মেন্যু
shahjalal rah o sufidorshon

শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন

পৃষ্ঠা : 152, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2022
আইএসবিএন : 9789849659013
শাহজালাল রাহ.-কে নিয়ে অনেকের লেখা বই আছে। কিন্তু এইসুফি সাধকের জীবন ও কর্ম আলোচনা প্রসঙ্গে তাসাওউফের তাত্ত্বিক বিস্তৃত আলোচনা সম্ভবতএটিই প্রথম। বইটি লিখতে গিয়ে তিনি তাসাওউফের এবং শাহজালালের ওপর লিখিত... আরো পড়ুন
পরিমাণ

170  230 (26% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

10 রিভিউ এবং রেটিং - শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন

4.9
Based on 10 reviews
5 star
90%
4 star
10%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    rihanhossainkhan:

    ◾️প্রারম্ভিক কথন-
    —————————————-
    সুদূর আরবে জন্ম নিয়েও যিনি যুগের পর যুগ ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের অন্তরে গেঁথে আছেন, তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন শাহজালাল (রাহ)।। বিশেষকরে, সিলেট জেলার সঙ্গে শাহজালাল (রাহ.) যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন।

    গাজি বুরহানউদ্দিন, যিনি সিলেটের সর্বপ্রথম মুসলিম হিসেবেই সুপরিচিত। তার ঘর আলোকরে ফুটফুটে এক নবজাতক শিশুর জন্ম হয়েছে। সন্তানের আকিকা করার জন্য তিনি একটি গরু জবাই করেন। কিন্তু সেই সময়ে ‘শ্রীহট্ট (সিলেটে)-র রাজা ছিলেন গৌড়গোবিন্দ। বুরহানউদ্দিনের ছেলের আকিকা উপলক্ষে গরু জবাই করার খবর গৌড়গোবিন্দের কানে গেলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নবজাতক শিশুটিকে হত্যা করার নির্দেশ দেন এবং নির্মমভাবে শিশুটিকে হত্যা করেন। শিশু পুত্রকে দাফন করে বুরহানউদ্দিন পথে রওনা হলেন।

    অতঃপর…………………………….

    অতঃপর, গাজি বুরহানউদ্দিন কিভাবে শাহজালাল (রাহ.)-র সাথে দেখা করলেন? কিভাবে গৌড়গোবিন্দকে জালালি তরবারির মাধ্যমে পরাজিত করলেন? সিলেট কিভাবে ইসলামের ছায়াতলে আসলো? নিশ্চয়ই পাঠকের জানতে ইচ্ছে করছে?

    এসবের বিস্তারিত দলিলভিত্তিক রেফারেন্সের মাধ্যমে জানতে হলে পাঠককে সংগ্রহ করে পড়তে হবে লেখক ‘শামসীর হারুনুর রশীদ’ কর্তৃক প্রকাশিত “শাহজালাল (রাহ.) ও সুফি দর্শন” বইটি। যা “কালান্তর প্রকাশনী” থেকে সদ্য প্রকাশিত হয়েছে।

    ◾বইকথন-
    ————————————
    পাঠকের সুবিধার্থে ও সহজতর করার লক্ষ্যে বইটিকে মোট ১২টি অধ্যায়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে। প্রতিটি অধ্যায় আবার কতকগুলো শিরোনামে বিন্যস্ত।

    ◾বইটিতে যা থাকছে-
    ———————————————–
    সদ্য প্রকাশিত বইটি কেমন হবে? বা কেমন হতে পারে? বা বিষয়বস্তু কি? যা সবসময়ই পাঠকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।

    বইটিতে যা যা থাকছে আর যেভাবে সাজানো হয়েছে তা শর্টপিডিএফের সূচিপত্রের আলোকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-

    ▪️বইটির শুরুতে শাহজালাল (রাহ.)-এর জন্ম, শৈশব, গুণাবলি ও বংশ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

