খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের ইতিহাস (১ম ও ২য় খন্ড)
অনুবাদক: আলমগীর মুরতাজা
হিজরি সপ্তম শতক। তখন মধ্য-এশিয়ার সবচেয়ে বড় মুসলিম সাম্রাজ্য খাওয়ারিজম। পামির মালভূমি থেকে কুহেকাফ এবং কাসপিয়ান সাগর থেকে সিন্ধুতীর পর্যন্ত—বিশাল ভূ-খণ্ডজুড়ে বিস্তৃত ছিল এ সাম্রাজ্য। আয়তন, প্রাচুর্য, জ্ঞানবিজ্ঞান, সামরিক শক্তি এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির দিক দিয়ে খাওয়ারিজম সাম্রাজ্য ছিল তখনকার অন্যান্য মুসলিম সাম্রাজ্য থেকে একধাপ এগিয়ে। এর অধিপতিদের উপাধি ছিল খাওয়ারিজম শাহ। সুলতান আলাউদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ ছিলেন এ সাম্রাজ্যের একজন শক্তিধর শাসক।
সুলতান আলাউদ্দীন তখন খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের অধিপতি। মুসলিমবিশ্বের দীপ্তবর্ণ পতাকাখচিত আকাশে হঠাৎ দেখা দিল এক মহাবিপর্যয়ের ঘনঘটা। মাটি ফুঁড়ে উঠে এলো রক্ত আর সাম্রাজ্যের নেশায় উন্মত্ত একদল হায়না। কেয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীবাসী যাদের ঘৃণাভরে স্মরণ করবে তাতার নামে। তাদের সর্বগ্রাসী আগ্রাসন নাড়িয়ে দিয়েছিল ইসলামি সাম্রাজ্যের ভিত। পাশবিক শক্তির নারকীয় তাণ্ডবে তারা একের পর এক মুসলিম শহর পদানত করেছিল। সেসময় রক্তচোষার বুভুক্ষা নিয়ে তাতাররা যখন অপ্রতিহত ডাঙ্গর হয়ে উঠছিল, তখনই লিল্লাহি বলে বলীয়ান হয়ে অমিত তেজে জ্বলে উঠলেন আলাউদ্দীনের গুণধর পুত্র সিংহহৃদয় সুলতান জালালুদ্দীন খাওয়ারিজম শাহ। ইসলামি ইতিহাসে যিনি বরিত হয়ে আছেন একজন জানবাজ মুজাহিদ এবং বিস্ময়পুরুষ হিসেবে। তাতার আগ্রাসনের ধ্বংসযজ্ঞ সময়ের মুখগহ্বর থেকে তিনি মুসলিম উম্মাহকে উদ্ধার করে দেখিয়েছেন প্রতিরোধের প্রথম আলো। সে আলো গায়ে মেখে তাঁর পরবর্তী অনেক জানবাজ মুজাহিদ জিহাদ চালিয়েছেন তাতারদের বিরুদ্ধে।
খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের ইতিহাস—এ বই সেই বিপর্যস্ত সময়েরই করুণ গল্পগাথা; ইতিহাসের দর্পণে মুসলিম উম্মাহর জীবন ও সময়কাল নিরীক্ষণের এক মহামূল্যবান প্রমাণ। এ সময়ের উর্দুসাহিত্যের একজন শক্তিমান ও সত্যানুসন্ধানী লেখক ও ইতিহাসবিদ মাওলানা ইসমাইল রেহান-এর কলমে নির্মোঘ সত্যের নিরেট বয়নে ফুটে উঠেছে খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের পুরো ইতিহাস, প্রচলিত ইতিহাসে অনুল্লিখিত অজানা অনেক অধ্যায়, সুলতানদের জীবনগাথা, জান্তব তাতারদের ভয়াবহ আগ্রাসন, তাদের আক্রমণের মূল কার্যকারণ, পরিণতি ও প্রতিক্রিয়া এবং সময় ও সমাজের নানারূপতা। বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য অনবদ্য এ বইটির অনুবাদ নিয়ে হাজির হয়েছেন তরুণ লেখক আলমগীর মুরতাজা। বইটির প্রকাশনা ও পরিবেশনা করছে নাশাত পাবলিকেশন।
-
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳318 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotইসলামের ইতিহাস (নববী যুগ থেকে বর্তমান)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ470 ৳343 ৳অনুবাদক: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক সম্পাদক: মীযান ...
