কালের বিবর্তনে ফিলিস্তিনের ইতিহাস
ইসলামী ইতিহাসের হাজারও কাহিনী থেকে আমরা আপনাদের জন্য নির্বাচন করেছি এমন এক বিশেষ কাহিনী, বর্তমান যুগে যা অধ্যয়ন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরি। তা হল ফিলিস্তিনের কাহিনী। ফিলিস্তিনের কাহিনী মানবেতিহাসের এমন এক অধ্যায়, যা অধ্যয়ন ও আত্মস্থ করা মুসলমানদের আবশ্যক। এতে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টান্ত আর উপদেশ। রয়েছে এমন অজস্র শিক্ষা, যা থেকে আমরা উপকৃত হতে পারি এখন, এবং নিকট ও দূরবর্তী ভবিষ্যতে।
কেউ কেউ মনে করেন, ফিলিস্তিন ইস্যু একটি ভূখণ্ডগত বিষয়; যা এতান্তই ফিলিস্তিনীদের নিজস্ব ব্যাপার। যেহেতু ফিলিস্তিনীরা প্রতিনিয়ত নানাবিধ ঘটনার সম্মুখীন হন, তাই এই অধ্যায় নিয়ে পড়াশোনা তাদেরই প্রধান কর্তব্য।
হে মুসলিম ভ্রাতৃবর্গ! ফিলিস্তিন ইস্যু একটি সর্বব্যাপী ইসলামী ইস্যু। এমন এক ইস্যু যা প্রত্যেক মুসলমানকে উদ্বিগ্ন করে রেখেছে। কেননা, ফিলিস্তিন ইস্যু প্রথমত আকিদার ইস্যু। আর আকিদাসংক্রান্ত বিষয় এমন, যা পূরণ না করে কোনো মুসলমান জীবনযাপন করতে পারে না। অতএব, ফিলিস্তিন প্রত্যেক ওই মুসলিমের ইস্যু, যে নিজের ধর্মের উপর শ্রদ্ধাশীল, আমাদের রব তাঁর কিতাবে যা বলেছেন, তার উপর শ্রদ্ধাশীল, আমাদের হাবীব হাদীসে যা বলেছেন, তার ওপর শ্রদ্ধাশীল, ইতিহাসের ধাপে ধাপে এই উম্মতের সন্তান উলামা-সুলাহা ও মুজাহিদরা যা করেছেন, তার উপর শ্রদ্ধাশীল।
বিভিন্ন দলিলের আলোকে প্রমাণিত যে, এই ভূখণ্ড পবিত্র। এটা মুসলমানদের প্রথম কেবলা এবং তৃতীয় হারাম। এখানে রয়েছে মসজিদে আকসা। এটা এমনই গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ যে, হাদীসের ভাষ্যমতে মক্কার মসজিদে হারাম, মদীনার মসজিদে নববী এবং ফিলিস্তিনের এই মসজিদ বাদে আর কোনো মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে না। ফিলিস্তিনের ভূমি কুরআনের একাধিক বিবরণমতে বরকতময় অঞ্চল।
ফিলিস্তিনের কাহিনী নির্বাচনের অন্যতম আরেক কারণ, ফিলিস্তিনের কাহিনীর আলোকে আমরা অধ্যয়ন করব পুরো ইসলামী ইতিহাস। মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের প্রতিটি ধাপ এই ভূখণ্ড দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। রসুল ও খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ থেকে ইসলামের আলোকে শাসনকারী প্রতিটি সাম্রাজ্য এই ভূখণ্ড হয়ে অতিবাহিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে আমরা বিচরণ করব মানবেতিহাসের প্রতিটি পরতে পরতে। শুধু ইসলামী ইতিহাসই নয়, বরং ফিলিস্তিনের ইতিহাস থেকে আমরা জেনে নেব পারসিক, রোমান, অ্যাসিরিয়ান, ব্যাবিলন ও ফারাওদের ইতিহাস। এমনইভাবে ফিলিস্তিনের ইতিহাস ধরে আমরা বিচরণ করব আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসেও। ঘাঁটাঘাঁটি করব ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানিসহ বহু আধুনিক রাষ্ট্রের ইতিহাস।
এই বরকতময় রাষ্ট্রের ইতিহাসে দুনিয়ার যে রাষ্ট্রেরই রয়েছে কোনো না কোনো সম্পর্ক কিংবা কোনো প্রকারের রেষারেষি, সেগুলোর ইতিহাসও আমরা জেনে নেব।
সেই সাথে আমরা আলোচনা করব চলমান ফিলিস্তিন সংকট নিয়েও। কেননা, ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে এত অধিক পরিমাণে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, যা অন্য যেকোনো ইস্যু নিয়ে চালানো অপপ্রচারের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। জায়নবাদীদের দখলে রয়েছে ভয়ঙ্কর মিডিয়া শক্তি। এই মিডিয়া শক্তির ব্যবহার করে ফিলিস্তিনের ইতিহাসে ঘটানো হয়েছে এক বড় ধরণের বিকৃতি। সেই বিকৃতির ধুম্রজালে আচ্ছন্ন হয়েছে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবাই।
এসব বিষয় সামনে রেখেই আজ আমরা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি এই গ্রন্থ। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের পশ্চাতে আমাদের রয়েছে এক মহৎ উদ্দেশ্য। আল্লাহ কবুল করুন।
– রাগিব সারজানি
-
-
hotশিকড়ের সন্ধানে
লেখক : হামিদা মুবাশ্বেরাপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন430 ৳314 ৳পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৯৬ টি কভার: পেপার ব্যাক ‘Know ...
