ইসলাম প্রতিষ্ঠা (সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন)
লেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবী
প্রকাশনী : শব্দতরু
অনুবাদ: আরশাদ আনসারী
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯৬
ধরণ: পেপারব্যাক
এই জাহেলী ব্যবস্থার উদাহরণ অনেকটা ভাঙনের প্রান্তে অবস্থিত পতনোন্মুখ দালানের মতো। আমরা যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত তাদের কর্তব্য হলো জনগণকে সতর্ক করে বলা: এই দালান অচিরেই ধ্বংস হবে, তার আগেই আপনারা এখান থেকে সরে পড়ুন।
কিন্তু নিজেরাই সে দালানে প্রবেশ করে ছোটখাটো সংস্কারকাজ চালিয়ে সেখানকার ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করা নিঃসন্দেহে ধোঁকা। কারণ, যে দালান দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, অচিরেই যার পতন ঘটবে এমন দালান সংস্কারের তো কোনো অর্থ দাঁড়ায়না। ভঙ্গুর যে রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামতের আমরা কসরত চালিয়ে যাচ্ছি অচিরেই তা আমাদেরসহ নিয়ে ইতিহাসের অন্ধকার গর্তে হারিয়ে যাবে। তখন জনগণের সামনে দেখানোর মতো মুখ আর বাকি থাকবে না।
অনুবাদ: আরশাদ আনসারী
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯৬
ধরণ: পেপারব্যাক
এই জাহেলী ব্যবস্থার উদাহরণ অনেকটা ভাঙনের প্রান্তে অবস্থিত পতনোন্মুখ দালানের মতো। আমরা যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত তাদের কর্তব্য হলো জনগণকে সতর্ক করে বলা: এই... আরো পড়ুন
-
-
featureচিন্তাপরাধ
লেখক : আসিফ আদনানপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন190 ৳পৃষ্ঠা - ১৯২ 'যতক্ষণ সাম্রাজ্যের সার্বভৌমত্ব স্বীকার ...
-
hotআল্লাহর প্রতি সুধারণা
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়াপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন175 ৳129 ৳জাবের রদ্বি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ...
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳314 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotগল্পগুলো অন্যরকম
লেখক : সিহিন্তা শরীফা, আনিকা তুবা, আফিফা আবেদিন সাওদা, আরমান ইবন সোলাইমান, আরিফ আজাদ, আরিফ আবদাল চৌধুরী, আরিফুল ইসলাম, আলী আবদুল্লাহ, জাকারিয়া মাসুদ, নুসরাত জাহান, মাহমুদুর রহমান, যাইনাব আল-গাযি, শারিন সফি, শিহাব আহমেদ তুহিন, শেখ আসিফ, সাদিয়া হোসাইন, সানজিদা সিদ্দীক কথাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন350 ৳255 ৳জীবনের কাছে মাঝে মাঝে গল্পও তুচ্ছ ...
-
hotহিউম্যান বিয়িং শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব
লেখক : ইফতেখার সিফাতপ্রকাশনী : নাশাত220 ৳161 ৳সম্পাদক : মুহাম্মাদ আফসারুদ্দীন পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১৬০ বাঁধাই ...
-
save offসাইকোলজি ইসলামি দৃষ্টিকোণ
লেখক : ড. আইশা হামদানপ্রকাশনী : সীরাত পাবলিকেশন350 ৳259 ৳অনুবাদ: সিফাত-ঈ-মুহাম্মদ সম্পাদনা: ডা. শামসুল আরেফীন পৃষ্ঠা সংখ্যা: ...
-
আল-কুরআনের শব্দসমূহ
লেখক : ইমরান হেলালপ্রকাশনী : আল কুরআনের ভাষা ইনস্টিটিউট400 ৳কুরআন বোঝার নিমিত্তে আমরা অনেক কোর্স ...
-
save offশয়তান যেভাবে ধোঁকা দেয় (তালবিসে ইবলিস)
লেখক : আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহঃ)প্রকাশনী : দারুল আরকাম700 ৳385 ৳ভাষান্তর : মুফতি আবু সাআদ পৃষ্ঠা : ৪৮০ দ্বিতীয় ...
