মেন্যু
moha nobi by majida rifa

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

প্রকাশনী : রাহবার
পৃষ্ঠা : 480, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 6th Edition, 2022
পরিবেশক : মাকতাবাতুল আযহার নবীজি (ﷺ)-এর জীবনী জানার জন্য প্রধান মাধ্যম হচ্ছে সীরাত গ্রন্থ। তবে সীরাত গ্রন্থগুলো বিভিন্ন ধাঁচের হয়। কিছু আছে ব্যাপক আবেগ-ঘন হয়। আবেগের ফুলঝুরি ছুটাতে গিয়ে লেখক শব্দের... আরো পড়ুন
পরিমাণ

480  640 (25% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

7 রিভিউ এবং রেটিং - মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

4.9
Based on 7 reviews
5 star
85%
4 star
14%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 4 out of 5

    নিরেট তীরানা:

    সীরাত একটি রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চারের নাম। একটি ভ্রমণকাহিনী। যেখানে হাসির হিল্লোল, নতুন কে জানতে পারার তৃপ্তি, সৃষ্টিকর্তার উপহারের সৌন্দর্য্যের মুগ্ধতা মিলিয়ে, সে এক অমায়িক অনুভূতিপূর্ণ যাত্রা। তেমনি সীরাত যাত্রা একটি অনন্য কল্পনা ভ্রমণ। যেখানে আছে পৃথিবীর বুকে এক নতুন আলোর আগমনের পয়গাম, মরুভূমির ধূলোর জমিনের জাগরণ, আঁধারে নিমজ্জিত মানবসমাজের পতনের বিপরীতে ছুটে চলা, সৎ সাহসের জয়গান, স্বপ্ন ভাঙ্গনের রণডাক, অশ্রুমাখা প্রেমের উপাখ্যান আরো কতশত জাদুময় অনুভবের সমাহার।

    একজন মহামানবকে ঘিরে কতগুলো গ্রন্থ রচিত হয়েছে! তবে, যারা প্রথম বার এই মহামানবের চরিত্রে মুগ্ধ হতে সীরাত হাতে নেন, তাদের নিশ্চয়ই একটি সহজ এবং সাবলীল শব্দচয়নের গ্রন্থ হাতে নেয়া আবশ্যক। প্রথমেই গাম্ভীর্যপূর্ণ বাক্য সমাহারে পূর্ণ সীরাতের কাল্পনিক সমুদ্রে ডুব দেয়া আপাতদৃষ্টিতে সম্ভব হয়ে উঠে না।

    এরকম একটি সাবলীল সীরাত হচ্ছে, মহানবী সা:। কাব্যধর্মী উপমা, রূপক এবং শব্দবুননের মাধ্যমে এই সীরাতটি সুসজ্জিত। যে কোনো শ্রেণীর মানুষ এই সীরাতটি হাতে নিয়ে বেশ সাচ্ছন্দ্যে এই ধরণীর মহামানবকে জেনে নেয়ার সূচনা করতে পারবে। যেহেতু সীরাতটি অনেকটা গল্পকথা ধাচের, তাই একঘেয়েমি আসার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

    গ্রন্থটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
    ————————-

    মহানবী সা:। সাধারণ সীরাতের মতোই, প্রথমদিকে এই গ্রন্থে নবীজি সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের পূর্ব সময়কার অবস্থা, বংশ পরিচয়, পিতা আব্দুল্লাহ এবং দাদা আব্দুল মুত্তালিবের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অকল্পনীয় কিছু ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। এবং এরপর উনার সম্পূর্ণ জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা সমূহের উপর আলোকপাত করা হয়েছে।

