মেন্যু
quran sunnahor aloke islami akida

কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা

আমাদের বিশ্বাস যে আকীদার ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহর হুবুহ অনুসরণ এবং সাহাবী, তাবেয়ী, প্রসিদ্ধ চার ইমামের মতের বাইরে না যাওয়াই নাজাত ও প্রশান্তির পথ। প্রথম তিন মুবারাক যুগে যেসকল হাদিস... আরো পড়ুন
পরিমাণ

385  550 (30% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

11 রিভিউ এবং রেটিং - কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা

5.0
Based on 11 reviews
5 star
100%
4 star
0%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    amziad.bd:

    ইমান ও আকীদা বিষয়ক সুন্দর একটি বই।
    11 out of 12 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    ফারজানা আশরাফী:

    নিখাদ ঈমাণ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। আমরা আমাদের আমল-ইবাদাত শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার নিমিত্তে করলেও অজ্ঞতা আর ভ্রান্ত বিশ্বাসের কবলে পড়ে অনেক সময়ই লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়ি। ঈমাণে খাদ ঢুকে পড়ে। ঈমাণের আরকান তথা আকীদা সম্বন্ধে সুস্পষ্ট জ্ঞান না থাকায় এমনটা হয়ে থাকে। আমাদেরকে এহেন পরিস্থিতি থেকে উত্তরনে সাহায্য করার নিয়তে ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. লিখেছিলেন ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ বইটি।

    বই বিন্যাস:

    ৬৪০ পৃষ্ঠার এই বইটি ৬টি অধ্যায়ে বিস্তৃত। মূল আলোচনায় প্রবেশের পূর্বে প্রথমেই সুন্দর একটি ভূমিকার মাধ্যমে শাইখ (রহ.) আকীদা সম্পর্কে জানার গুরুত্ব, প্রয়োজনীতা এবং নিজের অনুসরণীয় আকীদা সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছেন। তারপর মূল আলোচনা এগিয়েছে….
    প্রথম অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে আকীদা ও প্রাসঙ্গিক পরিভাষাগুলির পরিচিতি, ইসলামী আকীদার উৎস, গুরুত্ব এবং আকীদা বিষয়ক গ্রন্থাবলী সম্পর্কে।

    দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছে তাওহীদ ও তার প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা।

    তৃতীয় অধ্যায়ে বলা হয়েছে রাসূল সা. সহ অন্যান্য নবী-রাসূল তথা রিসালাতের ওপর ঈমাণ আনা সম্বন্ধে।

    চতুর্থ অধ্যায় বিস্তৃত আরকানুল ঈমাণ তথা ঈমাণে বিভিন্ন স্তম্ভ যেমন: ফেরেশতা, আসমানী কিতাব, আখিরাত, তাকদীর ইত্যাদির সমন্বয়ে।

    পঞ্চম অধ্যায়ে আছে আকীদা বিষয়ে নানা অবিশ্বাস ও ভ্রান্তি সম্পর্কে আলোচনা।

    সবশেষে, ষষ্ঠ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে আকীদা বিষয়ে উদ্ভাবিত বিদআত ও বিদআত ভিত্তিক ফিরকা, দল, উপদল এবং আহলুস সুন্নাত ও জামায়াতের পরিচিতি ও মূলনীতি বিষয়ে।

    গুরুত্ব অনুসারে আলোচনা গুলোকে বিভিন্ন শিরোনাম,উপ-শিরোনামে বিন্যাস করা হয়েছে।

    পাঠ প্রতিক্রিয়া:

    শাইখের লেখার ভঙ্গিও তাঁর কথার মতই সহজ-সরল। সহজেই হৃদয়ঙ্গম করা যায়।
    ভাষার প্রাঞ্জলতা, সংক্ষিপ্ত অথচ নিখুঁত ডিটেইলিং এবং প্রচুর রেফারেন্স তাঁর লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য। আর যেহেতু বইটা একেবারেই সাধারণ মুসলিমদের উদ্দেশ্যে লিখিত তাই প্রত্যেকটা বিষয়ে স্পষ্ট এবং বিস্তৃত অথচ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।
    আকীদার ত্বত্তীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি আমাদের মুসলিম সমাজে সুঁই হয়ে ঢোকা শির্ক এবং বিদআত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভ্রান্তিকর মতবাদ এবং ফিরকাগুলো সম্পর্কে জানাও আমাদের ঈমাণ রক্ষার জন্য ভীষণভাবে জরূরী। এটাও শাইখ খুব যত্নের সাথেই আলোচনা করেছেন।

