ইলা মাগফিরাহ
মাগফিরাত! শব্দটি শুনতেই হৃদয়ে এক অন্যরকম প্রশান্তি-প্রশান্তি শিহরণ অনুভব হয়। একজন মুমিনের গোটা জীবনের পরম চাওয়াটাই হল এই মাগফিরাত। আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমা আর পরকালের চিরমুক্তি। মাগফিরাতের জন্য প্রয়োজন খাঁটি তাওবা আর ইস্তিগফার। আর এ বিষয়ে পাকিস্তানের মাজলুম কারাবন্দি মুজাহিদ আলেম মুফতি খুবাইব হাফি.- এর রচিত “ইলা-মাগফিরাহ” গ্রন্থটি একটি অসাধারণ গ্রন্থ। যে গ্রন্থটির প্রথম খন্ডে মুহতারাম লেখক পুরো কুরআনুল কারিমের মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার সংক্রান্ত সকল আয়াত, আয়াতের অর্থ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির সুরার বিন্যাস অনুসারে একত্রিত করেছেন। দ্বিতীয় খন্ডে মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফারের সংজ্ঞা, ফজিলত ও মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার বিষয়ের হাদিস ও আসার তথা বিভিন্ন বাণী একত্রিত করেছেন। মোটকথা মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার সম্পর্কে অসাধারণ একটি গ্রন্থ। যে গ্রন্থে পাঠক পাবেন তাওবাহ-ইস্তিগফার ও মাগফিরাতের এক অনাবিল ঝর্ণাধারা। আসুন! পাঠ করি আর অবগাহন করি মাগফিরাতের পরম কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নীল ভুবনে।
-
-
সকাল-সন্ধ্যার দুআ ও যিক্র ( দুআর বই, দুআ কার্ড একত্রে)
লেখক : শায়খ আহমাদুল্লাহপ্রকাশনী : আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পাবলিকেশন্স33 ৳পকেট সাইজের এই পুস্তিকায় সকাল-সন্ধ্যার বিভিন্ন ...
-
hotবেলা ফুরাবার আগে
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন335 ৳234 ৳বেলা ফুরাবার আগে... নিজেকে আবিষ্কারের একটি আয়না। ...
-
hotমনের ওপর লাগাম
লেখক : আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহঃ)প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন173 ৳128 ৳বিবেক আছে বলেই মানুষ পশুপাখি থেকে ...
-
hotএবার ভিন্ন কিছু হোক
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন340 ৳238 ৳প্রতিদিন একটা একঘেয়েমি চক্রে কেটে যাচ্ছে ...
-
hotরাহে বেলায়াত
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স550 ৳385 ৳আল্লাহ কুরআনে বলেন, "তোমরা আমার যিকির ...
-
hotটাইম ম্যানেজমেন্ট
লেখক : Ismail Kamdarপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন228 ৳166 ৳ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর রেশমি কাপড়ের ...
-
save offকুরআন দিয়ে নিজের চিকিৎসা করুন
প্রকাশনী : সবুজপত্র পাবলিকেশন্স70 ৳50 ৳অনুবাদ: হাফেয মাহমুদুল হাসান পৃষ্ঠা ৯৭ পকেট সাইজ ...
-
hotআল্লাহর প্রতি সুধারণা
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়াপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন175 ৳129 ৳জাবের রদ্বি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ...
-
hotআস-সুন্নাহ প্যাকেজ (৩টি বই একত্রে)
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স1,290 ৳903 ৳উস্তাদ মুহাম্মাদ হুবলস বলেন, "আমরা রসূল ...