-
hotজিন ও শয়তানের জগৎ
লেখক : ড. উমার সুলায়মান আল আশকারপ্রকাশনী : সীরাত পাবলিকেশন280 ৳210 ৳জিন, শয়তান—এই দুটো বিষয় নিয়ে আমাদের ...
-
কামরুননাহার মীম – :
উম্মাহ-র মাঝে যখনই শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন আসে তখনই ইসলামপন্থী কিছু সৈনিক এগিয়ে আসে- নিঃসন্দেহে তারা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু যখন শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শরীয়াহকে বিকৃত করা হয়, বলি দেওয়া হয় তার বিধানগুলো, পশ্চিমার অনুসরণ করা হয়, ক্ষমতার স্থায়ীত্ব বজায় রাখবার জন্য বিধানের ছাড় দেওয়া হয়; তখন এটা সত্যিই দুঃখের বিষয়।
২০১১ সালে আরববিশ্বজুড়ে জনগণের দাবি উঠে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার। ইসলামপন্থীদের কাছে সুযোগ এসেছিল শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার কিন্তু অভাব ছিল সঠিক পদ্ধতির। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি যখন শরীয়াহ বিকৃত করে কিংবা আল্লাহর অসন্তুষ্টির পথে ঠিক তখনই জর্ডানের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ড. ইয়াদ আল কুনাইবী এসব বিকৃত এবং বিভ্রান্তিকর পদ্ধতির গিঁট খুলে তা বর্ণনা করে এক সংশোধনী বার্তা নিয়ে “নুসরতান লিশ শরীয়াহ” সিরিজ লিখতে শুরু করলেন। যদিও গণতন্ত্রের স্রোতে ভেসে যাওয়া উম্মাহ এই সতর্কবার্তা খুব একটা অনুধাবন করেনি। ২০১৩ সালে তার এই সংশোধনমূলক বার্তার প্রাসঙ্গিকতা এবং পরিচিতি বাড়তে শুরু করে। তার ঐতিহাসিক সেই সিরিজটির অনুবাদ মূলত “ইসলাম প্রতিষ্ঠা: সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন” বইটি।
বইটি কি নিয়ে লেখা:
******************
শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমাদের মাঝে যে বিভ্রান্তিগুলো বর্তমানে বিরাজমান সেগুলো নিয়েই লেখক মূলত বইটি লিখেছেন। আমাদের বিভ্রান্তির নিঃশেষ ঘটিয়ে ইসলাম কে কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় তা বইটিতে লেখক খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেকে মনে করে শরীয়াহ বাস্তবায়নের পূর্বে অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা জরুরী৷ কিন্তু শরীয়াহের বাহিরে গিয়েই মূলত আজ মুসলিম জাতি এতো সমস্যায় জর্জরিত। আর তাই মুসলিম কে প্রথমেই শরীয়াহ বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে- এতে করেই অন্যান্য সমস্যার সমাধান সম্ভব তা কুরআন ও হাদিসের আলোকে লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেকসময় আমরা শরীয়াহ কে কট্টর, কঠোর ট্যাগ দিয়ে এড়িয়ে যেতে চাই কিংবা ছাড় দিতে চাই। কিন্তু লেখক স্পষ্টই এখানে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন শরীয়াহ বিরোধী মানবরচিত আইন আমাদের জন্য কল্যাণকর হলে নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়াহ আইনের প্রয়োজন হতো না। অনেকসময় “মানবরচিত আইন কিছুদিন চলুক, এরপরে শরীয়াহ বাস্তবায়ন হবে” – এমন সব কথা বলা হয়, যা আসলে বিপজ্জনক। কারণ এটার বাস্তবিক অর্থ দাড়ায় শরীয়াহ কে কিছুকাল অব্যাহতি দিয়ে অন্য কিছুর মাধ্যমে শাসনব্যবস্থার পরিচালনা করা। গণতন্ত্রের ইসলামিকরণ, আক্বিদাগত ত্রুটি, আলেমদের অন্ধ অনুকরণ, শিরকের পথ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা সহ শাসনব্যবস্থার নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখকের সিরিজে উঠে এসেছে।
বইটি কাদের জন্য:
*****************
বইটি মূলত সকল মুসলিমদের জন্যই জরুরী। কারণ শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ব্যপারে যে ভ্রান্ত ধারণা গুলো আমাদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তার সংশোধন না হলে জালিমদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ নেই। তবে বিশেষভাবে ইসলামপন্থী সৈনিকদের মাঝে বইটি পৌঁছে দেওয়ার বিকল্প নেই। শরীয়াহের প্রতিষ্ঠা আমরা সবাই চাই কিন্তু যখন আমাদের মাঝেই এই বিষয়ে অনৈক্য থাকবে তখনই সঠিক সিদ্ধান্তে এসে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার উপায়ের একক মত পাওয়া যাবেনা। আর এভাবেই শরীয়াহ কায়েমের পথে আমাদের বাস্তবিক যাত্রা ব্যাহত হতে থাকবে।
বইটি কেন প্রয়োজনীয়:
*********************
চারিদিকে জালিমদের শাসন কিংবা বিকৃত শরীয়াহ ব্যবস্থার অনুকরণ চলছে। দ্বীন ইসলামের প্রকৃত ধারণা যেমন পরিবর্তন হচ্ছে, ঠিক একইভাবে আল্লাহর অসন্তুষ্টির পথে আমাদের যাত্রা চলছে ক্রমাগত। শরীয়াহ নিয়ে যে ভুল ধারণা আমাদের আক্বীদাহ তে মিশে গেছে তার জট খুলে পরিশুদ্ধ করার সময় এখনই। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা হবে আমাদের কল্যাণের জন্য এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কিন্তু সেই শরীয়াহ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যদি আল্লাহর অসন্তোষ অর্জিত হয়, তবে সেটা আরও বিপদজনক। আর তাই আমাদের শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার সঠিক পদ্ধতি আল্লাহর বিধানের আলোকে জেনে নেওয়া উচিত। এই বইটিতে মূলত এই দিকনির্দেশনা গুলো বেশ সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া আছে। আর তাই ইসলামের শাসনব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ সৈনিকদের অবশ্য পাঠ্য এই বইটি।
বইটির ভালোলাগার কিছু দিক:
****************************.
বইটির সুন্দর প্রচ্ছদ, বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট এবং বিস্তৃত অপ্রয়োজনীয় আলাপ না করে লেখক ড. ইয়াদ কুনাইবী বরং মূল পয়েন্ট গুলো কুরআন হাদিসের আলোকে লিখেছেন যা পাঠকের পড়ার জন্য সুবিধাজনক এবং বোধগম্য। অনুবাদকের সহজ-সরল, প্রাঞ্জল অনুবাদ পাঠককে বইটি পড়তে সাহায্য করবে ইন শা আল্লাহ।
আমার অনুভূতিগুচ্ছ:
*******************
ব্যক্তিগতভাবে আমি বইটার প্রচ্ছদে নাম দেখার পরেই ভেবেছিলাম কঠিন, দুর্বোধ্য লিখা হবে হয়তো। পড়তে গিয়েই দেখলাম কত সহজভাবে লিখা হয়েছে বইটা। বইটি বর্তমানে মুসলিমদের জন্য পড়া অতীব জরুরি।
বই সম্পর্কে সংক্ষেপে-
বই: ইসলাম প্রতিষ্ঠা: সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন
লেখক: ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদক: আরশাদ আনসারী
পৃষ্ঠা: ১৯৬
প্রচ্ছদমূল্য : ২৬০৳
প্রকাশনী: শব্দতরু পাবলিকেশন
Hasnain Islam Emon – :
বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ। যুগের হাওয়ায় মত্ত আমরা। বর্তমান পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই গণতন্ত্র নামক একটি শাসন ব্যবস্থা চালু রয়েছে,যেখানে তথাকথিত ভাবে একটা কথা শোনা যায় যে,
❛ সকলের অধিকার সমান ❜। আচ্ছা, আসলেই কি তাই? আমরা সকলে সমান অধিকার পাচ্ছি তো? তাহলে ধনী দিনকে দিন ধনী,আর স্বল্প আয়ের মানুষ কিভাবে দিনের পর দিন আরো দারিদ্র সীমার নিম্নস্তরে কিভাবে ধাবিত হচ্ছে। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই কি আমাদের সমাজের যাবতীয় সমস্যাগুলো সমাধান করা যাচ্ছে?
