ঈমান ভঙ্গের কারণ
প্রকাশনী : সীরাত পাবলিকেশন
বিষয় : ঈমান ও আকীদা
ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব (রহঃ)-এর “নাওয়াকিদুল ইসলাম। যেখানে তিনি বলেছেন এমন দশটি বিষয় যার কারণে একজন মুসলিমের ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। আর সেই ১০টি কারণ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছেন শাইখ সুলায়মান ইবনু নাসির আল উলওয়ান। সেই মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ হয়ে আসছে “ঈমান ভঙ্গের কারণ” শিরোনামে।
.
প্রতিটি ঘরে, দ্বীনি মজলিসে, দ্বীনি ভাই-বোনদের সার্কেলে এই কিতাবের দারস হোক। সকলেই নিজেদের ঈমান নিয়ে সচেতন হোক। ঈমানের সাথে যেন আমরা বেঁচে থাকতে পারি, আর ঈমানের সাথেই যেন আমাদের মৃত্যু হয়। এটাই আমাদের আন্তরিক চাওয়া। এই বই সেই পথেই একটি প্রচেষ্টা। আলহামদুলিল্লাহ।
.
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১২
ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব (রহঃ)-এর "নাওয়াকিদুল ইসলাম। যেখানে তিনি বলেছেন এমন দশটি বিষয় যার কারণে একজন মুসলিমের ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। আর সেই ১০টি কারণ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছেন শাইখ... আরো পড়ুন
-
-
save offকুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স550 ৳385 ৳আমাদের বিশ্বাস যে আকীদার ক্ষেত্রে কুরআন ...
-
hotআল-ফিকহুল আকবার
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স480 ৳336 ৳“আল-ফিকহুল আকবার” ইমাম আবু হানীফা (রহ) ...
-
শিশু আকিদা (১-১০ খন্ড)
লেখক : মাওলানা আবু তাহের মেসবাহপ্রকাশনী : দারুল কলম350 ৳শিশু আকিদা ১ - আল্লাহ শিশু আকিদা ...
-
hotঈমানের দুর্বলতা
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন108 ৳80 ৳দুর্বল ঈমানদার তার অন্তরের কাঠিন্যের বিষয়টা ...
-
featureতাওহিদের মূলনীতি -১ম খন্ড
লেখক : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিলপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন360 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা - প্রায় ৪০০ ছোটবেলায় শোনা ...
-
save offউসূলুল ঈমান
প্রকাশনী : সবুজপত্র পাবলিকেশন্স420 ৳302 ৳'আপনি যদি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আকাশসমূহ ...
-
hotঈমান ধ্বংসের কারণ
লেখক : আব্দুল আযীয আত-তারীফীপ্রকাশনী : সত্যায়ন প্রকাশন192 ৳142 ৳ইসলামের বিশ্বাস ও চেতনা নিয়ে আজকাল ...
-
তাওহিদের মূলনীতি -২য় খণ্ড
লেখক : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিলপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন280 ৳অনুবাদ: ইলমহাউস অনুবাদক টিম অনুবাদ নিরীক্ষণ ও ...
-
কামরুল হাসান – :
বিসমিল্লাহ..