    ▪️এর পরবর্তীতে লেখক আলোচনা করেছেন শাহজালাল (রাহ.)-এর দরবেশি জীবন ও কিভাবে নিজ জন্মভূমি থেকে হিন্দুস্থান হয়ে সিলেটে আসলেন তার সুবিস্তর আলোচনা।

    ▪️পরবর্তী বর্ণনায় সিলেটে তাঁর অভিযান, গৌড়গোবিন্দের পরাজয়, সিলেটে প্রথম আজানের ধ্বনি ও বিজয় পরবর্তী সময়ে ইসলাম প্রচার বিষয়ক বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। যা সূচিপত্র থেকে অনুমেয়।

    ▪️শাহজালাল (রাহ.)-এর কারামাত নিয়ে যেকারো আগ্রহের কমতি নেই। হোক সে পাঠক বা অন্যকেউ। আর এজন্যই পাঠকের সুবিধার্থে তা ১২টি শিরোনামের মাধ্যমে আলোচিত হয়েছে।

    ▪️বইটিতে শাহজালাল (রাহ.) এর পাশাপাশি শাহপরাণ (রাহ.)কে নিয়েও তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে।

    ▪️বইটির আলাদা একটি অধ্যায়ে শুধু সুফিবাদ, সুফিবাদ দর্শন ও এর মূলনীতি, বৈশিষ্ট্য, বিভিন্ন শাসনামলে সুফিবাদ, ইলমে তাসাওউফের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তা কুরআন, হাদীস সমর্থিত কি না সেটাও আলোচনা করা হয়েছে। যা ২৪টি শিরোনামের মাধ্যমে আলোকপাত করা হয়েছে।

    ▪️পাঠক বইটি পাঠের মাধ্যমে হাদীসের আলোকে ওলীগণ, ওলীগণের কারামাত, কাশফ, জিয়ারত পদ্ধতি ইত্যাদি ছাড়াও নবীগণের মুজিজা ও ওলীগণের কারামাত সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তা পার্থক্য করতে পারবে।
    এছাড়া ইসালে সাওয়াবের পদ্ধতি সম্পর্কেও অবগত হতে পারবে।

    ▪️কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলোকে ঘিরে বিতর্ক, সমালোচনা রয়েছে। যেমন : উরস, মাজার সমাচার। এই সমস্ত বিষয়াদি লেখক এড়িয়ে যাননি। বরং আলাদা একটি স্বতন্ত্র অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যা সূচিপত্র দেখলেই অনুধাবন করা যায়।

    ▪️এছাড়াও বাংলা ভাষায় সুফিশাস্ত্র গ্রন্থ রচনার স্থান, কাল এবং সিলেটের অবদান বিষয়ক আলোচনাও করা হয়েছে।

    ▪️বইটির শেষ অধ্যায়ে পাঠক জানতে পারবে শাহজালাল (রাহ.) মাজারের ইতিহাস। যেখানে, তাঁর ব্যবহার করা দ্রব্যাদি ও অলৌকিক ঝরনা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যা সূচিপত্র থেকে অনুমেয়।

    ◾️শর্ট পিডিএফ পড়ার পর পাঠ্যানুভূতি-
    ———————————————————————-
    বইটির শর্ট পিডিএফের পুরোটাই পড়েছি। খুবই ভালো লেগেছে। শাহজালাল (রাহ.)-এর জীবনীগ্রন্থ অধ্যয়ন করা মানে শুধু তাঁর জন্ম সাল বা মৃত্যু সাল সম্পর্কে অবগত হওয়া বা সীমাবদ্ধ থাকা নয় বরং কর্মজীবন থেকেও অনেক শিক্ষনীয় বিষয় অর্জন করার আছে। সূচিপত্রের দিকে লক্ষ্য করলে যেকোন পাঠক খুব সহজেই বুঝতে পারবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি বিষয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে। এছাড়াও তথ্যের ব্যাপারে লেখক কোন অপূর্ণতা বা কমতি রাখেননি।

