লায়ন অব দ্য ডেজার্ট
অনুবাদ: আইনুল হক কাসেমী
উসমানি খিলাফতের প্রাণ তখন ওষ্ঠাগত প্রায়। তখনই সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা শকুনগোষ্ঠীর লোভাতুর চোখ গিয়ে পড়ে খেলাফতের অধীনস্থ আফ্রিকার মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর ওপর। তারা এসব ভূখণ্ডকে রাজাবিহীন রাজ্য হিসেবে ধরে নেয়। ইতালি ঝাঁপিয়ে পড়ে লিবিয়ায়। ১৯১১ সালে লিবিয়ার সমুদ্র উপকূলে নোঙর করে ইতালিয়ান রণতরীগুলো। পিঁপড়ের মতো বেরিয়ে আসে হাজার হাজার ইতালিয়ান সৈন্য।
সিংহ যেমন আস্তানা ছেড়ে গর্জন করতে করতে বনের খোলা মাঠে বেরিয়ে আসে, তেমনি জাবালে আখজারের আল-কুসুর খানকাহ থেকে রণহুংকারে সদলবলে ময়দানে বেরিয়ে আসেন উমর মুখতার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ সানুসি সুফি আন্দোলনের আধ্যাত্মিক জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। রাতের সাধক আর দিনের অশ্বারূঢ়। দাড়ি, টুপি আর আলখাল্লা পরিহিত দরবেশ। কুরআন-হাদিসের মশালধারী একজন জবরদস্ত আলেম।
ঔদ্ধত সিংহের ন্যায় মৃত্যুর প্রতি একেবারে উদাসীন কতজন সাথিকে সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন দখলদার ইতালিয়ানদের বিরুদ্ধে। ১৯১১ থেকে নিয়ে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত এই ২০টি বছর প্রায় ২৬৩ রণক্ষেত্রে অত্যন্ত বীরদর্পে লড়াই করে যান। প্রতিটি যুদ্ধে চোখে শর্ষেফুল দেখতে থাকে ইতালিয়ান বাহিনী।ইতালি সরকার তার সাথে বারবার সমঝোতা করতে চেয়েছে; কিন্তু প্রতিবারই তিনি এককথা বলেছেন; যা ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে—‘আমরা আত্মসমর্পণ করি না; আমরা হয় জিতি, না হয় মরি।’
সেই মরুসিংহ উমর মুখতারের জীবন ও কীর্তি নিয়ে রচিত এই বইটি।
-
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳314 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotঅবাধ্যতার ইতিহাস
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন400 ৳292 ৳যেভাবে আর যে কারণে ধ্বংস হয়েছে ...
-
save offইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা
লেখক : হেদায়াতুল্লাহ মেহমান্দপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন414 ৳302 ৳'ইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা' বইটি মূলত ...
-
hotইসলামের চার নক্ষত্র: চার ইমাম
লেখক : ড. সালমান আল আওদাহপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন335 ৳248 ৳অনুবাদ: ওয়াফি অনুবাদক টিম সম্পাদনা: মুফতী মাহমুদুল ...
-
save offইমাম সিরিজ (৬টি বই)
প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন123 ৳ – 1,005 ৳সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন কভার: পেপার ব্যাক পৃষ্ঠা: ১ম খণ্ড ১৬৮, ২য় ...
-
hotভারতবর্ষে মুসলিম শাসন : হাজার বছরের ইতিহাস
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম770 ৳385 ৳ভাষান্তর : মুহাম্মাদুল্লাহ ইয়াহইয়া অতিরিক্ত টীকা সংযোজন ...
-
save offলস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি (ইসলামের হারানো ইতিহাস) (পেপার ব্যাক)
লেখক : ফিরাস আল খতিবপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন260 ৳169 ৳লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’র ভাষা প্রাঞ্জল ও ...
-
hotসীরাত বিশ্বকোষ (১১ খণ্ড)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার11,000 ৳5,500 ৳মোট খণ্ড ১১ এবং পৃষ্ঠাসংখ্যা : ...