ঈমান।আপনার-আমার জীবনের সবচেয়ে দামি সম্পদ।এত দামি সম্পদ পাবার জন্যে আমাদের সংগ্রাম বা অধ্যবসায় করতে হয়নি বলে সম্পদটির মূল্য আমরা বুঝতে পারি না।মানুষের মাঝে ঈমান ভঙ্গের কারণ এর ভয়াবহতা গুরুতর ও ব্যাপক।অনেক মানুষ নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দেয় কিন্তু ইসলামের বাস্তবতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না।তাদের আকিদা-বিশ্বাস,ধ্যান-ধারণা ইসলাম ও কোরআন সুন্নাহর পরিপন্থী। কোরআন ও সুন্নাহর সাথে তাদের মতানৈক্যর কারণে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ঈমান কে তারা হারিয়ে ফেলে দিকভ্রান্তের মতো জীবনযাপনকরে ।অথচ সাহবারা যখন কোথাও একত্রিত হলে বলতেন, এসো ভাই আমরা একসঙ্গে বসে দ্বীনি আলোচনা করি, যার দ্বারা আমাদের ঈমান আরো চাঙ্গা হবে।
সাহাবারা (রা) তাদের ঈমানকে চাঙ্গা করার জন্য সবসময় ব্যস্ত থাকতেন,অথচ আমরা নিজেদের ঈমান হারিয়ে দুনিয়াবি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।কখন যে আমদের ঈমান আমাদের থেকে অনেক দূরে চলে গেলো, সেটাও বুঝতে পারি না, বুঝার চেষ্টাও করি না।কাটাতে থাকি ঈমানহারা এক কলুষিত জীবন।
আমরা মণি-মু, হীরা-জহরত,মূল্যবান সম্পদ, টাকা-পয়সা অনেক যত্ন করে আগলে রাখি কিন্তু ঈমানের সুরক্ষায় কতটুকু সচেতন হই?ঈমানহীনতার কারণে আমাদের পোহাতে হবে ভয়াবহ দুর্ভোগ,জ্বলতে হবে জাহান্নামের লেলিহান শিখায়।
বক্ষ্যমান বইটি ঈমানের অস্তিত্ব পরীক্ষার মাপকাঠি।’ঈমান ভঙ্গের কারণ’ বইটি শাইখ মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের ‘নাওয়াকিদুল ইসলাম’ গ্রন্থের বিস্তারিত রুপ।সাবলীল ভাষায় বইটির সুন্দর ব্যাখ্যা লিখেছেন শাইখ সুলায়মান ইবনু নাসির আল উলওয়ান।ঝরঝরে অনুবাদ করেছেন তারণ্যদীপ্ত প্রতিভাবাণ আলিম মাওলানা মাডউদ আলিমী।
জাহান্নামের লেলিহান অগ্নি হতে বাঁচার জন্য এবং ঈমানকে মজবুতভাবে নিজের মধ্যে শক্তভাবে ধরে রাখার জন্য বক্ষ্যমান বইটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য পড়া অতীব জরুরি।
Suraiya Akter – :
ইসলাম মানেই ঈমান আর একজন মুসলিম মানেই ঈমানের মিষ্টবাহক। ঈমান ছাড়া একজন মুসলিম আর মুসলিমের কাতারে থাকে না, খারিজ হয়ে কাফিরের কাতারে চলে যায়। তাই ঈমান রক্ষা করা একজন মুসলিমের কেবল দায়িত্ব-ই নয় বরং সর্বসাকুল্যে প্ৰয়োজন।
বইটির বিষয়বস্তু :
বইটিতে ঈমান ভঙ্গের দশটি কারণ অধ্যায় আকারে আলোচনা করা হয়েছে। শিরক, দ্বীন ইসলাম কে নিয়ে ঠাট্টা, কাউকে কাফির বলার প্রেক্ষাপট ছাড়াও ঈমান বিধ্বংসীকারি বিষয়গুলো এই দশটি কারণে উঠে এসেছে। কারণগুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাসআলার বর্ণনা লেখক পয়েন্ট আকারে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। কুরআন ,হাদীস সহ বিভিন্ন ইমামদের মতও তুলে ধরেছেন, সাবলীল এবং প্রাণচাঞ্চল্য ভাষায়।
.
পাঠ্যানুভূতি:
বইটি পড়তে গিয়ে মনে হয়ছে এমন কোন কাজ করেছি বা করছি না তো যা ঈমান ভঙ্গের কারণ হয়ে গেছে! লেখকের সুন্দরভাবে গুছিয়ে লেখার সিস্টেমকে বরাবরই প্রশংসা করব। যেখানে পুরো বই পড়ে বুঝতে কিংবা হৃদয়গম করতে এতটুকু সমস্যা হয় নি, আলহামদুলিল্লাহ।
.