-
মুহাম্মাদ আনাস – :
বস্তুত মানুষ অপরাধ প্রবণ এক সৃষ্টি। আল্লাহ মানুষকে এমন করেই সৃষ্টি করেছেন। এজন্য অপরাধ দূষণীয় হলেও এটা মার্জনীয়।
তবে নিজ অপরাধে অনুতপ্ত না হয়ে, প্রভুর দরবারে লজ্জিত না হয়ে অবাধ্য চলা-ফেরা অব্যাহত রাখা মানুষকে কুফরির নিকটবর্তী করে দেয়।
বান্দার কর্তব্য নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে প্রভুর কাছে অনুতপ্ত হওয়া। ক্ষমা প্রার্থনা করা। এর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের মর্যাদা উন্নিত করেন।
‘আয়ান প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিতব্য ‘ইলা মাগফিরাহ’ বইটি তাওবা ইস্তিগফার সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে। ছোট্ট একটা শব্দ ‘মাগফিরাহ’ এর বিশ্লেষণে এত বড় রচনা বিষ্ময়কর বিষয়। আর এটা প্রয়োজনেরই দাবি। কারণ বান্দার শেষ পরিণতি, জান্নাত কিংবা জাহান্নাম লাভ করাটা তো নির্ভর করে এই মাগফিরাতের উপরই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্বতন্ত্র এত বড় রচনা ইতোপূর্বে চোখে পড়ে নি। বিস্তৃত পরিসরে অসাধারণ বিশ্লেষণে এমন সুখপাঠ্য গ্রন্থনা সত্যিই বিরল।
বই নিয়ে কিছু কথা –
প্রকাশিত শর্ট পিডিএফ পড়েছি,আলহামদুলিল্লাহ! বইটির আলোচনা দুই খন্ডে বিন্যস্ত। প্রথম খন্ডের শুরুতে সম্পাদকীয় ও অনুবাদকের কথার পর রাখা হয়েছে গ্রন্থ পরিচিতি। এখানে এই বইয়ের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা এবং তাওবা-ইস্তিগফার ও মাগফিরাত সম্পর্কে চমৎকার আলোচনা উঠে এসেছে। এরপর সুরা ফাতিহা, দুরুদ শরিফ ও সাইয়্যিদুল এস্তেগফার নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। এরপর কুরআনে বর্ণিত মাগফিরাত, তাওবা ও ইস্তিগফার সংশ্লিষ্ট আয়াতের অর্থ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর সুরাভিত্তিক ধারাবাহিক বিন্যাসে সাজানো হয়েছে।
দ্বিতীয় খন্ডে মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফারের সংজ্ঞা, ফজিলত ও মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার বিষয়ের হাদিস, মনীষীদের বিভিন্ন বাণী ও ঘটনা একত্রিত হয়েছে। আরও রয়েছে তওবা ইস্তিগফার সংক্রান্ত দুয়া ও অজিফা।
সবমিলিয়ে বইটি কুরআন-সুন্নাহ আলোকে মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার সম্পর্কে অসাধারণ একটি সংকলন।
কে পড়বে, কেন পড়বে –
পৃথিবীতে এমন কে আছে যে নিষ্পাপ? মাগফেরাতের অমুখাপেক্ষী এমন কোনো ব্যক্তি কি এ জগতে আছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবরকম গুনাহ থেকে পবিত্র থাকা সত্বেও প্রতিদিন ১০০ বার এস্তেগফার করতেন। অন্য বর্ণনায় আছে ৭০ বার। আর আমরা!? আমরা তো দিনরাত শত রকম অপরাধে জড়িয়ে আছি। এই অপরাধের মার্জনা ছাড়া কি মুক্তির কোনো উপায় আছে? আমাদের জন্য তো মাগফিরাত ছাড়া মুক্তি লাভের আর কোনো উপায় নেই! আর মাগফিরাতের জন্য চাই সঠিক পন্থায় প্রভুর কাছে রোনাজারি।
সঠিক পন্থায় প্রভুর থেকে মাগফিরাত অর্জনের অসংখ্য নির্দেশনা কুরআন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। কুরআন হাদিসের সেই অনুপম বর্ণনাগুলোর সামান্য বিশ্লেষণমূলক এই গ্রন্থটি এজন্যই সবার জন্য আবশ্যক।
শেষ কথা-
গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে সর্বমহলে প্রচারের জন্য প্রয়োজন ছিল বইটিকে সহজবোধ্য ও সুখপাঠ্য করে উপস্থাপন করা। আলহামদুলিল্লাহ, লেখক অনুবাকের প্রচেষ্টায় সেটি যথার্থরুপেই হয়েছে বলে আশাবাদী।
বইটি আমাদেরকে দিবে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চাবিকাঠি, মুমিনের কাঙ্ক্ষিত বিষয় ‘মাগফিরাত’ এর সন্ধান। এর প্রতিটি পাতায় পাতায় আমরা পাবো তাওবাহ-ইস্তিগফার ও মাগফিরাতের মাধ্যমে চির সফলতা লাভের অবলম্বন। আল্লাহ যেন আমাদের জন্য এই গ্রন্থটিকে আশানুরূপ উপকারী বানিয়ে দেন। আমিন।
و ما توفيقي الا بالله.
