মেন্যু
reshmi rumal andolon

রেশমি রুমাল আন্দোলন

রাব্বুল আলামিনের প্রিয়তম সৃষ্টি মানুষ পৃথিবীতে নিয়ে আসে স্বাধীনতা। কিন্তু পরবর্তীতে আলস্য, ভোগ-বিলাস, আত্মপরিচয়, ও জিহাদ-বিমুখতার দরুণ নিজেদের জীবনে টেনে আনে পরাধীনতা। পরাধীনতা মানবজীবনের জন্য ভয়ঙ্কর এক অভিশাপ। এটা একধরনের... আরো পড়ুন
পরিমাণ

210  300 (30% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

6 রিভিউ এবং রেটিং - রেশমি রুমাল আন্দোলন

5.0
Based on 6 reviews
5 star
100%
4 star
0%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    সাদ্দাম হোসেন:

    #কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা

    রেশমি রুমাল আন্দোলন
    সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.)
    ____________________________________©

    🔘 লেখক পরিচিতিঃ

    সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রহিমাহুল্লাহ ভারতবর্ষের একজন প্রখ্যাত শায়খুল হাদিস ও সম্মাননীয় দেওবন্দ আলেম। সাম্রাজ্যবাদী কলোনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষকরে ‘রেশমি রুমাল আন্দোলনের’ সক্রিয় বিপ্লবী ছিলেন তিনি। এবং আন্দোলনের অগ্রসেনা শায়খুল হিন্দের (রহ.) সাথে মদিনায় গ্রেপ্তার হয়ে তৎকালীন মিশরের একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন। তবে তিনি ভারত-পাকিস্তান তথা কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ইস্যুতে কংগ্রেস-পন্থী ছিল এবং অখণ্ড ভারতকে সমর্থন দিয়েছিলেন। ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ সায়্যিদ হুসইন আহমদ মাদানির মৌলিক একটি গ্রন্থ। ১৯৫৭ ঈসায়ী সনে তিনি এই নশ্বর পৃথিবী ত্যাগ করেন।

    🔘 বইতে পরতে পরতেঃ

    প্রচ্ছদে দৃষ্টি রাখলে দেখা যায় ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’। হ্যাঁ, এটি ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষে ওলামাদের তৃতীয় আজাদী আন্দোলন। যদিও এটি ইতিহাসের বাহিরে থেকে গেছে, তেমনটা গ্রন্থবদ্ধ হয়নি বলে আমাদের অজানা রয়ে গেছে। উক্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান (রহ.)। সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি পুরো গ্রন্থে এই রেশমি রুমাল আন্দোলন নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন। কিভাবে তার সূত্রপাত, ব্রিটিশরা কিভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের স্ট্রিম-রোলার চালিয়েছে, রেশমি রুমাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নিবেদিত কারা, উসমানী খেলাফতের তৎকালীন অবস্থা, বিভিন্ন দেশের অবস্থানসহ কেন রেশমি রুমাল আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হাজেরান পাঠকের কাছে হাজির করেছেন প্রাজ্ঞজন লেখক।

    🔘 বইটির প্রয়োজনীয়তাঃ

    (১) ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন ওলামাদের ভূমিকা এবং ওলামায়ে দেওবন্দের সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে বইটি ভূমিকা রাখবে।

    (২) গ্রন্থটি নিঃসন্দেহে ইতিহাসের পেছনে পরে থাকা ‘রেশমি রুমাল আন্দোলনের’ পূর্ণাঙ্গ পাঠ।

    (৩) মুসলমানদের প্রতি ব্রিটিশের যে নির্যাতন তার একটি মিনি দলিল হিসেবে বইটি অবশ্যই পাঠ্য।

    (৪) একটি পূর্ণ আন্দোলনের এপাশ-ওপাশ বিশ্লেষণ এবং ব্যর্থ হওয়ার কারণসমূহ পুনরায় যে কোনো আন্দোলন সম্পর্কে রিথিংক করতে বইটি সহায়ক।

