মেন্যু
fitnar dine nirjonbash

ফিতনার দিনে নির্জনবাস

অনুবাদ: মাসউদ আলিমী পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১২ পৃষ্ঠা (পেপার ব্যাক কভার) শাইখ আব্দুল কাদির জিলানি রহ. বলেন: “যদি কেউ যথাযথভাবে সব নিয়ম মেনেও মানুষের সঙ্গ ত্যাগ করে, নির্জনতা অবলম্বন করে—তবু শরিয়তে তার জন্য এতটুকু... আরো পড়ুন
পরিমাণ

125  167 (25% ছাড়ে)

পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন
পছন্দের তালিকায় যুক্ত করুন

2 রিভিউ এবং রেটিং - ফিতনার দিনে নির্জনবাস

5.0
Based on 2 reviews
5 star
100%
4 star
0%
3 star
0%
2 star
0%
1 star
0%
 আপনার রিভিউটি লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  1. 5 out of 5

    Rizwana Tasnim:

    লেখক পরিচিতিঃ ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া এ নামেই প্রসিদ্ধ তিনি। বাগদাদ শহরে জন্মগ্রহন করেন। বাগদাদ শহরেই তাঁর ইলমের হাতেখড়ি। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন, হারেস ইবনু উসামা, মুহাম্মদ ইবনু খালফ ওকি, আব্বাদ ইবনু মূসা আল খাতলি প্রমুখ।
    তিনি অনেক কিতাব রচনা করেন। অন্যতম হলো আল আখলাক, আল আদাব, আল জীরান, আল আফউ আর অনেক কিতাব। মহান আলিম ২৮১ হিজরিতে ইন্তিকাল করেন।

    বইয়ের ধরণঃ
    নফসের কুমন্ত্রনা,অসৎ সঙ্গ, শয়তানের ধোকা,বেদ্বিন পরিবেশের কারণে নানা রকম বিশৃঙ্খলার মাঝে পতিত হতে হয় প্রতিনিয়ত। অর্থাৎ ফিতনা (বিশৃঙ্খলা)। বর্তমানে আমরা শেষ জামানায় উপতিত হয়েছি। চারদিকে নানা রকম ফিতনায় জর্জরিত মুসলিম উম্মাহ।
    নিঃসঙ্গতা ও নির্জনতার প্রতি উদ্ভুদ্ধ ও উৎসাহমূলক বইটি। মাখলুকের সাথে অতি প্রিয়ভাজন,মাত্রাতিরিক্ত সামাজিকতার ব্যাপারে নিরুৎসাহক। সালাফাগণ শরিয়ত সম্মত ভাবে নির্জনতা অবলম্বন করেছেন,নিজেদের কিভাবে দুনিয়াবিমুখ রেখেছেন, ফিতনার দিন গুলোতে কিভাবে নিজেকে লোক সমাগম হতে দূরে রাখতে হয় এ নিয়েই রচিত বইটি।

    বই আলাপনঃ
    বইটির মূলভাবে উঠে এসেছে মূলত সালাফগণের নির্জনতা অবল্বমনের দিক গুলো,তাঁদের চিন্তাধারা,দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি,অধিক মেলামেশায় নফসে কাঠিন্য চলে আসা।

    নির্জনতা অবল্ম্বন আর বৈরাগী ও সন্ন্যাস গ্রহনের মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক___যথেষ্ট ব্যবধান। শরীয়ত সম্মত যে নির্জনতা সেটি হতে হবে প্রয়োজনের ভিত্তিতে।

    আল্লামা ইবনুল জাওযি রহিমাহুল্লাহ তার “তালবীসু ইবলিশ” নামক গ্রন্থের ৩৭৭ নং পৃষ্ঠায় বলেন____
    প্রথম সারির সালাফগন মানুষের কাছে নির্জনতা এবং একাকিত্ব অবলম্বন করেছিলেন ইলম ও ইবাদাতের জন্য। তাঁদের নির্জনতা অবলম্বন জুমুয়াহ,জামায়াত, ঈদের সালাত, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া, সত্য প্রতিষ্ঠায় বাধা ছিলো না।বরং তাদের নির্জনতা ছিলো অনিষ্ট ও খারাপ লোকদের থেকে, অসৎ সঙ্গ হতে।
    সালাফদের মূল্যবান উক্তির সমন্বয়ে বইটি। প্রতিটি পাতায় মুক্তোর চেয়েও দামি সব কথন।

    আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক রহিমাহুল্লাহ বলেন____
    নির্জনতা হলো মানুষের সাথেই বসবাস করা। যদি তারা আল্লাহর যিকিরে মগ্ন হয়, তাহলে তাদের সঙ্গ দেওয়া, আর যদি অন্য কিছুতে লিপ্ত হয়,তাহলে নিজেকে বিরত রাখা (আসসমতু লি ইবনু আবিদ দুনিয়া:৩৭,সনদ হাসান)

    ভূহাইব ইবনুল ওয়ারদ রহিমাহুল্লাহ বলেন__
    ” আমি নির্জনতাকে পেয়েছি জিহ্বার মাঝে”(আসসমতু লি ইবনু আবিদ দুনিয়া:৩৮,সনদ হাসান)।
    এমন আরও কিছু দামী কথার সমন্বয়ে বইটি।

    বইটি কেনো কিনবেনঃ
    যারা মূলত নিরিবিলি একা থাকতে চায় এবং রবের যিকিরে মগ্ন থাকতে আগ্রহী,দুনিয়াবী নানা ফিতনা হতে নির্জনতা অবলম্বন করতে চান তারা নিঃসন্দেহে বইটিকে সঙ্গী করে নিতে পারেন। আমি বলবো অবশ্যই কিনবেন। ঈমানকে মজবুত করতে, কখন কোথায় কি ভাবে কথোপকথন করতে হবে সুন্দর এক আলোচনা বইটিতে উঠে এসেছে। এই ফিতনার যুগে এমন একটি বই পড়া আবশ্যক বলে মনে করি।

    বইটির স্তর বিন্যাসঃ স্তর বিন্যাস করা নেই বইটিতে। ভূমিকাতেই লেখক নির্জনতার গুরুত্ব এবং শরীয়াহ মোতাবেন নির্জনতার স্তর তুলে ধরেছেন। শরীয়াহ মোতাবেক নির্জনতা কখনো ওয়াজিব,কখনো মুস্তাহাব। প্রথম দিকেই নির্জনতার উপকারিতা,মেলামেশা হতে পৃথক থাকার শ্রেষ্ঠত্ব, নির্জনবাসের আদব এসবের আলোচনা রয়েছে।

    বইটির ভালোলাগাঃ
    পুরো বইটিই একটি ভালোবাসা। প্রতি পৃষ্ঠায় মূল্যবান উপদেশ বাণী গুলো হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে। নিজের প্রতি ধিক্কার এসেছে, কোথায় আছি! কি ফেতনায় আছি।
    ভালো লাগার দুটো লাইন তুলে ধরছি___
    ১) সুমাইত বিন আজলান রহিমাহুল্লাহ বলেন___
    ” আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার সাথে নিঃসঙ্গতাকে জুরিয়ে দিয়েছেন,যেন তার অনুগত বান্দাদের জন্য এটাই সঙ্গী হয়। ( আর রিসালাতুল মুগনিয়াহ লি ইবনিল বান্না:৪৬)

    ২) ইবরাহিম ইবনু আব্দুল মালিক রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত,একজন আলিম বলেন__
    যখন তুমি দেখবে আল্লাহ তা’আলা তোমাকে সৃষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছেন,তখন বুঝে নিও__তিনি তোমাকে সঙ্গ দিতে চাচ্ছেন।( আল উযলাতু খাত্তাবি:পৃ-৮২,আল মুজালাসাতু লিদ্দীনাওয়ারী:২২৪)

    পাঠ্যনুভূতিঃ
    বইটি পড়াকালীন সময়ে সালাফদের উক্তিতে ঘোর লাগছিলো। নিজের মাঝে প্রচন্ড খারাপ লাগা কাজ করছিলো। এক কথায় বলবো নিজে বইটি পড়ুন মনোযোগ দিয়ে অন্যকে হাদিয়া দিন। পাতলা বই হওয়া সত্ত্বেও বইটির লেখা গুলো পুরুত্ব বেশ।
    ভূমিকায় গুরুত্ব না তুলে ধরে আরেকটু পয়েন্ট করে লেখক তুলে ধরে পারতেন। এতে মনে হয় সৌন্দর্য বাড়তো আর পড়তেও সুবিধা হতো।