মিশিলা শারমিন – :
তবু দিনশেষে কিংবা জীবনের অস্তমিত সময়েও যদি ভাবতে বসি, “আমাদের সত্যিকার লক্ষ্যটা আদতে কি? কি হওয়া উচিত আমাদের প্রত্যাশা? কি এমন প্রাপ্তি হতে পারে যার কাছে তুচ্ছ মনে হবে ফোরাতের সোনার পাহাড়ও?”
এই আত্নোপলব্ধির পর আমাদের দুয়ার প্রথম প্রহরের পুরোটা জুড়ে থাকে “মাগফিরাত”। এতদিনের অবহেলা করে কাটানো অন্ধকার জীবনের যত অনুতাপ – জড়ো হয় মুনাজাতের জন্য তোলা দুহাতে। সর্বাগ্রে ক্ষমা প্রাপ্তি, রবের নৈকট্য ও ভালোবাসা প্রাপ্তি, পরকালীন মুক্তি, আখিরাত ও দুনিয়াবি উভয় নিয়ামত যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করিনা কেন – মুমিনের জীবনের হাজারো প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির মধ্যে বেলাশেষে একমাত্র মাগফিরাতই আমাদের সর্বোচ্চ প্রত্যাশা। ভুলে ভরা গাফেল জীবনের মুক্তির সনদ। যে সনদ ছাড়া মারেফাতের জগতে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ।
বান্দা ও তার রবের সান্নিধ্যের আহবানের নামই ইলা মাগফিরাহ।
কিছুদিন আগে ইস্তেগফার সংক্রান্ত একটি দোয়া খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ মনে হলো, ” ইশ! যদি এরকম একটা বই থাকতো যেটাতে তাওবা ও ইস্তেগফারের সমস্ত দোয়া একসাথে থাকবে। বই খুললেই সূচী দেখে পেয়ে যাব আকাঙ্ক্ষিত দোয়াটি।”
এবং আশ্চর্যের ব্যাপার হল ঠিক তারপর পরই “ইলা মাগফিরাহ” বইটির কথা সামনে এলো। আয়ান প্রকাশন যে শর্ট পিডিএফটুকু উন্মুক্ত করেছে সেটুকু পড়ে আমি সত্যিই অভিভূত। কুরআনুল কারীমে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আসা তাওবা ও ইস্তেগফার সংক্রান্ত অর্ধশতাধিক আয়াতকে মলাটবন্দী করা হয়েছে বইটিতে। সূচীপত্র থেকে গুণে দেখলাম ৬৪ টা সুরা থেকে সাগর সেঁচে মুক্তো আনার মতোই এই আয়াতগুলো চয়ন করা হয়েছে। ফলস্বরূপ ইলা মাগফিরাহ বইটি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাওবা ইস্তেগফারের এক অমূল্য এনসাক্লোপিডিয়া। যথেষ্ট ইলমি তাহকীক ও শরঈ সম্পাদনার সাথেই এই অতি-প্রয়োজনীয় কাজটি করা হয়েছে।
আমি নিশ্চিত জানি এইরকম চাওয়া আমার একলার নয়, নিষ্পাপ হয়ে রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়ার ইচ্ছা আমাদের সকলের। মনে প্রানে আমরা সবাই রবের সন্তুষ্টি লাভ করতে চাই। কায়মনোবাক্যে চাই ইস্তেগফারকে অজিফা করে নিতে। প্রার্থনা করতে চাই আমাদের পূর্বসূরিদের মত করে৷ আমার মত আরও অনেকেই হয়ত মনে মনে এরকম একটি কামনা ছিল যে সহজেই এই মাগফিরাতের দোয়াগুলোকে একত্রে পাবার। কে জানতো যে রবের কাছে আমাদের এই মাগফিরাতের দুয়া সহজ করার প্রয়াসে সেই দূর দেশের এক মাজলুম কারাবাসী আলিমে দ্বীন এই বরকতময় কাজটি করেছেন।
মুফতি খুবাইব হাফিযাহুল্লাহের এই গ্রন্থটি রচনার পিছনেও রয়েছে একটি ছোট্ট হৃদয়গ্রাহী ইতিহাস। লেখকের কাছে সেটি ছিল এক আসমানী ইশারার মত। সে ইতিহাসটা নাহয় পাঠকেরা বইটি পড়ার সময়ই জেনে নিবে।
যেকোন পছন্দের বই যত বড় হয়, ততই যেন পাঠের আনন্দ বেশি হয়। দীর্ঘ কলেবরের এই গ্রন্থটির প্রথমাংশ জুড়ে রয়েছে কুরআনুল কারীমের মাগফিরাত ও তাওবা-ইস্তেগফার সংক্রান্ত সকল আয়াতসমূহ, আয়াতসমূহের অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত তাফসীর।
এবং দ্বিতীয়াংশে তুলে ধরেছেন মাগফিরাত ও তাওবা-ইস্তেগফারের পরিচয়, মাগফিরাতের আহবান, এ সংক্রান্ত হাদিস ও ব্যাখা, এবং মাগফিরাত সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনাবলী।
সূচীপত্রে চোখ বুলিয়ে মনে হল ঋদ্ধ পাঠকের তৃপ্তির খোরাক হিসেবেই শুধু নয়, বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সংকলিত হয়েছে প্রাত্যাহিক পাঠের জন্য। সূচীপত্রের বিষয়টা আরেকটু না বললেই নয়। এত সুন্দর আর এত হৃদয়গ্রাহী শিরোনাম ইতোপূর্বে আমার খুব একটা চোখে পড়েনি। বইটির প্রতি সম্যক ধারণা পেতে এবং আকৃষ্ট হতে সূচীর এই শিরোনামগুলোই যথেষ্ট।
আয়ান প্রকাশনীর কোনো বই এর আগে পড়ার সুযোগ হয়নি। আগ্রহী হয়েই বইটির কয়েকটি ছবি ঘেটে দেখেছিলাম। চোখ জুড়ানো প্রচ্ছদ আর উন্নত বাইন্ডিং সবমিলিয়ে বইটির কাজ নয়ন প্রীতিকর। আর অনুবাদক সাহেব বইটির প্রতি ভালোবাসার দরুন মূল নামটি অপরিবর্তিতই রেখেছেন।
“ইলা মাগফিরাহ”।
সাদা মলাটের উপরে নামটি দেখেই অন্তরে কেমন একটা প্রশান্তি কাজ করে।
বইটির শুরুতে মূল লেখক অত্যন্ত চমৎকার দুটো দোয়া করেছেন। যার সারমর্ম হল বইটির সাথে জড়িত সকলের জন্য তিনি মাগফিরাত প্রার্থনা করেছেন। আশ্চর্য! তিনি তার পাঠকদের জন্যও মাগফিরাতের দোয়া করে গেছেন এবং সে দোয়া যেন আল্লাহ সুবহান ওয়া তায়ালা কবুল করেন সেই দোয়াও করে গিয়েছেন। আল্লাহ সেই মাজলুমের দোয়া কবুল করে নিন। আমীন।
Ruponti Shahrin – :
“জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।“ (সূরা রা’দ, আয়াত ২৮)
আল্লাহ তায়ালার বরকত ও সীমাহীন দয়ার নতীজা হলো রহমত, নাজাত ও মাগফিরাত। রহমতের সাগরে তো আমরা ডুবেই আছি। নাজাতও আল্লাহর সেই রহমতেরই অংশ। বাকি থাকলো মাগফিরাত।
