ওপারে
লেখক : রেহনুমা বিনত আনিস
প্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন
বিষয় : পরকাল ও জান্নাত-জাহান্নাম
বড্ড বেশি ব্যস্ত আমরা এপারের জীবন নিয়ে। কতটুকুই-বা সঞ্চয় করেছি ওপারের জন্যে! হাসি-ঠাট্টা আর খেল-তামাশাতেই কেটে যাচ্ছে সারাদিন সারাবেলা। অন্যায়-অবিচার আর পাপ-ব্যভিচার আমাদের গাফেল করে রাখছে প্রতিনিয়ত। কতটুকু আমল করলাম ছোট্ট এ জীবনে? কী নিয়ে দাঁড়াব আমরা স্রষ্টার সামনে?
ওপারের অনন্ত জীবন নিয়েই রেহনুমা বিন্তে আনিসের বই ‘ওপারে’।
নতুন এবং বর্ধিত সংস্করণ
বড্ড বেশি ব্যস্ত আমরা এপারের জীবন নিয়ে। কতটুকুই-বা সঞ্চয় করেছি ওপারের জন্যে! হাসি-ঠাট্টা আর খেল-তামাশাতেই কেটে যাচ্ছে সারাদিন সারাবেলা। অন্যায়-অবিচার আর পাপ-ব্যভিচার আমাদের গাফেল করে রাখছে প্রতিনিয়ত। কতটুকু আমল করলাম... আরো পড়ুন
-
-
hotপরকালের প্রস্তুতি
লেখক : শাইখ খালিদ আল হুসাইনান রহঃপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন115 ৳84 ৳অনুবাদ : হাসান মাসরুর দুনিয়া, ক্ষণিকের সফর...। ...
-
save offমৃত্যু থেকে কিয়ামাত
লেখক : ইমাম বায়হাকীপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল বায়ান265 ৳185 ৳কুরআনে পরকালের বিস্তারিত বিবরণ আছে; তবে ...
-
save offজীবনের ওপারে
প্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন534 ৳390 ৳অনুবাদক: মুফতি তারেকুজ্জামান পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪০৮ ধরণ: হার্ড ...
-
hotওপারেতে সর্বসুখ: জান্নাতের মনোমুগ্ধকর বর্ণনা
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন172 ৳120 ৳ক্ষণিকের এ দুনিয়ায় সুখী হবার জন্য ...
-
save offঅন্তিম মুহূর্ত
লেখক : আব্দুল মালিক আল কাসিমপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন115 ৳84 ৳অনুবাদ : আব্দুল্লাহ ইউসুফ বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ...
-
hotমৃত্যুর ওপারে: অনন্তের পথে
লেখক : ইমাম কুরতুবী (রহঃ)প্রকাশনী : মুহাম্মদ পাবলিকেশন430 ৳314 ৳অনুবাদ : আবদুন নুর সিরাজি সম্পাদনা : ...
-
hotওপারের সুখগুলো
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়াপ্রকাশনী : পথিক প্রকাশন300 ৳174 ৳অনুবাদ: সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ একদিন স্বল্পকালীন এই ...
-
save offদুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা
লেখক : আব্দুল মালিক আল কাসিমপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন150 ৳109 ৳অনুবাদ : আব্দুল্লাহ ইউসুফ ভাষা সম্পাদনা : ...
-
save offমহাপ্রলয়
প্রকাশনী : হুদহুদ প্রকাশন600 ৳300 ৳অনুবাদ: উমাইর লুৎফর রহমান পৃষ্ঠা: ২৯২ (রঙিন ছবি) কিয়ামত ...
-
save offকেয়ামত
লেখক : মাওলানা শাহ রফীউদ্দীন (রহঃ), শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ:), হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মাদ শফিপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম590 ৳295 ৳রাসূল ﷺ পৃথিবীতে আগমন করে আবার ...
-
Montasir Mamun – :
লেখিকাঃ রেহনুমা বিনতে আনিস
প্রকাশনীঃ সিয়ান পাবলিকেশন লিমিটেড
গায়ের দামঃ ২০০ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১২০
বইটি কেন পড়বেন?
দুনিয়ার মোহে আসক্ত হয়ে যারা ব্যতিব্যস্ত কিন্তু মনের কোনায় সুখ খুঁজে ফিরছেন তাদের জন্য এই বই। এই বইয়ের গল্পগুলো এই ব্যস্ত সময়ে চলতে চলতেই ওপারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ভাবাবে।সুতরাং ব্যস্ত, মনভোলা, নিরাশায় থাকা যেকোন মানুষই হতে পারেন এই বইয়ের পাঠক।
কি কি আছে বইতে?
