হৃদয়ের দিনলিপি
ইসলামি জগতে এক বিস্ময়কর ব্যতিক্রম গ্রন্থের নাম- صيد الخاطر
[বাংলা: হৃদয়ের দিনলিপি]। গ্রন্থটি লিখিত হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে লেখকের
তাৎক্ষণিক উদ্ভাসিত কিছু চিন্তা ও ভাবনার মিশ্রণে। বিচিত্র বিষয়। ইলম
ইবাদত মুআমালা মুআশারা তালিম তাযকিয়া ও তাসাউফ- সব মিলেমিশে
একাকার হয়েছে এই গ্রন্থে। এবং এক আলোকময় নির্দেশনা নিয়ে হৃদয়জগতের খোরাক জুগিয়ে আসছে শতাব্দীর পর শতাব্দী- এবং এখনো।
যেন হাজার বছরের এক প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ। হিরন্ময় দরদী কথাগুলো আঁধার
হৃদয়কে করে ঝলকিত এবং নির্দেশনা দেয় একটি সুন্দর মত ও পথের
দিকে।
বিশ্বের বহু বিদ্বান ব্যক্তি গ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর বিস্ময়কর
প্রভাব উপকারিতা ও উপযোগিতার কথা বলেছেন। এটি আসলে এক
জাগরণমূলক গ্রন্থ। নিজেকে পরিশুদ্ধ এবং পরিপূর্ণ করার গ্রন্থ। জীবনকে
উন্নত ও সমৃদ্ধ করার গ্রন্থ। নিজের জীবনের আচার ও বিশ্বাসকে নতুনভাবে
সাজিয়ে ও গুছিয়ে তোলার গ্রন্থ। কোনো নিদারুণ নিরুত্তাপ উদাসীন
হৃদয়কেও এটি করে তোলে জাগ্রত উন্নত এবং পরিশুদ্ধ। কর্মের প্রতি করে
তোলে উদ্দীপিত। মনের মৃত সাগরেও ডেকে আনে চেতনার উদ্বেল উচ্ছ্বল
ঢেউ। আলহামদুলিল্লাহ এই চমৎকার একটি গ্রন্থ নিয়ে এলো মাকতাবাতুল হাসান।
-
-
hotবেলা ফুরাবার আগে
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন335 ৳245 ৳বেলা ফুরাবার আগে... নিজেকে আবিষ্কারের একটি আয়না। ...
-
hotমনের ওপর লাগাম
লেখক : আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহঃ)প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন173 ৳128 ৳বিবেক আছে বলেই মানুষ পশুপাখি থেকে ...
-
hotএবার ভিন্ন কিছু হোক
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন340 ৳248 ৳প্রতিদিন একটা একঘেয়েমি চক্রে কেটে যাচ্ছে ...
-
hotটাইম ম্যানেজমেন্ট
লেখক : ইসমাইল কামদারপ্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন228 ৳166 ৳ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর রেশমি কাপড়ের ...
-
featureচিন্তাপরাধ
লেখক : আসিফ আদনানপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন190 ৳পৃষ্ঠা - ১৯২ 'যতক্ষণ সাম্রাজ্যের সার্বভৌমত্ব স্বীকার ...
-
hotআল্লাহর প্রতি সুধারণা
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়াপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন175 ৳129 ৳জাবের রদ্বি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ...
-
hotনফসের বিরুদ্ধে লড়াই
লেখক : মাহমুদ বিন নূরপ্রকাশনী : রাইয়ান প্রকাশন220 ৳161 ৳কতজন-ই তো বলে—আমি তাহাজ্জুদে উঠতে পারি ...
-
hotএপিটাফ
লেখক : সাজিদ ইসলামপ্রকাশনী : বুকমার্ক পাবলিকেশন228 ৳171 ৳ধরণ: লেকচার সংকলণ পৃষ্ঠা: ১৪৪ কভার: পেপার ব্যাক উস্তাদ ...
-
featureম্যাসেজ
লেখক : মিজানুর রহমান আজহারিপ্রকাশনী : গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স300 ৳ইসলাম এক নক্ষত্র, যার সংস্পর্শে সমস্ত ...
