প্রিয়তমা
আয়েশার সঙ্গে রাসুল মুহাম্মদের (সা.) দাম্পত্যজীবন কি অসুখী ছিলো? একজন কেবলই কিশোরী, আরেকজন পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রবল ব্যক্তিত্ববান মানুষ; কেমন ছিলো অসম বয়সী এ দুজনের প্রেমময় সংসারের হালচাল? ঝগড়া হতো? খুনসুটি? মান-অভিমানে কান্না হতো?
খাদিজা (রা.) কেন প্রৌঢ়ত্বের দ্বারপ্রান্তে এসে হাত বাড়িয়ে আগলে নিলেন যুবক মুহাম্মদের হাত? মুহাম্মদ (সা.) যেদিন নবি হলেন, ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি; খাদিজা তাঁকে বুকে জড়িয়ে কেন বলেছিলেন, ‘ভয় নেই আপনার’?
কেন সুদূর ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান নাজ্জাশির রাজপ্রাসাদে আয়োজন করা হলো মুহাম্মদ (সা.) এবং কুরাইশকন্যা উম্মে হাবিবার বিয়ে? কেন ইহুদি রাজকুমারী সাফিয়্যাকে যুদ্ধদাসী থেকে বরণ করে নিলেন উম্মুল মুমিনিন হিসেবে?
রাসুল মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর ১১ জন স্ত্রীর দাম্পত্যজীবন ও প্রেমের অসংখ্য গল্পভাষ্য নিয়ে রচিত ইতিহাস-অনুসন্ধানী লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর-এর অনবদ্য উপাখ্যানগ্রন্থ ‘প্রিয়তমা’। একদিকে নিরেট নির্মোহ ইতিহাসের বর্ণিল আয়োজন, আরেক দিকে উম্মুল মুমিনিনদের জীবনের অনালোচিত অধ্যায়ের নতুন আবিস্কার। নতুন ভাষা ও প্রাঞ্জল গদ্যে রাসুলের দাম্পত্যজীবনের পূর্ণ ছায়াছবি উঠে এসেছে এ গ্রন্থে।
-
-
hotজীবন যদি হতো নারী সাহাবীর মত
লেখক : ড. হানান লাশিনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন186 ৳136 ৳অনুবাদ: আব্দুল্লাহ মজুমদার সম্পাদনা: উস্তায আবুল হাসানাত ...
-
hotকোটিপতি সাহাবি
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : ইলহাম ILHAM310 ৳232 ৳‘সাহাবিরা গরিব’ ছিলেন এমন ধারণা অনেকের ...
-
hotগল্পে আঁকা মহীয়সী খাদিজা
লেখক : ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভীপ্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী360 ৳198 ৳পৃষ্ঠা: ২২৪ কভার: হার্ড কভার খাদিজা বেরিয়ে এলেন ...
-
hotসীরাতে আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা
লেখক : সাইয়েদ সুলাইমান নদভী রহ:প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী700 ৳385 ৳লেখক: সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী রহ. অনুবাদক: মাওলানা ...
-
hotসাহাবায়ে কেরামের ঈমানদীপ্ত জীবন (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) ১ম এবং ২য় খণ্ড
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী440 ৳ – 935 ৳আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারককে (রহঃ) যখন উনার ...
-
save offনারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী160 ৳88 ৳পৃষ্ঠা: ৮৬ নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন' মুসলিম ...
-
hotতারা ঝলমল
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন320 ৳240 ৳নিরীক্ষণ: মাওলানা আসাদ আফরোজ সাহাবীরা হলেন নববী ...
-
hotউম্মুল মুমিনিন (অখণ্ড)
লেখক : ড. ইয়াসির ক্বাদিপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন460 ৳345 ৳অনুবাদক : আলী আহমাদ মাবরুর ও ...
-
save offখাদিজা (রাঃ) প্রথম মুসলমান এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বিবি
লেখক : ড. রাশীদ হাইলামাযপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান240 ৳132 ৳পৃষ্ঠা: ১৩৬ ইতিহাসের প্রতিটি ক্রন্তিলগ্র্নেই সময়োপযুগি মহান ...
