দারিদ্র্য বিমোচনে ইসলাম
অনুবাদকঃ শায়খ মাহমুদুল হাসান
পৃষ্টা সংখ্যাঃ ২০৮
হার্ডবোর্ড বাধাই
“দারিদ্র্য” নামক আপদ থেকে মুক্তির আশায় প্রাচীনকাল হতে চলছে মানবজাতির নিরন্তর লড়াই। আজও দারিদ্র্য বিমোচন প্রত্যেক রাষ্ট্র ও সরকারের মূল প্রতিপাদ্য কর্মসূচি। প্রতিদিন পৃথিবীর কোথাও না কোথাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ বিষয়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, সভা ও কর্মশালা। গৃহীত হচ্ছে নিত্য-নতুন কর্মসূচি ও পদক্ষেপ। তবে দারিদ্র্য নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না। দারিদ্র্র যেন ডালপালা ছড়িয়ে আরো বলবান হচ্ছে, হচ্ছে আরো বিস্তৃত, সম্প্রসারিত। কিন্তু একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায়, মদিনাভিত্তিক ইসলামি জনকল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কয়েক যুগের ভেতর ইসলামি খেলাফত অধ্যুষিত বিশাল জনপদ হতে দারিদ্র্য লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল। জাকাত গ্রহণের জন্য তখন লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইসলামি শাসন বিজয়ী হয়েছিল দারিদ্র্য বিরোধী লড়াইয়ে। আধুনিক যুগের মানুষের কাছে এ এক বিস্ময়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ বর্তমান যুগের মানুষ যেখানে দারিদ্র্য দূরীকরণে ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে রুক্ষ মরুচারীরা কী করে সফল হল? কোন নীতি ও পাথেয় গ্রহণের কারণে তারা বিজয়ী হল? ড. ইউসুফ আল কারজাবি “দারিদ্র্য বিমোচনে ইসলাম” বইতে এসব বিষয় অত্যন্ত নিখুঁত ও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। দারিদ্র্যের প্রতি ইসলাম ও অন্যান্য মতবাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলনামূলক পর্যালোচনা করেছেন এবং ইসলামের পূর্ণাঙ্গতা ও শ্রেষ্ঠত্বকে যুক্তিগ্রাহ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। একটা সফল রাষ্ট্রের জন্য দারিদ্র্য বিমোচনের বিকল্প নেই। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এই গ্রন্থটিকে আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার হিসেবে কবুল করুন।
-
-
hotইউ মাস্ট ডু বিজনেস
লেখক : শাইখ ড. তাওফিক চৌধুরিপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন60 ৳44 ৳চমৎকার এই বইটি মুসলিম অন্ট্রাপ্রানার নেটওয়ার্কের ...
-
hotসম্পদ গড়ার কৌশল (একজন মুসলিম উদ্যোক্তা হালাল পন্থায় যেভাবে সম্পদ গড়বেন)
লেখক : উমার সুলপ্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন350 ৳259 ৳সম্পদ গড়ার কৌশল আপনি কি ধনী মুসলিম ...
-
save offরিযিক নির্ধারিত উপার্জন আপনার দায়িত্ব
লেখক : শাইখ আলী তানতাভীপ্রকাশনী : হুদহুদ প্রকাশন70 ৳38 ৳
-
hotসুদ হারাম, কর্জে হাসানা সমাধান
লেখক : মোহাইমিন পাটোয়ারীপ্রকাশনী : ম্যাসেজ পাবলিকেশন্স325 ৳244 ৳সুদ হারাম, সুদের ৪টা প্রকারের নাম ...
-
save offসুদ: পরিষ্কার বিদ্রোহ
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল আশরাফ260 ৳161 ৳বর্তমান মুসলিম সমাজে সুদ নিয়ে বেশ ...
-
hotইসলামি ব্যাংকব্যবস্থার শুভংকরের ফাঁকি
লেখক : মোহাইমিন পাটোয়ারীপ্রকাশনী : ঐতিহ্য220 ৳180 ৳সময়ের পরিক্রমায় একের পর এক নতুন ...
-
hotস্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা
লেখক : ইমরান নযর হোসেনপ্রকাশনী : মুসলিম ভিলেজ80 ৳56 ৳আবু বকর ইবনে আবি মরিয়ম থেকে ...
-
save offগল্পে গল্পে অর্থনীতি
লেখক : মোহাইমিন পাটোয়ারীপ্রকাশনী : ঐতিহ্য380 ৳312 ৳গল্প হচ্ছে এমনই একটি জাদু, যা ...