-
hotঅবাধ্যতার ইতিহাস
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন400 ৳292 ৳যেভাবে আর যে কারণে ধ্বংস হয়েছে ...
-
save offইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা
লেখক : হেদায়াতুল্লাহ মেহমান্দপ্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন414 ৳302 ৳'ইতিহাসের আয়নায় বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা' বইটি মূলত ...
-
hotইসলামের ইতিহাস (নববী যুগ থেকে বর্তমান)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ500 ৳370 ৳অনুবাদক: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক সম্পাদক: মীযান ...
-
hotভারতবর্ষে মুসলিম শাসন : হাজার বছরের ইতিহাস
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম770 ৳385 ৳ভাষান্তর : মুহাম্মাদুল্লাহ ইয়াহইয়া অতিরিক্ত টীকা সংযোজন ...
-
save offলস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি (ইসলামের হারানো ইতিহাস) (পেপার ব্যাক)
লেখক : ফিরাস আল খতিবপ্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন300 ৳225 ৳লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’র ভাষা প্রাঞ্জল ও ...
-
hotসীরাত বিশ্বকোষ (১১ খণ্ড)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার11,000 ৳5,500 ৳মোট খণ্ড ১১ এবং পৃষ্ঠাসংখ্যা : ...
-
hotনবীজির পাঠশালা ﷺ
লেখক : ড. আদহাম আশ শারকাবিপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আসলাফ415 ৳290 ৳অনুবাদক – মুজাহিদুল ইসলাম মাইমুন সম্পাদনা – ...
-
featureমুসলিমজাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে (চার খণ্ড)
লেখক : ড. রাগিব সারজানীপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল হাসান1,450 ৳অনুবাদক : আবদুস সাত্তার আইনী (১ম, ...
-
hotআন্দালুসের ইতিহাস (দুই খণ্ড)
লেখক : ড. রাগিব সারজানীপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল হাসান1,300 ৳650 ৳আন্দালুস। অতীত-পৃথিবীতে একটি সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত ...