আদম সন্তান সকলেই ভুল করে। ভুল ও গোনাহ হতে মুক্তিসনদের নামই মাগফিরাত। এই সনদ মারেফাতের জগতের প্রবেশপত্র। এ সনদ ব্যতীত আল্লাহ তায়ালার সাথে বন্ধুত্বের জগতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। আর এভাবেই মাগফিরাত জান্নাত নামক সফলতার চাবিকাঠি।
নামকরণ ও বিষয়বস্তুঃ
‘ইলা মাগফিরাহ’ নামের অর্থ এরুপ যে, ‘সর্বাগ্রে প্রাপ্ত জান্নাতী নেয়ামতের আহ্বান’। তাহলে তো বুঝতেই পারছেন জান্নাত আপনার প্রতীক্ষায়। আল্লাহর কাছ থেকে গোনাহ ও ভুল-ত্রুটির ক্ষমা লাভের উপায় হলো মাগফিরাত সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান লাভ। পুরো বইটিই এই একটি শব্দকে কেন্দ্র করে। কত বিস্তৃত এর পরিধি। কিতাবটি মাগফিরাত সংক্রান্ত এনসাইক্লোপিডিয়া।
যেহেতু আমাদের নিত্যদিনের চাওয়া হলো জান্নাত লাভ। এই তামান্না পুরো হবে মাগফিরাতের দ্বারা। মাগফিরাত চাওয়ার অর্থ ‘ইস্তিগফার’। ইস্তিগফার করার প্রতিদান মাগফিরাত। তবে এর পূর্বশর্ত মারেফাত। এভাবে জ্ঞানের শাখাপ্রশাখা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। মুমিনের জীবনের তাই ‘মাগফিরাত’ এক পরশপাথরের নাম।
কাদের জন্যঃ
মুমিনের জন্য। মুসলিমের জন্য। অমুসলিমের জন্য। নও-মুসলিমের জন্য। সর্বপরি, সেই ব্যক্তির জন্য যিনি মাগফিরাতের তালাশ করছেন। যিনি জানেন না, মাগফিরাত আসলে কী। যিনি জানেন শব্দের নিহিত ওজন, কিন্তু ব্যক্তিজীবনে বাস্তবায়নের কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক নির্দেশনার ধারাবাহিক পরিকল্পনা জানেন না, তাদের সকলের জন্য এই গ্রন্থ।
মতামতঃ
পাকিস্তানের মাজলুম কারাবন্দি মুজাহিদ আলেম মুফতি খুবাইব হাফি.-এর রচিত ‘ইলা মাগফিরাহ’ গ্রন্থটি অনুবাদ করেছেন এনামুল হক মাসউদ। মূল গ্রন্থটি দুটি খন্ডে বিভক্ত। যার প্রথম খন্ডে পুরো কুরানুল কারীমের মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফার সংক্রান্ত সকল আয়াত, আয়াতের অর্থ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির সুরার বিন্যাস অনুসারে সাজিয়েছেন। আর দ্বিতীয় খন্ডে মাগফিরাত, তাওবাহ ও ইস্তিগফারের সংজ্ঞা, ফজিলত ও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস একত্রিত করেছেন। তাই মূল গ্রন্থের টাইটেল অপরিবর্তিত রেখেই এর নামকরণ করা হয়েছে। যা মানব সমাজের জন্য মাগফিরাতের আহ্বান।
প্রকাশিতব্য বইটি ৫৭৬ পৃষ্ঠার বেশ বড়সড় বই। একটি শব্দের পেছনে এতোগুলো ব্যাখ্যা, যুক্তি, বিশ্লেষণ ও গবেষণার ফসল। তাও কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে। পাঠক হিসেবে ৪২ পৃষ্ঠা পড়ার সুযোগ হয়েছে। শর্ট পিডিএফ হিসেবে বেশ বড় একটি অংশ প্রকাশনিমহল উন্মুক্ত করেছেন। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। এতে বইটি সম্পর্কে প্রচ্ছন্ন ধারণা করতে সুবিধা হয়েছে।