রোজই তো খবরের কাগজ খুললেই ধর্ষন,হত্যা,ব্যাভিচার,লোকঠকানো,দরিদ্রতা,বেকারত্ব, জালিয়াতি,সুদ-ঘুষ এসব তো বাড়ছে বই কমছে না। তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান কোথায়? আদৌ কি এই সমস্যাগুলোকে কন্ট্রোল করা যায়?
আমরা মুসলিম হিসেবে এই বিশ্বাস রাখি যে, সমাজে ঘটিত সকল সমস্যা যেমন- ব্যাভিচার,বেকারত্ব, বিশৃঙ্খলা মূলত ইসলামী শরীয়াহ আইনের অনুপস্থিতিরই ফল।
হাদিসে এসেছে, ❝ কোনো শাসক যদি আল্লাহর কিতাব দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা না করে ও তার নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহন না করে, আল্লাহ তাদের পরস্পরের মাঝে বিবাদ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে দেন।❞
ইসলামি শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব এবং অপরিহার্যতার কথা চিন্তা করে ড.ইয়াদ আল কুনাইবি (হাফি) এর একটি বইয়ের সিরিজের আলোকে শব্দতরু প্রকাশনী আমাদের হাতে পৌছে দিয়েছে ❝ ইসলাম প্রতিষ্ঠা ❞ বইটি। আমাদের আজকের আলোচনা এই বইটি নিয়েই।
♦বইটিতে যা যা আছে সংক্ষেপেঃ
ড.ইয়াদ আল কুনাইবি (হাফি) এর
❝ নুসরতান লিশ শরীয়াহ ❞ একটি বইয়ের
সিরিজের আলোকে ❝ ইসলাম প্রতিষ্ঠা ❞ বইটি বাংলা ভাষায় তৈরী।
বইটি থেকে আমরা যে বিষয়গুলো একদম পরিষ্কারভাবে জানতে পারবো তা হলো, ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা,শরীয়াহ বাস্তবায়নের পূর্বে অন্যান্য সমস্যার সমাধান জরুরি কিনা,শরীয়াহকে অবমূল্যায়ন করা যাবে না,পর্যায়ক্রমে শরীয়াহ আইন প্রয়োগের বিপজ্জনক অর্থ,হযরত মুয়াজের হাদীসটি পর্যায়ক্রমে শরীয়াহ আইন প্রয়োগের স্বপক্ষে দলিল নয়,গণতন্ত্রের ফাঁদ,রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কি যথেষ্ট?, শরীয়াহ ব্যতীত অন্য শাসনব্যবস্থা কে সমর্থন করার ভয়াবহতা। আমি এইটুকু বলতে পারি, এই অধ্যায়গুলো পরে আমার কিংবা আপনার মতামত একটি বিষয়ে মিলবে, তা হলো –
❝ ইসলামী শরীয়াহ আইন কার্যকর না করাই হলো, সকল সমস্যার মূল। ❞
♦আমার অনুভূতিঃ
আলহামদুলিল্লাহ। এবারের অনুভূতি একদমই অন্যরকম। আমার একটা স্বভাব আছে, কোনো বই পড়ার আগে বইয়ের কভারের চেয়ে সূচিপত্র খেয়াল করি। শুরুতে বইটি যখন পড়া শুরু করলাম,প্রথমে সূচিপত্রের অধ্যায়গুলো দেখে পুরোপুরি বুঝতে পারছিলাম না যে, আজকে আমি কোন বিষয়গুলো সম্পর্কে জানবো। এরপরে যখন বইয়ের একেরপর এক অধ্যায়ে ঢুকতে থাকলাম,মাশাআল্লাহ বইটা যে এতোটা জরুরি এবং সকলের জন্য প্রয়োজনীয় সেটা উপলব্ধি করলাম। অনুবাদক আরশাদ আনসারীর কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে থাকলাম, তিনি যেন আমায় নতুন একটা জগত থেকে ঘুরিয়ে আনলেন এবং চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের শাসনব্যবস্থার ভুলগুলো দেখিয়ে দিলেন এবং উপলব্ধি করালেন, শুধুমাত্র ইসলামি শরীয়াহ আইন কার্যকর হলেই সমাজের সকল সমস্যা নিরসন করা সম্ভব। তবে ইসলামির দলগুলোর মধ্যে অনেক রকম মতবিরোধ দেখা যায়। অনেক ইসলামী দলই আছে যারা ইসলামের সঠিক রূপকে উপস্থাপন করে না। এ কারনে তাদের ব্যর্থতার দায় ইসলামের উপর বর্তানো যাবে না। অনেক দলই বলে থাকেন,