-
save offইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা
লেখক : হেদায়াতুল্লাহ মেহমান্দপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন414 ৳306 ৳'ইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা' বইটি মূলত ...
-
hotভারতবর্ষে মুসলিম শাসন : হাজার বছরের ইতিহাস
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম770 ৳447 ৳ভাষান্তর : মুহাম্মাদুল্লাহ ইয়াহইয়া অতিরিক্ত টীকা সংযোজন ...
-
hotঅবাধ্যতার ইতিহাস
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন385 ৳281 ৳যেভাবে আর যে কারণে ধ্বংস হয়েছে ...
-
hotসীরাত বিশ্বকোষ (১১ খণ্ড)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার11,000 ৳5,940 ৳মোট খণ্ড ১১ এবং পৃষ্ঠাসংখ্যা : ...
-
save offলস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি (ইসলামের হারানো ইতিহাস) (পেপার ব্যাক)
লেখক : ফিরাস আল খতিবপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন260 ৳190 ৳অনুবাদক: আলী আহমাদ মাবরুর পৃষ্ঠা: ২৮৬ লস্ট ইসলামিক ...
-
hotমাযহাব অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত
লেখক : ড.আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন333 ৳ – 400 ৳মাযহাবঃ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বইটিতে ...
-
hotনবীজির পাঠশালা ﷺ
লেখক : ড. আদহাম আশ শারকাবিপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ415 ৳303 ৳অনুবাদক – মুজাহিদুল ইসলাম মাইমুন সম্পাদনা – ...
-
featureমুসলিমজাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে (চার খণ্ড)
লেখক : ড. রাগিব সারজানীপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল হাসান1,450 ৳অনুবাদক : আবদুস সাত্তার আইনী (১ম, ...
-
Tarana Tabassum Tawfiqa – :
ধীরে-ধীরে চারপাশ নীরব হয়ে আসে। মরুভূমির এই আচানক নির্জনতায় কঠিন বিপদের গন্ধ পাওয়া যায়। ভাবতে-না-ভাবতে হঠাৎ, সুলতান সনজরের কয়েকজন নিমকহারাম সেনা-অফিসার কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল তাঁবুর ভেতর। তাদের চোখে-মুখে একইসাথে কুটিল চক্রান্ত, অন্ধ ক্রোধ ও অজানা উদ্বেগের ছাপ।
চকিতে শায়িত সুলতান চোখ খুলে দেখেন—তিনি কয়েকজোড়া রাক্ষুসে তরবারি ও খঞ্জরের নিচে শুয়ে। এই অবস্থা থেকে বেঁচে-ওঠা ছিল কঠিন। তার সঙ্গে কোনো দেহরক্ষী ছিল না।
কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার, সুলতানের রক্তে গাদ্দারদের তরবারি গোসল করে-ওঠার আগেই বিরামহীনভাবে অদূরে খটখট শব্দ শোনা গেল। পাথুরে ভূমিতে এ কীসের প্রতিধ্বনি?