    গ্রন্থটির মাধুর্যপূর্ণ শিরোনাম নিয়ে আলোচনা:
    ———————————————

    আশ্চর্যজনক বিষয় হলেও, গ্রন্হটির প্রথমে বিশেষ ভাবে কোনো সূচিপত্র নেই। যেটা আমার কাছে খানিকটা বেমানান ঠেকেছে। তবে, প্রতিটি ঘটনার উপলক্ষ্য শুরুতেই একটি করে শিরোনাম রয়েছে। এবং শিরোনাম গুলো খুবই আকর্ষণীয় এবং কাব্যিক ঢঙ সম্পূর্ণ। কিছু শিরোনাম তুলে ধরা যাক,

    “জীবন-মৃত্যুর খেলাঘরে”
    আব্দুল্লাহ এর বিবাহ পাঠ।

    “আমেনার আলোশিশু”
    মুহাম্মদ, নবীজি সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মা আমেনার কোল আলোকিত করে আসা।

    “চন্দমানবীর রাজপুষ্প”
    রাসুলুল্লাহ সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আম্মাজান খাদিজা রাদিআল্লাহু আনহার বিবাহ।

    “বাধার পাহাড়, স্নেহের ছায়া”
    মুশরিকদের কূটনীতি এবং আবু তালিবের রক্ষা কবজ।

    গ্রন্থটির কিছু মনোরম শব্দচয়নের কিয়দংশ:
    ———————————————

    “স্বচ্ছ কাচের মতো আকাশ। বাতাসের শরীরে ভর করে বালু-পাথরের ছোট ছোট বাড়িগুলোর উপর দিয়ে ওড়াউড়ি করছে আয়েশি ধূলিকণা। হলুদাভ রোদে ঝলমল করতে থাকা প্রাচীন শহরটা মানুষের কলকাকলিতে মুখরিত। কিন্তু হঠাৎ করে যেন রোদে আক্রান্ত শহরটা নিঃশব্দ আর্তনাদ শুরু করে।”

    “শুষ্ক মক্কায় মায়ের কোলটা ছিলো ঠিক এক টুকরো মেঘের মতো। মায়ের কোমল ছোঁয়া বৃষ্টির মতো পরশ বুলিয়ে দিতো। কিন্তু একদিন সব উলটপালট হয়ে গেল”

    “খাদিজা মক্কার চন্দ্রমানবী। আকাশের চাঁদটা যেমন পবিত্র, খাদিজাও তেমন মক্কার অশ্লীলতা থেকে নিজেকে এত পবিত্র রেখেছেন যে, মক্কাবাসি তাঁকে “তাহিরা” (পবিত্র) উপাধি দিয়েছে।”

    1 out of 2 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    Sheikh Israt:

    মনে পরে ১৪০০ বছর আগের কথা যখন আরব ভুখন্ড ছেয়ে গেছিল পাপের জোয়ারে।
    মানুষ আল্লাহকে ভুলে গিয়ে মূর্তি-পূজার ইবাদত করতে শুরু করে দিল।
    ঠিক সেই সময়ের এক ঘটনা,
    হলুভাদ ঝলমল করে থাকা প্রাচিন শহরটি মানুষের কলকাকলিতে মুখরিত। কিন্তু হঠ্যৎ রোদে পোড়া শহরটা নিঃশব্দ আর্তনাদ শুরু করে।
    মক্কার গোত্র-সর্দারদের মুখ অন্ধকার হয়ে যায় সাথে আব্দুল মুত্তালিবের ও।
    কারণ নিকৃষ্ট ইয়েমেনের গর্ভনর আবরাহাতুল আশরাম, আল্লাহর ঘর কাবা ধ্বংস করতে বিশাল হস্তিবাহিনী নিয়ে মক্কায় এগিয়ে আসছে।
    এই ঘটনা নিয়ে আল্লাহ তায়ালা সূরা ফীল নাজিল করেন।

    এই ঘটনার পর পরই ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ, রবিউল আউয়াল মাসে জন্ম নিলেন পৃথিবীর সর্বশেষ নবী আর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মুহাম্মদ (স.)।

    ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল আলোকিত অদ্ভুদ এই ছোট শিশু মুহাম্মদ (স.).।
    একে একে মা,দাদা কে হারালেন। চাচার কাছে বড় হতে লাগলেন।
    তার চরিত্রগত সৌন্দর্য, তার অদ্ভুদ ব্যাক্তিত্য মানুষ কে অবাক করত।
    একদা তিনি মক্কার সবচেয়ে ধনী নারীর থেকে বিবাহ প্রস্তাব পায়।
    বলুন তো মহিলাটা কে?
    – হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন তিনিই খাদিজা।
    প্রিয় পাঠক আমি যে ঘটনা লিখলাম অতি সংক্ষিপ।
    বইটির মধ্যে এত চমৎকার ভাবে ঘটনা গুলো বর্ণনা আছে যা আমার পক্ষে লেখা সম্ভব না।
    শুরুতেই জমজম কূপের ঘটনা,আমিনার সাথে আব্দুল্লাহর বিয়ে,আব্দুল মত্তালিবের ১০০টা উট কুরবানি,আব্দুল্লাহর মৃত্যুসহ হালিমাতুজ সাদিয়ার বাড়িতে মুহাম্মদের অলৌকিক মুজিজার গল্প উল্লেখ আছে।

    বইটি যেভাবে আছে:
    বিয়ের পর মুহাম্মদের সংসার ছিল সুখের। হঠ্যৎ বদলে গেল সবকিছু। হেরা গুহায় নবুয়ত লাভ করার পর শুরু হয় ইসলাম প্রচার বেড়ে যায় মুহাম্মদ (স.) এর প্রতি অত্যাচার। যে মুহাম্মদ সবার প্রিয় ছিল সেই মুহাম্মদ সবার চোখের বিষ হতে শুরু করল।
    অনেক অত্যাচার সহ্য করে প্রিয় চাচা,প্রাণপ্রিয় স্ত্রী ও মক্কা হারিয়ে মদিনায় যুদ্ধ বিগ্রহ শেষে একদিন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলো।
    এত সহজে কি?
    নাহ..! আমি প্রথমেই বলেছি বইয়ের সবকিছু লেখা সম্ভব না।
    বইটতে বিশ্বনবী (স.) নবুয়ত প্রাপ্তি, ইসলাম প্রচার,কাফেরদের অত্যাচার, শিয়াবে আবু তালিব,তায়েফ গমন,মিরাজ, মদীনায় ইসলাম,হিজরত, বদর যুদ্ধ থেকে তাবুক যুদ্ধ, বিদায় হজ্জসহ বহু ঘটনা উল্লেখ আছে।

    বইটি কেনো পড়া উচিত:
    আমরা গল্প পড়তে পছন্দ করি এমন মানুষ খুবই অল্প সংখ্যক আর তা যদি হয় আমাদের মহানবী (স.)কে নিয়ে তাহলে তো পড়ার আগ্রহ দ্বিগুন হয়ে যায়।
    বইটিতে মাজিদা রিফা আপু গল্পের আকারে বিশ্বনবী (স.) পুরো জীবনীটা উল্লেখ করেছেন।বইটি আমাকে ক্ষণে ক্ষণে আনন্দ দিয়েছে,খুশি করেছে আর এমনভাবে কাঁদিয়েছে যে আমি আমার ১৮ বছর বয়সে এত কষ্ট কখনো পায়নি। আমি বিশ্বাস করি এই বইটি পড়ে আপনি ও আপনার আবেগ ধরে রাখতে পারবেন না।
    আশা করি পড়বেন। জানবেন প্রিয় নবী (স.)কে। আপনি মুহাম্মদ (স.) প্রতি গভির ভালোবাসায় জড়িয়ে যেতে পারেন।

    2 out of 3 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  3. 5 out of 5

    নাজমুন নাহার নিপু:

    ____________________
    মধ্য গ্রীষ্মের গরমে গা পোড়ানো চমৎকার এক দুপুরে লেখিকার মতো আমি ও আবিষ্কার করলাম মানবকুলের যে ব্যক্তিটিকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি বলে দাবি করি,তাকেই আমি পুরোপুরি জানি না।নিজের ভালোবাসা নিয়ে সংশয় জাগল।মনে হলো আমার ভালোবাসার মান্জিল পুরোটাই খাদ মেশানো।তাই সীরাত পাঠে মনোযোগী হলাম। আমার আরবি ভাষা শিক্ষার এক সহপাঠীর পরামর্শে বইটি পড়া শুরু করি।মাজিদা রিফা আপুর লেখা বইটি মূলত মহানবী সাঃ এর জীবনী। তবে বইটি যতোটা না জীবনী তার থেকেও বেশি ঐতিহাসিক, চ্যালেন্জিক এবং থ্রিলিং এক উপন্যাস।

    _________________________
    বইয়ের সার-সংক্ষেপ
    _________________________
    খুব ছোট্টবেলায় আব্বু-আম্মু অবচেতন মনের গহীনে ঢুকিয়ে দিয়েছিল একটি বাক্য__
    “আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় এবং মুহাম্মদ সাঃ তাঁর রাসূল ”
    সেই থেকে নবী প্রেমের বীজ মনে বপন হলো।তবে এতোদিন মুহাম্মদ সাঃ বলতে বুঝতাম সর্বশক্তিমান প্রেরিত এক মহাপুরুষ। তবে এই গ্রন্থ পাঠে আমূল বদলে গেলো সেই ধারনা।আবিষ্কার করি অন্য এক মুহম্মদ সাঃ যে কিনা তপ্ত বালুনগরের এতিম বালক,বুদ্ধিদীপ্ত এক কিশোর,বিশ্বস্ত তরুন,২৫ বছরের প্রেমময় স্বামী,চল্লিশ বছররের নবুয়তপ্রাপ্ত ব্যক্তি,জিহাদের ময়দানের বীর সর্বোপরি আল্লাহর আশ্চর্য অনুগত এক বান্দা।

    মোট ৫২ পর্বের পুরো বইটিতে মহানবী সাঃ, সাহাবায়ে কেরাম, এবং তৎকালীন আরব তথা পুরো পৃথিবীর সামাজিক, অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা অতি নিপুন হাতে তুলে ধরেছেন লেখিকা।

    (১ম-৩য় পর্ব)___এ অধ্যায়গুলোতে মহানবী সাঃ এর জন্ম পূর্ববর্তী ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। জমজম কূপের ইতিবৃত্ত এবং আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক জমজম কূপ পুনরুদ্ধার, স্বৈরাচারী আবরাহা কর্তৃক পবিত্র কাবাঘর আক্রমণ এবং তৎকালীন আরব জনপদ সম্পর্কে চমৎকার এবং কৌতূহলউদ্দীপক তথ্য পাবেন পাঠকগন।

    (৪র্থ-৭ম পর্ব) ___এ অধ্যায়গুলোতে শিশু মুহম্মদ সাঃ এর জন্ম পরবর্তী বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ আছে যা প্রমান করে তিনিই শেষ জামানার মহানবী।কৈশোর পেরিয়ে যৌবনপ্রাপ্তি এবং আম্মাজান খাদিজা রাঃ এর সঙ্গে পরিনয়বদ্ধ হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য আছে।৭ম পর্বের নাম #চন্দ্রমানবীর_রাজপুষ্প __ নামের ভিতরেই কেমন যেন রোমান্টিকতা রয়েছে , তাই না?
    ধূসর মরুভূমির তপ্ত রোদেপোরা শহরের এতিম বালক মুহাম্মদ সাঃ কিভাবে হয়ে ওঠেন খাদিজা রাঃ এর প্রেমময় স্বামী?পাঠকগণ এ প্রশ্নের উত্তর পাবেন উক্ত পর্বগুলোতে।লেখিকার ভাষায়____
    “পৃথিবী মুগ্ধ হয়ে দেখে তাঁদের ঘরের চৌকাঠে, জানালার খড়খড়িতে সারাক্ষণ লেগে আছে ভালোবাসার উৎসাহী অনুষ্ঠান! ”