    🔘 আরো যা যা ভালোঃ
    ১. চমৎকার, ঝকঝকে প্রচ্ছদ।
    ২. সাবলীল ও সহজবোধ্য অনুবাদ।
    ৩. মজবুত বাঁধাই ও উন্নতমানের কাগজ।
    ৪. মজবুত হার্ড কভার এবং
    ৫. অজানা একটি ইতিহাসের মুগ্ধকর পাঠ।

    🔘 বইটি কারা পড়বেন এবং কেন?

    বইটি ছোট-বড়ো সকলে পড়ার মতো। বিশেষভাবে ইতিহাস পিপাসুদের জন্য মৌলিক একটি বই। বইটি পড়ার গুরুত্ববহ দিক হচ্ছে, ভারতবর্ষের আযাদী আন্দোলনের একটি ধাপ সম্পর্কে জানা। অনেকেই আছেন বা আমাদের শিশু-কিশোর-তরুণরা আছে যারা ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ বলে কিছুই জানে না, বরং শোনেইনি। অথচ, উক্ত আন্দোলন ব্যর্থ না-হলে ভারতের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো নিশ্চিত। বইটি পাঠে অজানার এই খরা শেষ হবে বলে বিশ্বাস। সবাইকে বইটি পড়ার দাওয়াত।

    🔘 এক নজরে বইটিঃ
    বইঃ রেশমি রুমাল আন্দোলন
    লেখকঃ সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি
    অনুবাদকঃ আবদুর রশীদ তারাপাশী
    প্রকাশনঃ কালান্তর প্রকাশনী
    মূল্যঃ ২৮০/-
    পৃষ্ঠাঃ ১৬৭

    সর্বোপরি, লেখক, অনুবাদক, প্রকাশক সকলের জন্য অন্তর থেকে দো’য়া ও ভালোবাসা। আর কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা সুন্দর এই রিভিউ প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য।

    জাজাকাল্লাহ খাইরান।

    ____________________________________©
    সাদ্দাম হোসেন।
    চকরিয়া, কক্সবাজার।

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    Fabiha binte kashem:

    বই : রেশমি রুমাল আন্দোলন
    মূল : সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রাহ.
    সংকলক : মাওলানা আবদুর রহমান
    অনুবাদ : আবদুর রশীদ তারাপাশী
    পৃষ্ঠা :১৯১
    মূল্য : ২৩০ টাকা
    প্রথম সংস্করণ : নভেম্বর ২০১৭
    দ্বিতীয় সংস্করণ : জুলাই ২০১৮
    প্রকাশনায় : কালান্তর প্রকাশনী

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
    ইতিহাস একটি দ্বিমুখী আয়না – কখনও বর্ণনা করে আমাদের অগ্রজদের বীরত্বগাঁথা,আবার কখনও কষ্টময় অতীতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় আমাদেরকে।কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে প্রশ্ন এটাই দাঁড়ায় আমরা আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে কতটা ওয়াকিফহাল। চলুন,আজ তাহলে ঘুরে আসি ইতিহাসের এমনি এক দুর্দান্ত অধ্যায় থেকে। যে অধ্যায়ের নাম “রেশমি রুমাল আন্দোলন”