বইটি কেন পড়ব?
ঈমানকে সঠিক ভাবে অবিচল রাখতে। জীবনের সব চড়াই-উতরাই পরিস্থিতিতে ঈমানের ঝান্ডার ভিত্তিকে মজবুত করতে। সর্বোপরি ঈমান নিয়ে যেন রাব্বের সামনে হাজির হতে পারি সেই নিমিত্তে।
মূল- ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব
আরবী (ব্যাখ্যা)- শাইখ সুলায়মান ইবনু নাসির আল উলওয়ান
অনুবাদ- মাসউদ আলিমী
সম্পাদনা- মুফতি হারুন ইজহার, মুফতি হুমাইদ সাঈদ কাসেমী
প্রকাশন: সীরাত পাবলিকেশন
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১১১
মুদ্রিত মূল্য : ১৬৭৳
jabedking2017 – :
একজন বান্দার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কি ? ঈমান ! আবার সেই বান্দা যদি ঈমান হারা পড়ে , তবে তার চেয়ে বড় দুর্ভাগা আর কে আছে ! মণি-মুক্তা, হীরে-জহরত, টাকা -পয়সা কত যত্ন করে রাখি, নিরাপত্তার কত সব আয়োজন । কিন্তু ঈমানের সুরক্ষায় আমরা কতটুকু সচেতন হই ? সেই মূল্যবান আছে কি নেই, নষ্ট হয়ে গেলো কি না, শিরক-কুফরের ফাঁদে পরে গেল কিনা, কতটুকু খবর রাখি আমরা ? অথচ ঈমানহীনতা আমাদের জন্য নিয়ে আসবে ভয়াবহ দুর্ভোগ, জ্বলতে হবে জাহান্নামের লেলিহান শিখায় । এই বইটি ঈমানের সেই অস্তিত্ব পরীক্ষার মানদণ্ড। এখানে এমন দশটি বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যার কারণে একজন মানুষ ঈমানহারা হয়ে পড়তে পারে। হয়ত সে জানেও না, হয়ত সে একেবারে বেখবর, বুঝতেও পারছে না কখন সে জাহান্নামের পথে হাঁটা ধরেছে। এসব বিষয় জেনে নিয়ে ঈমান রক্ষার শক্ত এক রক্ষাকবচ তৈরি করা তাই প্রতিটি মুসলিমের জন্য অতীব জরুরী।
~বইটি কারা পরবেন ?~
নওমুসলিম ও বংশগতভাবে মুসলিম, এক কথায় সকল মুসলিমকে ঈমান ভঙ্গের কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানা উচিত । তাই এটি সকলের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ বই । বইটি পড়ে যাচাই করে নিন আপনার ঈমান ঠিক আছে নাকি নষ্ট হয়ে গেছে !!!
~পাঠকের কথা ~
অজু ভঙ্গের কারণ ঠিকই জানতাম কিন্তু ঈমান ভঙ্গের কারণ ঠিকভাবে জানতাম না। আমাদের সমাজে প্রায় 80 পার্সেন্ট মানুষ জানেনা ঈমান ভঙ্গের কারণ তাই আমাদের সমাজের শিরক ও কুফরের এত ছড়াছড়ি। ভাবলে অবাক লাগে গণতন্ত্রের মতো শিরকি মতবাদ শিখেছি !!!