    (৮ম-২৪তম পর্ব)__ মহানবী সাঃ এর নবুয়ত প্রাপ্তি এবং পরবর্তী মাক্কী জীবন নিয়ে এ পর্বগুলো রচিত।আল্লাহ তায়ালার আদেশে দীন প্রচারে ব্যপিত হন প্রিয় নবী।একইসাথে মক্কাবাসীদের সাথে তার শত্রুতার ও সৃষ্টি হয়।নির্বোধ মক্কাবাসী প্রানের নবীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়।পদে পদে লাঞ্ছিত হন মায়ার নবী।তবুও তিনি বলেন___
    “হে আমার রব,নির্বোধদের ক্ষমা করুন।হয়তো তাদের বংশধরদের মধ্য হতে কেউ ঈমান আনবে।”
    সুবহানআল্লাহ! কত অসীম ধৈর্য!
    নবীজীর দ্বীনের দাওয়াতে গুটিকতক লোক সাড়া দেয়।ধূসর মরুর বুকে আশার আলো দেখতে পান নবী সাঃ। মহানবী সাঃ এর মিরাজ সফরের বর্ননা আছে এপর্বগুলো তে।একই সাথে প্রিয় নবী সাঃ এর প্রানপ্রিয় চাচা আবু তালিব এবং জীবনসঙ্গিনী খাদিজা রাঃ এর বিয়োগান্তক ঘটনার উল্লেখ আছে। নবী মুহাম্মদ সাঃ এর প্রথম প্রেম, খাদিজা রাঃ!
    মহান আল্লাহ সুবহানুতায়ালা যাকে সালাম পাঠিয়েছেন!
    কত মহীয়সী নারী তিনি!

    (২৫-৪৫ পর্ব)__ মহানবী সাঃ এর মদিনা হিজরত নিয়ে রচিত উল্লেখিত পর্বগুলো।মক্কাবাসী সত্যের যে আলোকে প্রত্যাখান করলো সেই উজ্জ্বল সত্যকেই কন্ঠে ধারন করলো ইয়াসরিববাসি।সত্যের উজ্জ্বল আলোতে এবং মুহম্মদ সাঃ এর তত্ত্বাবধানে পৌত্তলিক ইয়াসরিব শহর ধীরে ধীরে পরিনত হয় শান্তি পূর্ণ এক শহর, মুসলমানদের পূন্যভূমি ” মদিনা” -তে।মদিনা হিজরত ছিল ইসলামের প্রচারের সোনালী সময়।হুদায়বিয়ার সন্ধি,বদর, খায়বার যুদ্ধের বর্নানা আছে উক্ত পর্ব গুলোতে। যুদ্ধে জয় করে মুসলমানরা। দিকবিদিগে ইসলামের জয়ের কেতন ওড়ে।মদিনায় হিজরতে আল্লাহর রাসূলের সঙ্গী হন আয়িশা রাঃ। মহানবী সাঃ এবং আম্মাজান আয়িশা রাঃ এর বিবাহ পরবর্তী জীবন অতিবাহিত এই মদিনায়। কত প্রেমময় ছিল তাঁদের বন্ধন!

    (৪৬-৫২ পর্ব)__এ পর্বগুলোর অন্যতম উপজীব্য বিষয়গুলো হলো হুনায়নের প্রান্তরে মক্কাবিজয়,যুদ্ধবন্দীদের প্রতি ক্ষমার অপূর্ব দৃষ্টান্ত, বিদায় হজ্জ এবং নবীজীর ইন্তিকালের হ্রদয়বিদারক ঘটনা।এছাড়াও নবীজীর পারিবারিক ও সাংসারিক অবস্থার ও বিস্তারিত বর্ননা আছে।প্রানের নবীর মৃত্যু সংবাদ শুনে অধীর হয়ে পরেন সাহাবায়ে কেরামগন এবং পাঠক হিসেবে না কাঁদবে এমন কোন মানুষ নেই।
    মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন__