-
Zamil ahmad – :
আয়েশার (রাঃ) সঙ্গে রাসূল মুহাম্মদের (সাঃ) দাম্পত্যজীবন কি অসুখী ছিল?
একজন কেবলই কিশোরী,আরেকজন পঞ্চাশোর্ধ প্রবল ব্যক্তিত্ববান মানুষ;
কেমন ছিল অসম বয়সী এ দুজনের প্রেমময় সংসারের ছায়াছবি? ঝগড়া হতো? খুনসুটি?
মান-অভিমানে কান্না হতো?
খাদিজা (রা;) কেন প্রৌঢ়ত্বের দ্বারপ্রান্তে এসে হাত বাড়িয়ে আগলে নিলেন যুবক মুহাম্মদের হাত?মুহাম্মদ (সাঃ) যেদিন নবি হলেন,ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি; খাদিজা কেন তাঁকে বুকে জড়িয়ে বলেছিলেন,”আপনার কোনো ভয় নেই?
কেন সুদুর ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান নাজ্জাশির রাজপ্রাসাদে আয়োজন করা হলো মুহাম্মদ (সা.) এবং কুরাইশকন্যা উম্মে হাবিবার বিয়ে?কেন ইহুদি রাজকুমারী সাফিয়্যাকে যুদ্ধদাসী থেকে বরণ করে নিলেন উম্মুল মুমিনিন হিসেবে?
বইটিতে ১১জন উম্মুল মুমিনিম এর সংসার নিয়ে লেখা হয়েছে তাঁরা হলেনঃ-
১.উম্মুল মুমিনিম খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ।
২.সাওদা বিনতে জামআ।
৩.আয়েশা বিনতে আবু বকর।
৪.হাফসা বিনতে উমর।
৫.জয়নব বিনতে খোজায়মা।
৬.উম্মে সালামা বিনতে উমাইয়া।
৭.জয়নব বিনতে জাহাশ।
৮.জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস।
৯.উম্মে হাবিবা বিনতে আবু সুফিয়ান।
১০.মারিয়া কিবতিয়া।
১১.রায়হানা বিনতে জায়েদ।
বইটি পড়ার পর আপনারা বুঝতে পারবেন,
উম্মুল মুমিনিনদের নিয়ে কিছু বিতর্কিত বিষয়।
যেমনঃ রাসূল (সাঃ) কেনো ১১টি বিয়ে করেছিলেন?
কেনো আয়েশার মতো সদ্যকিশোরীকে বউ হিসেবে গ্রহণ করলেন?বিয়ের সময় আয়েশার বয়স কত ছিলো? কেন এক ইহুদিকন্যাকে উম্মুল মুমিনিন হিসেবে সম্মানিত করলেন?
এমন আরও অনেক বিষয়।
Sabiha Jannat – :
✽বই- প্রিয়তমা
✽লেখক- সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর
∎প্রথমেই কিছু কথা:
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
“প্রিয়তমা”…. প্রথমে বই এর নামটা দেখে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো প্রেমের উপন্যাস টুপন্যাস হবে হয়তো,এটা আমার জন্য নয়।পরে যখন মূল থিমটা নিয়ে একটু পড়লাম দেখলাম নবীজীর স্ত্রী দের নিয়ে লেখা একটা বই।রাসূলের স্ত্রীদের মধ্যে আমি খাদিজা (রা:) আর আয়েশা (রা:) সম্পর্কেই জানতাম কিছুটা,তাই তার সংসার জীবন নিয়ে আরেকটু জানতে বইটি কেনা…কিন্তু পরবর্তীতে আমার ভুল আরও ভাংলো।
∎ বইটি কী নিয়ে লেখা?