    লেখক এবং পাবলিকেশনের প্রতি কৃতজ্ঞ যুগোপযোগী বইটি আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। লেখকের ইলমে ও কলমে আল্লাহ বারাকাহ দিন।

    4 out of 4 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No
  2. 5 out of 5

    tonney23:

    বর্তমান যুগ হলো ফিতনার যুগ,যে যুগে বৃষ্টির ন্যায় ফিতনা ঝরে পড়ে।
    এইসব ফিতনা থেকে বাঁচার উপায় হলো,যতটা সম্ভব নির্জনতা অবলম্বন করা, কম কথা বলা ও লোকের সঙ্গ ত্যাগ করা।
    কিন্তু ঢালাও ভাবে সামাজিকতা বর্জন করার কিছু অপকারিতাও আছে। কারন একজন ব্যক্তির উপর তার পরিবার পরিজনের হক আছে, ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা আছে যা মেনে চলা আবশ্যক।
    বইটিতে সালাফরা নির্জনতার ব্যাপারে যে পন্থা অবলম্বন করতেন, সে বিষয়ে ছোট ছোট ঘটনা উল্লেখ আছে।যারা লৌকিকতা অপছন্দ করেন ও নির্জনতা ভালবাসেন, তাদের জন্য খুবই অনুপ্রেরণা জোগাবে বইটি।

    বইটির পজিটিভ দিকঃ

    ১.দুনিয়াবিমুখ করবে ও ইবাদাতের দিকে আগ্রহ তৈরি করবে,
    ২.বইটিতে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনা অনুপ্রেরণা দিবে
    একা থেকে আল্লাহ অভিমুখিতার,
    ৩.ফিতনা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে ধারনা দিবে,
    ৪.একাকী হতাশায় ভোগা মুসলিমের জন্য বইটি আশার আলো হবে বলে মনে করি,
    ৫.বইটিতে নির্জনতার সুফল ও কুফল -দুটি দিকেই আলোকপাত করা হয়েছে,
    ৬.বইটি হালকা, পাতলা, সহজে বহনযোগ্য,
    ৭.প্রচ্ছদটা খুব সুন্দর, মা শা আল্লাহ।

    নেতিবাচক দিকঃ

    বইটা একটু ছোট আর কোন নেতিবাচক দিক পাইনি।

    যা না বললেই নয়,সেটা হলো..

    সীরাতের বই মানেই আমার কাছে বিশেষ কিছু। আমি নির্জনতা বিষয়ক সেকুলার বই পত্র কিছু পড়েছি, কিন্তু সেসব পড়ে কেবল হতাশ লেগেছে। এই প্রথম নির্জনতা বিষয়ক পজিটিভ কোন বই হাতে পেলাম। বইটা খুবই ইন্সপায়ারিং লেগেছে।আমি সামাজিক না, বা এসব বিষয়ে আদিখ্যেতা দেখাতে পারছিনা, এর মানে এই না আমি ব্যর্থ।

    অধিক মানুষের সঙ্গ, আল্লাহ থেকে মনকে দূরে সরিয়ে দেয়,দুনিয়াবী চিন্তায় মনকে বিক্ষিপ্ত করে দেয়। যাদের দুনিয়াবি চাহিদা উচ্চ, তারা না হয় এসবের পিছনে দৌড়িয়ে তৃপ্তি পায়। কিন্তু যারা আখিরাতের কথা চিন্তা করে, শাস্তির ভয় করে, তারা একাকীত্ব ভালবাসে, প্রিয় রবের ক্ষমা ও সান্নিধ্যে সময় কাটাতে চায়। এতেই রয়েছে হৃদয়ের পূর্ণতা।
    তবে,আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত একাকীত্বে রয়েছে শুধু শূন্যতা আর হাহাকার।এটা খুব ভয়ংকর ব্যাপার।

    বইটা নির্জনতা প্রিয় সকল মুসলিম ভাইবোনদের পড়ার অনুরোধ রইল।
    একাকীত্ব মানেই হতাশা নয়, একাকীত্ব মানুষকে আল্লাহর দিকেও ধাবিত করে।

    10 out of 10 people found this helpful. Was this review helpful to you?
    Yes
    No