বইতে একজন বিশ্বাসী নারীর প্রতিদিনকার সাধারন জীবন যাপনের মধ্যেও পরের জীবনের খোঁজ, চিন্তা ভাবনা স্থান পেয়েছে। মোত ২৭ টি টুকরো গল্প/অভিজ্ঞতায় লেখিকা ওপারের জীবনের দর্শন তুলে এনেছেন নিপুণ দক্ষতায়।
বইয়ের ভিতরের খবর
চলতে ফিরতে বা বিভিন্ন উপলক্ষ্য মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা তাকে বার বার পরের জীবনের দিকে ভাবতে শেখায়। তেমনটি করতে শেখাচ্ছেন এই বইয়ের লেখিকা। কখনো পাশের কোন রুগীর ভুগতে ভুগতে মারা যাওয়া, কখনো বা হঠাত কারো মৃত্যু থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে। কখনও বা এই চলমান জীবনের মাঝেই একটু থেমে কোন ইঙ্গিতকে বোঝার আছে। তবে ইঙ্গিত বুঝতে অবশ্যই কিছুটা চিন্তাশীল হতে হবে। নিজের উদ্দেশ্য, পরিনতি ইত্যাদি নিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করা শিখতে হবে। তাহলে আশেপাশের প্রতিটি ঘটনাকে অর্থবহ মনে হবে, তা থেকে শিক্ষা বের করে নেয়ার ক্যাপাসিটি তৈরি হবে।
বেঁচে থাকার নানা আয়োজনের মধ্যেও মৃত্যুর প্রস্তুতি নেয়ার বিষয়েও এই বইয়ে বেশ কিছু কথা আছে। মৃত্যুর জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করা দরকার তাঁর শিক্ষা ও উপকরন আশেপাশে থেকে যেমন নিতে হবে তেমনি আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান আল কুরআনের বানীগুলোও মনে রাখতে হবে। এর ফলে আমাদের পরিবর্তি জীবনের জন্য পাথেয় অর্জন করা সহজ হবে। পরের জীবনটা সুখি করার, শাস্তি থেকে বেঁচে থাকার আকুতি বার বার উঠে এসেছে পাতায় পাতায়।
কয়েকটা অধ্যায়ের নাম শুনলেই পড়তে ইচ্ছা করবে বইটা। আমি আত্মহত্যা করবো, কোফতা বানানো, একজন ট্রাজিক হিরো, লাইসেন্স টু কিল, মৃত্যুর আগেই মেরে ফেলা, অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আমি ইত্যাদি।
বইটি কেন ভাল লেগেছে?
একদম গল্পের ছলে, বিরতিহীন ভাবে কোন প্রকার টেনশন, দূর্বোদ্ধতা বাদেই পড়া গেছে। জীবনের সহজ সরল স্বাভাবিকতার মধ্যেই কি সব অসাধারন শিক্ষা লুকিয়ে আছে তা জানতে পেরে বেশ ভাল লেগেছে। ওপারের জীবন এর স্বরূপ সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া গেছে বইটি থেকে। মাঝে মাঝে স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষন ভাবিয়েছে, চোখের পানি ফেলে ছেড়েছে বইটি।
বইয়ের গেট আপ সম্পর্কে
প্রচ্ছদটা অসাধারন, খুবই অর্থবহ। কাগজ, ছাপা খুবই সুন্দর, ফন্ট একটু ছোট মনে হয়েছে।
রেটিংঃ ৯/১০
Marium Rakib – :
লেখিকা- রাহনুমা বিনতে আনিস
প্রকাশক- সিয়ান পাবলিকেশন
বইটির বিষয়বস্তুঃ
“ওপারে” বইটির মূল উদ্দেশ্য হল মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দেয়া।মৃত্যুর মাধ্যমেই তো দুনিয়ার জীবনের শেষ, আখিরাতের জীবনের শুরু। এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার রূপ, রং, স্পর্শের বাহার আমাদের জীবনের আসল লক্ষ্য ভুলিয়ে দেয়। তারপর, একদিন হুট করেই মৃত্যু চলে আসে। মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে যায় নতুন এক জীবন- তবে এই জীবন শুধুই উপভোগের। হয় শান্তি, অথবা শাস্তি। নতুন করে আর কিছুই করার থাকেনা তখন। কাজেই সচেতন হওয়ার এখনই সময়।