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
বই পড়ার পর আমি বুঝতে পারলাম যে এটা আসলে শুধুই সংসার বা নবীর স্ত্রীদের নিয়েই নয়, বরং এটা একটা চমৎকার “সীরাহ” গ্রন্থ। এখানে স্ত্রীদের অসাধারণ ব্যক্তিত্বকে হাইলাইট করা হয়েছে।আমি সীরাহ পড়তে খুব ভয় পেতাম শব্দকাঠিন্যের কারণে,তবে এই বইটি পড়ার পর থেকে শুধু এখন সীরাহ গ্রন্থ খুজে বেড়াই… কারণ হলো,বইটি এমন গল্পভাষ্যে লেখা আর এত সুন্দর সাহিত্যরস আছে এতে যে পড়তে পড়তে পাঠক তার লেখায় ডুবে যেতে বাধ্য।
∎ কী কী পাবেন বইতে?
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
– বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ হাদিস গুলো আসার বিস্তারিত কাহিণী,
– রাসূলের ১১ জন স্ত্রী ও ২ জন দাসীর রাসূলের সান্নিধ্যে কাটানো অসাধারণ জীবনকাহিনী যা আগে কোথাও পাননি এভাবে..
-নবী কেমন ছিলেন তার স্ত্রী, সাহাবী, বন্ধু,আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাথে?
– নবীর ওপর কিভাবে ওহী নাযিল হতো তার বর্ণনা
– কাকে তিনি সবথেকে বেশি ভালোবাসতেন স্ত্রীদের মধ্যে? এবং কেন?
∎ কাদের পড়তে সাজেস্ট করবো?
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
যারা ভাবেন নবি ও নবীর স্ত্রী মানেই হচ্ছে একদম সবসময় গুরুগম্ভীর হবে তাদের আচরণ, কঠিন কঠিন উপদেশ দিবেন মানুষকে,যেটা আমিও ভাবতাম, এটা আসলে তাদের জন্য।বইটি পড়লে আপনার ভুল ভাংবে কারণ আপনি জানবেন
-তারাও রক্ত মাংসের মানুষ
– তাদের মধ্যেও ঝগড়া হতো
– মনোমালিন্যের কারণে অনেকদিন কথা হতোনা
– কৌতুক হতো
– দৌড় প্রতিযোগিতা হতো
– সতীনদের মাঝে নারীসূলভ ঈর্ষা হতো
∎ বেস্ট পার্ট কী?
▔▔▔▔▔▔▔▔▔
বই পড়তে পড়তে আপনি কাদবেন,অনেক জাগায় একা একা হাসবেন,অনেক জাগায় মনে হবে তাদের দেখছেন,নবীকে এতটাই ভালোবাসা শুরু করবেন যে বইটি আপনি ১০ বার পড়লেও বিন্দুমাত্র একঘেয়েমি লাগবেনা, এটাই এর বেস্ট পার্ট।
∎ একটা সাজেশন:–
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
প্রথন পাঠক হিসেবে যারা সীরাহ খুজছেন পড়তে,অনায়াসে এটা চোখ বুজে কিনে নিন।কথা দিচ্ছি আপনার সীরাহ পড়ার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যাবে,ঈন শা আল্লাহ!
∎ মন্তব্য
▔▔▔▔▔
“রিয়েল লাইফ হিরো” কে ভালোবেসেছেন কখনো? যদি ভালোবাসতে চান, এবং তার স্ত্রীদের তার জীবনে নানা অবদান নিয়ে জানতে চান,অবশ্যই পড়তে হবে প্রিয়তমা বইটি।
বই এর লিংক-https://www.wafilife.com/shop/books/priyotoma/
জারা খান – :
আয়েশা (রাঃ) বউ হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ঘরে আসার কিছু দিন পরের ঘটনা।
তাঁর কিশোরী মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়, অকারণ কৌতুহল দোলা দিয়ে যায় মনে। রাসূল (সা:) কাকে অধিক ভালোবাসেন? তাঁকে কতটুকু ভালোবাসেন? অন্য স্ত্রীদের চেয়ে বেশি না কম?
একদিন সাহস করে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে কতটুকু ভালোবাসেন?