এক সেনা-অফিসার বাইরে বেরোতেই দেখে, ঘোড়ার পিঠে ডানহাতে তলোয়ার উঁচিয়ে ক্রোধান্বিত অবয়বে ছুটে আসছে আতসায। ভয়ে গাদ্দাররা সুলতানকে ফেলে রেখে দ্রুত সটকে পড়ে। সুলতান সনজর সেলজুকি কিছু বুঝে উঠতে না-পেরে বাইরে আসেন। হতভম্ব চোখে দেখতে থাকেন ছুটে-আসা আতসাযকে। আতসায কাছে এসে ঘোড়ার পিঠ থেকে নামতেই বুকের সঙ্গে তাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। আবেগ-কম্পিত গলায় বলেন, তুমি কীভাবে জেনেছ আমি এই অবস্থার মধ্যে পড়েছি?
আতসায হাঁপাতে হাঁপাতে বলেন, জাহাঁপনা, আমি তাঁবুতে গা এলিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ ভয়ানক স্বপ্ন দেখে আমার ঘুমটা ভেঙে যায়। আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার মনে ‘ইলহাম’ হয় যে, তোমার মনিব সনজর সেলজুকি বিপদে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম ভেঙে লাফ দিয়ে উঠে পড়ি আমি। দ্রুত ঘোড়া হাঁকিয়ে ছুটে আসি এখানে।
বই : খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের ইতিহাস
লেখক : মুহাম্মদ ইসমাইল রেহান
ইজতিহাদ মাহমুদ – :
রচয়িতা: মাওলানা ইসমাইল রেহান
অনুবাদক: আলমগীর মুরতাজা
প্রকাশনা: নাশাত পাবলিকেশন
প্রকাশক: Ahsan Elias
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮০০+
মুদ্রিত মূল্য-১০০০৳
প্রি-অর্ডার মূল্য-৬৫০
(৩৫% ছাড়ে)
প্রি-অর্ডার চলবে ০৫-০১-২০২১ঈ.
প্রারম্ভিকা
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
হুজুর সা: একবার উম্মাহর “ঐক্যবদ্ধতা বোঝাতে গিয়ে বলেন, টুকরো টুকরো ইট-সুড়কি নিয়ে যেভাবে গড়ে ওঠে একটি মজবুত সুরম্য প্রাসাদ। হে মুসলমান! তোমাদের সবল-দুর্বল প্রতিটি সদস্য মিলেও তেমনি একটি জমাটবদ্ধ সঙ্ঘ, অজেয় ঐক্য।
এই ঐক্যটাই মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় শক্তি ও সাহস। যেই বৃক্ষের চারা রোপণ করেছেন হুজুর সা:। এবং তাতে পানি সেচ দিয়ে জিয়ে রাখার প্রচেষ্টায় ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে প্রতিটি শতাব্দীর কিছু অকুতোভয় বীর সৈনিক।
যাদের পুরো জীবনটাই ছিল ইসলামের প্রজ্জোল নমুনা।
যাদের মূল লক্ষ্য ছিল খোদা পদত্ত বিধানের পূর্ণ বাস্তবায়ন। যাদের রাত কেটেছে প্রলম্বিত সেজদায়, প্রভুর ভয়ে প্রকম্পিত কান্নায়। যাদের দিন অতিবাহিত হয়েছে তাজা দম ঘোড়ার পিঠে, খুনরাঙা প্রাঙ্গনে। যাদের যাপিত জীবনের সংস্কারের ছোঁয়ায় সভ্যতা-বিবর্জিত অন্ধকারচ্ছন্ন পূর্ব-পশ্চিম সমস্ত অঞ্চলে উন্নতির জোয়ার উঠেছিল।
এমন ব্যক্তিগুলোর মাঝে অধিকার বঞ্চিত নামটি হলো, সুলতান জালালুদ্দীন মুহাম্মদ খাওয়ারিজম শাহ আল-মুনকারিবাতি।
অধিকার বঞ্চিত বলার কারন
———————————————
শুরুতে বলা হাদিসটি একটু স্বরন করুন!