    লেখক সম্পাদনার কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেছেন। যা শুরুর দিকে কয়েকটি পৃষ্ঠা পড়েই অনুধাবন করতে পেরেছি। শব্দচয়ন, বাক্য বিন্যাস সবকিছু মিলিয়ে এককথায় অসাধারণ লেগেছে। চমৎকার লেখনীর মধ্য দিয়ে পুরো জীবনী এবং তা থেকে শিক্ষনীয় বিষয়গুলোকে ফুটিয়ে তুলেছেন। যা সূচিপত্রের শিরোনাম গুলো দেখলেই অনুমান করা যায়। পাঠকের সুবিধার্থে গ্রন্থটির ভাষা সাবলীল ও প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করেছেন। যা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। রেফারেন্স হিসেবে কিছু বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য গ্রন্থের সহায়তা নেয়া হয়েছে। যা প্রতিটি পাতায় লক্ষ্য করেছি। যার ফলে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়ে যাবে। কোন টাইপজনিত ভুল বা বানান ভুল চোখে পড়েনি।

    আশাকরছি, বইটি পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলবে।

    ◾শিক্ষনীয় বিষয়-
    ———————————————–
    শাহজালাল (রাহ.)-এর জীবন ও কর্ম থেকে কিছু শিক্ষনীয় বিষয় শর্ট পিডিএফের আলোকে তুলে ধরা হলো-

    ▪️ইসলাম প্রচার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবে। যা যেকোন পাঠককে অনুপ্রাণিত করবে এবং উৎসাহ যোগাবে।

    ▪️দ্বীনের প্রতি অটল থেকে কিভাবে পৌত্তলিকের জাদুতন্ত্রের অগ্নিবাণ, তীব্র আক্রমণ প্রতিহত করা যায় সেসব কৌশল রপ্ত করতে পারবে।

    ▪️️বিদআত, কুসংস্কার, শিরক, কুফর ইত্যাদি বিষয়ে পাঠক নিজেও সচেতন হতে পারবে। অন্যকেও সচেতন করতে পারবে।

    ▪️ইলমীজ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে পাঠককে উদ্বুদ্ধ করবে।

    ▪পাঠক ️ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা লাভ করতে পারবে।

    ◾️অভিমত-
    —————————————-
    বাংলা ভাষায় শাহজালাল (রাহ.)-এর জীবনী নিয়ে অনেক বই রয়েছে। কিন্তু নির্ভরযোগ্য ও তথ্যবহুল মৌলিক বইয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আর এই ক্ষেত্রে, শাহজালাল (রাহ.) সম্পর্কে পাঠকের জ্ঞান আহরণের তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি গবেষণা করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে “কালান্তর প্রকাশনী’ থেকে সদ্য প্রকাশিত মৌলিক বইটি।

    2 out of 2 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    সিরাজাম বিনতে কামাল:

    📌প্রারম্ভিকা:
    _____________

    বুরহানউদ্দিন নামের এক লোক ছেলের আকিকা করার জন্য গরু জবাই করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে একটা চিল গরুর এক টুকরা গোশত নিয়ে হিন্দু রাজা গৌরগোবিন্দের মন্দিরে ফেলে আসে। রাজার আদেশে সেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়, বুরহানউদ্দিনের হাত কেটে ফেলা হয়। তিনশত ষাটজন সাথী ও মুরিদ সাথে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রা.) সেই রাজাকে পরাজিত করেন এবং সিলেট মুসলমানদের শাসনাধীন হয়। আবার এই তিনশত ষাটজনের একজনের “কেল্লা” নদীর পানিতে ভেসে আসে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। যে কেল্লা “আল্লাহ আল্লাহ” বলে জিকির করছিলো। আর তা দেখে নদীতে মাছ ধরা হিন্দু জেলেরাও মুসলিম হয়ে যায়। আবার শাহজালাল (রা.) এর সিপাহসালার নাসিরুদ্দীন, যার রওজা পূর্ব-পশ্চিমে। এ-সবগুলো নাম যেনো একসূত্রে গাঁথা।