    যেহেতু আমার প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় শিক্ষা নেই তাই এই বইয়ের ত্রুটি বের করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে অন্য আলীমদের মতানুসারে এটুকু বলতে পারি, এই বইটা পড়া এদেশের সকল মুসলিমের জন্য ভীষণ জরুরী। ভ্রান্তি এবং অজ্ঞতা থেকে নিজের ঈমাণকে সুরক্ষা দিতে হলে আকীদা সম্পর্কে জানতেই হবে। আর তার জন্য ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ চমৎকার একটি সহায়িকা।

    14 out of 14 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    মুহাম্মাদ রুবেল মিয়া:

    আমরা মুসলমান। কিন্তু আমরা কি আদৌ জানি আমাদের আকিদা কি? আমাদের বেশিরভাগই জানি না আমাদের আকিদা, আমাদের বিশ্বাস। যে আকিদার কারণে আমরা নিজেদের মুসলিম হিসেবে দাবি করছি, সে আকিদা সম্পর্কেই আমরা অজ্ঞ!
    আকিদা মানে ইমান। ইমান সম্পর্কে পড়ার বিষয়কে আকিদা বলে। ইসলামের প্রথম যুগে অবশ্য এই নামে ছিলো না। খালাফ আলিমগণ এই নাম ব্যবহার করেছেন।

    আমাদের অর্থসম্পদ, ব্যবসাপাতি সম্পর্কে আমরা সবাই সচেতন, সন্তানের দুনিয়াবি শিক্ষা, ভালো খাওয়া-পড়ার প্রতি সবাই সচেতন, কিন্তু আকিদার ব্যাপারে কয়জন সচেতন?

    যদি আমাদের আকিদা সঠিক না হয়, কুরআন এবং সুন্নাহ মোতাবেক না হয়, তাহলে আমাদের সালাত, আমাদের সাওম, হাজ, দান-খয়রাত আমাদের কোনো কাজেই আসবে না।
    তাই আমাদেরকে আমাদের আকিদা সম্পর্কে জানতে হবে। জীবন-যাপনে তার প্রয়োগ করতে হবে এবং সঠিক আকিদার দাওয়াত দিতে হবে।
    আর সেজন্য দারুণ একটি বই হলো “কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইসলামি আকিদা”। বইটির লেখক প্রখ্যাত আলিম, সমাজ সংস্কারক এবং দায়ি ডক্টর খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ.।

    বইয়ে যা আছে:
    ” কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামি আকিদা” বইটিতে কুরআন, সুন্নাহ এবং সালাফদের লিখনীর আলোকে আমাদের আকিদা আলোচনা করা হয়েছে। বইটিতে আল্লাহ তাআ’লা থেকে শুরু করে পুনরুত্থান পর্যন্ত আকিদার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। লেখক আলোচনার ক্ষেত্রে তাঁর নিজস্ব মত চাপিয়ে দেননি বরং সালাফদের কিতাবাদির দলিল দিয়ে সঠিক আকিদা বর্ণনা করেছেন। বইটির লেখক বইয়ে সালাফদের প্রায় একশত আশিটির অধিক গ্রন্থ থেকে রেফারেন্স দিয়েছেন! ফলে বইটি যে অনেকটাই বিশুদ্ধ তা বলাই যায়।

    পাঠপ্রতিক্রিয়া:
    আলহামদুলিল্লাহ।
    বইটি পড়ে আমি খুবই উপকৃত হয়েছি। আকিদার কিতাব এর আগেও পড়েছি, তবে ভাষা ছিলো খুবই কঠিন ও বাক্য ছিলো জটিল।
    কিন্তু এই বইটিতে খুবই সহজ ভাষায় এবং সরল বাক্যে আলোচনা করা হয়েছে, ফলে বুঝতে সহজ হয়েছে। বইটি রেফারেন্স সমৃদ্ধ হওয়ায় আলোচনা গ্রহণ করতেও উৎসাহী হয়েছি। বইটি পাঠ করে বুঝতে পেরেছি আমাদের সমাজে কত-শত ভ্রান্ত আকিদা প্রচলিত আছে এবং সেগুলো প্রতিনিয়ত আমাদের ইমানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
    আল্লাহ তাআ’লা আমাদের হেফাজত করুন।