    “মুহম্মদ একজন রাসূল মাত্র, তার পূর্বেও বহু রাসূল গত হয়েছেন।সুতরাং যদি তিনি মারা যান বা নিহত হন,তবে কি তোমরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে?যদি কেউ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে সে আল্লাহর ক্ষতি -বৃদ্ধি কিছুই করবে না।আর যারা কৃতজ্ঞ,শীঘ্রই আল্লাহ তাদের পুরষ্কৃত করবেন।।”
    _____________________________
    কেন বইটি পড়া জরুরি ?
    _____________________________
    _আপনি কি জানেন পবিত্র কুরআন অবতীর্ন হওয়ার প্রেক্ষাপট?
    _কেমন হওয়া উচিত একজন দক্ষ ব্যবস্থাপকের ভূমিকা?
    _আদর্শ নেতৃত্বের গুনাবলী কি?
    _তাকওয়া কি?
    _আল্লাহর অনুগত হওয়ার উপায় কি?
    _আপনি কি জানেন ধৈর্য ও সবর কি?
    _অপূর্ব ক্ষমার দৃষ্টান্ত সম্পর্কে আপনার ধারনা কি?
    _পরিবার,রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি আপনার দায়িত্ব কি?কেমন হওয়া উচিত আপনার আচরন?
    ____একজন মানুষ!অথচ পরিবার,সমাজ,রাষ্ট্র তথা উম্মতের প্রতি কি অসম দায়িত্ববোধ!
    এতোটুকুও অসঙ্গতি চোখে পরার জো নেই।
    কি সাবলীলভাবেই না সবকিছু সামলেছেন।
    _____________________________
    ব্যক্তিগত অনুভুতি
    _____________________________

    _প্রথম যখন আমি কুরআনের অনুবাদ পড়ি, তখন বিস্মিত হই নিজের জ্ঞানের পরিধির অক্ষমতা দেখে।পরবর্তীতে যখন তাফসীর পড়ি,বিস্ময় যেন সীমা অতিক্রম করে।তবে এবার আর বিস্মিত হয়নি আমি, ভাবলাম, এই বিপুলা পৃথিবীর কতোটুকুই বা জানি?
    মহানবী সাঃ এর উপর অবতীর্ন কিতাব আল-কুরআন।আর এই কিতাব পরিপূর্নভাবে হ্রদয়ঙ্গম করার জন্য সীরাত পাঠের বিকল্প নেই।বুঝতে পারলাম কেন তিনি বলেছেন, ___”তেোমাদের মধ্যে কেউই প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার পিতা,পুত্র, ও অন্য সকল লোক অপেক্ষা আমার প্রতি অধিক ভালোবাসা পোষণ না করবে।”
    ৫০০ পৃষ্ঠার চমৎকার এই গ্রন্থটি আমার লোভকে উস্কে দিয়েছে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে কবুল করে নিক সীরাত বিশ্বকোষ পাঠ এবং মহানবী সাঃ এর পবিত্র রওজা মুবারক দর্শনে।
    _________________________
    ভালো-মন্দ
    _________________________
    _ভাষাগত মাধুর্য অত্যন্ত দারুন,লেখিকার তারিফ করতে হয়।
    _প্রচ্ছদ, ফন্টের যথাযথ ব্যবহার ভালো লেগেছে।তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে বুক মার্কের ফিতাটা।
    _পৃষ্ঠার উন্নত মান
    -রেফারেন্স এ পরিপূর্ণ
    _মোট ৫২ টি পর্বের ৫২ টি চমৎকার নাম
    _বই সম্পর্কে লেখিকার অভিব্যক্তি