মৃত্যু ও আখিরাত বিষয়ক অন্যান্য বইয়ের মত গৎবাঁধা বিষয়বস্তু দিয়ে পরিপূর্ণ নয় এই বইটি। এই বইটিতে লেখিকার জীবনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকে মৃত্যু এবং আখিরাতের বিষয়গুলো গল্পের ছলে উপস্থাপন করা হয়েছে। লেখিকার নিজের জীবনে দেখা অনেক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা আছে এই বইতে। সেইসব ঘটনার সাথে আছে লেখিকার নিজস্ব উপলব্ধি। সবার মৃত্যু একই রকম হয় না। কারো মৃত্যু দুঃখজনক, কারো মৃত্যু শান্তির, কারো মৃত্যুতে থাকে শিক্ষণীয় অনেক কিছু- একেক গল্পে একেক রকম মৃত্যুর চিত্র। তবে মৃত্যু যখনই আসুক, যেভাবেই আসুক না কেন, মৃত্যুর কাছে যে আমরা কতটা অসহায় তা এই বইটির প্রত্যেকটি গল্প পড়ার সময় ভালোভাবেই টের পাওয়া যায়।
বইটির কি ভালো লেগেছেঃ
এই বইটিতে গল্পের ভঙ্গিতে মৃত্যু এবং আখিরাতের মতো কঠিনতম বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যাতে গল্পগুলো পড়ার সময় মৃত্যুর ছবিটা চোখের সামনে স্পষ্ট ফুটে উঠে। গৎবাঁধা বিষয়বস্তুর চেয়ে বরং গল্পের ছলে উপস্থাপন করার ভঙ্গিটা বেশ ভালো লেগেছে।
বইটি কাদের জন্যঃ
যারা মৃত্যুর ব্যাপারে উদাসীন, তাদেরকে মৃত্যুর ব্যাপারে সচেতন করার জন্য এই বইটি। প্রাপ্তবয়স্ক যেকোন মানুষই বইটি পড়তে পারেন।
রেহনুমা বিনতে আনিসের গল্প লেখার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে, যেটা তার অন্যান্য বইতেও পেয়েছি। তার লেখার ভাষা যথেষ্ট প্রাঞ্জল এবং আন্তরিক একটা ভাব আছে তার গল্পে। যেন খুব পরিচিত কারো কাছ থেকে গল্প শুনছি, এমন একটা ফিলিং হয় তার লেখাগুলো পড়লে।
সিয়ানের অন্যান্য বইয়ের মত এই বইটির ছাপা, বাধাঁই, পৃষ্ঠাসজ্জা খুবই উন্নতমানের। বইটির কভার খুব সাধারন হলেও মূল বিষয়বস্তুকে ধারণ করে।
বইটির পেছনে যারা শ্রম দিয়েছেন তাদেরকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন।
hrsalehi001 – :
বৃষ্টি জলি – :
লেখিকার জন্ম চট্টগ্রামে, শৈশব ঢাকায়, কৈশোর আবুধাবি ও ভারতে । বর্তমানে স্বামী ও দুই সন্তানসহ ক্যানাডায়। আদর্শবাদী ও জ্ঞানানুরাগী একটি পরিবারে বেড়ে ওঠা। মাস্টার্সের পর ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা অনেক দিনের।
লেখিকার অত্যধিক আগ্রহের ফলে জ্ঞানের মোটামুটি সব শাখাতেই তার অল্পবিস্তর বিচরণ রয়েছে। তিনি প্রথম পরিচিতি লাভ করেন নয় বছর বয়সে, জুনিয়র নিউজে ও আবুধাবির ইয়াং টাইমসে নির্বাচিত লেখিকা হিসেবে। পরবর্তীতে দেশে ফিরে লেখালেখি শুরু। এরপর বৃহত্তর অঙ্গনে পদচারণা।
? বই রিভিউ :
মৃত্যু আমাদের জীবনের এক চিরন্তন বাস্তব সত্য, মৃত্যু আসবেই। কিন্তু এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার মোহে পড়ে আমরা বেমালুম ভুলে থাকি যে, আমাদের সবার জীবনে এক না এক দিন মৃত্যু আসবেই।মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কত ভয়ংকর তা মৃত্যু আসলেই টের পাওয়া যাবে। এপার থেকে যদি নেক আমল না নিয়ে যেতে পারি ওপার সত্যিই আমাদের জন্য অনেক ভয়াবহ রূপ লাভ করবে। ক্ষণস্থায়ী এ জীবনে রবের নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা এবং প্রতিপালকের হুকুম মেনে চলার মাঝেই রয়েছে আখিরাতে মুক্তি পাওয়ার উপায়।
ওপারে বইটি বার বার আমাদের চরম সত্য মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দিবে। বইটির প্রতিটি খন্ডে মৃত্যুর কথা পাঠকদের চরমভাবে ভাবিয়ে তুলবে বাস্তবতাকে মেনে নিতে। ক্ষণস্থায়ী এপারে আমরা কি নিয়ে মেতে আছি, চিরস্থায়ী ওপারের জন্য আমরা কি প্রস্তুতি নিচ্ছি তা এই বইটি পড়লে সহজেই অনুমেয় হবে।
