হজ—যে শিক্ষা সবার জন্য
অনুবাদ : মহিউদ্দিন কাসেমী
সম্পাদনা : তারেকুযযামান তারেক
বাঁধাই ধরন : পেপার ব্যাক
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৮০
হজ—যে শিক্ষা সবার জন্য
কালো গেলাফে আবৃত পবিত্র বাইতুল্লাহর জিয়ারত, ঐতিহাসিক আরাফা ময়দানে অবস্থান, পাশাপাশি শরিয়া নির্ধারিত আনুষঙ্গিক কিছু কর্মপালনকে হজ বলে। হজ প্রতিটি মুমিনের অন্তরের কামনা ও দিলের আকাঙ্ক্ষার বিষয়। তবুও অনেক মুসলমান সামর্থ্য না থাকায় হজ করতে পারেন না। তবে হজ করতে পারেন না বলে এতে যে তাদের কোনো কল্যাণ নেই বিষয়টি এমন নয়।
বস্তুত হজের মধ্যে হাজি, নন-হাজি সবার জন্যই রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা ও কল্যাণ। হজের শিক্ষা শুধু হাজিদের জন্যই, বিষয়টি এমন নয়। হজ থেকে পুরো মুসলিম উম্মাহর কী শেখার রয়েছে? এতে সবার জন্য কী ব্যাপক কল্যাণ লুকায়িত আছে?? এতে এমন কীই-বা প্রাপ্তি রয়েছে, যার কারণে এটাকে ইসলামের অন্যতম মূলস্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে??? এসব প্রশ্ন ও তার চমৎকার সব জবাব নিয়ে এবারের আয়োজনে থাকছে ড. রাগিব সারজানি বিরচিত “হজ―যে শিক্ষা সবার জন্য”।
বইটি আশা করি পাঠকদের জন্য খুবই উপকারী হবে। উন্মোচন করবে অনেক অজানা বিষয়ের রহস্য। আর তাই হজ-ইচ্ছুক প্রতিটি মুসলমানেরই বইটি পড়া উচিত।
-
-
save offহজ্জের আধ্যত্মিক শিক্ষা
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স40 ৳28 ৳হজ্জে কী কী করতে হবে, এ ...
-
featureবাইতুল্লাহর মুসাফির
লেখক : মাওলানা আবু তাহের মেসবাহপ্রকাশনী : দারুল কলম250 ৳মূলত হজের সফরনামা হলেও কত ধরনের ...
-
newউমরাহ কীভাবে করবেন?
লেখক : শায়খ আহমাদুল্লাহপ্রকাশনী : আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পাবলিকেশন্স50 ৳বাইতুল্লাহর যিয়ারত ও রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ...
-
save offতাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কুরআনের আলোকে কুরবানি ও জাবীহুল্লাহ
প্রকাশনী : আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স40 ৳28 ৳
-
hotবাইতুল্লাহ : প্রস্তুতি, বিধান ও সফরনামা
লেখক : উস্তাযা উম্মে সায়েমা তাযকিয়াপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন400 ৳260 ৳মক্কা-মদিনার সেই ঐতিহাসিক সফরে যে আসমানি ...
-
save offহজ উমরা ও যিয়ারত
প্রকাশনী : সবুজপত্র পাবলিকেশন্স340 ৳245 ৳গবেষণা পদ্ধতিতে রচিত পর্যাপ্ত তথ্য ও ...
-
save offনবীজীর ﷺ হজ্জ
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আশরাফ160 ৳99 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৬ লেখক পরিচয়: মাওলানা মুহাম্মাদ ...
-
newস্টেপ বাই স্টেপ হজ গাইডলাইন
লেখক : মাওলানা আব্দুল্লাহ সুহাইবপ্রকাশনী : মুআসসাসা ইলমিয়্যাহ বাংলাদেশ140 ৳হজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ, আকর্ষণীয়, অত্যাধিক ...