    ___মন্দ লাগার মতো কিছু নেই বইটিতে একথা যে বইটি পড়বে সে-ই স্বীকার করবে।

    ________________________
    লেখিকা সম্পর্কে
    ________________________
    লেখিকা মাজিদা রিফা মাওলানা মুশতাক আহমেদ খান এর দ্বিতীয় কন্যা।লেখিকা সম্পর্কে এর বাইরে কিছু উল্লেখ নেই বইয়ে।তবে লেখিকার পর্দার কথা ভেবেই হয়তো তেমন ডিটেইল উল্লেখ নেই।মাজিদা রিফা আপুর লেখা এ বইটিই প্রথম পড়ি।এর আগে উনার কোন লেখা পড়িনি।তাই প্রথমে কেমন জানি লাগছিলো। তবে প্রথম লাইন পড়ার পরই ধারনা বদলে যায়।আল্লাহ তায়ালা উনাকে নেক হায়াত দান করুক
    _____________________
    শেষকথা
    _____________________
    আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বইটি পড়ার ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ সম্পর্কে জানার এবং বইয়ের অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার তৌফিক দান করুন।সমৃদ্ধ হয়ে উঠুক ইলমের ভান্ডার।

    প্রকাশনী এবং সকলকে জাঝাকুমুল্লাহ খাইরান।

    [আমি মহান আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে]

    9 out of 9 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  4. 5 out of 5

    asifulhaqueshuvo999:

    যারা চিন্তা করছেন সীরাতগ্রন্থ পড়া শুরু করবেন তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি গ্রন্থ “মহানবী সা.”। দেখা যায় যে প্রথম প্রথম তথ্যবহুল সীরাতগ্রন্থ পড়তে অনেক সময় একঘেয়েমি চলে আসে কিন্তু এই গ্রন্থ দিয়ে শুরু পড়া শুরু করলে একঘেয়েমি আসবে না কারণ লেখক এই গ্রন্থ ঐতিহাসিকদের মত না লিখে উপন্যাসিকদের মত করে লিখেছেন(আমার মত)। প্রতিটি পাতায় আছে এডভেঞ্চার, ট্রাজেডি। যদিও এটি আমার পড়া ২য় সীরাতগ্রন্থ তবুও যারা প্রথম প্রথম সীরাত পড়তে চাইছেন তাদেরকে এইগ্রন্থ টি দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দিব। এইগ্রন্থটি সীরাতের প্রতি আকর্ষন তৈরী করবে।
    11 out of 12 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  5. 5 out of 5

    abdur0rahman99:

    আমরা সচরাচর রাসূল (স:) এর যেসব জীবনী পড়ি তাতে থরে থরে সাজানো থাকে তথ্যের স্তুপ আবার কোন কোন জীবনীতে সাহিত্যের দৃষ্টিকোণ থেকে অতি বাড়াবাড়ি করা হয়। আবার যেসব জীবনীতে বেশি পরিমানে তথ্য থাকে তাতে ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ করা থাকেনা।কিন্তু  “মহানবী” গ্রন্থটি লেখিকা এ দুইয়ের মাঝামাঝি থেকে লিখেছেন। এই কিতাবের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো এখানে লেখিকা নবীজির জীবনীকে তথ্যের স্তুপ না বানিয়ে সাহিত্যিক ভাবধারা অক্ষুণ্ণ রেখে ঘটনা গুলো বিশ্লেষণ করেছেন।
    ,
    ▶সার-সংক্ষেপ:-
    “মহানবী” বইটিকে লেখিকা ৫২ ছোট ছোট পর্বে ভাগ  করে আলোচনা করেছেন। যথা-

    🔸বইয়ের প্রথম শিরোনাম ‘ইতিহাসের ইতিহাস’। এখানে বর্ণিত হয়েছে  ইবরাহিম (আ:) কর্তৃক বিবি হাজেরা ও শিশুপুত্র ইসমাইলকে জনমানবহীন মরুভূমিতে রেখে যাওয়া, পানির খোঁজে হাজেরার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝে ঘুরে বেড়ানো, শিশুপুত্র ইসমাইল এর পায়ের আঘাতে জমজম কুপ সৃষ্টি হওয়া এবং রাসূল (স:) এর দাদা  আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক হারিয়ে যাওয়া সেই জমজম পানির কূপ পুনরুদ্ধারের কথা আলোচনা করা হয়েছে।