সুচীপত্রও অত্যন্ত গোছানো। মূল গ্রন্থের ধারাবাহিকতাকে খুব ভালোভাবে রক্ষা করা হয়েছে। যদিও সম্পাদক ও অনুবাদকের কথা থেকেই গ্রন্থ সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি হয়, তেমনি সাহিত্য মান সম্পর্কেও আস্থা দখল করে। গ্রন্থের প্রতি অনুবাদকের দখল কতখানি তা বোঝা গেল গ্রন্থটির প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনার অনুচ্ছেদ থেকে।
গ্রন্থটির একটি চুম্বকাংশ রয়েছে। যেকোন পাঠককেই আকৃষ্ট করবে। ফন্ট ও পৃষ্ঠাসজ্জা চোখের জন্য আরামদায়ক। মানসিক প্রশান্তি ও নিরাপত্তা ছাড়াও নবিজীবনে (সা), সাহাবিগণের দুনিয়াবি কাজের ফাঁকে ও যুদ্ধের ময়দানে মাগফিরাতের আলাদা তাৎপর্য আর যাইহোক, আমাদের সাধারণ মানুষের জন্য বুঝতে পারা কঠিন। তাই এমন গ্রন্থের বিকল্প নেই।
ইস্তিগফারের মাসআলা ও ফজিলত ছাড়াও, কাদের জন্য ইস্তিগফার বৈধ করা হয়নি, সেসকল বিষয়ে অবগত হওয়া ছাড়া নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। কল্পনাতীত রিজিকের প্রশস্ততা ও তাওবার মূল্যবান বিষয়গুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক।
মাগফিরাত একটি স্পর্শকাতর বিষয়। খুঁটিনাটি এত কিছু জানার আছে যে, গ্রন্থের সুচীপত্র না দেখলে আপনি বিশ্বাসই করবেন না, অথচ সেসবের ব্যাখ্যাসহ কত অজানারে আপনি এক মলাটেই পেতে চলেছেন। ছোটখাট টাইপিং মিস্টেক ছাড়া ভুলত্রুটি চক্ষুগোচর হয় না। আশা করি, পাঠকের জন্য আয়ান প্রকাশনের সন্তোষজনক উপহার হতে চলেছে।
Sanjida – :
আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কসম; নিশ্চয় আমি দিনে ৭০ বারেরও বেশী আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।
রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পবিত্র ব্যক্তি। তবুও তিনি সর্বদা রবের কাছে মাগফিরাত কামনা করতেন। আর তার উম্মাহ হয়ে আমরা হাজারো ভুলে নিজেদেরকে ডুবিয়ে রাখি। নিত্যদিন নতুন নতুন পাপে লিপ্ত হয়ে যাই। অন্যের হক নষ্ট করা থেকে শুরু করে নানা ধরণের খারাপ কাজ করে ফেলি।
অথচ মাগফিরাত কামনা করি না রবের দুয়ারে। আমাদের ভাবনাতে আসেই না যে রবের মাগফিরাত আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে কীভাবে আমরা রবের সন্তুষ্টি, নবীর ভালোবাসা আর আখিরাতে নেক আমল আশাকরি?