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একটু চিন্তা করে বললেন, তোমার এবং আমার মধ্যে ভালবাসার বন্ধনটা এত শক্ত, যেমন একটা রশির মধ্যে সুতাগুলো শক্তভাবে জড়িয়ে থাকে। একই বাঁধনে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা থাকে। রাসূলের জবাব শুনে তিনি অত্যন্ত খুশি হলেন।
এবং এরপর থেকে মাঝে মাঝেই জিজ্ঞেস করতেন, হে আল্লাহর রাসূল!
বন্ধন কি আগের মতোই আছে না ঢিল হয়ে গেছে?
রাসূলুল্লাহ (সা:) তাঁর দুষ্টুমির জবাবে বলতেন বন্ধন আগের মতোই দৃঢ় আছে। বাঁধনে কোন দুর্বলতা বা পরিবর্তন আসেনি।
একবার হযরত মায়মুনা বিনতে হারিস (রা:) গিরগিটির গোশত রান্না করেন। রাসূলুল্লাহ দেখে বললেন আমি তা খেতে পছন্দ করি না, সাহাবীদের বললেন তোমরা খেতে পারো। মায়মুনা (রা:) হয়তো আগে এ মাংস খেতেন কিন্তু রাসূলের অপছন্দ দেখে তিনি নিজের অপছন্দের কারণ বানিয়ে নিলেন। এ কেবল দু’জনের মাঝে অপরিসীম ভালোবাসা থাকলেই সম্ভব। একজন সঙ্গী যখন তার অপর সঙ্গীর পছন্দ- অপছন্দকে নিজের সৌভাগ্যের ললাট লিখন করে নেয় তখন এ ভালোবাসা জাগতিক সকল ক্ষুদ্রতা ও পরিসীমা ছাড়িয়ে যায়।
এমন ভালোবাসার জন্যই যুগে যুগে রচিত হয়েছে অসংখ্য মহাকাব্য।
রাসূলের ভালোবাসার ছায়ায় থেকে সকল উম্মুল মুমীনিনই নিজেদের কোনো না কোনো মহত্ত্বে উচ্চকিত করে তুলেছিলেন। কেউ ছিলেন, হাদিসবিশারদ, কেউ জ্ঞানের আধার, কেউ খোদাভীতিতে অতুলনীয়, কারো ছিলো কোরআন পাঠের মুগ্ধকর চরিত্র, তেমনি কেউ ছিলেন দানশীলতায় এগিয়ে।
আমরা দুই থেকে তিনজন উম্মুল মুমীনিনের জীবনী সহ রাসূলুল্লাহ এর সাথে বিবাহ পরবর্তী,ও পারিবারিক সকল ঘটনাই মোটামুটি জানি। বাকি আট থেকে নয় জনের ব্যাপারে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া পর্যন্তই আমাদের জ্ঞান স্থগিত। প্রিয়তমা বইটিতে এগারজন উম্মুল মুমীনিনের রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগ থেকে বিবাহ পরবর্তী জীবন, রাসূলের সাথে কেমন করে দিন অতিবাহিত করেছেন, আর তাঁর সাংসারিক জীবন কেমন ভালবাসাপূর্ন ছিলো তা খুব যত্নের সহিত লেখক আমাদের জানিয়েছেন।
কোনো একজন আম্মাজান রান্নায় পারদর্শী ছিলেন, রাসূলুল্লাহ তাঁর রান্নার প্রশংসা করতেন। কেউ তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী ছিলেন, রাসূল সা: এর তাঁর বুদ্ধির তা’রীফ করতেন। নারীদের বিষয় গুলোতে (যেমন অন্য স্ত্রীদের একটু অন্য চোখে দেখা) তিনি অন্য স্ত্রীদের সতর্ক করে দিতেন।
কেউ ভুল করলে রাসূল সা: তাদের ভুল শুধরে দিতেন। আবার তিনি স্ত্রীদের কাছে নিজের প্রবল ব্যক্তিত্ত্বের বাহাদুরি প্রকাশ করতেন না, নিজেকে স্ত্রীদের কাছে সমর্পণ করে দিতেন তাদের ভালোবাসার কাছে।