    ⏩সংক্ষেপে বইয়ের বিষয়বস্তু : আমরা সাধারণত মনে করি আলেম সমাজের কাজ কেবলই দ্বীনি মানুষকে দ্বীনি ইলম দান করা। এছাড়া রাজনীতি,সমাজনীতি,শিক্ষার উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের কোন ভূমিকা নেই। কিন্তু মুসলিম ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটাই প্রমাণিত হয় যে,নিজ কওমের উন্নয়নে সকল ক্ষেত্রে আলেমদের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বারবার এই আলেম সমাজই ছিলেন সম্মুখ সমরে। আবদুর রশীদ তারাপাশী অনূদিত “রেশমি রুমাল আন্দোলন” বইটিতেও আমরা তার প্রমাণ পাই। বইটির কেন্দ্রীয় বিষয় রেশমি রুমাল আন্দোলন ।বিভিন্ন প্রক্ষাপট এবং উপমহাদেশের স্বাধীনতার অন্যান্য বিভিন্ন আন্দোলনের বর্ণনার মধ্য দিয়ে বইটি এগিয়ে গেছে কেন্দ্রীয় ঘটনার দিকে। ১৮৫৭ সালের ব্যর্থ বিপ্লবের পর পুরো হিন্দুস্তান জুড়ে চলতে থাকে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের হিংস্র নির্যাতন- নিপীড়ন,বর্বরতা,ডাকাতি,লুটতরাজ। একদিকে দেউলিয়াত্ব ওপর দিকে গুম,খুন,হত্যায় পরিবেশ আরও বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিলো। কোন হিন্দুস্তানির ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা ছিলো না। দাঁড়ি – টুপিওয়ালা মানুষ দেখলেই পাখির মত গুলি করে মারা হতো। এসব দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য বিপ্লবের পরিকল্পনা করেন শাইখুল হিন্দ রহ.(রেশমি রুমাল আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা)। ১৯০৫ থেকে ১৯১৪ পর্যন্ত সুদীর্ঘ নয় বছর বিপ্লবের পূর্ব প্রস্তুতি চলে।বিল্পবী কমিটআমাদের করা হয়েছিলো উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দে। পরবর্তীতে তা দিল্লিতে সরিয়ে নেয়া হয় এবং নাম পরিবর্তন করা হয়। এই বিপ্লবের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনও আদায় করা হয়। সকলের সম্মতিক্রমে বিপ্লবের তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছিলো। চূড়ান্ত পরিকল্পনাটি ছিলো এমন’ উক্ত তারিখে তৎকালীন পরাক্রমশালী মুসলিম শক্তি তুরস্ক তার বাহিনী নিয়ে আফগান হয়ে হিন্দুস্তানে ব্রিটিশদের আক্রমণের জন্য প্রবেশ করবে। এদিকে অভ্যন্তরীণ বিপ্লবীরাও তাদের সাথে যোগদান করবে। ‘। তুর্কিদের সাথে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর শাইখুল হিন্দ রহ. চলে গেলেন হজ্জে। সেখানে অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাত ও সমর্থন আদায়ও যাত্রার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো। এদিকে অসমর্থিত সূত্রে বিপ্লবের কথা জেনে যায় ব্রিটিশ সরকার। ধরা পড়ে সেই ‘রেশমি রুমাল’,যে রুমালে লিপিবদ্ধ ছিলো যুদ্ধের চূড়ান্ত পরিকল্পনার স্বাক্ষরিত পত্র।এই রুমালের নামেই সম্ভাবনাময় এই আন্দোলনের নাম হয় ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’।দুর্বলচেতা আন্দোলনের সদস্যদের কারণেই রুমালটি ফাঁস হয়ে যায়।ব্যাপক ধর – পাকড় শুরু হয় আলেম এবং বিপ্লবীদের। শাইখুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদ হাসান আফিন্দি রহ. কে গ্রেফতার করা হয় মদীনা থেকে। তবে তাঁর চমৎকার ব্যস্থাপনা ও দূরদর্শিতার কারণেই রেশমি রুমাল ধরা পড়ার পরও অহেতুক প্রাণনাশ এড়ানো সম্ভব হয়েছিলো।এর পরবর্তী অবস্থা ছিলো আরও অরাজক এবং ভয়াবহ।
    ⏩যা যা শিক্ষণীয় : ইতিহাসের শিক্ষা হলো ‘মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না’। কিন্তু এই ধারা আমাদের পাল্টে দেওয়া উচিত। বক্ষ্যমান বইটি আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা দিয়ে যায় –
    * আলেমগণ মুসলিম সমাজের প্রাণ । তাঁরা জেগে উঠলে যে কোন লড়াই সাহসিকতার সথে করা সম্ভব।
    * আলেমগণ আল্লাহর পক্ষ হতে আমাদের জন্য ইমাম। তাঁদেরকে সর্বদা অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে এবং সকল বিষয়ে সচেতন জ্ঞান রাখতে হবে।
    * দুর্বলচেতা মানুষকে কখনও আন্দোলনের মত গম্ভীর বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা ঠিক নয়।
    * গাদ্দার ও দুর্বলচেতা মানুষরাই যে কোন আন্দোলনে পরাজিত হবার অন্যতম প্রধান কারণ।
    *নেতৃবৃন্দের উদার মন -মানসিকতার কারণে অনেক সময় তারা শত্রু – মিত্র না চিনে আন্দোলনের মত স্পর্ষকাতর বিষয়ে সকলকে ঢুকিয়ে ফেলেন। এটা পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ।
    * ধর্মের ব্যবধান ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি বিরাট ব্যধান,বিশেষ করে মুসলিমদের সাথে। ইতিহাস বারবার আমাদের সেটাই মোটা দাগে দেখিয়ে দিয়ে যায়।