-
Sumaiya Afrin – :
এমন কঠিন সময়ে বলতে গেলে অনেকটা ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়েই―ফিলিস্তিনিদের সত্য ও সুন্দর অতীতের ইতিহাস ও বর্তমান ইতিহাসের সাথে মানুষের সুনিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে খ্যাতনামা দ্বীনি শাইখ, লেখক ও গবেষক ড. রাগীব সারজানি রচনা করেন এক দেদীপ্যমান আলোকবর্তিকা ‘কিস্সাতু ফিলিস্তিন’। যে গ্রন্থটি ‘হুদহুদ প্রকাশন’ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে ‘কালের বিবর্তনে ফিলিস্তিনের ইতিহাস’ এই শিরোনামে। যার সরল অনুবাদক লেখক আব্দুর রহমান আযহারী হাফিজাহুল্লাহ।
মুসলিমদের কাছে ফিলিস্তিন নামেমাত্র কোনো শব্দ কিংবা রাষ্ট্র না। এর কারণ বাইতুল মাকদিস আমাদের প্রথম কিবলা,তৃতীয় হারাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনুল কারিমে একাধিকবার ফিলিস্তিনের চারপাশের ভূমিকে বরকতময় ও একে পূর্ণময় ভূখণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর অনুগ্রহে নবি করীম ﷺ মক্কা থেকে যেখানে ভ্রমণ করেন। আর এখানেই খুঁজে পায় পূর্বসূরীদের পদছোয়া। তাঁদের দেখে চক্ষুশীতল করে দুই রাকাআত সালাত আদায় করে প্রশান্তির সাথে। এই মসজিদুল আকসা থেকেই অতঃপর ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন রাসূলুল্লাহ ﷺ।
সোনালি অতীতের সেই পদচিহ্ন মুছে যাচ্ছে আজ রক্তশ্রোতে কিংবা ইতিহাস বিকৃতির সাথে। ফিলিস্তিনের সদ্য ফোটা ফুলগুলোও ঝরে পড়ছে আজ বুলেটের আঘাতে আঘাতে। আজকের এই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়া ফিলিস্তিনের সেই সোনালি অতীতকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আঞ্জাম নিয়েছেন ড. রাগিব সারজানি।
আলোচনার শুরুতেই উঠে এসেছে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কেন অধ্যায়ন করা প্রয়োজন সেই বিষয়টি। যাদের মনাকাশে দ্বিধা কিংবা সংশয়ের কালো ছায়া ছিল বইটির মাঝে বুঁদ হওয়া নিয়ে, এইটুকু পড়ে তাদের আকাশটা সাদার শুভ্রতা কিংবা স্বচ্ছ নীল রঙে ছেয়ে যাবে।
সূচিপত্রে চোখ বুলাতেই চোখে পড়ে, প্রাচীন ব্রোঞ্জ যুগ থেকে ইহুদি সম্প্রদায়ের ফিলিস্তিনের ভূমিতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়ার ইতিবৃত্ত। ধাপে ধাপে নববী যুগ, খুলাফায়ে রাশিদিনের উজ্জল সময়কে ছুঁয়ে দিয়ে পৌঁছে গেছে সেলজুক, মামলুক, উসমানী খিলাফতের সময়ে ফিলিস্তিনের ইতিহাস পর্যন্ত। এরপর ক্রুসেডার বাহিনী ও বাইতুল মুকাদ্দাসকে ঘিরে এই বাহিনীর পদক্ষেপগুলো, ইহুদি-মুসলিম সংঘর্ষ, ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা থেকে বর্তমান পর্যন্ত সুসজ্জিত করা হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে, ফিলিস্তিনের ওল্ড ওয়ার্ল্ড অর্ডার থেকে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার পর্যন্ত আলোচ্য বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
শর্ট পিডিএফ পড়ে অনুমেয়, সহজ,সরল সাবলীল ভাষার বুননে লেখক সুনিপুণ হাতে তথ্যবহুল আলোচ্য এই গ্রন্থটি গড়েছেন। বিকৃত ইতিহাসের বেড়াজাল থেকে মুসলিম উম্মাহকে বের করে সঠিক ইতিহাসের আয়নায় দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনের সোনালি অতীতসহ বর্তমানকে যা ―বইটির গ্রহণযোগ্যতা ও বিশেষত্ত্বকে বাড়িয়ে দিয়ে পাঠকমহলে করেছে আরো সুখপাঠ্য ও গুঞ্জনের সৃষ্টি।
বইটি ইতিহাসপ্রেমী ও ফিলিস্তিন বিষয়ে সঠিক ইলম অর্জনে আগ্রহীদের সামনে এমন এক নতুন দ্বারের উন্মোচন করবে। যেই দ্বার খুলে দিলে আলো এসে সব অন্ধকার, গোমরাহীকে নিশ্চিহ্ন করে আলোর পথ দেখাবে। সর্বোপরি, ফিলিস্তিন ইস্যু যে মুসলিমদের আকিদাগত ইস্যু তা উপলব্ধি করতে এবং মুসলিমদের একজোট হয়ে ইহুদিদের হাত থেকে ফিলিস্তিন জয় করার কথাও ভাবিয়ে তুলবে।