রাসূলের সহস্তে নির্মাণ করা মুসলিম ঐক্যের সেই মজবুত প্রাচীরের উল্লেখযোগ্য অংশ অল্প অল্প করে খসে পড়তে শুরু করে তার ইন্তেকালের পর। একটা সময় গিয়ে ধসে পড়ে পুরো দেয়াল। চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় অজস্র কষ্টে গড়া সেই মুসলিম ঐক্য।
ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ভাগ। সপ্তম শতাব্দীর সূচনা।
সুযোগ পেয়ে নড়ে চড়ে বসে পরাশক্তি শয়তানরা। মুসলমানদের ভিত্তি নড়বড়ে হওয়ায় নেমে আসে তাদের উপর রাজ্যের বিভিষিকা।
শুরু হয় মোঙ্গলীয় তাতার গোষ্ঠীর নারকীয় আগ্রাসন। যার দ্বারা মুসলমানরা মরুভূমির লো-হাওয়ায় হারিয়ে ফেলে স্বীয় অস্তিত্ব। চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে চলে মুসলিম নিধনের মহোৎসব।
সে সময়ে খোদার অপার মহিমায় আত্মপ্রকাশ করেন দুঃসাহসী মুসলমানদের হৃদয় রাজ্যের প্রানপুরুষ। যিনি সকল ধর্মীয় কাজ আমলে নেওয়ার পাশাপাশি মুসলিম সীমান্ত প্রহরার প্রধান অস্ত্র জি-হা-দী উদ্দিপনায় টইটুম্বুর।
এমন ভয়াল হাত থেকে রক্ষার গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। একাই নিঃসঙ্গ নামধারী মুসলিম শাসকদের অকৃতকার্যতার নজরানা স্বরূপ জি-হা-দের পথে অগ্রসর হোন। এবং ব্যপক ভূমিকা রাখেন।
মুসলিম সুলতান এবং বিজেতাদের মধ্যে সুলতান জালালুদ্দীনই সেই অনন্য বিরল বাহাদুর, যিনি পৃথিবীর এমন চারটে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যু-দ্ধ করেছেন যারা ছিল পুরো মুসলিম জাতির শত্রু।
অথচ বিধর্মীদের কূটচালের ফলে এমন একজন মহান পুরুষ যার ঋন কখনোই শোধ হবার নয়, তাকে অযোগ্য শাসক আর অপরিণামদর্শী সেনানায়ক হিসেবে ইতিহাসে উপস্থাপন করা হয়। সত্যিকার ইতিহাস মরু ঝড়ের কবলে পড়ে ছিটকে গিয়ে পড়ে দূর-অজানায়।
সেই ধংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে থাকা তার সত্যিকার স্বৃতিগাথা ইতিহাস কে রক্ষা করে তুলে এনেছেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মাওলানা ইসমাইল রেহান দীর্ঘ তের বছরের পথ পারি দিয়ে। পাঠকের হাতে তুলে দিচ্ছেন মুসলিম সফল শাসকদের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া আরেক নক্ষত্র সুলতান জালজালালুদ্দীন কে। যাকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল শত্ররা।
একাধিক সনদে বর্ণনা করেছেন এই প্রথিতযশা লেখক, কেন এই মহান ব্যক্তির সাথে এমন করা হয়েছে?? আর তার কত বড় বড় অবদান রয়েছে মুসলিম জাতির উপর যে, তার শুকরিয়া আদায় করে শেষ হবার নয়। তুলে এনেছেন তাতার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপট, এর পত্যক্ষ ও পরোক্ষ কার্যকারন, সেই প্রলয় তান্ডবের বিস্তৃত বিবরণ ও খাওয়ারিজম বংশের দুর্লভ কিছু চিত্র-তথ্য। যে গুলো ইতিহাসের নিখুঁত বিন্যাসে উত্তীর্ণ।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ইতিহাস পঠনে যেন উদাসিনতা এবং বিরক্তিভাব না আসে সেই লক্ষ্যে খুব সাহিত্যপূর্ণ ও অলংকার সমৃদ্ধ ভাষায় খুলে দিয়েছেন চিন্তা-চেতনার নতুন নতুন সব জানালা।