-
Sajjad Hossein – :
অসাধারণ একটি বই।
Md.Hasibur Rahaman Tanjim – :
musaabeer4 – :
হাতে নিলে বইটির কাঠামো বলে দেবে, এটা মূলত ইবনুল-জাওযীর ব্যক্তিগত ডায়েরী। এখানে তিনি সময়ের পরিক্রমায় মনের কথাগুলো এঁটে দিতেন। কখনো দুনিয়া-বিমুখতা গুরুত্ব নিয়ে, কখনো এর বাড়াবাড়ির সমালোচনা, কখনো শয়তানের চক্রান্ত, নফসের সমালোচনা, আমলের অনুপ্রেরণা, আখিরাতের ভীতি, গাফলতির ক্ষতি নানান বিষয়ে উন্মেষ ঘটিয়েছেন এই গ্রন্থে। বইটি পড়ার সময় পাঠক যেমন ইবনুল-জাওযীকে চিনতে পারবেন, তেমনি রূহানীয়াতের এক নতুন দিগন্ত আবিষ্কার করবেন। ফেসবুক-বিহীন সেই যুগে একজন আলিম কীভাবে এত দুর্দান্ত, যুগান্তকারী কথাগুলো লিখে যাচ্ছেন, ভাবনার দুয়ারে এই প্রশ্ন প্রায়ই উপস্থিত হবে।
.
ভালো লাগার মতো বিষয়:
প্রতিটি অধ্যায় অত্যন্ত গভীর মনস্তাত্ত্বিক আলোচনা সমৃদ্ধ হওয়ায় আমার চিন্তাধারার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। তাই যখনই বইটি নিয়ে বসি, ভিন্ন জগতে চলে যেতে বাধ্য হই। সকল মনোযোগ যেন এক জায়গায় স্থির হয়ে আসে। কুরআন, সুন্নাহ, ইবাদতের মর্মকথা, ইত্যাদি বিষয়ে গভীর অনুধাবন এবং চিন্তার গভীরতা অর্জনে বইটি বেশ ফলপ্রদ। যতটা ধীরে ধীরে পড়া হয়, তত বেশি মনিমুক্তোয় আবিষ্কার করা যায়। তাই বইটি সকলের একবার হলেও পড়া উচিত। আর কাগজের মান ১০-এ ৭ দিবো। তবে প্রচ্ছদ-শিল্পীকে ৫ এর বেশি পারছি না।
.
যা কিছু ভালো লাগেনি:
লেখক প্রায় পরিচ্ছেদে যুহুদের নামে বাড়াবাড়ির সমালোচনা করেছেন। এ থেকে বুঝি লেখকের সময় ভ্রান্ত সূফীবাদ বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনার মাত্রা এতটাই বেশি লেগেছে যে, এই বই পড়ার পর যদি কেউ সাহাবীদের চোখে দুনিয়া বা তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া পড়েন, তাহলে একঘেয়েমি কাজ করবে। তাই সম্পাদকের উচিত ছিল এসব ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত টীকাটিপ্পনী যুক্ত করা, যেন সাধারণ পাঠকগণ লেখককে ভুল না বোঝেন, আবার পূর্ববর্তী নেককারদের প্রতিও সুধারণা রাখতে পারেন।
.
অনুবাদ এবং সাহিত্যমান:
ভাষার মান ভাল ছিল। খুব একটা বানান ভুল চোখে পড়েনি। আর সাহিত্যমান সংক্ষেপে বললে ‘ভাষা আছে ভাব নেই’। প্রতি পাতায় হোঁচট খেতে হয় আমার। কেন যেন মনে হয়েছে, অনুবাদক জোরপূর্বক কাঠিন্যের পথ ধরেছেন। এমন জটিল বাক্য প্রায়ই পেয়েছি যা কম শব্দে বা আগে পিছনে ফেলে সুন্দর অনুবাদ দাঁড় করানো যায়; অর্থের বিকৃতিও হতো না, আবার বাক্যগুলোও হৃদয়গ্রাহী হতো। এজন্য কিছু বাক্য অত্যন্ত অন্তর-স্পর্শী অর্থ বহন করলেও অনুবাদের কাঠিন্যের কাছে এর তেজ লোপ পেয়েছে। অনুবাদক এবং সম্পাদকের প্রতি সম্মান রেখে বলব, বইটির অনুবাদ কর্কশ লেগেছে আমার। অধিকাংশ বাক্যগুলো শ্রুতিমধুর নয়। সম্ভবত অনুবাদের মূলানুগ নীতি অনুসরণ করেছেন তারা। তবে একই লেখকের অন্য বইগুলো পড়লে ভিন্ন চিত্র দেখতে পাই! আল্লাহ ভাল জানেন। সবার সাহিত্য-রুচি সমান নয়, সাহিত্যের সাথে সম্পর্কও সবার পাকাপোক্ত নয়। তাই অনেকের কাছেই আবার এটা চমৎকার অনুবাদকর্ম বলে বিবেচিত হবে। যদি সামগ্রিক গুরুত্বের কথা ভেবে এই বিষয়টি এড়িয়ে চলা যায়, তাহলে বইটিকে গত বছরে সেরা দশটি বইয়ের একটি বলব।
মুহাম্মাদ তাজুল ইসলাম – :