    ⏩ “রেশমি রুমাল আন্দোলন” একটি অসাধারণ বই। সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রাহ . এর রচনা এবং প্রচারবিমুখ – প্রতিভাবান অনুবাদক মাওলানা আবদির রশীদ তারাপাশীর সৃজনীস্পর্শে বইটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। বইটি পড়ে মনে হয়েছে আমি নিমিষেই হারিয়ে গিয়েছি তৎকালীন হিন্দুস্থানে। প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছি এক রোমাঞ্চকর এ্যাডভেঞ্চার।

    ⏩উপসংহারে এটুকু না বললেই নয় যারা এখনও আজাদির স্বপ্ন দেখেন এবং আমাদের হারিয়ে যাওয়া মুসলিম গৌরবগাঁথা দিনগুলো ফিরিয়ে আনতে চান ,তাদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত।
    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    Nazim Mahmud:

    #কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা

    ||রিভিউ ০১||

    আমার পাঠ:-

    ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ আদ্যোপান্ত পাঠ করলাম। মূল: সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রাহ.। সংকলক: মাওলানা আব্দুর রহমান রাহ.। অনুবাদ করেছেন, মাওলানা আব্দুর রশীদ তারাপাশী। পাঠকের হাতে পৌঁছে দিতে অনন্য ভূমিকা রেখেছে কালান্তর প্রকাশনী। অনিন্দ্য সুন্দর একটি বই। মনেই হয়নি আমি কোন ইতিহাস পাঠ করছি, কারণ পৃষ্ঠার ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে তত্ত্ব ও তথ্য সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাহিত্যের খোরাক।

    আমি মনে করি, জ্ঞানী মহলে বইটি আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়া নিষ্প্রয়োজন, কিন্তু শোকের কথা হলো, বাংলা ভাষায় এ বিষয়ের উপর উল্লেখযোগ্য তেমন কোন গ্রন্থ নেই বললেই চলে। তাছাড়া নতুন প্রজন্ম অতীতের অনেক সংগ্রামী মনীষীর নাম জানলেও তাদের ঐতিহ্যবাহী সংগ্রামী ধারা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারণা রাখে না, এ বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে প্রকাশের স্বীয় প্রবেশ প্রণোদনায়। “ভারত উপমহাদেশ ব্রিটিশের হাতে যাবার পূর্বে শাসকশ্রেণিকে সাবধান করেছিলেন আমাদেরই পূর্বসূরিরা । অতঃপর পরাধীন উপমহাদেশেকে ‘দারুল হরব’ ঘোষণা করেছিলেন আমাদেরই পূর্বসূরিরা। রক্ত দিয়ে দেশকে আজাদির দ্বার প্রান্তেও নিয়েছিলেন আমাদেরই পূর্বসূরিরা । কিন্তু নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে, আমারা আমাদের সেই গৌরবগাঁথা জানি না। যার ফলে আমাদের অর্জন দিয়ে আজ চেতনার ব্যবসা করে যাচ্ছে চেতনার ফেরিওয়ালা।”
    (প্রকাশক)