এমন একটি বই যাদের অক্লান্ত শ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি তাদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে— দুআ ও ভালোবাসা।
rihanhossainkhan – :
—————————————-
যে জাতি তার নিজের অতীত ইতিহাস সম্বন্ধে কোনো ধারণা রাখে না বা তা থেকে কোনো জ্ঞান আহরণ করে না, সে জাতি কখনোই চূড়ান্ত শীর্ষে পৌছাতে পারে না। অথচ মুসলমানদের সুদীর্ঘ বীরত্বগাথা সোনালী ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও আজ তারা ইতিহাস বিমুখী। ফলাফলস্বরূপ – একের পর এক ভূখণ্ড হাতছাড়া হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডটি আমাদের হৃদয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও আমরা কেবল ইহুদী মদদপুষ্ট পশ্চিমা মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত সংবাদ এবং ফিলিস্তিন নামের সঙ্গে পরিচিতির মাধ্যমেই নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছি। এ থেকেই বোঝা যায়, মুসলমান জাতি এখনো ঘুমিয়ে আছে। আর সেই সমস্ত ঘুমন্ত মুসলমানদেরকে টেনে তোলার জন্য এবং ফিলিস্তিনকে বিজিত করার লক্ষ্যে ড. রাগিব সারজানীর এক অনবদ্য গ্রন্থ ‘কালের বিবর্তনে ফিলিস্তিনের ইতিহাস’ বাংলা ভাষায় হুদহুদ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
◾বই কথন-
—————————–
বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিকে ৩৯টি শিরোনামের মাধ্যমে সুসজ্জিত করা হয়েছে। যার শুরুর দিকে প্রাচীন ও মধ্য ব্রোঞ্জ যুগে ফিলিস্তিনের ইতিহাস আলোকপাত করা হয়েছে।
অতঃপর হযরত উমর রা. এর খিলাফতকালে ফিলিস্তিন বিজয়, ক্রুসেডারদের হাত থেকে সুলতান সালাহুদ্দিনের পুনরায় ফিলিস্তিন বিজিত হওয়ার ইতিহাস এবং নববী যুগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অর্থাৎ ফাতেমি, সালজুক, মামলুক, উসমানী ও এর পরবর্তী যুগে ফিলিস্তিনের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সবশেষে, লেখক আলোচনা করেছেন ফিলিস্তিনের ইহুদিকরণ অর্থাৎ ইহুদী দখলদারিত্ব, ফিলিস্তিনের সংগ্রাম, ফিলিস্তিনের ইতিহাস বিষয়ক পর্যালোচনা ইত্যাদি।
◾পর্যালোচনা-
——————————————
▪️বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিন সংকট চরম থেকে চরমতম আকার ধারণ করেছে। ফিলিস্তিন ভূখণ্ড মুসলমানদের হওয়া সত্ত্বেও ইহুদীরা তাদের বিকৃত ধর্মিও গ্রন্থ তৌরাতের ভিত্তিতে দাবী করছে এটি তাদের ভূমি। আবার খ্রিষ্টান সম্প্রদায় তাদের বিকৃত বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে দাবি করছে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড তাদের। এমনকি ইহুদী-খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ইতিহাস পর্যন্ত বিকৃত করে দাবি করছে এই ভূমি তাদের। লেখক তাদের ভিত্তিহীন দাবি, মিথ্যাচার ও বিকৃত ইতিহাসের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন এবং তুলে ধরেছেন প্রকৃত ইতিহাস।
▪️ফিলিস্তিন ছাড়া মুসলমান অস্তিত্বহীন। কেননা মসজিদে আল-আকসা, মহানবীর মেরাজ যাত্রা ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কোরআন এবং হাদীসে স্পষ্টকরে উল্লেখ করা আছে এই ভূখণ্ড কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আর তা কোনোভাবে হাতছাড়া হয়ে গেলেও পুনরুদ্ধার করা সকল মুসলমানের দায়িত্ব। লেখক বিষয়গুলো সামনে রেখেই ধারাবাহিকভাবে ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
▪️️ফিলিস্তিন সমস্যাকে আঞ্চলিক সমস্যা বলে জিইয়ে রেখে গোপনে একটু একটু করে জায়নবাদীরা এবং নব্য ক্রুসেডাররা যে নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, লেখক তা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এবং এ পর্যায়ে মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যা সূচিপত্র দেখলেই অনুমাণ করা যায়।