এই বইয়ের রিভিউ লিখতে গেলে একটা ছোটখাট পুস্তিকা হবে, কারণ এতে এতো টপিক আনা । আপনার জীবনের প্রতিটি পদে পদে এই বইয়ের টপিক এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন । এক বাক্যে বললে – যারা ন্যায়-ইনসাফের ওপর চলতে চান, জীবনে ভারসাম্য চান, আত্মশুদ্ধি চান বা শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচতে চান, তাদের জন্য এই বই ।
রিভিউয়ের জন্য আমার দৃষ্টিতে এই বইটিকে আত্মশুদ্ধি, ইলম অর্জন, নসিহাহ (মোটিভেশন), ইবাদত এই চার ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করা যায় । যেহেতু বলা হয়েছে বিক্ষিপ্ত চিন্তার সংকলন, তাই এক নাগাড়ে কোন বিষয় আলোচনা হয় নি । কতক্ষণ ইলম, তারপর আত্মশুদ্ধি আবার ইলম এরকম বিক্ষিপ্তভাবে তাঁর চিন্তাগুলোর সংকলন হয়েছে ।
উপদেশ গ্রহণে মানুষের বৈচিত্র্যতা” এই শিরোনামে তিনি তাঁর প্রথম পাঠটি শুরু করেছেন, যা দিয়ে আপনাকে তাঁর বাকি পাঠগুলোর জন্য তৈরি করে নিবেন । এই পাঠে লেখক উপদেশ গ্রহণকে চাবুকের আঘাত মতো তুলনা করেছেন, যা যখন শরীরে আঘাত করে তখন যে ব্যাথার তীব্রতা থাকে সময়ের বাকে তা আর তেমন অনুভূত হয় না । আবার কিছু মানুষ আছে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে তিনি এই শ্রেণীর মানুষকে তিনভাগে ভাগ করেছেন ।
এখন আসি, আত্মশুদ্ধির চাদরে তিনি কি আলোচনা করেছেন । এই চাদরে তিনি অন্তরের যাবতীয় ময়লার কথা এনেছেন সাথে কিভাবে তা ধৌত করতে হবে তা জানিয়ে দিয়েছেন । কয়েক প্রকার ময়লার মাঝে হল – দুনিয়াপ্রীতি, প্রবৃত্তির দাসত্ব, নফসের রোগ, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি ।
ইলম অর্জন এর চাদরে আমরা দেখেছি তিনি ইলম অর্জনের প্রয়োজনীয়তা, সময়, ধৈর্য, ইলম সংরক্ষণের পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয় এনেছেন । তবে তার চেয়ে যে বেশিটি ফুটে এসেছে আলেমদের (জ্ঞানীদের) দুনিয়াপ্রীতি ও দরবারমুখীতা নিয়ে সতর্কতা আর নসিহাত ।
নসিহাত বলতে তাঁর পুরো বইটি ই বলা যায় । কারণ আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছেন এই রোগের লক্ষণ, প্রতিকার । বিশেষ করে এই পাঠে তিনি জ্ঞান অর্জন, তাকওয়া অর্জন, দুনিয়ার জীবন, বিয়ে, ফিতনা, বন্ধু নির্বাচন, আদর্শ ও যুক্তি, সুখ অর্জন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আপনাকে প্রথমে পদস্খলনের স্বভাব দেখিয়েছে তারপর তিনি সরল ও সহজ পথটি উল্লেখ করে আপনাকে সতর্ক করে দিয়েছেন ।
ইবাদত পাঠে তিনি ইবাদত ও ঈমান নিয়ে আলোচনা করেছেন । ইবাদত বলতে আল্লাহকে পাওয়ার পথ দেখিয়েছেন, সাথে বিদ’আত পাঠে তিনি এ নিয়ে সতর্কতা দেখিয়েছেন । ঈমান এর বিষয়ে তিনি বুনিয়াদি বিষয়ের পাশাপাশি নাস্তিকতা ও অপযুক্তির বিষয় ও আলোচনা এনেছেন ।
তিনি বইয়ের সমাপ্তি টেনেছেন, প্রথম পাঠের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যা একটি আদর্শ বইয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য । শেষ উপদেশ নামে পাঠে অল্প কথায় গভীর কিছু বলেছেন । সেই পাঠ থেকে কিছু লিখে শেষ করছি – স্মরণ রাখা উচিত – সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারাও একটি বড় যোগ্যতার ব্যাপার । পরিমিত খরচ করবে । যাক প্রকাশ করা উচিত নয়, তা গোপন রাখবে । ……