খুশির খবর হলো, উক্ত এই মূল্যবান বইটির অনুবাদের সাহসী একটা কাজ করেছেন আমাদের প্রিয় ভাই বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আলমগীর মুরতাজা হা:। আর তাকে সর্বদাই সহযোগিতা করে গেছেন নাশাত পাবলিকেশন এর সত্বাধিকারী ও প্রকাশক আহসান ইলিয়াস ভাই।
জী পাঠক ঠিকই শুনেছেন। বইটি এসেছে নাশাত পাবলিকেশন থেকে। চলছে ও প্রি-অর্ডার।
তাই ইতিহাসের এই মহান ব্যক্তি কে সত্যিকারার্থে খুব কাছ থেকে দেখতে ও তাকে ইতিহাসের পাতা থেকে চিরতরে মুছে ফেলার হীন ষড়যন্ত্রের কারন, তাদের মূল হোতা এবং উদ্দেশ্যের দ্বার উন্মোচন করতে আজই সংগ্রহ করুন আপনার মূল্যবান কপিটি। হাতে সময় খুব কম। যোগাযোগ করুন নাশাতের পেইজে অথবা আপনার পছন্দের অনলাইন শপে।
লেখক সম্পর্কে কিছু জানা-অজানা
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাইল রেহান দীর্ঘদিন ধরে জামিয়াতুর রশিদ করাচির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা করে আসছেন। ইতিহাসের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে ইতোমধ্যে তাঁর বেশকিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো ব্যাপক জনপ্রিয় ও সমাদৃত হয়েছে বোদ্ধামহলে। তাঁর রচনার দারুণ এক বৈশিষ্ট হলো—ইতিহাসের সুকঠিন অধ্যায়গুলোকে প্রাঞ্জল এক গদ্যে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী করে উপস্থাপন করে যান তিনি। ‘খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের ইতিহাস’ গ্রন্থটি তাঁর উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সৃষ্টি।
বইয়ে যা থাকছে। আপনি যা পাচ্ছেন।
________________________________________
পুরো বইটি তিনি দুখণ্ডে লিপিবদ্ধ করেছেন। প্রথম খণ্ডকে বলা যায় দ্বিতীয় খণ্ডের একটা ভূমিকার মতো। মানে, এতো চমৎকারভাবে তিনি একদম গোড়া থেকে খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের ইতিহাসের সুতো ধরে টান দিয়েছেন যে, পাঠকরা ইতিহাসের দীর্ঘ একটা জার্নি আরম্ভ করে শেষতক যেতে যেতে দেখে উঠতে থাকে যে, চোখের সামনে তাদের ছায়াছবির মতো উদ্ভাসিত হতে শুরু করেছে তখনকার ও এখনকার ইসলামি বিশ্বের সমস্ত হালচাল। এতে করে উম্মাহর ব্যক্তিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় কর্ম ও পরিণতি সম্পর্কেও মনে জেগে উঠছে গভীর এক সচেতনতা-বোধ।
এ ব্যাপারে লেখকের বক্তব্য হলো— ‘আমার মনে হয়েছে, ইতিহাসে সুলতান জালালুদ্দীনের সঠিক অবস্থান কেমন, পাঠকরা তা ততক্ষণ পর্যন্ত উপলব্ধি করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর উদ্দাম অভিযাত্রার সুকঠিন অধ্যায়গুলো জেনে না-উঠবে পুরোপুরি।