    আসল কথা হল, প্রচলিত যে ইতিহাস গ্রন্থ রয়েছে ,সেগুলো যেহেতু ইসলাম বিদ্বেষী প্রশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের দেয়া তথ্য আহরণ করে রচিত, তাই সেসব গ্রন্থে আলিম উলামাদের কর্মততপরতার ইতিহাস স্থান পায়নি। অথচ আলিম উলামাগণ এদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সীমাহীন ত্যাগ ও কোরবানী স্বীকার করেছেন। স্বাধীনতার সপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন পরাধীনতার অক্টোপাসে আবদ্ধ মৃত্যুপ্রায় এদেশের মানুষকে। ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারে তাদের রয়েছে অক্লান্ত সাধনা ও শ্রম ।ইসলামী আদর্শকে বাতিলের নগ্ন থাবা থেকে রক্ষা করার জন্য জীবন বাজি রেখে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন, ছুটে ফিরেছেন মাঠে ময়দানে ।তাদের আত্মাত্যাগের ফলেই বৃটিশ কবলিত এ দেশ পুনরায় স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে ।ইসলামী আদর্শ সজীবতা পেয়েছে এ ভূখণ্ডে।ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক পরিবেশ গড়ে উঠেছে উপমহাদেশ জুড়ে। কিন্তু দুঃখনীয় হলেও সত্য যে, ইতিহাসের এ নিরব নির্মাতাদের ইতিহাস কেউ রচনা করেনি। বরং আলোচ্য গ্রন্থের সংকলকের ভাষ্যানুযায়ী–“এ দাবি খুব একটা
    অযথার্থ হবে না যে,১৮৫৭ সালের মহান বিপ্লবের নিগূঢ অনেক সত্য আজও ইতিহাসের ভাঁজে ভাঁজে অনুদ্ধার পড়ে রয়েছে “।

    কালান্তর প্রকাশনী ‘রেশমি রুমাল’ আন্দোলন শীর্ষক এ গ্রন্থ প্রকাশ করে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে, ইতিহাসকে তুলে ধরেছে প্রচলিত ইতিহাসের পাশাপাশি একটি ভিন্ন ধারায়। যা দেওবন্দী উলামায়ে কেরামের ঐতিহ্যগত ধারা, বৃটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে তাদের চাঞ্চল্যকর কর্মততপরতা এবং তাদের অবদানের উপর একটি তথ্যবহুল গবেষণামূলক গ্রন্থ। আমি আশা করি আমাদের সাধারণ শিক্ষিতরা সহ সর্বস্তরের পাঠকরা তা থেকে পাবে ইতিহাসের এক অজানা এক স্বাদ। উপভোগ করবে। আর ইতিহাস সম্পর্কে অনুপ্রাণিত হবে নতুন প্রজন্ম। পরিশেষে পাঠকদের বলব, বইটি কিনুন, পড়ুন, জানুন। মহান প্রতিপালক আমাদের সবাই কে উত্তম বিনিময় দান করুন।

    সংক্ষিপ্ত পরিচিত

    বই: রেশমি রুমাল আন্দোলন।
    মূল: সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রাহ.।
    সংকলক: মাওলানা আব্দুর রহমান রাহ.।
    অনুবাদ: আব্দুর রশীদ তারাপাশী
    প্রকাশক: কালান্তর প্রকাশনী।
    প্রচ্ছদ: কাজী সাফওয়ান
    প্রথম সংস্করণ: নভেম্বর ২০১৭
    দ্বিতীয় সংস্করণ: জুলাই ২০১৮
    পৃষ্ঠা: ১৯১
    মুদ্রিত মূল্য: ২৩০