    বইটি পড়ার প্রয়োজনীয়তা:
    বইটি পড়ে একজন পাঠক তাঁর এবং তাঁর সমাজের প্রচলিত ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে আঁচ করতে পারবেন। আমাদের সমাজে কোন ধরনের আকিদার প্রচার করা দরকার তা জানতে পারবেন। কুরআন এবং সুন্নাহয় আমাদের আকিদা কি বর্ণিত আছে তা জানতে পারবেন এবং তার উপর আমল করতে পারবেন।
    বইটি আকিদার বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতা দূর করবে এবং আমাদের সঠিক আকিদা ও বিশ্বাস শিক্ষা দিবে ইনশাআল্লাহ।

    8 out of 8 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    Rehmatullah Sojol:

    ছোটবেলায় হুজুরকে পড়া দেওয়ার তাগিদে মুখস্ত করেছিলাম ঈমানে মুফাসসাল। আমানতু বিল্লাহি ওয়া মালাইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহী ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি ওয়াল ক্বদরী খইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তা’আলা ওয়াল বা’সি বা’দাল মাওত।
    .
    যার অর্থ করলে দ্বারায়, আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাসমূহের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগনের প্রতি, তাকদীদের ভালো-মন্দ সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায় হয় – এর প্রতি এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত হওয়ার প্রতি।
    .
    ঈমানে মুফাসসালে যেই বিশ্বাসগুলোর কথা বলা আছে, সেগুলো হচ্ছে আরকানুল ঈমান (ঈমানের খুঁটিসমূহ)। একজন মানুষকে মু’মিন হতে হলে অবশ্যই আন্তরিকভাবে উপরের ছয়টি বিশ্বাস নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে।
    .
    কিন্তু ঈমানে মুফাসসাল তো শুধু মুখস্ত করে রাখলেই হবেনা। আমি যে বললাম, ‘আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম’ এই বিশ্বাস স্থাপনের স্বরুপ কি? এই কথা দ্বারা মূলত কি বোঝায়? ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস দ্বারা কি বোঝায়? কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাসের দ্বারা কি বোঝায়? রাসূলগনের প্রতি বিশ্বাস দ্বারা কি বোঝায়? আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস দ্বারাই বা কি বোঝায়? তাকদীরের স্বরুপ কি আসলে? মৃত্যুর পরে পুনরুত্থিত হওয়ার মানে কি? এগুলোর স্বরুপ অন্বেষণ করাটাই মূলত ঈমানের দাবী।
    .
    তো, এগুলোর স্বরুপ সন্ধান করতে, এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইসলামী আকীদার উপরে নির্ভরযোগ্য বই খোঁজা শুরু করলাম। সন্ধান পেয়ে গেলাম ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ রচিত ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ বইটির। স্যারের নাম দেখেই কিনে নিলাম। এরপর যখন বইটি পড়তে লাগলাম তখন নতুন এক নিজেকে আবিস্কার করলাম। ভাবতে লাগলাম, ইসলামী আকীদার এত বিস্তৃত ভান্ডার সম্পর্কে দেখি একেবারেই অজ্ঞ ছিলাম আমি!
    .
    তো, কি আছে বইটির ভেতর?
    বইটির ভেতর প্রথমেই আপনি পাবেন ঈমান, আকীদা ও এধরণের টার্ম দ্বারা আসলে কি বোঝায় সে সম্পর্কে আলোচনা। তারপর আলোচনা এসেছে ইসলামী আকীদার উৎস ও এর গুরুত্ব নিয়ে। তারপর ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে উপরে উল্লেখিত আরকানুল ঈমানসমূহ নিয়ে।
    .
    বইটিতে যে শুধুমাত্র আরকানুল ঈমান নিয়ে আলোচনা এসেছে তা কিন্তু নয়। এই আরকানুল ঈমান নিয়ে মুসলিম সমাজে যে ভ্রান্ত বিশ্বাসগুলো আছে বা পূর্বে ছিল লেখক সেগুলোও তুলে ধরেছেন। সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসগুলোর বেশিরভাগই রাসূল সা. কে ঘিরে। সেগুলোর অন্যতম হলো, রাসূল সা. ইলমুল গায়েব জানেন, রাসূল সা. ইন্তেকাল করেননি, রাসূল সা. এর সব জায়গায় হাজির-নাযির হওয়া ইত্যাদি ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়েও স্যার রাহি. আলোচনা করেছেন।
    .
    এরপর স্যার রাহিমাহুল্লাহ কুফর, শিরক ও বিদ’আত নিয়ে বেশ চমৎকার ও কম্প্রিহেন্সিভ আলোচনা নিয়ে এসেছেন।
    .
    সবশেষে শাইখ রাহিমাহুল্লাহ আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের সাথে। তারপর সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেছেন বাতিল ফিরকাগুলির পরিচয় ও বিভ্রান্তিগুলো নিয়ে।
    .
    তো সব মিলিয়ে যারা বইটা পড়েননি তাদের উদ্দেশ্যে এটা বলতে চাই, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকীদা জানতে এবং এ ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য স্যারের এই বইটি অবশ্যপাঠ্য। আল্লাহ তা’আলা স্যারের কবরে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করুন।
    11 out of 12 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 5 out of 5

    halimabdullah019:

    #ওয়াফিলাইফ_পাঠকের_ভাল_লাগা_মার্চ_২০২০
    .
    বই: কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা
    লেখক: ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
    .
    সর্বশেষ যে ব্যক্তিটা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাকেও আল্লাহ্ তা’আলা দশ দুনিয়ার সমান বিশাল জান্নাত দান করবেন (সহিহ বুখারি: ৬৫৭১)। এই মর্যাদা কেবলই ঈমানের কারণে। যে ঈমানের মূল্য এত বেশি, সেটি কি জীবনের সবচেয়ে বড় নিয়ামত (blessing) নয়? এই ঈমান যদি নিরাপদ না থাকে, তবে কোনোকিছুই নিরাপদ নয়। কারণ নির্ভেজাল ঈমান ছাড়া মুক্তির কোনো উপায় নেই। ইমলামি আকিদা-বিশ্বাস সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানাশোনা থাকা একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য বিষয়। আকিদার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেওয়াও কঠিন। এই কঠিন কাজটি সহজে আঞ্জাম দিয়েছেন এ দেশের কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন শাইখ ড. আব্দুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।
    .
    ||লেখক পরিচিতি||
    ————————-
    শাইখকে নতুন করে পরিচয় করানোর কিছু নেই। গুগলে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে। তিনি ছিলেন এদেশের জন্য আল্লাহর বিরাট রহমত, দ্বিধাগ্রস্ত উম্মাহর জন্য আলোকবর্তিকা, মুসলিম ঐক্যের আন্তরিক প্রচেষ্টাকারী। এককভাবে তাঁর বই এদেশে সর্বাধিক বিক্রি হয়। আল্লাহ এভাবেই তাঁকে মৃত্যুর পরও সম্মানিত করে রাখছেন। বহুভাষাবিদ, সুন্নাহ রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী, দেশ ও বিদেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, উম্মাহদরদী, মার্জিত এই আলেমে দ্বীন ২০১৬ সালে রোড এক্সিডেন্টে ইন্তেকাল করেন।
    .
    ||বইয়ের সারসংক্ষেপ||
    ——————————-
    একজন আব্দুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর এদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এই বইয়ের পরতে পরতে উপলব্ধি করা যায়। ৬৪০ পেইজের বিশাল এই বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ। মোট পাঁচটি অধ্যায়ে তিনি বইটিকে সাজিয়েছেন।
    .
    প্রথম অধ্যায়ে আকিদাকেন্দ্রিক বিভিন্ন পরিভাষা, ইসলামি আকিদার উৎস, এর গুরুত্ব এবং এ সংক্রান্ত কিতাবাদির আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়টা তাওহিদ নিয়ে রচিত, মোটাদাগে যার উপর ভিত্তি করে একজন মানুষের জান্নাত-জাহান্নাম নির্ধারিত হয়। তৃতীয় অধ্যায়টিতে রিসালাত তথা নবি-রাসূলদের প্রতি ঈমানের আলোচনা এসেছে। চতুর্থ অধ্যায়ে ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমূহ তথা ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, আখিরাত, তাকদির ইত্যাদির উপর সবিস্তার আলোকপাত করা হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়ে ঈমানবিধ্বংসী বিষয়গুলো তথা কুফর এবং শির্কের উপর ব্যাপক আলোচনা এসেছে। সর্বশেষ ষষ্ঠ অধ্যায়ে বিদআত, বিভক্তি, আহলুস সুন্নাহর পরিচয় ও তাদের আকিদা এবং যুগে যুগে ভ্রান্ত যেসব দলের উৎপত্তি হয়েছে তাদের বিভ্রান্তি ও বাতিল আকিদাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
    .
    ||বইটির ভালো দিকগুলো||
    ————————————