-
mobarakro96 – :
ডঃ ইউসুফ আল কারযাভী সারাবিশ্বের মুসলমানদের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম। তার শতাধিক গবেষণাকর্ম ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা কে দারুণভাবে বেগবান করেছে। তিনি অতীতকে অস্বীকার করেননি, বর্তমানকে পরিত্যাগ করেননি, আবার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন। তিনি আধুনিক ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিষয়ে প্রচুর গবেষণা করেছেন। ইসলামে দারিদ্র বিমোচন একটি তথ্যসমৃদ্ধ মূল্যবান বই যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করবে।
অনেকেই দারিদ্র্যকে পবিত্র গণ্য করে। তারা মনে করেন, এটাআল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। পক্ষান্তরে স্বচ্ছলতা বিত্তসম্পদ মানুষকে অহংকারের দিকে ঠেলে দেয়। এ ধরনের ধারণা ইসলামী সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছে। অন্যদিকে পুঁজিবাদী নীতি মনে করে, দরিদ্র ব্যক্তি নিজেই এর জন্য দায়ী। তারা নিজেদের ইচ্ছামত ধন সম্পদ উপার্জন করে এবং ইচ্ছানুযায়ী ব্যয় করে। তারা মনে করে, দরিদ্রকে দান করা অনুগ্রহ এটা তার অধিকার নয়। মার্কসবাদী সমাজতন্ত্রীরা মনে করেন, ধনী ব্যক্তিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে, ব্যক্তিমালিকানা ধ্বংস করে করার মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। কারণ তারা তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এই ধরনের চিন্তা মালিক ও সম্পদের জন্য ভয়াবহ। ইসলামে দুনিয়া বিমুখতা যেমন দরিদ্র্যতা ও বৈরাগ্যবাদ গ্রহণযোগ্য নয়। দুনিয়া বিমুখতা হলো ওই ব্যক্তি, যে দুনিয়ার মালিক হয়েছেন ।এরপর তাকে হাতে রেখেছে, অন্তরে স্থান দেয়নি। ইসলাম ধর্ম ধনাঢ্যতাকে আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত মনে করেন এবং শুকরিয়া আদায় করতে বলে। দারিদ্রকে ইসলাম বিপদ মনে করে যা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতে হবে। কারন দারিদ্রতা আকীদার উপর, সচ্চরিত্র ও নৈতিকতার উপর, পরিবারের উপর, সমাজ ও স্থিতিশীলতার উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। এরপরে লেখক দারিদ্র্যবিমোচনে ইসলামের কি কি উপায় সমূহ আছে তা উল্লেখ করেছেন। প্রথম উপায়: শ্রম ।ইসলাম ভরসা করা কিংবা পরনির্ভরশীলতাকে অনুৎসাহিত করেছে এবং কাজ করার মাধ্যমে নিজের অবস্থার পরিবর্তনে উৎসাহিত করেছে।মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন বেদুইনকে বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি তার উঠকে বিচরণরত অবস্থায় রেখে আল্লাহর উপর ভরসা করেছিল ।তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছিলেন, উটটিকে বেঁধে রাখো এবং আল্লাহর উপর ভরসা করো। দ্বিতীয়উপায় :সচ্ছল আত্মীয়-স্বজন কর্তৃক দরিদ্রদের ভরণপোষণ অর্থাৎ আত্মীয়-স্বজনের যা হোক আছে যেমন উত্তরাধিকারী হওয়া তা যথাযথ পালন করা। ফকিহগণ, ভরণপোষণ বলতে যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা এরকম।১. খাদ্য ও পানীয় দেয়া।২. শীত-গ্রীষ্মের উপযোগী বস্ত্র ,বাসস্থান আসবাবপত্র ,বিছানা ও আনুষঙ্গিক খরচ।৩.সেবা করতে অক্ষম তার জন্য সেবক দেওয়া।৪. বিয়ের প্রয়োজন আছে এমন ব্যক্তির বিয়ে দেয়া।৫. স্ত্রীর ভরণপোষণ। তৃতীয় উপায়: যাকাত ।ইসলামে যাকাত দারিদ্র বিমোচনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা কুরআনে যাকাতের আটটি খাত এর কথা উল্লেখ করেছেন।যাকাত হলো বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা কিছুদিন আগে আমাদের পশ্চিমা বিশ্বে প্রকাশ ঘটে।যাকাত হলো দরিদ্রের অধিকার। চতুর্থ উপায় :বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে ইসলামী কোষাগারে পৃষ্ঠপোষকতা। যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদ, রাষ্ট্র কর্তৃক ওয়াকফ সম্পত্তি তত্ত্বাবধান, ফাই, খারাজ ও খনিজ সম্পদে অভাবী অসহায়দের অধিকার রয়েছে। পঞ্চম: যাকাত ব্যতীত অন্যান্য আর্থিক খাত। যেমন প্রতিবেশীর হক তারা যেন সাহায্য-সহযোগিতা পায়, ঈদুল আজহায় কোরবানি করা সেখান থেকেও যেন দারিদ্র ব্যক্তি একটি অংশ পায়, শপথ ভঙ্গের কাফফারা, যিহারের কাফফারা, ফিদিয়া, হাদী, ফসল তোলার সময় ফসলের হক, ফকির মিসকিনের যথেষ্ট পরিমাণ পাওয়ার অধিকার। ষষ্ঠ উপায়:ঐচ্ছিক সাদাকা এবং ব্যক্তিগত দান। পরিশেষে লেখক দারিদ্র বিমোচনের জন্য অন্যতম একটি শর্ত আরোপ করেছেন তাহলো, ইসলামী আইন কানুন ও ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা ।কারণ ইসলামী আইন কানুন ব্যতিত রাষ্ট্রীয়ভাবে দারিদ্র্যের উপর বিজয় লাভ সম্ভব নয়।
আমার মূল্যায়ন :বইটি পড়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি আমুল পরিবর্তন ঘটেছে। আমি ভাবতেও পারিনি লেখক এর এই বইটি বর্তমান সময়ের জন্য এত প্রাসঙ্গিক অপরিহার্য ।প্রত্যেকের বইটি পড়া উচিত বলে আমি মনে করি।