-
hotইমাম মাহদী: রূপকথা নয়, সত্য
প্রকাশনী : সীরাত পাবলিকেশন200 ৳150 ৳অনুবাদক: মহিউদ্দিন রূপম, আশিক আরমান নিলয় সম্পাদনা: ...
-
save offআফিয়া সিদ্দিকী (গ্রে লেডি অব বাগরাম) (পেপারব্যাক)
প্রকাশনী : প্রজন্ম পাবলিকেশন220 ৳180 ৳সংকলন: টিম প্রজন্ম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চলা কথিত ...
-
Asif Ahmad – :
লেখকঃ ড. আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি
অনুবাদকঃ আইনুল হক কাসিমী
সম্পাদকঃ আবদুর রশীদ তারাপাশী
প্রচ্ছদঃ আবুল ফাতাহ মুন্না
ধরণঃ ইসলামী ব্যক্তিত্ব
প্রকাশকালঃ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৬০
উসমানি খিলাফতের পতনের প্রাক্কালে যখন ইতালীয় সৈন্যরা লিবিয়ার ভূ-খণ্ডে আগ্রাসন চালায় তখন তাদের মোকাবিলায় এগিয়ে আসেন দাঁড়ি, টুপি আর আলখাল্লা পরিহিত এক ব্যক্তি। দরবেশের ন্যায় বেশভূষার এই মানুষটি উসমানি সৈন্যদের সাথে মিলে দখলদার ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানি সৈন্যরা লিবিয়া ত্যাগ করলে তিনি হয়ে ওঠেন আগ্রাসী ইতালীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধের মহানায়ক। মিশরে অবস্থানরত সায়্যিদ ইদরিস সানুসি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সানুসি সুফি আন্দোলনের অনুসারী এই ব্যক্তিটির নাম উমর মুখতার, যিনি শত্রুর চোখেও ছিলেন পরম শ্রদ্ধার পাত্র। আজও লিবিয়ার জনগণ তাঁকে গর্বভরে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করে।
বই সম্পর্কেঃ
বইটির মূল নাম “আশশাইখুল জালিল উমার আল-মুখতার, নাশআতুহু ওয়া আমালুহু ওয়া ইসতিশহাদুহু”। বইটির নায়ক উমর মুখতারের জন্ম ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে)। ছোটবেলায় পিতা মৃত্যুবরণ করলে পিতার অসিয়ত অনুযায়ী তিনি ও তাঁর ভাই চাচার কাছে বড় হন। চাচার কাছ থেকেই তিনি শিক্ষাজীবনের এবং সানুসি আন্দোলনের হাতেখড়ি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকে সাহসী এই মানুষটির যুদ্ধকালীন জীবন নিয়েই বইটির অধিকাংশ পাতাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বইটির লেখক ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি লিবিয়ার নাগরিক হওয়ার সুবাদে এই ব্যক্তিটিকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকদের লেখনী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন এবং তাঁর এই বইটিতে উমর মুখতারের যুদ্ধজীবনের দিকেই বেশি আলোকপাত করেছেন। তিনি এমন একজন উমর মুখতারকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন যিনি দেশ, জাতি এবং দ্বীন-ইসলামের ব্যাপারে ছিলেন আপসহীন। তিনি জীবনের একটা অংশ যুদ্ধের ময়দানে কাঁটিয়ে দিয়েছেন। ভারী ট্যাংক এবং উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে কেবল ঘোড়া, রাইফেল আর কিছু জানবাজ সৈনিকদেরকে সঙ্গে নিয়ে লড়ে গেছেন। কখনো যুদ্ধে জয়লাভ করেছেন আবার কখনোবা পিছু হটেছেন। বিভিন্ন যুদ্ধে তাঁর প্রিয় মানুষদেরকে হারিয়েছেন। কিন্তু কখনোই কোনো অবস্থাতে মাথা নত করেননি। একসময় তিনি ইতালীয়দের হাতে বন্দী হয়ে যান। শুরু থেকেই ইতালি সরকার তাঁকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। এমনকি বন্দী হওয়ার পরেও তাঁর সাথে আপস করতে চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি তা সর্বাবস্থায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ফ্যাসিস্ট ইতালি সরকারের বিচারে ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হলে সহাস্য কন্ঠে তিনি বলে ওঠেন, “রায় তো আল্লাহর; তোমাদের মনগড়া কোনো রায় নয়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” (পৃষ্ঠা- ১৩৭)