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    Rayhan Ahmed:

    ভুমিক
    ———
    ইসলামি বিষয়ক জানার জন্য আমরা, কোরআন , হাদীস, এবং তারিখ তথা ইতিহাস পাঠ করি।
    পাঠক তো অনেক রকমের হয় কিন্তুু ইতিহাসের পাঠক তুলনা মূলক কম।
    ইতিহাস হলো পিছনের সফলতা বিফলতার প্রতিচ্ছবি , ও সামনে অগ্রসর হওয়ার প্রেরণা।আমরা অনেকেই কিঞ্চিত জানি যে আমাদের ভারত উপমহাদেশ আমাদের পুর্বসুরী উলামায়ে দেওবন্দ ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন তন্মধ্যে প্রথম বিপ্লবের সুচনা করেন হযরত শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলবী রাহঃ । দ্বিতীয়তো খলিফাতুল মুসলিমিন হযরত সায়্যিদ আহমদ শহিদ রাহঃ বালাকোটের ময়দানে।
    আযাদির তৃতীয় বিপ্লব যা রেশমী রুমাল আন্দোলন নামে খ্যাত ।
    “রেশমী রুমাল আন্দোলন” বইটি যা পাঠককে আমাদের পুর্বসুরী উলামায়ে কেরামদের অজানা তথ্য দিবে।

    বইটি কী নিয়ে লিখা ?
    ——————————————
    আমাদের পুর্বসুরী উলামায়ে দেওবন্দের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে লিখা ।
    ইতিহাস কথা বলে, কিন্তু সমাজে ইতিহাসের কিছু দুর্নাম থাকার কারণেই বোধহয় মানুষ ইতিহাসের কথা শুনতে নারাজ।
    কিন্তু এটা আমাদের নিজেদের পুর্বসুরীদের আত্মত্যাগ ,যা আমাদের জন্য জানা আবশ্যক।

    কী কী পাবেন বইতে ?
    ——————––––––––
    ১.রেশমী রুমাল আন্দোলন কেন নামকরণ করা হল?

    ২. আমাদের পুর্বসুরী উলামায়ে কেরামদের আত্মত্যাগ ,বিশেষ করে হযরত শায়খুল হিন্দ রাহঃ ও হযরত মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্দি রাহঃ যে মাস্টার প্লান করেছিলেন।

    ৩. কিছু নিজেদের মুনাফিকদের কারণে গৌরবময় বিপ্লব পুরোপুরি সফলতার মুখ দেখেনি,এবং ঐ মুনাফিকেদের পরিচয়।

    যেভাবে সাজানো হয়েছে বইটি কে।
    –––––––––––––––––––––––––
    বইটিকে তিনটি অধ্যায়ে ও দশটি অভিপ্রায়ে সাজানো হয়েছে,

    প্রথম অধ্যায়ে-বিপ্লবের কারণ সম্পর্কীয় আলোচনা।

    দ্বিতীয় অধ্যায়ে _বিপ্লবের বিস্তারিত ইতিহাস, এর ফাঁকে ফাঁকে বিপ্লবের স্থপতিসহ নিবেদিতপ্রাণ বিপ্লবী মুজাহিদের আলোচনা।

    তৃতীয় অধ্যায়ে -বিপ্লবটি ব্যর্থ হবার কারণসমুহ এবং দেশ ও জাতির গাদ্দারদের আলোচনা।

    দশটি অভিপ্রায় গুলো সংকিপ্ত শিরোনামে উল্লেখ করছি

    ১. দেশের ভিতরে হিন্দু – মুসলিম সম্প্রীতি স্থাপন করা এবং তাদেরকে একই প্লাটফরমে নিয়ে আসা