শাহর ইবনু হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে আমি বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার কাছে অবস্থানকালে অধিকাংশ সময় কোন দু’আটি পাঠ করতেন? তিনি বললেন, তিনি অধিকাংশ সময় এ দু’আ পাঠ করতেন:
” يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ ”
‘‘হে মনের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর স্থির রাখ’’।
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি অধিকাংশ সময় ‘’হে মনের পরিবর্তনকারী! আমার মনকে তোমার দ্বীনের উপর স্থির রাখ’’ দু’আটি কেন পাঠ করেন? তিনি বললেনঃহে উম্মু সালামাহ্! এরূপ কোন মানুষ নেই যার মন আল্লাহ তা’আলার দুই আঙ্গুলের মধ্যবর্তীতে অবস্থিত নয়। যাকে ইচ্ছা তিনি (দ্বীনের উপর) স্থির রাখেন এবং যাকে ইচ্ছা (দ্বীন হতে) বিপথগামী করে দেন। তারপর অধ:স্তন বর্ণনাকারী মু’আয (রহঃ) কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ): ” হে আমাদের রব! আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করার পর তুমি আমাদের অন্তরসমূহকে বাঁকা করে দিও না”
mr.tahmid – :
This Month: leadership lessons,shoytaner cokranto,
eman vonger karon,dui monishir golpo,cholo sonali otit paney etc.
Next Month: kostipathor, sopno theke ostoprohor
রাদ সাহেবের মন খারাপ। কারণ, উনার সহকর্মী মুরারীচাদ মারা গেছেন। বড্ড অমায়িক লোক ছিলেন। দুজন একই স্কুলে পড়াতেন। মুরারীচাদ ব্রাহ্মণ পরিবারের লোক, হিন্দু ধর্মের সকল রীতিনীতি আজীবন পালন করে মুশরিক হিসেবেই মারা গেছেন।মুরারীচাদের মৃত্যু উপলক্ষে করা স্কুলের শোকসভায় রাদ সাহেব বক্তৃতা রেখে বললেন, “আমি আশা করি মুরারী সাহেব এখন বেহেশতে আরাম করছেন। উনি যেখানেই থাকেন ভালো থাকবেন।” উনার এক ছাত্র ক্লাসের পর জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, মুরারী স্যার তো হিন্দু। উনি কীভাবে বেহেশতে যাবেন?” ; জবাবে রাদ সাহেব বললেন, “আরে, ভালো মানুষদের জন্যই তো বেহেশত। উনি উনার স্বর্গে যাবেন। আর আমরা যাবো আমাদের জান্নাতে!”
শুধু রাদ সাহেবই নন, আজকাল অনেক লোকই মনে করেন যে মুশরিকরাও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। অথচ এটা ঈমান ভাঙ্গার একটা কারণ।
☞ “মুশরিকদের কাফের মনে না করা, তাদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ করা কিংবা এমন বিশ্বাস রাখা যে তাদের ধর্ম সঠিক। এটা ঈমান ভাঙ্গার তৃতীয় কারণ।”
আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমরা ওযু, নামাজ বা রোযা ভঙ্গের কারণ তো জানি, কিন্তু ঈমান ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে গাফেল। অথচ ঈমান দুনিয়াতে মুসলমানের সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। ঈমান যদি না থাকে, তবে আমাদের ওযু, নামাজ, রোযা – সব আমলই বৃথা।