▪️ফিলিস্তিনের ইতিহাস অধ্যয়ন মানে শুধু ইতিহাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা নয় বরং ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ভ্রাতৃত্ত্ববন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, লড়াই করা, নিজ ভূমি শত্রুমুক্ত করার পথ খুঁজে বের করা। অর্থাৎ লেখক বারংবার এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে, আমাদের ভূমি আমাদেরকেই শত্রুমুক্ত করতে হবে।
▪️গ্রন্থটির উপস্থাপনা, রচনাশৈলী, শব্দচয়ন খুবই চমৎকার ছিল। এছাড়াও সাবলীল আর প্রাণবন্ত অনুবাদ পাঠককে দারুণভাবে মুগ্ধ করবে। ️এছাড়াও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পাদটীকা সংযোজন করা হয়েছে। যার ফলে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে।
পরিশেষে, ফিলিস্তিন তখনই মুসলমানদের হবে, যখন এই ভূমিকে ফিলিস্তিনি ভূমি না ভেবে নিজেদের ভূমি ভাবা হবে।
◾মতামত-
————————————
সূচিপত্র পড়ার সময় দুজন মুসলিম বীরের নাম চোখে পড়ার মতো ছিল। সে দুজন হচ্ছে – ইমাদুদ্দীন জঙ্গী রহ. ও নুরুদ্দীন জঙ্গীর নাম। উভয়ের নামের শেষ অংশ যৎকিঞ্চিৎ পরিবর্তন করে জিনকি করলে অধিকতর শ্রুতিমধুর হবে।
মুহাম্মদ রুবেল মিয়া – :
আমাদের তৃতীয় মাতৃভূমি! হ্যা, এটা আমাদের মাতৃভূমি। যে ভূমি অর্জন করতে গিয়ে আমাদের শহিদদের রক্ত ঝরেছে, যে ভূমিতে আমাদের প্রথম কিবলা অবস্থিত, যে ভূমির মালিকানা আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন, সেটাতো আমাদের মাতৃভূমিই!
যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিন ছিলো মুসলমানদের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু, মুসলমানদের ঐক্যের সর্বোত্তম মাধ্যম এবং মুসলমানদের গর্ব ও গৌরবের ভূমি। যুগের আবর্তে, মুসলমানদের অধঃপতনের সুযোগে ইয়াহুদিরা দখল করে নিয়েছে আমাদের ভালোবাসার ভূমি টুকুকে। শুধু তাই নয়, মুসলমানদের ভূমিতে থেকে মুসলমানদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে নির্যাতনের সর্বোচ্চটুকু!
ইয়াহুদিরা দাবি করছে এটা তাদের ভূমি, ক্ষনে ক্ষনে খ্রিস্টানরাও একে নিজেদের ভূমি দাবি করে বসে!
কিন্তু ফিলিস্তিনতো শুধু মুসলমানদের। ফিলিস্তিন মুসলমানদের ছিলো এবং ভবিষ্যতেও মুসলমানদের হবে, যদিও বর্তমানে আগ্রাসী শক্তি এর খানিকটা দখল করে রেখেছে। ফিলিস্তিন যে মুসলমানদের ভূমি তার সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। হ্যাঁ, ইতিহাসই সাক্ষ্য দেয় এ ভূমি শুধুই মুসলমানদের, অন্য কারো নয়।
ইতিহাসের গভীর সে আলোচনাগুলোই তুলে ধরেছেন মিশরের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ডা. রাগিব সারজানী। ইতিহাসের অলিগলি ঘেঁটে, ছেঁকে ছেঁকে তুলে এনেছেন মহাসত্যের দলিলগুলোকে। তারই আবদ্ধ পাঠ “কালের বিবর্তনে ফিলিস্তিনের ইতিহাস” বইটি।
বইটিতে লেখক ব্রোঞ্জ যুগ থেকে ইয়াহুদিদের দখলকাল পর্যন্ত আলোচনা করেছেন ফিলিস্তিনের ইতিহাস।
ব্রোঞ্জ যুগ থেকে শুরু করে খ্রিস্টান-ইহুদীদের সময়, খুলাফায়ে রাশেদার সময়কাল, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসি খিলাফত, সেলজুক সালতানাত, মামলুক সালতানাত, উসমানি খিলাফাত এবং শিয়া উবায়দিদের সময়কাল গুলোতে ফিলিস্তিনের পটভূমি, পরিস্থিতি, পরিবর্তন উঠে এসেছে বইটির আলোচনার মধ্যে।
বইটি আমাদেরকে দিবে ফিলিস্তিন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা, ফিলিস্তিন যে আমাদের ভূমি প্রমাণ করে দিবে ইতিহাসের দলিলপত্রের আলোকে।
বর্তমান সময়ে বইটি পাঠের প্রয়োজনীয়তা বোঝা যায় বইটির আলোচ্য বিষয় দেখেই। আশা করি বইটি ফিলিস্তিন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে বৃদ্ধি করবে এবং আমাদের ভূমি ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের উম্মাহকে শক্তি ও সাহস যোগাবে ইনশাআল্লাহ।