বইটি মোট ২৭ খন্ডে বিভক্ত। প্রতিটি খন্ডে আপনি একেক রকম মৃত্যুর বর্ণনা পড়বেন আর ভাববেন সেই মৃত্যুর চিএগুলি আপনার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ভাসছে। সেই সাথে আপনার চোখের পানি কখন যে টুপটুপ করে পড়ে বইয়ের পাতা ভিজে যাবে টেরই পাবেন না। প্রতিটি মৃত্যুর বর্ণনা আপনার হৃদয়ে ভীষণ কষ্টের অনুভূতি যোগাবে। বইটিতে কিছু মৃত্যু শিক্ষণীয়, কিছু মৃত্যু বাস্তবতার সম্মুখীন হওয়া,কিছু মৃত্যু খুবই বেদনা দায়ক, কিছু মৃত্যু শান্তির প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এক মুহূর্তের ভরসা নেই এ জীবনে আমরা মৃত্যুর সামনে যে কত অসহায় তা এই বইটি বার বার আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবে।
? বইটি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি যা বইটি পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করবে—
???️ আমরা যাকে ভালবাসি তাকে কতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাই, সে আমাকে ভালবাসে কিনা, বাসলে সে ভালোবাসার গভীরতা কতখানি! তাহলে আমার প্রভু যদি ঝালাই করে নিতে চান আমরা আসলেই তাঁকে ভালবাসি কি না, বাসলে আমরা ভালবাসার পরীক্ষায় উওীর্ণ হতে প্রস্তুত কি না, তবে কি সেটা যুক্তিসংগত নয়??? অথচ আমরা কোন কাজ নিজের পছন্দ মতো না হলে, কোন কিছু চেয়ে না পেলে অল্পতেই হতাশ হয়ে যাই। দয়াময় আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালা আনহু কিন্তু আমাদের পরীক্ষায় ফেলার অগেই উওীর্ণ হবার পথ বাতলে দিয়েছেন।
আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালা আনহু আল-কুরআনের মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন —
“ আমি পৃথিবীর সবকিছুকে পৃথিবীর জন্যে শোভা করেছি, যার মাধ্যমে লোকদের পরীক্ষা করি যে, তাদের মধ্যে কে ভালো কাজ করে। এবং পৃথিবীর ওপর যা কিছু রয়েছে, অবশ্যই তা আমি উদ্ভিদশূণ্য মাটিতে পরিণত করে দেব।“
(কুরআন, ১৮: ৭-৮)
অথচ আমরা পরীক্ষার হলে খেলতামাশা করেই সময় নষ্ট করে ফেলি, কত বোকা আমরা। তাইতো আমাদের প্রভু স্বয়ং আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, বলো:
“আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।“
(কুরআন, ১:৬)
???️ আমাদের ছোট্ট স্কুলটা দিনে দিনে বড় হতে থাকে। দেখা গেলো প্রায়ই সন্ধ্যার পর নানা ধরণের ট্রেনিং, আলোচনা বা অনুষ্ঠান তাই একজন নাইটগার্ডের প্রয়োজন দেখা দিলো। সাইফুল ছেলেটি, কদিন পরই ওর বিএ পরীক্ষা। টাকার অভাবে পড়াশুনা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। নাইটগার্ডের চাকরি টি হলে পড়াশুনার খরচটা চালিয়ে নিতে পারবে। আমাদের পিয়ন জামশেদ বললো,সাইফুল তারই ফুপাতো ভাই। আমি বললাম ঠিক আছে, ওর চাকরি হয়ে গেল।
আমাদের নানান কাজে প্রায়ই সন্ধ্যার পর স্কুলে যাওয়া হতো। কিন্তু ভীষণ লাজুক সাইফুল ছেলেটির সাথে দেখা হতো না খুব একটা। তবে ওর প্রশংসা শুনতাম সবার কাছে। সে নামাজের ব্যাপারে ভীষণ নিয়মিত ছিল, এমনকি তাহাজ্জুদ নামাজেও। সে একাই নামাজ পড়তো না, সবাইকে ডেকে ডেকে পড়তে উৎসাহিত করত। মুখচোরা ছেলেটি দিনের বেলা খুব প্রয়োজন ব্যতিরেকে রুম থেকে বেরই হতো না। অন্য পিয়নরা অনেক-সময় স্কুলের আয়াদের সাথে কথাবার্তা বলত, সে কিছুতেই মহিলাদের সামনে আসতো না। রুমের ভেতর ঘাপটি মেরে পড়াশোনা করত আর সন্ধ্যা হলেই নিজের কাজে লেগে যেত।