’ইলা মাগফিরাহ’ বইটি দুই খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডে আলোচনা করা হয়েছে কুরআনের সূরা থেকে মাগফিরাত সম্পর্কিত আয়াতের তাফসীর। এবং দ্বিতীয় খণ্ডে আলোচনা করা হয়েছে মাগফিরাত সম্পর্কিত হাদিসসমূহ।
মাগফিরাত বা ক্ষমা; রবের মাগফিরাত পাওয়ার তামান্না প্রতিটা আদম সন্তানেরই।
পাপ পঙ্কিলতায় পরিপূর্ণ তথাপি অনুতপ্ত ব্যক্তি সর্বদা চায় তার রব তাকে ক্ষমা করে দিক। রবও তার নেয়ামত দিয়ে আমাদেরকে পরিপূর্ণ করেই দিয়েছেন তবুও সে আরও দিতে চায়। বান্দাকে ডাকে রবের ক্ষমা পাওয়ার জন্য। কিন্তু বান্দা বুঝেই না কীভাবে রবের ক্ষমা পাওয়া যায়, কীভাবে রবকে সন্তুষ্টি করা যায়। ঠিক এমন বান্দাদের জন্য উত্তম একটি বই ’ইলা মাগফিরাহ’।
শর্ট পিডিএফ পড়ে আলহামদুলিল্লাহ বেশ লেগেছে। যতটুকু পড়েছি ততটুকুই বুঝার চেষ্টা করেছি, উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি। ইস্তেগফারের গুরুত্ব যে আসলেই কতটুকু তা কেবল বই পড়ে নয় ব্যক্তিগত জীবনে এর প্রভাব দেখেই তা বুঝতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। যে ব্যক্তি রবের কাছে প্রাণ খুলে মাগফিরাত প্রার্থনা করতে পারে সে ব্যক্তিকে রব কখনো নিরাশ করেন না। কারণ রব তো চানই তার বান্দা কেবল তার কাছেই চাক।
শব্দচয়ন, বাক্য বিশ্লেষণ সবকিছুই ভালো লেগেছে আলহামদুলিল্লাহ। সহজ ভাষায় অত্যন্ত জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনা। আশাকরি বইটি বর্তমান গাফেল উম্মাহর অন্তরে আল্লাহর দয়া, ক্ষমা যে কতটা তা বুঝতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ। লেখক, প্রকাশক, অনুবাদক এবং সম্পাদকসহ বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আল্লাহ তা’আলা উত্তম জাযাহ দান করুন, আমিন।
ishtiaqueshilpo.3 – :
অথচ যেদিন কুরআন তাঁর জন্য পরিপূর্ণ মাগফিরাত ঘোষণা করলো সেদিন সমগ্র মদীনা যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠলো রাসূলুল্লাহর অনাবিল আনন্দে। অবশ্য হবেই বা না কেন? ইহজগত ও পরকালের সবচাইতে মূল্যবান নিয়ামত পেয়েছিলেন যে তিনি — মাগফিরাত!
আমাদের ইনসান নামটিই আমাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যের জানান দেয়। ইনসানের উৎপত্তি শব্দমূল “নিসইয়ান” থেকে, যার অর্থ হলো ভুল। দৈনন্দিন পথচলায় লক্ষ্যে-অলক্ষ্যে ভুলের মহাসমুদ্রে ডুবে থাকি আমরা। এত সুমহান যে আল্লাহ সুবহান ওয়া তায়ালা তাঁর হক্ব আদায় করা কখনোই কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব না।
ওয়াল্লাহি! আমাদের কারো আমলই কখনোই যথেষ্ট না।
কেবলমাত্র স্বীয় আমলের বরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন কষ্মিনকালেও সম্ভব না। এক এবং একমাত্র আল্লাহর তরফ থেকে শর্তহীন ক্ষমা তথা মাগফিরাতই হতে পারে আমাদের ছাড় পাবার উপলক্ষ্য।
আল্লাহ তাঁর সালেহীন আত্নাদের জন্য জান্নাতে রেখেছেন অগণিত নিয়ামত। কুরআনে সূরা আস-সাজদাহতে এসেছে,
فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٌ مَّاۤ اُخۡفِیَ لَہُمۡ مِّنۡ قُرَّۃِ اَعۡیُنٍ ۚ جَزَآءًۢ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
কেউই জানেনা, তাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কি কি প্রতিদান লুকায়িত রয়েছে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ।