আজকের রিভিউয়ের বইটি হচ্ছে ঈমান ভঙ্গের কারণগুলোর প্রাঞ্জল, সংক্ষিপ্ত এবং অনবদ্য এক ব্যাখ্যাগ্রন্থ।
বইতে ঈমান ভঙ্গের দশটি কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। আমি এখানে অল্প কয়েকটি কারণ নিয়ে আলোচনা করব যা বইটি পড়ার সময় আমার মনে দাগ কেটেছে।
• ☞ ঈমান ভঙ্গের ১ম কারণ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা।
যেহেতু এই মৌলিক কারণই ঈমান ভঙ্গের অন্যান্য কারণের পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। তাই এ কারণের ব্যাখ্যা বিশদভাবে করা হয়েছে। এখানে বড় শিরক আর ছোট শিরকের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
• ☞ ঈমান ভঙ্গের ২য় কারণ- বান্দা ও আল্লাহর মাঝে মাধ্যম বানানো, তাদেরকে ডাকা, তাদের কাছে দুয়া করা, তাদের উপর আস্থা রাখা। যে এমন করবে সে কাফের।
শাফায়াত কেবল আল্লাহর কাছে চাওয়া যাবে। দুইটি শর্ত আছে। এক, আল্লাহর অনুমতি। দুই, সুপারিশকৃত ব্যক্তির উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি।
• ☞ ঈমান ভঙ্গের ৩য় কারণ- মুশরিকদের কাফির মনে না করা, তাদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ করা কিংবা তাদের ধর্মকে সঠিক মনে করা।
মুশরিকদের ধর্ম সঠিক মনে করা ও তাদের গুমরাহিকে উত্তম ভাবা ব্যাক্তি কাফের। মুশরিকরা আল্লাহর দুশমন, তাদের সাথে নমনীয়তা নেই। তাদের আমলকে বর্জন ও ঘৃণা করা, তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাদের কাফের বলা তাগুতকে অস্বীকার করার উপায়।
যারা মুশরিকদের ভালোবাসে ও তাদের সাথে সখ্যতা রাখে – তাদেরকেও ঘৃণা করতে হবে। এজন্য আবশ্যক কাফেরদের মাঝে অবস্থান না করা, কাফের দেশে না থাকা।
কাফেরদের মত-আদর্শ যেমন গণতন্ত্র, কমিউনিজম এগুলোকেও সঠিক বলা ঈমান ভঙ্গের কারণ।
• ☞ ঈমান ভঙ্গের ৪র্থ কারণ- রাসূলের ﷺ আনীত দ্বীন ব্যাতীত অন্য জীবন ব্যবস্থা বা আইনকে উত্তম মনে করা, প্রাধান্য দেয়া; অন্য মতকে অধিক পরিপূর্ণ মনে করা কিংবা তালাশ করা।
কেউ যদি বিশ্বাস করে অন্য আইন মুহাম্মাদ ﷺ এর আনীত আইন অপেক্ষা উত্তম – এমন কাজ কুফরি, যে করবে সে কাফের।
কেউ যদি মনে করে ইসলামের আইন চুরির শাস্তি হাত কাটা এ যুগের সাথে মানানসই না – সেও কাফের।
কেউ যদি ভাবে এ যুগে আল্লাহর আইনকে মানবরচিত আইন দ্বারা বদলে দেয়া জায়েয সেও কাফের। কারণ সে মনে করে হালাল কে হারামে বদলে দেয়া বৈধ।
• ☞ ঈমান ভঙ্গের ৮ম কারণ- মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সহায়তা করা।
কাফেরদের প্রতি বাহ্যিক বিদ্বেষ, অন্তরে ভালোবাসা রাখা মুনাফেকী।
কাফেরদের সাথে কারো বাহ্যিক একতা, কিন্তু অন্তরে বিদ্বেষ থাকলে কী হবে? এক্ষেত্রে দুইটি ব্যাপার রয়েছে।
ক) জীবননাশের আশংকায়, প্রহার বা বন্দীত্বের কারণে এমন করলে তা জায়েজ আছে। শর্ত হলো, অন্তরে পরিপূর্ণ ঈমান রাখতে হবে। অন্তর তো আর ভয় দেখিয়ে কেউ দখল করতে পারবেনা।