    ২. পুরনো শিক্ষাব্যবস্থার অধীনে সুশিক্ষিত আলেমসমাজ এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক গ্রাজুয়েটদের একত্র করা,
    তাদের চিন্তাধারাকে সমন্বিত করার প্রয়াস চালানাে।

    ৩ . আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথা জাপানি , আমেরিকান , চীনা , বার্মিজ , ফরাসি , ইন্দোনেশিয়ান এবং জার্মানিদের নৈতিক সমর্থন আদায় করা ।

    ৪. শত্রুর উপর আক্রমণ পরিচালনার জন্যে একটি নকশা তৈরি করা এবং সে সঙ্গে শক্রশিবিরে গােয়েন্দা তৎপরতা চালানাের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া ।

    ৫. বিপ্লবােত্তর সরকারের খসড়া তৈরি করা । এতে হিন্দু – মুসলিম উভয় সম্প্রদায়কে সমঅধিকার প্রদান করা ।

    ৬.দেশের অভ্যন্তরে বিদ্রোহের ঘাঁটি তৈরি করা এবং যুবকদেরকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ভর্তি করিয়ে শক্তি সংহত করার ব্যবস্থা নেয়া ।

    ৭.বহির্বিশ্বেও স্বেচ্ছাসেবকদের ভর্তি করানাের জন্যে আঙ্কারা , কাবুল , ইস্তাম্বুল , বার্লিন এবং কন্সটান্টিনােপলে কেন্দ্র গঠন করা ।

    ৮.অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জার্মানিকে তুর্কির সহকারী ও মিত্র বানানাে । রাশিয়াকেও মিত্র বানানাের প্রয়াস চালানাে

    ৯. কিলাত , কোয়েটা , খাইবার গিরিপথ , এবং উগি নামক স্থানগুলােকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে নির্ধারণ করা এবং আফগান সরকারের কাছ থেকে তাদের রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি আদায় করা ।

    ১০ . শায়খুল হিন্দ রাহ , কর্তৃক আনােয়ার পাশা ও জামাল পাশার সমর্থন আদায় করা এবং তাদের কাছ থেকে আক্রমণের সুনির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে আসা ।

    ভালোলাগা -খারাপলাগা-ঃ
    ––––––––––––––––––––
    বইটি অত্যান্ত ভালো লেগেছে, পড়তে পড়তে ফজর হয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ এত তথ্যবহুল বই যা একরাতেই শেষ না করে পারলাম না।
    বইয়ে দু, একটা জায়গায় ভুল হয়েছে ইংরেজী সাল উল্লেখে এছাড়া আর কোন কিছু না।

    মন্তব্যঃ-
    —————–
    মানুষ যখন নিজের পরিচয় জানেনা তখন হিনমান্যতায় ভুগে । সাধরণত আমরা সমাজে দেখি যারা নিজেদের বাপ দাদাদের পরিচয় জানেনা আমরা তাদের কে ধমকের সুরে গালি দেই
    আমরা পুর্বসুরীদের আত্মত্যাগ ও পরিচিতি জানতে হবে সে অনুযায়ী চলতে ।
    ইমাম মালিক রাহঃ বলেন
    “পূর্ববর্তীদের অনুসরণে রয়েছে ,
    পরবর্তীদের সফলতা।

    ইতিহাস হচ্ছে দ্বিমুখী আয়না, এর এক পিঠে দেখা যায় গৌরব কিংবা বেদনার।
    অপর পৃষ্ঠায় দেখা যায় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের মহাসড়ক। ‘রেশমী রুমাল আন্দোলন ’ আমাদের পুর্বসুরী উলামায়ে দেওবন্দের তেমনি এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। অথচ আমাদের ৯৫% লোক বোধহয় জানি না সেই গৌরবময় ইতিহাস।
    তাই আমাদের উচিৎ আমাদের ইতিহাস জানা।
    আমাদের জন্য আবশ্যক আকাবিরদের আত্মত্যাগ জানা।
    সবাজ জন্য বইটি পড়া উচিত।