মোট কথা রাসূল সা:এর জীবনের টুকরো টুকরো আয়না ছিলেন তারা। যে আয়নায় তাকালে রাসূলের জীবনের ছায়াচিত্র স্বচ্ছ হয়ে ভেসে উঠবে। তাঁরা তাঁর আলোকেই নিজেদের জীবনকে সাজিয়ে তুলেছেন এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য উৎসর্গ করছিলেন তাঁদের লব্ধ জ্ঞানের আধার।
আমাদের লৌকিক সমাজের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই শোনা যায় স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্যকলহ, মানসিক টানাপোড়ন, পরস্পরের বিশ্বাসহীনতা, সংসার ভাঙ্গার করুণ সুর। আমরা কখনো কি তাঁদের সংসারের আদলে আমাদের পারিবারিক সমস্যা গুলো দূর করার চেষ্টা করেছি? হয়তো করা হয়নি! অথচ তাঁদের জীবনে রয়েছে প্রেম আর ভালোবাসা পূর্ণ এক সংসারের ছায়াচিত্র। যা সমগ্র পৃথিবীর জন্য শিক্ষণীয়। যে গ্রহণ করবে তার জীবন আলোকিত হবে। এ গ্রন্থটিতেই সেই সুখী আর প্রেমময় জীবনের গল্পই বলা হয়েছে।
যখন বইটি আমি পড়ছিলাম তখন যেন হারিয়ে গেয়েছিলাম সেই সময়ের পৃথিবীতে। আমি অনুভব রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি এর প্রিয়তমা স্ত্রী সুখ-দূঃখ,হাসি,কান্না আবেগ,খুনসুটির প্রতিটা মূহুর্ত।
বেশ কিছু জায়গা মোহাম্মদ এর পর দুরুদ হিসেবে সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শব্দটি লিখা হয়নি,এছাড়া আমার দৃষ্টিতে আর কোনো ভুল চোখে পড়েনি। বাদবাকি চমৎকার উপস্থাপন।
এক কথায় ভালো লাগার মতোই। পরিশেষে,রাসূলুল্লাহর প্রিয়তমা ততা আমাদের আম্মাজানদের আল্লাহ পাক শান্তিতে রাখুক।আমিন
sadakalo.shopnoo – :
সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর এর পাঠ্য বিষয় মূলত ইতিহাস। ইতিহাস প্রেমী এই মানুষ পাঠ্যবিষয়কে শুধু মুখস্ত বিদ্যাতে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তৈরি করেছেন ইতিহাস বর্ণনার অভিনব ও মনোমুগ্ধকর কৌশল। সহজ, সরল ও সাবলীল ভাষার ব্যবহার তার লেখনির ধারাকে করেছে আকর্ষণীয়। ফলে খুব সহজেই পেয়েছে পাঠক প্রিয়তা।
বর্তমানে মুক্ত পৃথিবীর মানুষ হিসেবে তাঁর একমাত্র কাজ লেখালেখি।
বইয়ের পাতা থেকেঃ
এক ঈশ্বররে পরিবর্তে যখন কাবা চত্বরে বসানো হয়েছে ৩৬০ দেবমূর্তি, খ্রিস্টান এবং ইহুদী ধর্ম যখন তার মূল উৎস হারিয়ে ফেলেছে, কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ) এর আনিত অনেক পয়গাম তখনও খাদিজা (রাঃ) বিশ্বাস রেখেছেন এক ঈশ্বরের উপর।
তিনি অপেক্ষা করেছিলেন শেষ নবীর, কিন্তু কেন? কিভাবে তিনি জানলেন শেষ নবীর আগমন সম্পর্কে, জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে প্রিয়তমা বইটি।
কুরাইশ রাজ কুমারী খাদিজা (রাঃ) দ্বিতীয় বৈধব্যের পর তাঁর কাছে এমন কি আগমন বার্তা আসল যে অপেক্ষা করতে লাগলেন মুহাম্মদের (সঃ)।
মুহাম্মদের অপেক্ষায় খাদিজা (রাঃ) ব্যাকুল হয়ে থাকতেন, সারাক্ষণ ভাবতেন কোথায় পাব তাঁর খোঁজ… অবশেষে তাঁর অপেক্ষার অবসান ঘটে। কিন্তু কিভাবে? কিভাবেই বা বিবাহ হলো ২৫ বছরের এক যুবকের সাথে ৪০ বছরের এই নারীর? !