বইটিকে লেখক এপর্যন্ত রেখেই সমাপ্তি টানেননি। বরং তাঁর মৃত্যুর পর আন্দোলনের প্রধান নিযুক্ত করা থেকে লিবিয়ার মাটিতে ইতালীয়দের পরিণতি পর্যন্ত বর্ণনা করে গেছেন। তবে মোটকথা হলো ড. সাল্লাবি এ বইটিতে এমন একজন উমর মুখতারকে তুলে ধরতে পেরেছেন যিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের ‘লায়ন অব দ্য ডেজার্ট’।
Asif Ahmad – :
নামঃ লায়ন অব দ্য ডেজার্ট (শহিদ উমর মুখতার)
লেখকঃ ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি
অনুবাদকঃ আইনুল হক কাসিমী
সম্পাদকঃ আবদুর রশীদ তারাপাশী
প্রচ্ছদঃ আবুল ফাতাহ মুন্না
ধরণঃ ইসলামী ব্যক্তিত্ব
প্রকাশকালঃ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৬০
উসমানি খিলাফতের পতনের প্রাক্কালে যখন ইতালীয় সৈন্যরা লিবিয়ার ভূ-খন্ডে আগ্রাসন চালায় তখন তাদের মোকাবিলায় এগিয়ে আসেন দাঁড়ি, টুপি আর আলখাল্লা পরিহিত এক ব্যক্তি। দরবেশের ন্যায় বেশভূষার এই মানুষটি উসমানি সৈন্যদের সাথে মিলে দখলদার ইতালির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানি সৈন্যরা লিবিয়া ত্যাগ করলে তিনি হয়ে ওঠেন আগ্রাসী ইতালীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধের মহানায়ক। মিশরে অবস্থানরত সায়্যিদ ইদরিস সানুসি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সানুসি সুফি আন্দোলনের অনুসারী এই ব্যক্তিটির নাম উমর মুখতার, যিনি শত্রুর চোখেও ছিলেন পরম শ্রদ্ধার পাত্র। আজও লিবিয়ার জনগণ তাকে গর্বভরে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করে।
বই সম্পর্কেঃ
বইটির মূল নাম “আশশাইখুল জালিল উমার আল-মুখতার, নাশআতুহু ওয়া আমালুহু ওয়া ইসতিশহাদুহু”। বইটির নায়ক উমর মুখতারের জন্ম ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে (মতান্তরে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে)। ছোটবেলায় পিতা মৃত্যুবরণ করলে পিতার অসিয়ত অনুযায়ী তিনি ও তাঁর ভাই চাচার কাছে বড় হন। চাচার কাছ থেকেই তিনি শিক্ষাজীবনের এবং সানুসি আন্দোলনের হাতেখড়ি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকে সাহসী এই মানুষটির যুদ্ধকালীন জীবন নিয়েই এই বইটির অধিকাংশ পাতাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বইটির লেখক ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি লিবিয়ার নাগরিক হওয়ার সুবাদে এই ব্যক্তিটিকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকদের লেখনী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন এবং তাঁর এই বইটিতে উমর মুখতারের যুদ্ধজীবনের দিকেই বেশি আলোকপাত করেছেন। তিনি এমন এক উমর মুখতারকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন যিনি দেশ, জাতি এবং দ্বীন-ইসলামের ব্যাপারে ছিলেন আপসহীন। তিনি জীবনের একটা অংশ যুদ্ধের ময়দানে কাঁটিয়ে দিয়েছেন। ভারী ট্যাংক আর উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে কেবল ঘোড়া, রাইফেল আর কিছু জানবাজ সৈনিকদের সঙ্গে নিয়ে লড়ে গেছেন। কখনো যুদ্ধে জয়লাভ করেছেন আবার কখনোবা পিছু হটেছেন। বিভিন্ন যুদ্ধে তাঁর প্রিয় মানুষদেরকে হারিয়েছেন। কিন্তু কখনোই কোন অবস্থাতে মাথা নত করেননি। একসময় তিনি ইতালীয়দের হাতে বন্দী হয়ে যান। শুরু থেকেই ইতালি সরকার তাকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। এমনকি বন্দী হওয়ার পরেও তাঁর সাথে আপস করতে চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি সর্বাবস্থায় তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ফ্যাসিস্ট ইতালি সরকারের বিচারে ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হলে তিনি সহাস্য কন্ঠে বলে ওঠেন, “রায় তো আল্লাহর; তোমাদের মনগড়া কোনো রায় নয়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” (পৃষ্ঠা- ১৩৭)
বইটিকে লেখক এপর্যন্ত রেখেই সমাপ্তি টানেননি। বরং তাঁর মৃত্যুর পর আন্দোলনের প্রধান নিযুক্ত করা থেকে লিবিয়ার মাটিতে ইতালীয়দের পরিণতি পর্যন্ত বর্ণনা করে গেছেন। তবে মোটকথা হলো ড. সাল্লাবি এই বইটিতে এমন একজন উমর মুখতারকে তুলে ধরতে পেরেছেন যিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের ‘লায়ন অব দ্য ডেজার্ট’।
Asif Ahmad – :
নামঃ লায়ন অব দ্য ডেজার্ট (শহিদ উমর মুখতার)
লেখকঃ ড. আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি
অনুবাদকঃ আইনুল হক কাসিমী
সম্পাদকঃ আবদুর রশীদ তারাপাশী
প্রচ্ছদঃ আবুল ফাতাহ মুন্না
ধরণঃ ইসলামী ব্যক্তিত্ব
প্রকাশকালঃ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৬০
উসমানি খিলাফতের পতনের প্রাক্কালে যখন ইতালীয় সৈন্যরা লিবিয়ার ভূ-খণ্ডে আগ্রাসন চালায় তখন তাদের মোকাবিলায় এগিয়ে আসেন দাঁড়ি, টুপি আর আলখাল্লা পরিহিত এক ব্যক্তি। দরবেশের ন্যায় বেশভূষার এই মানুষটি উসমানি সৈন্যদের সাথে মিলে দখলদার ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানি সৈন্যরা লিবিয়া ত্যাগ করলে তিনি হয়ে ওঠেন আগ্রাসী ইতালীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধের মহানায়ক। মিশরে অবস্থানরত সায়্যিদ ইদরিস সানুসি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সানুসি সুফি আন্দোলনের অনুসারী এই ব্যক্তিটির নাম উমর মুখতার, যিনি শত্রুর চোখেও ছিলেন পরম শ্রদ্ধার পাত্র। আজও লিবিয়ার জনগণ তাঁকে গর্বভরে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করে।
বই সম্পর্কেঃ
বইটির মূল নাম “আশশাইখুল জালিল উমার আল-মুখতার, নাশআতুহু ওয়া আমালুহু ওয়া ইসতিশহাদুহু”। বইটির নায়ক উমর মুখতারের জন্ম ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে)। ছোটবেলায় পিতা মৃত্যুবরণ করলে পিতার অসিয়ত অনুযায়ী তিনি ও তাঁর ভাই চাচার কাছে বড় হন। চাচার কাছ থেকেই তিনি শিক্ষাজীবনের এবং সানুসি আন্দোলনের হাতেখড়ি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকে সাহসী এই মানুষটির যুদ্ধকালীন জীবন নিয়েই বইটির অধিকাংশ পাতাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বইটির লেখক ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি লিবিয়ার নাগরিক হওয়ার সুবাদে এই ব্যক্তিটিকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকদের লেখনী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন এবং তাঁর এই বইটিতে উমর