    1 out of 1 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 5 out of 5

    tpssaddam9:

    রিভিউ-

    বই: রেশমি রুমাল আন্দোলন
    লেখক: সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি
    অনুবাদ: আবদুর রশীদ তারাপাশী
    প্রকাশনী: কালান্তর প্রকাশনী
    মূল্য: ২৮০/-
    পৃষ্ঠা: ১৬৭

    লেখক পরিচিতি

    সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি ভারতবর্ষের একজন সম্মাননীয় দেওবন্দ আলেম। তাঁর উপাধি শায়খুল হাদিস। সাম্রাজ্যবাদী কলোনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষকরে ‘রেশমি রুমাল আন্দোলনের’ সক্রিয় বিপ্লবী ছিলেন তিনি। এবং আন্দোলনের অগ্রসেনা শায়খুল হিন্দের (রহ.) সাথে মদিনায় গ্রেপ্তার হয়ে তৎকালীন মিশরের একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন। তবে, তিনি ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে কংগ্রেস-পন্থী ছিল এবং অখণ্ড ভারতকে সমর্থন দিয়েছিলেন। ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ সায়্যিদ আহমদ মাদানির মৌলিক একটি গ্রন্থ। ১৯৫৭ ঈসায়ী সনে তিনি এই নশ্বর পৃথিবী ত্যাগ করেন।

    সার-সংক্ষেপ

    প্রচ্ছদে দৃষ্টি রাখলে দেখা যায় ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’। হ্যাঁ, এটি ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষে ওলামাদের তৃতীয় আজাদী আন্দোলন। যদিও এটি ইতিহাসের বাহিরে থেকে গেছে, তেমনটা গ্রন্থবদ্ধ হয়নি বলে আমাদের অজানা রয়ে গেছে। উক্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান (রহ.)।

    সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি পুরো গ্রন্থে এই রেশমি রুমাল আন্দোলন নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন। কিভাবে তার সূত্রপাত, ব্রিটিশরা কিভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের স্ট্রিম-রোলার চালিয়েছে, রেশমি রুমাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নিবেদিত কারা, উসমানী খেলাফতের তৎকালীন অবস্থা, বিভিন্ন দেশের অবস্থানসহ কেন রেশমি রুমাল আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হাজেরান পাঠকের কাছে হাজির করেছেন প্রাজ্ঞজন লেখক।

    আমার যা যা ভালো লেগেছে

    ১. চমৎকার, ঝকঝকে প্রচ্ছদ।
    ২. সাবলীল ও সহজবোধ্য অনুবাদ।
    ৩. মজবুত বাঁধাই ও উন্নতমানের কাগজ।
    ৪. মজবুত হার্ড কভার এবং
    ৫. অজানা একটি ইতিহাসের মুগ্ধকর পাঠ।

    গ্রন্থটি কারা পড়বেন এবং কেন?

    গ্রন্থটি ছোট-বড়ো সকলে পড়ার মতো। বিশেষভাবে ইতিহাস পিপাসুদের জন্য মৌলিক একটি গ্রন্থ। গ্রন্থটি পড়ার গুরুত্ববহ দিক হচ্ছে, ভারতবর্ষের আযাদী আন্দোলনের একটি ধাপ সম্পর্কে জানা। অনেকেই আছেন বা আমাদের শিশু-কিশোর-তরুণরা আছে যারা ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ বলে কিছুই জানে না, বরং শোনেইনি। অথচ, উক্ত আন্দোলন ব্যর্থ না-হলে ভারতের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো নিশ্চিত। গ্রন্থটি পাঠে অজানার এই খরা শেষ হবে বলে বিশ্বাস। সবাইকে গ্রন্থটি পড়ার দাওয়াত।

    #সাদ্দাম_হোসেন।

    Was this review helpful to you?
    Yes
    No