একদিন সকালে স্কুলে গিয়ে দেখি স্টাফ-কোয়ার্টারের ওখানে বেশ ভিড়। ব্যাপার কি? উপরতলায় গিয়ে শুনলাম অদ্ভুত ঘটনা। মধ্যরাতে জামশেদ সাইফুলকে ডাক দিলো, ‘কিরে, আজ তাহাজ্জুদ পড়বি না?’ সাইফুল কোনো সাড়া দিলো না। জামশেদ ভাবল, হয়তো আজ শরীরটা ভালো নেই, তাই আর কিছু বলল না। ভোরে ফজর নামাজের সময়ও সে উঠল না। জামশেদ ভাবলো ওর শরীর মনে হয় নিতান্তই খারাপ, নইলে তো সে প্রতিদিন ভোরে উঠে নামাজ পড়ে, কুরআন পড়ে। সকালে স্কুল খোলার টাইমেও ওর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে জামশেদ গিয়ে ধাক্কা দিলো। গায়ে হাত দিতেই সে চমকে উঠল। হিম হয়ে আছে সাইফুলের দেহ। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার,প্রিন্সিপাল স্যারসহ অন্যান্য লোকজন মিলে গিয়ে দেখার পর সবাই হতবাক হয়ে গেল, ছেলেটা রাতে ঘুমের ভেতর মারা গিয়েছে। ২০ বছর বয়স, কিন্তু ওর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে!
সাইফুলকে হিংসা হয়। এত পঙ্কিলতার মাঝে সে পণ করে নিয়েছিল, ‘ নিশ্চয় আমার নামায, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য’ (কুরআন, ৬:১৬২) এবং সে-অনুযায়ী নিজের ওয়াদা পূর্ণ করে কোনো প্রলোভন কিংবা প্রতারণার দিকে না-তাকিয়ে পথের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেই সে চলে গিয়েছে। আমরা কি ততটা ভাগ্যবান হতে পারব?
???️ একবার এক লোক মরুভূমির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করার সময় মরুঝড়ে পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ল। হঠাৎ বাতাস আর বালির আস্তরণ ভেদ করে কিছু দূরে তাঁবুর মতো কিছু একটা তার চোখে পড়ল। কোনরকমে হামাগুড়ি দিয়ে সে তাঁবু পর্যন্ত পৌঁছে ভেতরে ঢুকে পড়ল। তাঁবুতে প্রবেশ করে সে বুঝতে পারল শতছিন্ন তাঁবুর ভেতর ধূলিঝড় আর প্রচন্ড বাতাস অনায়াসে আনাগোনা করছে। এর মধ্যেই মাটিতে মাদুর পেতে শুয়ে আছে এক বৃদ্ধ। দেখাই যাচ্ছে বৃদ্ধের সম্পূর্ণ শরীর প্যারালাইজড, তার চোখ দুটো অন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধ একটানা বলে চলেছে, ‘ সকল প্রশংসা আল্লাহর,যে, তিনি তাঁর অনেক বান্দার ওপর আমাকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং তাঁর রাহমাতের জন্য আমাকে নির্বাচন করেছেন।‘
বৃদ্ধের কথা শুনে লোকটি এত আশ্চর্য হলো যে সে বলল, ‘আমি এসেছিলাম আপনার কাছে দিক-নির্দেশনা চাইতে। কিন্তু আগে আমি জানতে চাই কোনোদিক থেকে আপনি মনে করেন আল্লাহ আপনাকে তাঁর অন্যান্য বান্দার ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন? অথচ আমি দেখতে পাচ্ছি আপনার অবস্থা সবদিক থেকেই শোচনীয়!’ বৃদ্ধ বললেন, ‘আল্লাহ কি আমাকে সুস্থ মস্তিষ্ক দেননি, ফলে আমি তাঁর প্রশংসা করতে পারছি? তুমি কি দেখনি কত নারী-পুরুষ রয়েছে যাদের আল্লাহ এই নিয়ামতটি দেননি?’ লোকটি বলল, ‘জি , আপনি ঠিক বলেছেন।‘ বৃদ্ধ বললেন, ‘আল্লাহ কি আমাকে তাঁর পছন্দনীয় দীন বোঝার ক্ষমতা দেননি? অথচ তাঁর কত বান্দা তাঁকে চেনেই না!’ লোকটি বলল, আপনি নিঃসন্দেহে সত্য বলেছেন!’