মুখতারের যুদ্ধজীবনের দিকেই বেশি আলোকপাত করেছেন। তিনি এমন একজন উমর মুখতারকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন যিনি দেশ, জাতি এবং দ্বীন-ইসলামের ব্যাপারে ছিলেন আপসহীন। তিনি জীবনের একটা অংশ যুদ্ধের ময়দানে কাঁটিয়ে দিয়েছেন। ভারী ট্যাংক এবং উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে কেবল ঘোড়া, রাইফেল আর কিছু জানবাজ সৈনিকদেরকে সঙ্গে নিয়ে লড়ে গেছেন। কখনো যুদ্ধে জয়লাভ করেছেন আবার কখনোবা পিছু হটেছেন। বিভিন্ন যুদ্ধে তাঁর প্রিয় মানুষদেরকে হারিয়েছেন। কিন্তু কখনোই কোনো অবস্থাতে মাথা নত করেননি। একসময় তিনি ইতালীয়দের হাতে বন্দী হয়ে যান। শুরু থেকেই ইতালি সরকার তাঁকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। এমনকি বন্দী হওয়ার পরেও তাঁর সাথে আপস করতে চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি তা সর্বাবস্থায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ফ্যাসিস্ট ইতালি সরকারের বিচারে ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হলে সহাস্য কন্ঠে তিনি বলে ওঠেন, “রায় তো আল্লাহর; তোমাদের মনগড়া কোনো রায় নয়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” (পৃষ্ঠা- ১৩৭)
বইটিকে লেখক এপর্যন্ত রেখেই সমাপ্তি টানেননি। বরং তাঁর মৃত্যুর পর আন্দোলনের প্রধান নিযুক্ত করা থেকে লিবিয়ার মাটিতে ইতালীয়দের পরিণতি পর্যন্ত বর্ণনা করে গেছেন। তবে মোটকথা হলো ড. সাল্লাবি এ বইটিতে এমন একজন উমর মুখতারকে তুলে ধরতে পেরেছেন যিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের ‘লায়ন অব দ্য ডেজার্ট’।
MD. SAIDUL ISLAM – :
সেটাই তো মর্যাদা, যার সাক্ষী দেয় স্বয়ং দুশমন!
উমর মুখতার। সেই মুজাহিদ যার অনমনীয় ব্যক্তিত্ব, সাহস, বীরত্ব ও নেতৃত্বগুণে তাঁর শত্রুরাও মুগ্ধ হয়েছিল। অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সবসময় তাঁর অবস্থান থাকতো সুদৃঢ়। সবসময় চেষ্ঠা করতেন মাথা উচু করে বেঁচে থাকার। পেশাগত দিক থেকে কুরআন শিক্ষক হলেও উমর মুখতার মরুভূমিতে যুদ্ধকৌশল বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। স্থানীয় ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে তার সম্যক ধারণা ছিল। তার এই জ্ঞানকে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে ইতালীয়দের বিরুদ্ধে কাজে লাগান। ইতালিয়ান আগ্রাসী বাহিনী যখন লিবিয়ার শহরগুলোতে দখল নিতে শুরু করে তখন তিনি প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। নিজের দেশ রক্ষার জন্য হিংস্র সিংহের মত মৃত্যুর প্রতি একেবারে উদাসীন কতজন সাথিকে সঙ্গে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন দখলদার ইতালিয়ানদের বিরুদ্ধে। তিনি তাঁর ছোট সৈন্যদল নিয়ে সফল গেরিলা আক্রমণে সক্ষম হন। আক্রমণের পর তাঁর বাহিনী মরুভূমিতে আত্মগোপন করত। তাঁর বাহিনী দক্ষতার সাথে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, সৈন্যবহরের উপর আক্রমণ চালায় এবং যোগাযোগ ও সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। উমর মুখতারের গেরিলা পদ্ধতির লড়াইয়ে ইতালীয় সৈনিকরা পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে। ১৯১১ থেকে নিয়ে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত ইতালীয় ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে উমর মুখতার প্রায় ২০ বছরব্যাপী লড়াই করেছিলেন। এই সময়ে তিনি প্রায় ২৬৩ রণক্ষেত্রে অত্যন্ত বীরদর্পে লড়াই করেন। প্রতিটি যুদ্ধে চোখে শর্ষেফুল দেখতে থাকে ইতালিয়ান বাহিনী। যাঁর নাম শুনলেই ইতালিয়ান বাহিনীর ঘুম হয়ে যেত হারাম। ইতালি সরকার কিছুতেই তাঁকে দমিয়ে রাখতে সক্ষম না হয়ে, বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়। ইতালি সরকার তাঁর সাথে বারবার সমঝোতা করতে চেয়েছে। কিন্তু তিনি ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তের উপর অটল। প্রতিবারই একটি কথা বলেছেন;
আমরা আত্মসমর্পণ করি না…
আমরা হয় জিতি, না হয় মরি
ইতালীয় ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে উমর মুখতারের প্রায় ২০ বছরব্যাপী লড়াই ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার প্রেপ্তারের মাধ্যমে সমাপ্তি লাভ করে। এর কিছুদিন পরেই প্ৰহসনমূলক বিচার শুরু হয়। বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৫ সেপ্টেম্বর রায়ে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়।
লিবিয়ায় আগ্রাসী ইতালির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের মহানায়ক Lion of the desert উমর মুখতার এর জীবনী নিয়ে ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি’র লিখা বইটির অনুবাদ প্রকাশ করেছেন কালান্তর প্রকাশনী। বইটিতে লিখক উমর মুখতারের জীবনের ঘটনাবলি ছাড়াও উমরকে নিয়ে অন্যদের বক্তব্য, উমরের লেখা চিঠি এবং উমরকে নিয়ে রচিত কিছু কবিতাও স্থান পেয়েছে। এতে ব্যক্তি উমরকে আরও ভালোভাবে জানা ও তাঁর সাহসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। লেখক বইটিকে তিনটি মূল অংশে ভাগ করে আলোচনা করেছেন। প্রথমে উমর মুখতারের জন্ম ও ব্যক্তিজীবনের কিছু গুণাগুণ তুলে ধরেছেন। দ্বিতীয় অংশে ইতালিয়ানদের বিরুদ্ধে তার জিহাদি জীবনের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। সবশেষে লেখক উমর মুখতারের গ্রেফতার, বিচার ও ফাসিঁ পরবর্তী দিক আলোচনা করেন।
বইটি পড়া কেন প্রয়োজন-
আমরা নিজেদের বীরত্বের ইতিহাস ভুলে পশ্চিমাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে দিয়েছি। জীবনের সঠিক গন্তব্য সম্পর্কে বেখেয়ালি হয়ে দিকবিদিক ছুটে চলছি। আমাদের জীবনের সঠিক লক্ষ্য খুঁজে পেতে লায়ন ‘অব দ্য ডেজার্ট’
বইটি অনেক সহায়ক হবে। উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হল-
●উমর মুখতারের জীবন থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি কিভাবে দুনিয়ার সম্পদের পিছনে না ছুটে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের পিছনে ছুটতে হয়।
●কিভাবে সাহসের সাথে বিশাল শত্রুর মুকাবিলা করতে হবে।
●ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কিভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হয়।
●জীবনের কঠিন মুহূর্তে কিভাবে সত্যের পথে অটল থাকতে হয়।
বইয়ের নাম: লায়ন অব দ্য ডেজার্ট
লেখক: ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি
ভাষান্তর: আইনুল হক কাসিমী
প্রকাশনী: কালান্তর প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্য: ২১৪৳
প্রকাশকাল: একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯
#কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
mr.tahmid – :
প্রেক্ষাপটঃ ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে উসমানি খেলাফত তখন শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। প্রতিনিয়ত এলাকা হারাতে হচ্ছে পশ্চিমা কাফিরদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের এমনই এক দিনে লিবিয়া আক্রমণ করে বসে ইতালি। উসমানিরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। লিবিয়া বাঁচাতে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারল না সাম্রাজ্য। একাকী ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন মরুসিংহ উমর আল মুখতার। ২০ বছর ধরে দীপ্ত ইমানের বলে অল্প কিছু সঙ্গী আর অপ্রতুল যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়েই নাকানি-চুবানি খাওয়ালেন আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত, সুপ্রশিক্ষিত বিশাল ইতালীয় বাহিনীকে। এ বইতে সেই ইতিহাসই লিপিবদ্ধ হয়েছে।
সংক্ষেপে পাঠানুভূতি:
১. অসম্ভব সুন্দর প্রচ্ছদ, মূল প্রচ্ছদের দিকে ভালো করে তাকালে একটি অবয়ব ভেসে আসে। আবুল ফাতাহ ভাইয়ের সেরা একটা কাজ। ফলস কভারের নিচে একই প্রচ্ছদ দিয়ে দ্বি-স্তর-বিশিষ্ট শক্ত মলাট আর ক্রিম কালার পেজ, সুন্দর সজ্জা—সব মিলিয়ে কোয়ালিটির কমতি রাখেনি কালান্তর। দামও খুব বেশি না।
২. বইয়ের অনুবাদ মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে লেখক অনুবাদকে শ্রুতিমধুর করতে মাঝে মাঝে ভুল শব্দচয়ন করেছেন বলে মনে হয়েছে। তবে সেটি খুব সামান্য। সম্পূর্ণ বইয়ের বাক্যগঠন আরও ভালো হতে পারত। তবে যা হয়েছে তাও খারাপ না। পড়তে ভালোই লেগেছে।
৩. প্রুফরিডিংয়েও প্রকাশনী চেষ্টা করেছে যথাসম্ভব ভুল কম করার। তবুও ভুলের পরিমাণ আরও কমানো যেত বলে মনে করি। আশা রাখি, আগামী সংস্করণে শুধরে নেওয়া হবে।
৪. এখন আসি বইয়ের কন্টেন্ট নিয়ে। বইটি লিবিয়ার কালজয়ী মুজাহিদ উমর মুখতারের জীবনীগ্রন্থ। আমি এই প্রথম ড. সাল্লাবির কোনো বই বাংলায় পড়লাম। সুন্দর এই বই বাংলায়নের জন্য প্রকাশনীকে ধন্যবাদ। এ বই নিঃসন্দেহে উমর মুখতারের জীবন নিয়ে রচিত অসামান্য এক দলিল। লেখক নিজে লিবিয়ান। এ বই লিখতে তিনি প্রচুর দলিল-দস্তাবেজ ঘেটেছেন ও চেষ্টার কমতি যে করেননি তা বোঝাই যায়। আরেকটা ব্যাপার, ড. সাল্লাবির লেখা কিংবা দ্বীনের বুঝ আমার কাছে প্রান্তিকতামুক্ত এবং ভারসাম্যপূর্ণ মনে হয়েছে।
৫. বইয়ে উমরের জীবনের ঘটনাবলি ছাড়াও উমরকে নিয়ে অন্যদের বক্তব্য, উমরের লেখা চিঠি এবং উমরকে নিয়ে রচিত কিছু কবিতাও স্থান পেয়েছে। এতে ব্যক্তি উমরকে আরও ভালোভাবে জানা সম্ভবপর হয়েছে।
৬. উমর ছিলেন একজন আল্লাহভীরু, মুখলিস, অকুতোভয় শাসক ও বীরপুরুষ। ইসলামের প্রতি তাঁর টান, তাঁর আখলাক ইত্যাদিও বইয়ে সুন্দরভাবে এসেছে।
৭. উমর মুখতার অনেক বেশি কুরআন তিলাওয়াত করতেন—এটা জেনে পুলকিত হয়েছি। এ জন্যেই হয়তো তিনি এত শক্ত মানসিকতাসম্পন্ন হতে পেরেছিলেন।
৮. শুধু উমর মুখতার না, লিবিয়ার জিহাদি সংগ্রামের হকিকত সম্পর্কে এ বই থেকে জানা যাবে। আমি আগে ভাবতাম, সে সময়ে উমর মুখতার একাই কিছু সঙ্গীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন; কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়। এটি শুধু ওয়ান ম্যান শো ছিল না। লিবিয়ার তৎকালীন ইতালিবিরোধী জিহাদে রক্ত ঝরিয়েছেন অনেক বীর মুজাহিদ আর সানুসি আন্দোলনের নেতারাও।