-
খালেদ হাসান – :
দিনমান তাকে কেন্দ্র করে উন্মাদ হয়ে ঘুরছে কতো মানব, মহামানব। কোনো ভেদাভেদ নেই তাদের । না চামড়ার, না গোত্রের। না আছে বিত্তের, না বৈভবের! সহোদর ভায়ের মতো তারা। দ্বন্দ্ব কোনোকালেই হয়তো তাদের মধ্যে ছিলো না৷ ছিলো না রেষারেষি। অভিন্ন লক্ষ্য, অভিন্ন উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে বায়তুল্লাকে কেন্দ্র করে “লাব্বাইক” ধ্বনিতে মুখরিত করছে চারপাশ। তাওয়াফকারীদের মধুময় গুঞ্জনে মুখরিত হচ্ছে সাফা পর্বত, মারওয়ার তরুবিহীন ধূসর প্রান্তর। সেই ধ্বনি ইথারে ভাসমান বস্তুর মতো ছড়িয়ে পড়ছে মিনার প্রান্তেরে, আরাফাতের ময়দানে।
আহ মক্কা! আহ মদীনা! নবীজীর শহর, তাঁর জন্মভূমি। পৃথিবীর তাবৎ ভূখণ্ডকে মক্কা ডেকে ডেকে বলে— আমার অহংকার কিসে জানো, আমাতে জন্মেছেন নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাঁর অলৌকিক শৈশব, স্বপ্নীল কৈশোর, আদর্শিক যৌবন— সব তিনি আমাতেই কাটিয়েছেন।
কে যেতে না চায় বায়তুল্লাহর মক্কায়, রাসূলের মদীনায়! আর যদি হয় হজ্বের মৌসুমে?! তাহলে!
হজ। ইসলামের ইবাদতসমূহের মধ্যে একটি ফরজ ইবাদত।শুধু ফরজ নয়, ইসলামের মূল ভিত্তি। আর এটি এমন ইবাদাত যার মাঝে ‘ইবাদতে মালি’ ‘ইবাদতে বদনি’ উভয়টিই রয়েছে।আর হজ শুধু সামর্থ্যবানদের জন্যই ফরজ করা হয়েছে যেমনটি আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
﴿ وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ ﴾ *
(আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ ঘরের হজ্ব সমাপন করা তাদের অবশ্যই কর্তব্য। যারা সেখানে যাবার সামর্থ রাখে।আর যে লোক তা মানে না (অর্থাৎ সামর্থ থাকা সত্ত্বেও হজ্ব না করে) তাহলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নন।)
আর তা ইসলামের মৌলিক স্তম্ভের ভিতরে একটি যেমন রাসূলে কারীম ﷺ ইরশাদ করেন-
بني الإسلام على خمس : شهادة أن لا إله إلا الله ، وأن محمدا رسول الله ، وإقام الصلاة ، وإيتاء الزكاة ، وحج البيت ، وصوم رمضان. [رواه البخاري]*
হজে অংশগ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে কল্যান। যা আল্লাহ তাআলা তার কোরআনে ঘোষনা করে বলেন﴾لِیَسهَدُوامَنَافِعَلَهُم﴿ (যাতে তারা তাদের কল্যাণী স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে)*
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা বুঝা গেল হজে কল্যাণ শুধু তাদের জন্য যারা সে সময়ে স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে। তাহলে এই ইবাদতকে ইসলামের মৌলিক স্তম্ভে কেন স্থান দেওয়া হলো। আর যদি তা সামগ্রিকভাবে হয়েও থাকে তাহলে যারা অংশগ্রহণ করতে পারে না তাদের জন্য কল্যাণ বা এর ফজিলত অর্জনের মাধ্যমই বা কি???