এটা কোন গল্প নয়, নয় কোন রূপকথা। খাদিজা (রাঃ) নিজের স্বর্বশ দিয়ে আগলে রেখেছিলেন মুহাম্মদ (সঃ) কে, নবুয়াতের ভীত ও কঠিন দিন গুলোতে রাসুল (সঃ) কে শিশুর মতো আগলে রেখেছেন তিনি।
খাদিজা (রাঃ) সে তো অনন্য এক মহিয়সী নারী। তাঁর গর্ভে এসেছিলেন রাসূলের প্রথম পুত্র কাসিম, কিন্তু কোথায় এই কাসিম, কি হয়েছিল তাঁর?
এছাড়াও পুত্র আব্দুল্লাহ সহ জয়নব, রোকাইয়া, কুলসুম ও ফাতেমা (রাঃ) কে জন্ম দেন খাদিজা (রাঃ)। রাসূল ও খাদিজার (রাঃ) জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক তথ্যই পাবেন প্রিয়তমা বইটিতে।
খাদিজার (রাঃ) মৃত্যুর সময় রাসূলের বয়স ৫০। জীবনের শেষ প্রহরে দাঁড়িয়ে কেনই বা তিনি বিবাহ করলেন ৫০ বয়সী বিধবা নারী সওদা (রাঃ)। রাসূল (সঃ) সওদা (রাঃ) কে বিয়ে করার পাশাপাশি আবু বকর (রা:) এর ৬ বছরের শিশু কন্না আয়েশা (রা:) কে বাগদান করেন এবং ৯ বছর বয়সে বিয়ে করেন। কিন্তু কেন? কেমন ছিল সদ্য কৈশোরে পা দেয়া আয়েশা (রাঃ) ও রাসূল (সা:) এর দাম্পাত্য জীবন?
আপনার মনের জানা অজানা অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন প্রিয়তমা বইটিতে।
ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের বাড়িতে আয়োজন করা হলো রাসূল (সাঃ) ও উম্মে হাবিবার বিয়ে। অন্যদিকে রাসূল (সাঃ) ইহুদী রাজকুমারী সাফিয়া (রাঃ) কে বরণ করে নিলেন উম্মুল মুমেনিন হিসেবে।
এই সকল বিয়ের পিছনের চাঞ্ছল্যকর তথ্য গল্পের আদলে পাবেন প্রিয়তমা বইটিতে।
সূরা আহযাবের ৩৭ নাম্বার আয়াতে রাসূলকে নির্দেশ দেয়া হয় পালক পুত্র জায়েদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী জয়নব (রাঃ) কে বিয়ে করার জন্য। বিবাহ পরবর্তিতে রাসূল (সাঃ) এর সাথে কেমন ছিল পালক পুত্র জায়েদ ও স্ত্রী জয়নব এর সম্পর্ক?