    এইসব টুকরো টুকরো ঘটনাগুলো শোনা হয়েছে শৈশবেই। তখন থেকেই এই জায়গাগুলো সরেজমিনে দেখার এবং কাহিনীগুলো জানার আকাঙ্ক্ষা তীব্র। কিন্তু আমার কৈশোরে যখন আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া খড়মপুরস্থ কেল্লাবাবার মাজারে যায় তখন আমি বেশ হতাশ হই। মনে জট লাগে, ভিড় করতে থাকে নানা প্রশ্ন। পাইনি তেমন কোনো গ্রন্থ যা থেকে আমি সত্য জানতে পারবো। যেই আমি ছোট থেকেই সিলেটে শাহজালাল (রা.), শাহপরাণ (রা.) এর মাজার দেখতে যাবো শুনলেই লাফাতাম, চোখে ভাসতো সেই জায়গার নানা নির্দশন। সেই আমার অবস্থাই তখন আচ্ছা দেখলে দেখলাম, না দেখলে নাই। মানে আমার অবস্থাই যেনো লেখক তুলে ধরেছেন এভাবে-“বিশেষত ওলিগণ, মাশায়েখ এবং সুফিদর্শন বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় কেউ হচ্ছে বিভ্রান্ত, আবার কেউ তাদের কর্মসাধনাকে করছে সরাসরি অস্বীকার”। অবশ্য আমি অস্বীকার করিনি কিন্তু সত্য জানার জন্য মুখিয়ে ছিলাম।

    .

    📌বই সম্পর্কে:
    _____________

    কালান্তর প্রকাশনীর ‘সালাফ সিরিজ- ৪’ এর এবারের বই “শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন”। বইটি সজ্জিত হয়েছে মোট ১২ টি অধ্যায়ে। যেখানে প্রথমেই আলোচনা করা হয়েছে- হযরত শাহজালাল (রা.) এর নাম, উপাধি, বংশপরিচয়। দ্বিতীয় অধ্যায়ে থাকবে- তাঁর জীবন ও কর্ম, তাঁর সিলেটে আগমন। এরপর পর্যায়ক্রমে থাকবে- সিলেট অভিযান, সিলেট বিজয়, বিজয় পরবর্তী ইসলাম প্রচার, আমাদের অজানা তাঁর কারামাতসমূহ, রয়েছে তাঁর ভাগিনা শাহপরান (রা.) কে নিয়ে আলাদা অধ্যায় পাঁচ।

    শাহজালাল (রা.) এর যাবতীয় তথ্য আলোচনা শেষে ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে ক্রমান্বয়ে দ্বাদশ অধ্যায় পর্যন্ত থাকবে- সুফিদর্শন ও আত্মশুদ্ধি, তাসাউওফে শাহজালাল, হাদিসের আলোকে ওলিগণ, ইসালে ও সাওয়াব পদ্ধতি, উরস ও মাজার সমাচার, সুফিশাস্ত্রগ্রন্থ রচনার সূত্রপাত, শাহজালাল মাজারের ইতিহাস। এবং সবশেষে অ্যালবাম- যেখানে শাহজালাল (রা.) এর মাজার, তাঁর ব্যবহৃত জিনিসের ছবি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

    .