বৃদ্ধ এবার বললেন, ‘আমি তোমাকে দিকনির্দেশনা দিয়ে দেবো, কিন্তু তোমাকে আগে আমার একটি কাজ করে দিতে হবে। আমি আমার সব সম্পদ এবং স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে ফেলেছি,আমার কনিষ্ঠ পুএ ছাড়া—যে আমার দেখাশোনা করে। তুমি তো দেখতেই পাচ্ছ আমার পক্ষে নিজের কোন কাজই করা সম্ভব নয়। আমার ছেলেটি কাল বেরিয়েছে, কিন্তু এখনো ফিরে আসেনি। তুমি কি যাবার আগে তাকে খুঁজে দিয়ে যেতে পারো? লোকটি তাঁবু থেকে বের হয়ে দেখতে পেল অদূরেই শকুনের দল চক্কর দিচ্ছে। তার হৃৎপিন্ড ধক করে উঠল। যখন সে সেই স্থানে পোঁছল, তখন দেখতে পেল বালকটির মৃতদেহ অর্ধভুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। নেকড়ের দল যা ফেলে গিয়েছে তা সাবাড় করার জন্যই শকুনের আগমন।
লোকটি এবার ভাবল, ‘পালিয়ে যাই’। কারণ, বৃদ্ধকে তার জীবনের শেষ অবলম্বনটিও হারানোর খবর দেয়ার মতো সাহস তার ছিল না। কিন্তু সে পারল না। সে বৃদ্ধের কাছে ফিরে গেল। বৃদ্ধকে খবরটি জানানোর পরিবর্তে সে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি কি মনে করেন আল্লাহ আপনাকে বেশি ভালোবাসেন নাকি আইয়ুব (আঃ) –কে।‘ সে বলল, ‘আপনি কি মনে করেন আল্লাহর পথে আইয়ুব (আঃ) বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন নাকি আপনি?’ বৃদ্ধ বললেন, ‘অবশ্যই আইয়ুব (আঃ)। তিনি আল্লাহর পথে সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন, আমার তো একটি পুএ অবশিষ্ট রয়েছে।‘ এবার আর কোনো উপায় রইল না, লোকটিকে জানাতেই হলো যে বৃদ্ধের এখন আর কেউ অবশিষ্ট নেই।
কিন্তু সংবাদটি শুনেই বৃদ্ধ বললেন, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যে, তিনি আমাকে আইয়ুব (আঃ) –এর ভাগ্য দান করেছেন!’
অল্প কিছুক্ষণের ভিতরেই তার হৃদস্পন্দন বাড়তে লাগলো, তার শ্বাসপ্রশ্বাস কমতে লাগলো এবং অবশেষে তিনি মারা গেলেন। লোকটি চিন্তায় পড়ে গেলো কিভাবে তাকে কবর দেবে। কিন্তু কিছুক্ষণের ভিতর সেখানে একটি বাণিজ্য কাফেলা এসে পৌঁছল, তারাও মরুঝড়ের কারণে পথ থেকে সরে এসে এখানে উপস্থিত হয়েছে। সবাই মিলে বৃদ্ধকে গোসল দিয়ে, কাফন পরিয়ে, কবর তৈরি করে, দাফন দিয়ে দিলো। জানাজার পর লোকটি ওই কাফেলার সাথেই ওই স্থান ত্যাগ করলো।
সে রাতে বৃদ্ধ তার স্বপ্নে দেখা দিলো। কিন্তু এ কি! সে তো এক তাগড়া নওজোয়ানে রূপান্তরিত হয়েছে! তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ এবং অত্যন্ত আনন্দিত দেখাচ্ছিল। সাথে ছিল তার সম্পূর্ণ পরিবার। সে বলল, ‘ আমি তোমাকে জানাতে এসেছি যে, আল্লাহ আমাকে জান্নাত উপহার দিয়েছেন, কেননা আমি তাঁর রহমাতের জন্য তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট এবং কৃতজ্ঞ ছিলাম।’
⏳ পরিশেষে বলতে চাই, জীবন নিয়ে পাগল আমরা আসলে মৃত্যুর কাছে কত অসহায়! অথচ মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও এর জন্য আমরা কতটা অপ্রস্তুত ভাবতেই অবাক লাগে! সামান্য টাকাপয়সা আয় করার জন্য বিশ থেকে ত্রিশ বছর পড়াশোনা করি ; মানুষকে মুগ্ধ করার জন্য আমরা কথাবার্তা, চালচলন, পোশাকআশাক থেকে মানসিকতায় পর্যন্ত আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসি। অথচ যাকে মুগ্ধ করা জরুরী, যার কাছ থেকে এসেছি এবং যার কাছে ফিরে যেতে হবে, তাঁকে খুশি করার জন্য কী করা প্রয়োজন তা জানার জন্য আমরা কতটুকু সময় ব্যয় করি???
