাবও খুবেই কম তারপরও তারা তাদের এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য বুদ্ধিভিত্তিকভাবে কাজে করে যাচ্ছে কৌশলের সাথে। তারা বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে তাদের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের মনের সাহাবাদের প্রতি বিদ্বেষ গোপন রেখে আহলে বায়েতের নামে সহানুভূতি অর্জনের কাজ করে যাচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছে আর এতোটুকু না পারলেও ইসলামি ধর্মের প্রতি সন্দিহান করে তুলছে । এতে অনেক সুন্নি শিক্ষিত মুসলিমও তাদের যুক্তির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, এবং ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছে শিয়াদের সম্পর্কে বিস্তারিত না জানার কারনে। আশাকরি বইটি পাঠে এই দেশের শিক্ষিত সচেতন মুসলিমরা আরো সতর্ক হবে।
শিয়াদের সাথে আমাদের আচরন কেমন হওয়া উচিত?
লেখকের বক্তব্য অনুযায়ী আমাদেরকে শীয়াদের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো দাওয়াত ও অন্তর্নিহিত নসীহত পেশ করতে হবে। যাতে করে তারা খাঁটি ইলমি গবেষনায় লিপ্ত হয়ে ও পাঠ করে দেখে তাদের ইতিহাস আর আকীদার আদ্যপান্ত……….। আশা করা যায় শীয়াদের মধ্যে যারা মুখলিছ, খাঁটি হৃদয়ের অধিকারী তারা তাদের ত্রুটিগুলো দেখার পর অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে, দিশা পাবেন সঠিক পথের। আর এমন তাওফিক দান করা আল্লাহর জন্য কঠিন কিছুই নয়।
যারা আরো জানতে আগ্রহী তাদেরকে বইটি পাঠের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের মতো সমাপ্ত করছি।