এসব নিয়ামত না কোনো চোখ কখনো দেখেছে, না কোনো হৃদয় কখনো কল্পনা করতে পেরেছে। তবে এসব নিয়ামতের ভীড়ে একটি চেনা-জানা নেয়ামত আছে যার পরশ আমরা উপলব্ধি করতে পারি উভয় জগতেই। মাগফিরাত।
এই অমূল্য নেয়ামতের পথে, আমাদের রবের সান্নিধ্যে যাবার আহ্বানই কাগজের পাতায় ছেপে আসছে “ইলা মাগফিরাহ” নামে।
সূচীপত্রে চোখ বুলালেই সন্ধান মেলে মলাটবন্দী রত্নখনির। কুরআনে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট হাজির করে, পূর্বসূরি নবী-রাসূলগণের ইস্তেগফারকে আল্লাহ তায়ালা হাজির করেছেন এই নগণ্য বান্দাদের প্রতি রহমত-স্বরূপ। মুফতি মুহাম্মদ খুবাইব হাফিযাহুল্লাহ মুসহাফ থেকে নিংড়ে এনেছেন সেই অন্তর্যাস। সেটারই ফলস্বরূপ বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি।
সূচীপত্রে চোখ বুলিয়ে যা বুঝলাম কুরআনে বিভিন্ন সময়ে আসা ইস্তেগফারসমূহ, ইস্তেগফারের আহ্বান, এই সংক্রান্ত হাদিসসমূহ, ইস্তেগফারের মাসয়ালা,ফজিলত এবং তাওবা সংক্রান্ত বিবিধ আলোচনা দিয়ে ঠাসা গ্রন্থটি।
গ্রন্থটি রচনার পেছনে রয়েছে এক আসমানী ইশারা। সেটা এখানে বলছিনা, বই থেকেই দেখে নেবেন নাহয়।
লেখক সাতটি পদ্ধতিতে ইস্তেগফার ও তাওবা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্তে ঢেলে সাজিয়েছেন ইলা মাগফিরাহকে।
রঙ্গে-নূর ওয়েবসাইটের কিছু আলােচনা।
ইস্তিগফার সংক্রান্ত প্রবন্ধ-নিবন্ধ ।
ইস্তিগফারের শাব্দিক আলােচনা সংক্রান্ত হাদিসসমূহ।
তাওবা সংক্রান্ত হাদিসসমূহ।
ইস্তিগফারের ফজিলত সংক্রান্ত হাদিসসমূহ।
ইস্তিগফার সম্পর্কে ইমাম গাজালী (রাহি) এর জ্ঞানগর্ভ আলােচনার সারসংক্ষেপ এবং ব্যাখ্যা
ইস্তিগফার এবং তাওবার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও পার্থক্যের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ইত্যাদি।
এটা বোধহয় বললে অত্যুক্তি হবেনা ইলমি সতর্কতাপূর্ণ এই চয়নে সমৃদ্ধ বইটির জন্য অপেক্ষা করা আমি সহ যেকোনো সচেতন পাঠকের জন্যই কষ্টসাধ্য।
যে বান্দা তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী সে ততবেশি ইস্তেগফারে ডুবে থাকে। আর বান্দার অন্তরে জমা হওয়া নিফাকের সমানুপাতে বাড়তে থাকে ঔদ্ধত্য, ইস্তেগফারের প্রয়োজনীয়তা তার কাছে কমে যায় ব্যাস্তানুপাতিক হারে।
তাই, মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্যলাভের জন্য নিয়মিত ইস্তেগফারের কোনো বিকল্প নেই। আর এখানেই সবচেয়ে কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে ইলা মাগফিরাহ বইটি।
অর্ধশতাধিক তাওবা-ইস্তিগফারের যে আয়াতসমূহের সংকলন লেখক করেছেন তা ৪/৫ ঘন্টার অধ্যয়নেই একজন সাধারণ পাঠক কুরআনুল কারীমের সমস্ত ইস্তেগফার পাঠের সৌভাগ্য অর্জন করবেন।
একটি কথা বলতে ভুলে গেছি। লেখক মুফতি মুহাম্মদ খুবাইব একজন মাজলুম মুজাহিদ আলিম, যিনি বর্তমানে পাকিস্তানে নবী ইউসুফের পাঠশালায় বন্দী। আমরা দুয়া করি তার মুক্তি তরান্বিত হোক।
কেননা, বইটির শুরুতেই তিনি তার অচেনা সকল পাঠকের জন্য সেই অমূল্য দুয়াটি করে গেছেন যা কেন্দ্র করে প্রায় ছয়শো পাতার বিশাল কলেবরের এই বইটি রচিত। এই মাজলুম আলিম আমাদের জন্য মাগফিরাতের দুয়া করেছেন। আল্লাহ তার দুয়াকে কবুল করে নিন, আমীন।
আয়ান প্রকাশনীর জন্য দুয়া ও শুভকামনা রইলো এমন মহামূল্যবান একটি কাজ বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য।