খ) ক্ষমতা, সিকিউরিটি, সম্মান বা সম্পদের লোভে এমন করলে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে।
বইয়ের কিছু আকর্ষণীয় দিকঃ
১। মূল বইতে লেখক সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে লিখেছেন। তাই লেখার ধরন সহজবোধ্য।
২। বইয়ে প্রচুর পরিমাণে টীকার ব্যাবহার করা হয়েছে। অনুবাদক নানা তথ্যবহুল সূত্র যোগ করে আলোচনাকে বোধগম্য ও প্রাসঙ্গিক রাখতে চেষ্টা করেছেন। অনুবাদের ভাষা সরল রেখেছেন, যা প্রশংসনীয়।
৩। বইয়ের প্রচ্ছদ সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয়।ক্রিম কালারের পেজ কোয়ালিটি দেখে মনে হয় যেন বিদেশী বই। দাম অনেক কম।
৪। রিয়া করলে কখন আমল বরবাদ হবে সে ব্যাপারে সুন্দর আলোচনা এসেছে।
i) যখন আমলের মূল উদ্দেশ্যই লোক দেখানো, আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় – তখন আমাল বরবাদ।
ii) আমল আল্লাহর জন্যে করার নিয়ত করা হয়েছে। পরে রিয়া ঢুকেছে। এমন হলে যদি আমলের শুরুতেই ইখলাস না থাকে, রিয়া ঢুকে যায় তবে তা বাতিল।
তবে যদি আমল ইখলাসের সাথে শুরু করার পরে হঠাৎ হঠাৎ রিয়ার ভাব চলে আসে, তবে আমল বাতিল হবে কিনা এ ব্যাপারে ইখতিলাফ আছে।
বইটির কিছু বিস্ময়কর দিকঃ
বইটি পড়ে এমন কিছু বিষয় জেনেছি যা আগে জানতাম না বা ভাসা ভাসা জানতাম। কিছু জিনিস জেনে অবাক হয়েছি।যেমন-
১। যাদু দ্বারা ভালো কাজ করলেও তা কুফরি। যেমন যাদু দ্বারা সংসারে মিল করে দেয়া বা অন্য কারো যাদু কাটানোও কুফরি।
হায়! আমাদের সমাজে কত মানুষ যাদু কাটানোর জন্য যাদুকরের কাছে যায় এবং এভাবে ঈমান ভেংগে ফেলে।
২।যাদুতে কুফরি থাকলে যাদুকর কাফের এবং ইসলামে তা হত্যাযোগ্য অপরাধ- এটা জানতাম। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ইমাম শাফেঈ (রহ) ছাড়া বেশিরভাগ আলেমগণ এমনকি যেসব জাদুকর হাত সাফাই বা ভেলকিবাজির যাদু করে (যেমন জুয়েল আইচ) তাদেরকেও কাফির বলে ওয়াজিবুল ক্বতল বলেছেন। এ থেকে বুঝা যায়, ইসলামে জাদু কতটা নিন্দনীয়।
আর ইমাম শাফেঈ (রহ) বলেছেন, যাদুতে আইওয়াশ কেবল যদি থাকে, কুফরি না থাকে তবে যাদুকর কাফের না। তবে তার কাজটি হারাম। সে যদি যাদু করা হালাল বলে দাবী করে তখন আবার সে কাফের হয়ে যাবে। কারণ সে হারামকে হালালে বদলে দিচ্ছে।
৩। গণতন্ত্র কেন আলাদা একটি দ্বীন, ইসলামের সাথে গণতন্ত্রের কী কী পার্থক্য আছে তা নিয়ে সুন্দর দশটি পয়েন্ট আলোচনা করা হয়েছে বইয়ের টীকাতে।
৪। শুধু তাই নয়, মিল্লাতে ইবরাহীম নিয়েও আলোচনা এসেছে। বাদ যায়নি ন্যাশনালিজম বা সেকুলারিজম নিয়েও আলোচনা।
বইয়ের কিছু কমতিঃ
১। ব্যাখ্যা আরেকটু বিশদ হলে আমার ভালো লাগতো। উদাহারণ দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝালে উত্তম হতো।
২। ঈমান ভঙ্গের ৮ম কারণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সহায়তা করা নিয়ে আলোচনা আরেকটু বড় হবে আশা করেছিলাম। যেহেতু এই জিনিসটা উম্মাহর নেতাদের মাঝে মহামারী আকারে বিরাজমান। সম্ভবত ৩য় কারণে লেখক ইঙ্গিতে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন তাই এ নিয়ে আর কথা তেমন বাড়াননি।