    📌শর্ট পিডিএফ পড়ে অনুভূতি:
    _________________________

    শর্ট পিডিএফ পড়ে মনে হচ্ছে, বইটি আমার মতো পাঠকদের জন্য সুপরিচিত নাম শাহজালাল এর আদ্যোপান্ত খুঁজে পাওয়ার বিশাল সমাহার। শুধু শাহজালাল এর পরিচয় জানা, তাঁর বিশেষত্ব, তাঁর কারামাত জানাই নয় বরং মাজার ঘিরে গড়ে উঠা নানা কর্মকাণ্ড দেখে মনে জট বাধা প্রশ্নের উত্তরগুলোও এক এক করে জানতে পারবো। আরও জানতে পারবো সুফিদর্শন, তাসাউওফ, ইসালে সাওয়াব ও পদ্ধতি- মোটামুটি পরিচিত শব্দগুলোর পেছনের ব্যাখা। হাদীসের আলোকে ওলিগণের পরিচয়ও আমাদের সামনে স্পষ্ট হবে। এককথায় বলা যায়, একের ভিতর অনেক এর সমন্বয়ে কালান্তরের এবারের বই “শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন”।

    প্রারম্ভিকাতেই বুঝা গেলো আমি কতটা মুখিয়ে আছি এই সমূহ সত্য কাহিনীগুলো জানার জন্য। তো শর্ট পিডিএফে হারিয়েই গিয়েছিলাম, তখন আবার বোধোদয় হলো আরে ভাই শর্ট পিডিএফ পড়ছি যে তাইতো হুট করেই শেষ। বইটি যদিও ইতিহাস। কিন্তু আমার কাছে থ্রিলিং মনে হচ্ছে শিরোনাম দেখে।

    আশা করি, বইটি ব্যাপক সাড়া ফেলবে। কারণ, সত্যমিথ্যার গোঁজামিল কে’ই চায়! শাহজালাল (রা.) এবং তাঁর সাথী অন্যান্যদের নিয়ে সমাজে প্রচলিত যে ভ্রান্ত কাহিনী, নানা কর্মকাণ্ড, তাদের মাজার কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ভন্ডামি গুলোও সমূলে উৎপাটন করা যাবে সত্য জানার মাধ্যমে।

    .

    📌অন্যান্য:
    _________

    বইয়ের শ্রদ্ধেয় লেখক বেশ খেটেছেন বুঝাই যাচ্ছে। বইয়ের ভাষা ঝরঝরে, সহজবোধ্য। অনেক বই পড়লে বিরক্তি চলে আসে, কিন্তু এই বইটি একজন সাধারণ পাঠকও এক বসাতেই শেষ করে ফেলবে বলে মনে হচ্ছে। বইয়ে টীকা করে প্রয়োজনীয় সব তথ্য আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, রয়েছে বইয়ে ব্যবহৃত তথ্যসমূহের রেফারেন্স।

    তো পাঠক জানা-অজানা অনেক ঘটনার মিশেলে শাহজালাল (রা.) এর জীবন ও সুফিদর্শনের জগতে ডুব দিতে আপনাদের স্বাগতম।

    .

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    sazzadais:

    শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন

    বাংলার মাটিতে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে যাদের অবদান শীর্ষে তাঁদের মধ্যে অন্যতম শাহজালাল রাহ. ও তাঁর সঙ্গীগণ। তিনি মক্কার কুরাইশ বংশের বংশধর। তাঁর পিতামহ, পিতা ও বংশের অন্যান্যজন ছিলেন বিখ্যাত আলেম। বইটিতে তাঁর সংগ্রামী জীবনের অনেক অধ্যায় উঠে এসেছে।
    ১৮ পৃষ্ঠার শর্ট পিডিএফ পড়ে খানিকটা তৃষ্ণা মিটলেও বাকীটা পড়ার তীব্র আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ১২টি অধ্যায়ে ব্যক্তিজীবনের সুক্ষ্ম বর্ণনা থেকে শুরু করে সিলেট বিজয়, এখানে প্রথম অধ্যায়ে নাম, উপাধি, গুণাবলী ও পরিবার; দ্বিতীয় অধ্যায়ে জীবন ও কর্ম এবং সিলেটে আগমন; তৃতীয় অধ্যায়ে সিলেটে অভিযান ও বিজয় পরবর্তী ইসলাম প্রচার; অতঃপর শাহজালাল ও কারামাত, শাহপরাণ ও দরগাহ, সুফিদর্শন ও আত্মশুদ্ধি, তাসাওউফে শাহজালাল, হাদিসের আলোকে ওলিগণ, ইসালে সাওয়াব ও পদ্ধতি, উরস ও মাজার সমাচার, সুফিশাস্ত্র গ্রন্থ রচনার সূত্রপাত ; দ্বাদশ অধ্যায়ে শাহজালাল মাজারের ইতিহাসসহ বর্তমানে প্রচলিত বিভিন্ন উরস কেন্দ্রীক অধার্মিক কার্যকলাপ, ইসালে সাওয়াবের ১০টি পদ্ধতি, শাহজালাল রহ. এর বিভিন্ন কাশফ ও কারামত, ইসলামের প্রচারসহ সুফিজীবন দর্শনের সবকিছুই চলে এসেছে যা যে কোন পাঠকের জন্য রেফারেন্স হিসেবে একত্র পাবার এক সুবর্ণ সুযোগ। বিস্তারিত দালিলিক সম্বৃদ্ধ আলোচনা নজর কেড়েছে। নিছক কোন কাহিনি বর্ণনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি বইটি। ইতিহাস জানতে, বুঝতে – এক কথায় জুড়ি নেই বইটির।
    শাহজালাল রহ. এর ইন্তেকালের পর তাকে নিয়ে, তার মাজারকে নিয়ে চলছে নানা শিরকী ও বিদআতী কর্মকান্ড। মানুষ ভুলে গেছে তার ও তার সঙ্গীদের প্রচারিত শিক্ষা, আদর্শ, উপদেশ। মানুষ মনে করে যেহেতু বড় আলেম ছিলেন তার কাছে সাহায্য চাওয়া যায় – যা পূর্ণ শির্ক ও ইসলামের শিক্ষার বিপরীত। তার প্রকৃত পরিচয়, ইতিহাস, কর্ম, জীবন – এসবের আলোচনা খুব সুচারুভাবে বইটিতে স্থান পেয়েছে যা তাকে জানার আরো সুযোগ করে দিয়েছে। কালান্তর প্রকাশনীর এই মহতী উদ্দ্যোগকে আল্লাহ কবুল করুন, আমীন।

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    Shahidul Islam:

    “যুগ জামানা পাল্টে দিতে চাই না অনেকজন,
    এক মানুষ-ই আনতে পারে জাতির জাগরণ।
    এক মানুষ-ই বিপদ কালে বাঁচায় কাফেলায়,
    ক্ষুদ্র ডিঙ্গী বাঁচায় জাহাজ অসীম দরিয়ায়।
    এমনি করেই চলছে সেথা রাত্রি, দিনমান
    একটি বাতি জ্বালতে পারে হাজার বাতির প্রাণ।”
    –মাওলানা কবি রুহুল আমিন খান

    বাংলায় হযরত শাহজালাল ইয়েমেনি রহ. এর আগমন ঘটেছিল যেন ঠিক এই কবিতার প্রতিটি লাইনের প্রত্যেকটি শব্দ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। তাঁর আগমনে যেন বাংলার অসংখ্য ডুবন্ত তরী ওদের তীর খুঁজে পায়, হাজারো নিভু নিভু প্রদীপ নিজেদের হারানো জ্যোতি ফিরে পায়।

    শাহজালাল ইয়েমেনি রহ. ভারতবর্ষে ইসলাম প্রচারের স্বপ্ন দেখলেন। মামা ও শিক্ষাগুরু সৈয়দ আহমদ কবির রহ.-কে স্বপ্নের কথা জানালে তিনি ভারতে আসার অনুমতি দেন। অতঃপর মামার দেওয়া একমুঠো মাটির অলৌকিকগুণে বহুপথ পাড়ি দিয়ে গুজরাট, দিল্লি হয়ে বাংলার সিলেটে প্রবেশ এবং মানুষদেরকে ইমান-কালেমা, আল্লাহ-রাসুলের দাওয়াত; এরপর মানুষ দলে দলে শাহজালালের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করতে থাকে। ধ্বংস হয় রাজা গৌরগোবিন্দের সিংহাসন, মুলোৎপাটিত হয় শিরক-বিদয়াতের যত কান্ড-কারখানা। এরপর…