কিছু কিছু মানুষের মনে এ ধরনের প্রশ্ন উঠতেই পারে। উঠতে পারে যে কারো মনে।
ডঃ রাগিব সারজানি তার নিজস্ব রচনা ধারায় এই সমস্ত প্রশ্ন ও হজের ফজিলত অর্জনের মাধ্যমগুলো নিয়ে একটি ছোট পুস্তিকা রচনা করেছেন। যুগ-কাল ধরে যারা হজে না যেতে পেরে তার ফজিলত অর্জণ থেকে বিমুখ রয়েছে তারা কিভাবে হজের ফজিলত অর্জন করতে পারে তার মাধ্যম সম্পর্কে অসাধারণ কিছু আলোচনা ফুটিয়ে তুলেছেন।
বই সম্পর্কে
হজ _যে শিক্ষা সবার জন্য। নামই যেনো বইটির সম্পর্কে পাঠাকের হৃদয়ে স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি দাঁড় করাতে সক্ষম। লেখক তার বইটির নামের ধারাবাহিকতা দিয়েই শুরু করেছেন।প্রথম ক’এক পৃষ্ঠা অনুবাদক, সম্পাদক ও লেখকের কথা দিয়ে শুরু হলেও ধিরে ধিরে বইটি এক ভিন্নরূপ ধারণ করে।প্রথম দিকে হজ্জের বিধান, উপকারিতা আলোচনার পর এক অন্যরকম শিরোনামে শুরু হয় আলোচনা।
‘হজ কিভাবে পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়’ শিরোনামটি লেখা পড়ে আমি খুবই অবাক হয়েছি।বিশেষ করে যখন লেখক হজের প্রতিটি আহকাম ও আরকানকে কেয়ামত দিবসের প্রতিটি কাজের সাথে তাসবিহ দিয়েছেন।যেমন ‘সাফা-মারওয়া পাহাড়ের সায়ি’ কেয়ামত দিবসে নবীগনের কাছে দৌড়-ঝাঁপ করার মত আরও বিভিন্ন তাসবি।কি অবাক!
হজের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বুঝিয়ে মানুষকে হজের প্রতি আকৃষ্ট করার পর যে সকল মানুষ হজ্ব করতে অক্ষম তাদের নিয়ে তিনি আলোচনা শুরু করেন হজের দিনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত গুলো একটি সাধারণ অধ্যায় আলোচনার পর তিনি বিভিন্ন ফজিলত এর কাজ সমূহ নিয়ে প্রায় দশটি পয়েন্টে আলোচনা করেন। এরপর একটি চার্ট তৈরি করে দেন, যার মাধ্যমে সে সমস্ত কাজ গুলো করার সহজ হয়ে যায়। ফলে যে কোন সাধারণ মানুষ হজের দিনের ফজিলত গুলোকে নিজ অবস্থানে থেকেও অর্জন করতে পারেন।
‘এই হল ১০টি কাজ’ ও ‘পরিশিষ্ট’ এর আলোচনা ছিল অত্যন্ত চমৎকার।
অনুভূতি
বইটি আস্তে ধীরে, ধীরে ধীরে শেষ করছিলাম আর নিজের মাঝে অন্যরকম পরিকল্পনা করছিলাম। এতদিন তো বুঝতাম যারা হজে যায় তারাই হয়তো হজের নাফা অর্জন করতে পারে অথচ এটি শেষ করার পর বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহ তাআলা তার শত মাইল দূরে থাকা অন্যান্য বান্দাদের জন্য এর ফজিলত অর্জন করার এক অন্যরকম ব্যবস্থা রেখেছেন। যাতে করে মুমিনেরা হাজীদের মত নিজেদের শেষ ঠিকানাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিতে পারে। বইটি আকারে বেশ ছোট। তবুও বেশ উপকারী। হজ সম্পর্কে আমার মাঝে নতুন ধারণার জন্ম দিয়েছে বইটি।
হজ সম্পর্কে যাদের ধারনা একেবারেই নেই তাদের জন্য বইটা অনেক উপকারী হয়ে দাঁড়াবে।উপকারী হবে যারা হজের আহকাম সম্পর্কে হজের ফজিলত সম্পর্কে খুব কমই জানে তাদের জন্য। বইটি হজ সম্পর্কে আপনার মাঝে এক নতুন ভাবনার জন্ম দিতে পারে।
বই সম্পর্কে
বইটি অনেক চমকপ্রদ ছিল। সরল ভাষায় অনূদিত। অনুবাদ করেছেন শায়খ মহিউদ্দিন কাসেমী সাহেব। বই আঁকাড়ে অনেক ছোট তাই পড়তে সুবিধা হয়।(আমার আদি অভ্যাস হলো পেপারনব্যাক বই গুলোকে আমি অনেকটাই অপছন্দ করি), কারণ তা পড়ার এবং ক্রয় করার ক্ষেত্রে সহজ,সহজ হলেও সৌন্দর্যতা খুব তাড়াতাড়ি হারিয়ে ফেলে। তবে এই বইটির বাইন্ডিং মজবুত ছিল। ফোল্ডিং পেপার ব্যাক হলে ভালো হতো কারণ এতে বইয়ের প্রচ্ছদের ক্ষয়ক্ষতি খুব কম হয়।এই বই পড়ার মাঝপথেই অনেকটা খারাপ হয়ে গিয়েছে তবে চার দিক বিবেচনায় বইটা অনেক ভালোই ছিল। দামটা আকারের দিক থেকে বেশি মনে হলেও তা পড়া শেষে সহনশীল মনে হলো। যদি আমি এটা হাদিয়া পেয়েছি।
______________________________
* সূরা আল-ইমরান : ৯৭নং আয়াত
* সহিহুল বুখারি : ৮
* সূরা আল-হজ : ২৮নং আয়াত
Abdul Wares – :
বইটি পড়ার পর হঠাৎ আমার মাথায় প্রশ্ন চলে এল আসলেতো যারা হজ করতে পারেননা অর্থাৎ যাদের সামর্থ্য নেই হজ করার তাদের কি হবে?