    🔸বইয়ের দ্বিতীয় শিরোনাম ‘জীবন মৃত্যুর খেলাঘরে’ । এ অধ্যায়ে ইবরাহিম (আ:) কতৃক শিশুপুত্র ইসমাইলকে কুরবানির ঘটনা ও আমেনার সাথে আব্দুল্লাহের শুভ বিবাহ, বিবাহ অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে পরশ্রীকাতর সেই ইহুদি-কন্যার সাথে সাক্ষাতের কথা আলোচনা করা হয়েছে।

    🔸তৃতীয় শিরোনাম ‘পৃথিবীজুড়ে অন্ধকার’ শিরোনামে এ অধ্যায়ে ইয়ামানের গভর্নর আবরাহার বিশাল হস্তিবাহিনী নিয়ে বায়তুল্লায় আক্রমণ, আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট্ট পাখির কংকর নিক্ষেপের মাধ্যমে হস্তিবাহিনী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।

    🔸বইয়ের চতুর্থ শিরোনাম ‘আমেনার আলোশিশু’। এখানে রাসূল (স:) এর জন্মের সময়কার বর্ণনা দেয়া হয়। শুরু হয় সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহামানবের দুনিয়ার জীবনের অগ্রযাত্রা।

    🔸এভাবে বইতে ৫২ টি শিরোনামের মাধ্যমে রাসূল (স:) এর পুরো জীবনকাহিনী তুলে ধরা হয়। প্রতিটি শিরোনামের নামকরণ করা হয়েছে আকর্ষণীয় শব্দ দ্বারা। যেন সেই শিরোনাম দেখলেই পুরো লেখা পড়তে ইচ্ছা করে।
    .
    ▶ব্যক্তিগত অনূভুতি:-
    ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। বইয়ের প্রতিটি পাতায় রয়েছে লেখকগণের কঠোর পরিশ্রমের ছোয়া। সঠিক শব্দচয়ন, মজবুত ও পাকাপোক্ত শব্দের গাঁথুনি বইটিকে নিয়ে গেছে এক  অনন্য উচ্চতায়। বইয়ের প্রতিটি বাক্যই যে অভূতপূর্ব ভালোলাগায় সম্মোহিত করে রাখবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। বইটি পড়তে গিয়ে পাঠক কোথাও বিরক্তবোধ করবেন না। নিজের অজান্তেই হারিয়ে যাবেন সীরাতের অজানা ভুবনে। মনে হবে, নতুন করে জানছেন রাসূল (স:) কে।
    বইটি পড়ার পর পাঠক আরো বুঝতে পারবেন রাসূলের দুনিয়ার জীবন কেমন ছিল। জানতে পারবেন রাসূল (স:) এর আচার আচরণ ও কর্মপন্থা সম্পর্কে। যা আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
    এমন খুব কম বই আছে যার প্রতিটি বাক্য ভালো লাগার, প্রতিটি পাতায় মিশে থাকে জ্ঞানের ছোয়া ও শিক্ষণীয় মেসেজ ” মুহাম্মদ হৃদয়ের বাদশা ” বইটি তার মধ্যে অন্যতম। সত্যি তো রাসূল (স:) এর দুনিয়াবী জীবনের থেকে শিক্ষনীয় তো আর কিছু নেই। রাসূল (স:) এমন একজন মানুষ যাকে অনুসরণ করলে দুনিয়ার জীবন পরিচালনা করলে সুখ ও শান্তির পথে চলা সম্ভব।
    সব মিলিয়ে বইটি খুবই ভালো এবং উপকারী। তাই সকল পাঠকের প্রতি অনুরোধ বইটি একবার হলেও পড়ুন আর জীবনকে রাঙিয়ে তুলুন রাসূল (স:) এর জীবন ও আদর্শের আলোকে।
    .

    8 out of 8 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No