ফলত, এই প্রয়োজনবোধেই বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিকে আমি দুখণ্ডে লিখেছি। প্রথম খণ্ডে বিন্যস্ত করে তুলেছি সেইসব প্রাথমিক পটভূমি, যার ছাঁচে ফেলে সুলতানের প্রাণান্তকর মেহনত-মুজাহাদার একটা সুষ্ঠু-সুন্দর বিচার করে উঠতে পারবে পাঠক। বলা যায়, সুলতান জালালুদ্দীনের জীবন-কীর্তির একপ্রকার ভূমিকাই প্রথম খণ্ড। এতে বিভিন্ন ঘটনার প্রাসঙ্গিক বর্ণনায় ফাঁকে-ফুঁকে তাঁর জীবনচিত্রের টুকটাক ঝলক ফুটেছে মাত্র।
আর দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম পঙক্তিই সুলতানের দুর্ধর্ষ জিহাদি অভিযাত্রার গল্প বলা আরম্ভ করে দেয়। একদম তাঁর ক্ষমতাগ্রহণ থেকে শাহাদাত পর্যন্ত যাবতীয় আখ্যানের বর্ণনা চলে এসেছে তাতে।’
***
প্রথম খণ্ডে রয়েছে মোট ১২টি অধ্যায়। এ খণ্ডের পটভূমি সুলতান আলাউদ্দীন মুহাম্মদের ৫৯২ হিজরির ক্ষমতাগ্রহণের আরও আগ থেকে আরম্ভ করে আলাউদ্দীনের মৃত্যু পর্যন্ত সময়। এই দীর্ঘ সময়ের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক পটভূমিতে রচিত হয়েছে এ খণ্ড। কালের পরিধিতে এই সময়টা মোটামুটি বড় একটা পর্যায় এবং একটি জনগোষ্ঠীর বিপর্যয়ের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। এর ভেতর সংঘটিত হয়ে গেছে মর্মান্তিক নানান ঘটনা। সেসব ঘটনার অভিঘাতে তৈরি হয়েছে ইতিহাসের পৃথক একেকটি অধ্যায়। প্রথম খণ্ড হলো এই সময়টারই দারুণ এক শিল্পিত শব্দরূপ।
দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম পঙক্তি থেকেই মুখ খুলতে আরম্ভ করে সুলতান জালালুদ্দীনের দুঃসাহসিক অভিযাত্রার গল্পের ঝাঁপি। চোখের সামনে এক-এক করে ঘটে যেতে থাকে রাজ্যহারা সহায়-সম্বলহীন এক সুলতানের অগণিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, ঘোড়ার পদাঘাতে ওঠা ধুলোর মেঘের ঝাপসা আঁধারে হারিয়ে যায় মধ্য-আকাশেরও গনগনে সূর্য, সেপাইদের গলগলে রক্তস্রোতে পিছলে যেতে থাকে ঘোড়াদের পা, বারবার বিজয়ের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠে উম্মাহর গাদ্দারদের নগ্ন ষড়যন্ত্র, নেমে আসে কতশত আসমানি পরীক্ষা; সেইসঙ্গে রচিত হতে থাকে দ্বীনের জন্য সাম্রাজ্যহীন এক সুলতান ও তাঁর সহযোদ্ধাদের প্রাণোৎসর্গের অমর এক কাহিনিকাব্য।
ইতিহাসের এইসব গলিপথের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে গভীর এক দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে ওঠে পাঠকের বুক। গা শিউরে-তোলা আপাত অবিশ্বাস্য গল্পগুলো পড়তে পড়তে জাঁকিয়ে বসে সুতীক্ষ্ণ এক ব্যথাতুর অনুভূতি। মনে হতে থাকে—মগজের ঈষদুষ্ণ কোমল মাংসে যেন কেউ এসে সূক্ষ্ম একটা আলপিন বসিয়ে দিয়েছে।
আখেরে, লেখক তাঁর পাঠকদের এমন একটা অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়ে দেন, যেখান থেকে তাদের চোখের সামনে ফ্ল্যাশব্যাকে নিরালম্ব ঝুলে থাকে হিজরি সপ্তম শতকের তাতার-তাণ্ডব ও মুসলিম-বিশ্বের সুকরুণ পরিণতির ছায়াছবি, তৎসঙ্গে তারা মেলাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে বর্তমান বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীরও প্রকৃত অবস্থান ও তাদের ভবিষ্যত পরিণতি।