মানসূর আহমাদ – :
__________________
দুনিয়াটা এপার, এপার ক্ষণস্থায়ী। কেবল পরীক্ষার জন্যই আমাদেরকে এপারে পাঠানো হয়েছে। এপার আমাদের ঠিকানা নয়; আমাদের ঠিকানা ওপারে!
মৃত্যু, কিয়ামত ও লেখিকার নিজ জীবনের নানা ঘটনা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে রচিত হয়েছে বক্ষ্যমাণ ‘ওপারে’ বইটি। একজন মুমিনের কেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত এবং কীভাবে ইসলামি জীবন যাপন করা যায়, সে সম্বন্ধেও কিছুটা আলোকপাত করা হয়েছে বইটিতে।
.
লেখক পরিচিতি
____________________
রেহনুমা বিনতে আনিসের জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। ঢাকা, আবুধাবি, ভারত ও চট্টগ্রামে জীবনের অনেক দিন কাটিয়ে বর্তমানে স্বামী-সন্তানাদিসহ কানাডায় বসবাস করছেন।
ছাত্রাবস্থায়ই চট্টগ্রামের সিজিএস ও প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। মাস্টার্সের পর ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের ইংরেজি বিভাগে অনেক দিন শিক্ষকতা করেছেন।
মাত্র নয় বছর বয়সে আবুধাবির ইয়ং টাইমস ও জুনিয়র নিউজে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। ওপারে ছাড়াও তাঁর বেশকিছু মূল্যবান রচনা রয়েছে।
.
বিস্তারিত রিভিউ
____________________
এপার আর ওপারের মাঝে মৃত্যু নামের বাঁধ। বাঁধ পেরুলেই ওপার। ওখানে আমাদের সবাইকেই যেতে হবে।
দুনিয়াটা কাফেরদের সুখশান্তির ঠিকানা। কারণ, ওপারে তাদের জন্য কিছুই নেই। অপরদিকে মুমিনদের জন্য ওপারে রয়েছে রহমত ও শান্তির ফল্গুধারা। তাই দুনিয়াতে কিছুটা কষ্ট স্বীকার করতেই হয়। দুঃখ-কষ্ট ভুলে ওপারের পাথেয় সংগ্রহ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে নানা জিনিসের মোহে পড়ে যাই আমরা। ভুলে যাই আপন রবের কথা, মৃত্যুর কথা। বাড়ি, গাড়ি, স্ত্রী-সন্তান, সম্পদের প্রাচুর্য আমাদেরকে পরকাল সম্পর্কে উদাসীন করে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, “প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে” [সুরা তাকাসুর : ১]
কিন্তু যখন কারও মৃত্যুর ঘন্টা বেজে যায়, তখন বোঝা যায়, দুনিয়াটা কত ক্ষুদ্র, কত সীমিত। মুমিনদের এটা সবসময়ই উপলব্ধি করা উচিত। লেখিকা তাঁর বইয়ে মৃত্যু বিষয়ক কয়েকটা ঘটনা নিয়ে এসেছেন। দেখিয়েছেন, দুনিয়াটা কত তুচ্ছ। অথচ আমরা এটাকেই আঁকড়ে ধরি! দুনিয়া অর্জন করতে গিয়ে ভুলে যায় আল্লাহর কথা, মৃত্যুর কথা, ওপারের কথা।
মৃত্যুর কথা মনে পড়লে কিছু মানুষ শুধরে যায়— সময় থাকতেই। তাদের কাহিনিও বর্ণিত হয়েছে বইটিতে। লেখিকা তাঁর নিজ চোখে দেখা ও নিজ কানে শোনা কিছু ঘটনা জানিয়েছেন আমাদেরকে।
ওপারে সবাইকেই যেতে হবে। মুসলিম, অমুসলিম, বৃদ্ধ, বাচ্চা সবাইই ওপারে যায়। যার ডাক এসে যায়, তাকে আর ধরে রাখার শক্তি কারোরই নেই।
দুনিয়ায় আসার সিরিয়াল আছে— বড়র পরে ছোট আসে। কিন্তু ওপারে চলে যাওয়ার কোনো সিরিয়াল নেই! আমাদের কতজনই তো নিচ চোখের সামনে ছোট ভাইবোন, ভাতিজা-ভাতিজি, আত্মীয়স্বজন এবং আরও অনেককেই চলে যেতে দেখলাম! চলে গেল নবজাতক শিশুও।
ছোটরা না হয় অপারগ, তাই তাদের বিচারও নেই। কিন্তু যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গিয়েছে, তাদের কার কী অবস্থা হবে! কে কোথায় যাবে! ওপারে প্রস্তুতি কতটুকু!