❝ আমরা পর্যায়ক্রমে ধীরে সুস্থে, শরীয়াহ আইন বাস্তবায়ন করতে চাই ❞। এমন বক্তব্য শরীয়াহকে অবমূল্যায়ন করার নামান্তর। বরঞ্চ শরীয়াহ সমাজের সকল সমস্যা দূর করবে, দুনিয়া এবং আখিরাতে উভয়ের কল্যান সাধন করবে।
♦বর্তমান সমাজ ও পারিপার্শ্বিক পেক্ষাপটে বইটির গুরুত্বঃ
বইটি থেকে আমি যা বুঝলাম,আমরা যদি সত্যিকার অর্থে দারিদ্রতা,বেকারত্ব, ধর্ষনসহ সকল বিশৃঙ্খলা ও অনিরাপত্তা থেকে মুক্তি পেতে চাই,তাহলে আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়াহ বাস্তবায়ন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
▣ধর্মকে পুজি করে অনেক খুন,ধর্ষন হয় মানলাম কিন্তু ধর্মকে বাদ দিয়েও তো পৃথিবীতে খুন,ধর্ষন,চাদাবাজি,মাদকব্যবসা,নারীপাচার কি বন্ধ হয়েছে? তাহলে ধর্মকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা করলেই কি সব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে?
▣ইসলাম শরীয়াহ আইনে তাদেরই সমস্যা যারা পাপাচারে, ব্যভিচারে, সমকামিতায় লিপ্ত,যাকাতের বিপক্ষে যারা চায় দরিদ্র মজুর চিরকালই দরিদ্র থাকুক,নিজেদের কার্য হাসিল করতেই মানুষ ইসলাম ধর্মকে দোষ দিয়ে নিজেদের মনগড়া মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
ইসলাম শুধু একটা ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্নাঙ্গজীবনব্যবস্থা, ইসলাম ন্যায়পরায়ণতা শেখায়, তাই ইসলামী শরীয়াহ ১০০% কার্যকর হলেই পৃথিবী হবে সুন্দর।
এই কথাগুলো বইয়ে খুব সুন্দরভাবে,পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
♦ বইটি কেন পড়বেন,কারা পড়বেনঃ
সমাজের বর্তমান সমস্যাগুলোর সমাধান একমাত্র ইসলামি শরীয়াহ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।
ইসলামী শরীয়াহর গুরুত্ব ও প্রযোজনীয়তা এতো সুন্দরভাবে এই বইয়ে দেখানো হয়েছে যা দেখে আমি অভিভূত। ইসলামী শরীয়াহ আইন সম্পর্কে আমরা যারা উদাসীন,অজ্ঞ আমাদের উচিত এই বইটি একবার অধ্যায়ন করা।
বইটি যে কোনো বয়সের মানুষ পড়তে পারেন। আমি নিশ্চিত এই বই আপনাকে নতুন করে ভাবাবে।
♦ভালোমন্দঃ
▣বইয়ের পৃষ্ঠা,শব্দচয়নের মান অনেক সুন্দর।
অনুবাদককে ধন্যবাদ এতো সহজবোধ্যভাবে আমাদের প্রতিটি অধ্যায় বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। বোঝার সুবিধার্থে পৃষ্ঠার নিচে টীকা এবং রেফারেন্সের ব্যবস্থা করেছেন।
আমি বইটির সূচিপত্র অনুধাবন করে এককথায় মুগ্ধ।
▣বইটির প্রচ্ছদ আরো একটু মিনিংফুল কিছু হলে অবশ্যই আরো বেশি ভালো লাগতো।
♦মন্তব্যঃ
আল্লাহ তা’আলা কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে আমাদের পুরো জীবনব্যবস্থা বলে দিয়েছেন। আমরা আজ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি,তার সবই শরীয়াহ কায়েম না করার ফল।
❝ যারা আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ হওয়া শরীয়াহ অনুযায়ী শাসন করে না,তারাই তো কাফের,তারাই তো জালেম,তারাই তো ফাসেক ❞