৩। কিছু প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে। মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের পরিচিতিতে কিছু অংশে উনার নাম লিখতে ভুল করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি শব্দচয়ন আরো উন্নত করা যেতো। তবে এটি আমার ব্যাক্তিগত মত।
৪। প্রাচীন বানানরীতি ব্যাবহার করা হয়েছে। সীরাতের সব বইয়েই তা করা হয়। যদিও আমার খারাপ লাগেনা, তবে ভালো হতো সকল প্রকাশক যদি একই ধরনের রীতি ব্যাবহার করতেন।
তথ্যসূত্রঃ কোরআন, হাদীসের প্রসিদ্ধ কিতাবাদি, তাফসীরে কুরতুবি, কিতাবুল ঈমান, ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ, তাফসীরে সূরা তাওবাহ ইত্যাদি অনেক সূত্রের সাহায্য নিয়েছেন অনুবাদক মূল বইকে সমৃদ্ধ করার জন্য। অনুবাদকের টীকাগুলোর প্রশংসা না করলেই নয়।
উপসংহারঃ অসাধারণ একটি বই। আমাদের সবার পড়া উচিত। আলেমদের এ নিয়ে বেশি বেশি কথা বলা উচিত। আর সাধারণ মানুষ যারা দ্বীন নিয়ে উদাসীন, তাদের ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো নিয়ে ভাবা উচিত। দশম কারণের ব্যাখ্যায় সুন্দর একটি কথা বলা হয়েছে। “ইসলামের বিষয়ে নিউট্রাল থাকা, রাসূলকে দোস্ত দুশমন কোনোটিই না জ্ঞান করা, দ্বীনের ফরজিয়াতের ব্যাপারে পাত্তা না দেয়া – ঈমান ভঙ্গের কারণ।” তাই সাবধান হওয়া উচিত।
আসুন না, সকল ভ্রান্ত চিন্তা-চেতনাকে জ্বলাঞ্জলি দিয়ে ঈমাদের দীপ্ত মশাল জ্বেলে সমগ্র পৃথিবীকে রাঙ্গিয়ে দেই তাওহীদের রংয়ে!
রেজাউল বাবলু – :
.
যাইহোক,বইটি একটি অনুবাদগ্রন্থ। বইয়ের মূল বিষয় গুলো সম্পর্কে বলার তো আমার কিছুই নেই। একজন মুসলিমের জীবনে ঐ বিষয়গুলা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূল বিষয়ের বাইরে, অনুবাদকের কিছু সংযুক্ত টীকা পড়ে কয়েকটি বিষয় নতুনভাবে জানলাম। এমন কিছু বিষয় জানতে পারলাম যার সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল কিন্তু এতটা ক্লিয়ার ছিলনা। বইটির ৩৩,৩৪ আর ৩৫ নম্বর টীকা গুলোর কথা বলছি। ৩৩ নম্বর টীকা নিচে দিলাম ৩৪,৩৫ নম্বরটা পড়ে নিয়েন, লিখতে কষ্ট হয়।
.
“সমষ্টিগতভাবে নারীরা পুরুষদের সমপর্যায়ের নয়।”(৩৩)
এই অংশের টীকায় যা আছে-
“এখানে তিনটি বিষয়- মর্যাদা,অধিকার ও দায়িত্ব। মর্যাদায় আল্লাহর কাছে নারী-পুরুষ সমান। তারতম্য হবে তাকওয়া ও আমালে সালিহার ভিত্তিতে। অধিকারের দিক থেকে তো ইসলাম নারীকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। প্রায়োরিটির সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছে। বাকি রইল দায়িত্ব কিংবা নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে পুরুষকে আল্লাহ তা’য়ালা আগে রেখেছেন। কেননা সৃষ্টিগতভাবেই নারীর তনু-মন নরম,কোমল ও আবেগপ্রবণ। “