    • পুরো বইটিতে কুরআন-সুন্নাহর প্রায় সহস্রাধিক দলিল আনা হয়েছে, দলিল ছাড়া কোনো কথা বলা হয়নি। এছাড়া প্রতিটি বিষয়ে সালাফে সালেহিনের মন্তব্য ও আমল কী ছিলো, তাও আরবি ইবারতসহ আলোকপাত করা হয়েছে।
    • এই বই পড়ার দ্বারা ইসলামি আকিদার ৯০-৯৫ ভাগ জানা হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ্। তাছাড়া এতে আকিদার গুরুত্বপূর্ণ সকল মূলনীতি আলোচনা করা হয়েছে, ফলে নতুন নতুন আকিদার মাসয়ালা নিয়ে ভবিষ্যতে ঝামেলা পোহাতে হবে না।
    • আকিদা মানে বিশ্বাস, যেটা বাস্তবে দৃশ্যমান নয়। তাই চোখ বুজে এর উপর ঈমান আনাই মুমিনের কাজ। তবুও শাইখ তাঁর এই বইয়ের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আকিদার উপর ওঠা কাফির, নাস্তিক ও সেকুলারদের বিভিন্ন প্রশ্নের যৌক্তিক জবাব দিয়েছেন, ফলে বিশ্বাসে আরো বেশি দৃঢ়তা আসে।
    • ওলিদের কারামত, তাকদিরে বিশ্বাসের জটিলতা, মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি, তাবিজ ব্যবহার, দুআয় উসিলা দেওয়া, মানত, আল্লাহর সিফাত ইত্যাদি বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে ডিটেইলস আলোচনা করা হয়েছে।
    • মুসলিম সমাজে যেসব কুফর ও শির্ক বিদ্যমান, সেগুলো দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে।
    • শিয়া, মুতাযিলা, খারেজি, মুরজিয়াসহ বিভ্রান্ত দলগুলোর আকিদা তুলে ধরা হয়েছে সুচারুরূপে।
    • আখিরাতে বিশ্বাসের যাবতীয় বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। যেমন: কবরের আযাব, কিয়ামত, হাশর, মিযান, হাউজ, শাফা’আত, পুলসিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি।
    .
    ||বেস্ট পার্ট||
    —————-
    পুরো বইটিই সেরা। তবুও যদি বলি: বইটিতে বিভিন্ন স্থানে শিশুদের মত সহজ করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে— কীভাবে বিভিন্ন চোরাগলি দিয়ে, দ্বীনি লেবাসে মুসলিম সমাজে খুব ধীরে, অজান্তে শির্ক ও কুফর প্রবেশ করে।
    .
    ||বইটির নেতিবাচক দুটো দিক||
    ——————————————
    • শাইখ সহজ করতে গিয়ে কিছু স্থানে একই কথা রিপিট করেছেন। এছাড়াও বইটিকে আরেকটু ছোট করা যেত। এত বড় বই, প্রথমে দেখতে ভয় লাগে। যদিও প্রকৃত ত্বালিবুল ইলমদের জন্য এটি বিরাট নিয়ামত।
    • ইমাম নববি, ইবনু হাজারের মত ব্যক্তিরা আশ’আরি চিন্তাধারা লালন করেছেন, অথচ শাইখ তাঁর বইতে আশ’আরিদেরকে কোনো ফ্লোরই দেননি। যদিও এসব আলোচনা কয়েক পৃষ্ঠাতেই সীমাবদ্ধ।
    .
    ||পাঠানুভূতি||
    ——————
    আকিদার আলোচনা এমনিতেই একটু রসকষহীন হয়, তবুও এই বইটির বিন্যাস, আলোচনার বৈচিত্র, অ্যাকাডেমিক পদ্ধতি ও জ্ঞানের বিচ্ছুরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। কোনো সংকোচ না রেখেই বইটি সবাইকে পড়তে সাজেস্ট করব। এটি সব শ্রেণির জন্যই উপযুক্ত।
    .
    একনজরে—

    • কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামি আকিদা
    • লেখক: ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
    • প্রকাশনী: আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স
    • প্রথম প্রকাশ: ডিসেম্বর, ২০০৭
    • পৃষ্ঠা: ৬৪০ (আমার কাছে থাকা বইটির কাগজের মান তত উন্নত না—চলনসই, তবে বর্তমানে বাজারে নতুন যে মুদ্রণটি আছে, সেটির কাগজ ভালো।)
    • মূল্য: ৩৬০ টাকা মাত্র (নতুন মুদ্রণ ৪০০ টাকা, তবে, ডিসকাউন্টে কম দামে পাওয়া যাবে)

    6 out of 6 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No