(সূরা মায়েদা-৪৪,৪৫,৪৭)
শরীয়াহ বাদ দিয়ে দরিদ্রতা, বিশৃঙ্খলা দূর করার কথা ভাবার মানে হলো ঔষধ বাদ দিয়ে রোগেই মাধ্যমেই রোগের চিকিৎসা করা। আর শরীয়াহর বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানতে এই বইটির তুলনা নেই। এটি একটি মাস্টরিড বই সকলের জন্য।
♦এক নজরে বইটিঃ
বইঃ ইসলাম প্রতিষ্ঠা-সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন
লেখকঃ ড.ইয়াদ আল কুনাইবি (হাফি)
অনুবাদঃ আরশাদ আনসারী
প্রকাশনীঃ শব্দতরু
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৬
মূল্যঃ ১৯৫ টাকা(২৫% ছাড়ে)
zabintasmin123 – :
বইটির ভূমিকা পড়ার সাথে সাথে আমার মনে এই হাদিসটিই ভেসে উঠে।
বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যুগের সাথে মিল রেখে কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যা। যুগের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আমরা হাদিস, কুরআনের আয়াত গুলোর ভুল ব্যাখ্যা করছি এবং ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইসলামপন্থী দলগুলোর মতবিরোধ। এই দলগুলো নিজেদের মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইসলামের পথ থেকে দূরে সরে যায়। আর তাদের এসব কার্যকলাপে আমরা বেচারা সাধারণ জনগণ কোণ ঠাসা হয়ে পরি।
লেখক ড. ইয়াদ কুনাইবী মিশরে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী দলের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে সংশোধনী বার্তা দিয়েছেন বইটির মাধ্যমে। তাই বইটি বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে লেখা। এ থেকে বুঝা যায় বইটির গুরুত্ব ও উপযোগিতা সম্পর্কে।
শরীয়া ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামি দলগুলো ক্ষমতায় আরোহনের পর দলের স্বার্থের কথা চিন্তা করতে গিয়ে কীভাবে শরীয়া থেকে বিচ্যুত হয়ে পরে, বইটির লেখক কুরআন হাদিসের আলোকে সেগুলোর গঠনমূলক আলোচনা করেছেন। সেই সাথে এসব থেকে উত্তরণের উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। কীভাবে শরীয়া ভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তাও উল্লেখ করেছেন।
পড়ার সময় একবারও মনে হয়নি বইটি একটি অনুবাদগ্রন্থ। অনুবাদক অনুবাদের ক্ষেত্রে বেশ সহজ সরল ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করেছেন। আর কঠিন ও অজানা শব্দগুলোর টীকা সংযোজন করে বইটিকে বুঝার জন্য সহজ করে দিয়েছেন।
বইটি বর্তমান উম্মার জন্য সতর্কতামূলক বার্তা বহন করে। বিশেষ করে বর্তমান সমাজের মডারেট মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিশেষে বলতে চাই, আহলে-হাদিসরা যাভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে ইঞ্জিল, তাবুর বিকৃত করেছিল, আমরাও যেন নিজের প্রয়োজনে কুরআন হাদিসের ভুল প্রয়োগ ও ব্যাখ্যা না করি( কুরআন বিকৃতি ত সম্ভব নয় কারণ এর দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিয়েছেন)। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।