অর্থনৈতিকভাবে সামর্থ্যহীন কিন্তু শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল বিশেষ করে আরাফার দিনে রোজা রাখাসহ অসংখ্য আমল বইটিতে কোরআন হাদীসের আলোকে যেভাবে আলোচনা করা হয়েছে আসলে তা সকলের জন্য জানা একান্ত প্রয়োজন।
বইটি পড়ে অনেক ভাল লেগেছে। আল্লাহ যেন আমাদের আমল করার তৌফিক দান করেন সেই সাথে লেখক সহ বইটি আমাদের হাতে পৌছাতে যাদের অবদান রয়েছে আল্লাহ তা’য়ালা সবাইকে জাজায়ে খায়ের দান করুন। আমিন।
সুফিয়ান আহমেদ – :
হজের মধ্যে আল্লাহর বিভিন্ন কুদরত দর্শন, বিভিন্ন নবিদের স্মৃতি রোমন্থন, আল্লাহর প্রেমে হারিয়ে যাওয়া, ইবরাহিমি চেতনায় উজ্জীবিত হওয়াসহ অগণিত প্রাপ্তি রয়েছে। একটি হজ একজন মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। জীবনের পাপ-পঙ্কিলতা সব ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে জীবনকে আমূল পাল্টে ফেলতে সাহায্য করে। আর এজন্যই ইসলামে এর রয়েছে বিশেষ অবস্থান। ইসলামের প্রধান পাঁচটি স্তম্ভের একটি বলে এটাকে বিবেচিত করা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, হজের অনেক অনেক প্রাপ্তি ও উপকারিতা থাকলেও এটা তো মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের ওপর ফরজ হয়; আর তা-ও আবার জীবনে একবার মাত্র। তাহলে এমন একটি ইবাদতকে ইসলাম তার অন্যতম একটি মূলস্তম্ভ হিসেবে কিভাবে নির্ধারণ করল?!
এ প্রশ্নটি দীর্ঘদিন ধরে আমারও ছিল। বিষয়টির রহস্য পুরোপুরি বুঝা বেশ দুষ্কর ছিল। আল্লাহ জাজায়ে খায়ের দান করুন ড. রাগিব সারজানিকে। তিনি ছোট্ট একটি পুস্তিকাতে অত্যন্ত সহজ ও সারগর্ভ আলোচনায় বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ জবাব দিয়েছেন। আকলি ও নকলি দলিলাদি তুলে ধরে প্রমাণ করেছেন যে, হজ শুধু হাজিদের জন্যই নয়; বরং এর ব্যাপ্তি সর্বজনীন। হাজি ও নন-হাজি সবার জন্যই এতে রয়েছে চমৎকার সব শিক্ষা। হাজি ছাড়া অন্যদের জন্যও যে এতে কত শিক্ষা থাকতে পারে, তা ড. রাগিব সারজানির এ সংক্ষিপ্ত বইটি না পড়লে অজানাই থেকে যেত।