ক্রীতদাসী মারিয়া (রাঃ) এর গর্ভে রাসূলের পুত্র ইব্রাহীম। কিন্তু কে এই ক্রীতদাসী মারিয়া (রাঃ)? কেনইবা মারিয়া (রাঃ) এর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হলেন রাসূল (সাঃ)? কোথায় গেল সেই পুত্র ইব্রাহীম ইবনে মুহাম্মদ? রাসূল ও ক্রীতদাসী মারিয়া (রাঃ) সম্পর্ককে বৈধতা দিয়ে ও মারিয়া (রাঃ) সম্মান সুউচ্চ সূরা তাহরিমা অবতীর্ণ হয়। সূরা তাহরিমার মাধ্যমে আল্লাহ পৃথিবীকে কি নির্দেশ দিয়েছেন। এই সব কিছুর উত্তর পাবেন সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীরের প্রিয়তমা বইটিতে।
মন্তব্যঃ
প্রিয়তমা রাসূল পত্নীদের জীবনী গ্রন্থ নয় বরং তাদের জীবনের গল্প ভাষ্য। প্রিয়তমা বইটির নামের মাঝেই প্রকাশ পেয়েছে এর অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য। সত্যি কথা বলতে বইটির ভাষা ও বর্ণনার ধরণ এতটাই মনোমুগ্ধক্র যে আপাত দৃষ্টিতে বইটির কোন ভুল চোখে পড়েনি। প্রিয়তমাকে যদি কোন ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে আখ্যায়িত করি তাহলে কোন ভুল হবে না।
সর্বোপরি সবাইকে বইটি পড়ার আমন্ত্রণ। শুধু নিজেই পড়বেন না, নিজে পড়ুন ও নিজের প্রিয়ত্ম/প্রিয়তমাকে পড়তে দিন। প্রিয় মানুষের আলোয় আলোকিত হোক সকলের জীবন।
abdur0rahman99 – :
রাসূল (স:) এর দাম্পত্যজীবন ও স্ত্রীদের সাথে মধুর সম্পর্ক নিয়ে রচিত একটি অনবদ্য উপাখ্যানগ্রন্থ হলো ” প্রিয়তমা” । বইটির লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর।বইটিতে লেখক এগারজন উম্মুল মুমীনিনের জীবনী রাসূল (সাঃ) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগ থেকে বিবাহ পরবর্তী সাংসারিক জীবন সহ সব কিছু আলোচনা করা হয়েছে।
বইটি রাসূল (স:) স্ত্রীগণকে নিয়ে রচিত হলেও এটি কোন জীবনী গ্রন্থ নয় বরং তাঁদের জীবনের গল্পভাষ্য। বইতে অতিকথন ও ভাষার বাহুল্য বর্জন করে রাসূল (স:) প্রেমময় জীবনের অংশগুলো সাবলীলভাবে লেখক তুলে আনতে চেষ্টা করেছেন।
# বইটি কেন পড়বেন? কি পাবেন? #
☀ রাসূল (সা:) এর সমস্ত প্রিয়তমা স্ত্রীদের জীবনী একটি বইয়ে পড়তে চাইলে বইটি পড়ে ফেলুন।
☀ আপনি যদি রাসূল (সা:) এর সংসারের আদলে নিজেদের সাংসারিক সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে বইটি অবশ্যই পড়ুন।
☀ বর্তমান সমাজের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই শোনা যায় ঝগড়া বিবাদ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, স্বামী-স্ত্রীর কলহ ও পরস্পরের বিশ্বাসহীনতা, অবশেষে সংসার ভঙ্গার মত করুন পরিণতি। কিন্তু এর বিপরীতে রাসূল (সা:) তার এতজন স্ত্রী সহ পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে এত সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করেছেন তা জানতে হলে বইটি পড়ুন।
☀ কখনো কখনো সেক্যুলার সমাজ থেকে ধেয়ে আসা অনেক প্রশ্ন মনের গহীনে এসে ভীড় জমায় । রাসূল (স:) কেন ১১ টি বিয়ে করেছিলেন? কেনইবা আয়শার মতো সদ্য কিশোরীকে বউ হিসেবে গ্রহন করলেন? এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে বইটি পড়ুন। তাহলেই জানতে পারবেন রাসূল (সা:) এর প্রত্যেকটি বিয়ের পিছনে কত গভীর কারণ লুকায়িত ছিল।
.
# ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ- #
ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। দামের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। প্রতিটি পাতায় রয়েছে লেখকের কঠোর পরিশ্রমের ছোয়া। বইতে লেখক বাংলাভাষী মানুষের সামনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উম্মুল মুমিনিনদের দাম্পত্য জীবনকে সগৌরবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন । গল্পের মত করে লেখা হলেও বইতে প্রতিটি ঘটনা, ইতিহাস, তথ্য সহ সবকিছু হাদিস ও সিরাতগন্থের আলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই করে সন্নিবেশিত হয়েছে। উঠে এসেছে রাসূল (স:) এর স্ত্রীদের মান-অভিমান, হিংসা, আগ্রহ, রাগ, মমতা ও ভালবাসার প্রতিচ্ছবি।
বইটি পড়ার পর পাঠক বুঝতে পারবে স্ত্রীদের নিয়ে রাসূল (স:) দাম্পত্য জীবন কত প্রেমময় ছিল। জানতে পারবেন তাদের আচার আচরণ ও কর্মপন্থা সম্পর্কে। যা আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
বই এর বিষয়সমূহের ধারা বর্ণনা, ভাষাশৈলী ও শব্দচয়ন দেখে মনে হয় এ যেন একজন দক্ষ সাহিত্যিকের লেখা। সুখপাঠ্য গদ্য ও অভিনব উপস্থাপন কৌশল পাঠককে আকৃষ্ট করে রাখবে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
বইটি পড়তে পড়তে পাঠক হারিয়ে যাবেন সেই সময়ের পৃথিবীতে। অনুভব করবেন রাসূল (সা:) এর প্রিয়তমা উম্মুল মোমেনিনদের সুখ-দূঃখ, হাসি, কান্না, আবেগ, খুনসুটির প্রতিটি মূহুর্ত।
এমন খুব কম বই আছে যার প্রতিটি বাক্য ভালো লাগার, প্রতিটি পাতায় মিশে থাকে জ্ঞানের ছোয়া ও শিক্ষণীয় মেসেজ ” প্রিয়তমা ” বইটি তার মধ্যে অন্যতম। সত্যি তো মুসলিম নারীদের জন্য উম্মুল মুমিনিনদের জীবন এবং তাঁদের জীবনের গল্পের চেয়ে শিক্ষনীয় তো আর কিছু নেই ।
সব মিলিয়ে বইটি খুবই ভালো এবং উপকারী। বইটি যেমন অবিবাহিত ভাই-বোন দের স্বপ্ন দেখতে শেখাবে, তেমনি বিবাহিতদের শেখাবে কিভাবে ভালবাসতে হয়।
তাই বাংলাভাষী সকলের প্রতি অনুরোধ “প্রিয়তমা” বইটি একবার হলেও পড়ুন সেই সাথে নিজের প্রিয় মানুষটিকেও পড়তে দিন। দেখবেন দাম্পত্য জীবনে আপনিই হবেন সবচেয়ে সুন্দর ও সুখময় জীবনের অধিকারী, ইনশাল্লাহ।
.
# যা কিছু ভালো লেগেছেঃ- #
☀ আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ।
☀ সঠিক শব্দচয়ন ও ভাষাশৈলী।
☀ উম্মুল মোমেনিন প্রত্যেকের জীবনীর শেষে একনজরে সংক্ষিপ্ত পরিচয় প্রদান।
☀ উপন্যাসের মত প্রতি উম্মুল মোমেনিনের গল্পভাষ্যকে কয়েকটি পর্বে ভাগ করা।
☀ বইয়ের একেবারে শেষে বই রচনার জন্য কোন কোন গ্রন্থ থেকে সহায়তা নেওয়া হয়েছে তার উল্লেখ।
.
# যা কিছু ভালো লাগে নিঃ- #
☀ বেশকিছু জায়গায় মুদ্রণ ত্রুটি।
☀ বেশকিছু জায়গায় মোহাম্মদ এর পর দরুদ হিসেবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম শব্দটি উল্লেখ করা হয়নি।☀ খাদিজা (রা:) সম্পর্কে কিছু দুর্বল ও ভিত্তিহীন সনদের ঘটনা ।
.
# শেষ কথাঃ- #
পরিশেষে বলতে হয় উম্মুল মোমেনিনদের নিয়ে এত সুন্দর আর সাজানো গোছানো একটি বই পাঠকের হাতে পৌছে দেয়ার জন্য লেখক, প্রকাশক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন। সেই সাথে লেখককে নেক ও দীর্ঘ হায়াত দান করুন।