    এরপর পেরিয়ে যায় অনেকদিন। শাহজালাল রহ. এর ইন্তেকালের পর অনেকটাই আবার আগের সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন অবস্থা ফিরে আসে। মানুষ ভুলে যেতে থাকে শাহজালাল রহ. এর শিক্ষা, আদর্শ, উপদেশ। তাই এমন অজ্ঞতা পূর্ণ সময়ে প্রয়োজন ছিল এমন একটি আলোর দিশারীর–যার মাধ্যমে এই প্রজন্ম শাহজালাল রহ.-কে চিনতে পারবে, জানতে পারবে। পাশাপাশি তাঁকে নিয়ে সমাজে প্রচলিত নানা কুসংস্কার সম্পর্কেও জানা সম্ভব হবে। আলহামদুলিল্লাহ, প্রিয় প্রকাশনী ‘কালান্তর’ এর মাধ্যমে সেই প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে এবং অপেক্ষার অবসান হচ্ছে।

    প্রকাশিতব্য ‘শাহজালাল রাহ. ও সুফিদর্শন’ বইটি মোট ১২টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত। প্রথম অধ্যায়ে নাম, উপাধি, গুণাবলী ও পরিবার; দ্বিতীয় অধ্যায়ে জীবন ও কর্ম এবং সিলেটে আগমন; তৃতীয় অধ্যায়ে সিলেটে অভিযান ও বিজয় পরবর্তী ইসলাম প্রচার; অতঃপর শাহজালাল ও কারামাত, শাহপরাণ ও দরগাহ, সুফিদর্শন ও আত্মশুদ্ধি, তাসাওউফে শাহজালাল, হাদিসের আলোকে ওলিগণ, ইসালে সাওয়াব ও পদ্ধতি, উরস ও মাজার সমাচার, সুফিশাস্ত্র গ্রন্থ রচনার সূত্রপাত এবং সবশেষ দ্বাদশ অধ্যায়ে শাহজালাল মাজারের ইতিহাস এর মাধ্যমে বইয়ের সমাপ্তি হয়েছে।

    বইটিতে বর্তমানে প্রচলিত বিভিন্ন উরস কেন্দ্রীক অধার্মিক কার্যকলাপ, ইসালে সাওয়াবের ১০টি পদ্ধতি, শাহজালাল রহ. এর বিভিন্ন কাশফ ও কারামত, সুফিদর্শন ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা স্থান পেয়েছে । এককথায় বলা যায়, বইটি পাঠককে শাহজালাল রহ. সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।

    শাহজালাল রহ. সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল অনেক আগে থেকেই, কিন্তু তাঁকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন কাজ এতদিন পর্যন্ত না হওয়ায় সে সুযোগ হয়নি। সেদিক থেকে কালান্তর প্রশংসার দাবি রাখে। পাশাপাশি বইটিতে লেখকেরও যথেষ্ট মেধা, শ্রম ও ভালোবাসার প্রয়োগ ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। আল্লাহ তাঁকেও উত্তম প্রতিদান দিন।

    পরিশেষে আমাদের প্রত্যেককেও আল্লাহ তাআলা যুগের শাহজালাল হিসেবে কবুল করে নিন, এই দোয়া কামনায়…

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 5 out of 5

    ইয়াসমিন:

    বাংলায় ইসলাম আনয়নে এবং মুসলিমদের নির্বিঘ্নে ইসলামি জীবন যাপনে এক মনীষীর অবদান অনস্বীকার্য। তার জন্ম ১২৭১ খিষ্টাব্দে এবং তার পিতামাতা ছিলেন কুরাইশ বংশের ওলীর বংশধর।
    ইতিহাসের স্বর্ণপটে যার নাম থাকবে চির জ্বলজ্বল। কালজয়ী এই মনীষী ১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে আরবের মক্কা-ইয়ামেন হয়ে দক্ষিণ-এশিয়ার মুলতান, দিল্লি, বাদায়ুন, লাউড়, পাণ্ডুয়া গৌড়রাজ্যে পৌঁছান। ঈমানের বাতি জ্বালাতে দীর্ঘ তিন বছর পদযাত্রার গন্তব্যস্থল হয় সিলেট। তাঁর পদস্পর্শে শুধু সিলেট নয়; আসাম-বাংলাভূমিতে অনবদ্য এক তাহজিব-তামাদ্দুনের আবহ সৃষ্টি হয়েছিল। সোয়া ৭০০ বছর পেরিয়ে আজও সে ঐতিহ্য বিদ্যমান। যার দিন কাটতো ইসলাম প্রচারে এবং রাত কাটতো জায়নামাজে। তিনি নওমুসলিমদের জন্য পাঠশালা গড়েছিলেন। তার হাতেই সিলেটে ইসলামি শাসনের বাস্তবায়ন হয়েছিলো। ফলশ্রুতিতে শিরক, কুফুর ও বিদআতমুক্ত সিলেট হয় বাংলার আধ্যাত্মিক রাজধানী।
    যার দর্শন লাভে বিভিন্ন দেশ হতে লোকজন আসতো-ঐতিহাসিক মরক্কো-পর্যটক ইবনু বতুতাও তাঁর দর্শনে এসেছিলেন। এই মহান ব্যক্তিত্ব হলেন হযরত শাহজালাল রাহ.। এই মহান ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে লেখক শামসীর হারুনুর রশিদ বইটি লিখেছেন। আশা করছি বই টি পড়ে অনেক অনেক অজানাকে জেনে সমৃদ্ধ হতে পারবো।

    অভিমতঃ

    বইটির শর্ট প্রিভিউ পাঠ করে আমার খুব উপলব্ধি হয়েছে এই মহান ব্যক্তিত্ব কে নিয়ে আমাদের সমাজে প্রচলিত অনেক ধারনাই ভুল। যাতে রয়েছে সরাসরি শিরক,বেদায়াত,কুফরি ও কবিরা গুনাহ। সে সব ভুল থেকে বের হয়ে সত্যের কাছে পৌছাতে এই বইটি অনেক সাহায্যকারী হবে।
    যাদের ওলি, মাশায়িখ ও সুফিদর্শন বিষয়ে ধারনা সুস্পষ্ট না তারাও এই বইটি থেকে একটা স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে। তাদের ভেতরের সমস্ত বিভ্রান্তি মিটে যাবে।

    বইটি মোট ১২ টি অধ্যায়ে সন্নিবেশিত। প্রতিটি অধ্যায়ের সূচি দেখে মনে হয়েছে অনেক জানার আছে। আর অতীত মহান ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভুলভাবে না জানলে আমাদের নতুন প্রজন্মদের কাদের গল্প বলবো? এই মনীষাদের অতীত সৌর্য বীর্য জেনেই নতুন প্রজন্ম বীর হয়ে বেড়ে উঠবে হবে ঈমানের বলে বলিয়ান। তাদের আর কল্প কাহীনিতে আটকে থাকতে হবেনা।

    প্রসঙ্গকথা পড়েই পুরো বইটি পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। লেখক দীর্ঘদিন গবেষণা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে একটি অসাধারণ উপহার আমাদের জন্য নিয়ে এসেছেন। যারা ইতিহাস জানতে পছন্দ করেন তাদের জন্য বইটি অবশ্যই সুখ পাঠ্য হবে বলে আশা করিছি।
    বইপ্রেমিক প্রত্যেককেই বইটি পড়ার সাদর নিমন্ত্রন রইলো।

    2 out of 2 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No