৯. উমর মুখতারদের মুজাহিদবাহিনীর আলাদা বিচারব্যবস্থা ছিল। নিজেদের এলাকায় তাঁরা স্থানীয় মুসলিমদের সমস্যা সমাধান করতেন, সবকিছু দেখভাল করতেন। উনাদের বাহিনীতে নিয়মতান্ত্রিকতা ছিল। যুদ্ধে ছিল সুবিন্যস্ত পরিকল্পনার ছাপ। একজন দক্ষ সেনাপতি হিসেবে উমরের সাহস ও যুদ্ধকৌশল চমৎকারভাবে লেখক তুলে এনেছেন এ বইতে।
১০. উমর মুখতার সানুসি আধ্যাত্মিক আন্দোলনের নেতাদের খুব মান্য করতেন। মূলত লিবিয়ার কট্টর ইসলামপন্থী সানুসি আন্দোলনই ইতালিয়ান ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, জবাব দিচ্ছিল সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসীদের। উমর মুখতার সানুসি নেতাদের এত বেশি শ্রদ্ধা করতেন যে, কোনো কোনো জায়গায় তা অতিরিক্ত মনে হয়েছে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার—সানুসি নেতা উমরের শ্রদ্ধাভাজন শাইখ সাইদ হাসান রেজা সানুসি যখন ইতালীয়দের সাথে সন্ধি করতে রাজি হয়ে যান, উমর তখন নিজের শাইখের সাথেই দ্বিমত করে আলাদা হয়ে যান—যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়েননি। আবার সাইদ রেজা সানুসির ব্যাপারে কটু মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকেন। এটা অনিন্দ্যসুন্দর ঘটনা। কিছুকাল পরেই ইতালীয়রা সাইদ রেজা সানুসিকে বন্দি করে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়। সাইদ নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং এই আন্দোলনের শেষাবধি উমরসহ অন্যান্য মুজাহিদদের জন্য অর্থ সংগ্রহ, অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যান।
১১. উমরের দুনিয়াবিমুখ জীবন সম্পর্কেও বই থেকে ধারণা পাওয়া যায়।
১২. উমর আল মুখতার যখন বন্দি হন, তখনও বীরত্বের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। এ সংক্রান্ত বেশ কিছু লেখা ও উপস্থিতদের বক্তব্য বইতে উঠে এসেছে। বিশেষ করে বন্দি হওয়ার পর কারাগারে উমর কেমন ছিলেন, জেনারেল গ্রাজিয়ানির সাথে কী কী কথা হয়েছিল, আদালতে উমর কেমন ছিলেন এবং ফাঁসি দেওয়ার সময় কেমন ছিল তাঁর অবস্থা—এসব কিছুই বইটিতে সুন্দরভাবে উঠে এসেছে।
১৩. ইতালীয়ানদের অত্যাচার-জুলুমের কিছু বিবরণও সংক্ষেপে লেখক লিপিবদ্ধ করেছেন। বিশ্বমিডিয়ায় কীভাবে ইতালীয়রা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বিশ্বের অন্য প্রান্তের মুসলিমদের কাছে তারা অস্বীকার করে যে, লিবিয়ায় কোনো গণহত্যা হচ্ছে না—তাও জানতে পারবেন বইটি পড়ে। ঠিক যেন বর্তমানের ডেজা ভ্যু। বর্তমানে যেমন চীন বা মিয়ানমার মুসলমানদের গণহত্যা করলেও মিডিয়াতে এসে ভালো মানুষ বনে যায়, ইতালিও এমন ছিল। বস্তুত সকল কাফিরদের মিল্লাতই এক।
১৪. সবশেষ পয়েন্টে বলব, সাল্লাবির বইয়ের মূল আবেদনের কথা। তা হচ্ছে দক্ষ ডুবুরি যেমন করে মুক্তো তুলে আনে, ঠিক তেমন করেই সাল্লাবি প্রত্যেক বইতেই কাহিনির শিক্ষাগুলো সুন্দর পয়েন্ট আকারে তুলে আনেন। এ বইতেও তাঁর ব্যাতিক্রম হয়নি।
সবশেষে বলবো, বইটি খুব ভাল বই ছিল। পড়ার জন্য পাঠকদের রিকমেন্ড করাই যায়। উমর মুখতারের একটি উক্তি মনে দাগ কেটেছে। তিনি বলেছিলেন,
“আমার যে তর্জনী প্রতি নামাযে কালেমার সাক্ষ্য দেয়, সেই তর্জনী কোন মিথ্যা জিনিস লিখতে পারবেনা। আমরা সারেন্ডার করি না, হয় জিতি, নয়তো মরি।”