কিছু গল্প, কিছু স্মৃতিচারণ, কিছু উপদেশ এবং কিছু আবেগের বর্ণনা দিয়ে লেখিকা তাঁর বইটা উপস্থাপন করেছেন। প্রায় বিশটা লেখার সমষ্টি হল ‘ওপারে’ বইটি।
বইটিতে বেশিরভাগ লেখাই মেয়েদের সম্পর্কিত মনে হয়েছে। তবে ওপারে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু সবাই সমান, যেহেতু মূল টপিক এক, এজন্য এ বইয়ের গল্পগুলো পুরুষদের জন্যও প্রযোজ্য। লেখিকা যেহেতু স্মৃতিচারণমূলক লিখেছেন, এজন্য পুরুষদের গল্প তেমন স্থান না পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
মৃত্যু সম্পর্কে ভাবতে, পরকালের প্রস্তুতি নিতে এবং আল্লাহমুখী হতে উৎসাহ দেওয়ার মতো চমৎকার একটা বই ‘ওপারে’।
.
পাঠ প্রতিক্রিয়া
____________________
বইটা বেশ ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে, অনেকদিন পর ভালো একটা বই পড়লাম। দুয়েক জায়গায় অতি আবেগের কারণে কৃত্রিমতা প্রকাশ পাওয়া ছাড়া তেমন কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়েনি।
সবচে ভালো লেগেছে শেষ কভারের লেখাটা। ওই লেখাটা কেমন যেন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ♥
বইটার সঙ্গে মিলে যায়— এমন একটা সঙ্গীতের কয়েক লাইন উদ্ধৃত করতে চাই—
“আজ আমি কাল তুমি এভাবেই চলে যাব
আমরা সবাই,
ওপারের তরে কিছু জমা কি রেখেছি কভু
দুনিয়ার মোহে মোরা সব ভুলে যাই।” :'(
.
যেহেতু বইটা ভালো, তাই সমালোচনায় যাচ্ছি না। তবে একটা কথা না বলেও পারছি না। তা হল—
আমরা জানি, আরবি ছাড়া অন্য কোনো বর্ণে (সরাসরি) কুরআনের আয়াত লেখা জায়েজ নেই। এতে কুরআনে বিকৃতি ঘটে। কারণ, আরবি ভাষার উচ্চারণ আর অন্য ভাষার উচ্চারণ সমান নয়। কিন্তু ওপারে বইয়ের ৬৩ নম্বর পৃষ্ঠায় সুরা তাকাসুরের প্রথম আয়াতটা বাংলায় লিখে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শুধু অনুবাদটা দিলেই যথেষ্ট হত বলে মনে করি; আয়াতটা বাংলায় লেখার প্রয়োজন ছিল না। লেখিকা হয়তো ব্যাপারটা খেয়াল করেননি। আশা করি পরবর্তী সংস্করণে বিষয়টা শুধরানো হবে।
আফসোসের বিষয় হল, বইটা নাকি বর্তমানে বাজারে নেই। অসাধারণ এই বইটা থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন। (তবে কোনো কোনো অনলাইন শপে দুয়েক কপি মিলে যেতেও পারে।) আশা করি শীঘ্রই বইটা আবারও নতুন করে ছেপে আসবে।
বিশুদ্ধ ইসলামি বই পড়ুন, আল্লাহমুখী আলোকিত জীবন গড়ুন। রিভিউটা পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ! ♥ মাআসসালাম…!