বাংলায় বাজে গির্জার বাঁশি
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১৪৪
বাঁধাই : হার্ড কাভার
মুফতি যুবায়ের আহমদ (দাওয়াহ ইনস্টিটিউট, মান্ডা, ঢাকা) এর ভূমিকা থেকে:
আমরা দাঈ জাতি। আমাদেরকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্যে। চাই সে হিন্দু হোক, হোক খ্রিস্টান, কিংবা মুসলমান। দুনিয়ায় আমাদের পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক করিয়ে দেওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন⸺
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ
কিন্তু আজ আমরা আমাদের উদ্দেশ্য ভুলে গেছি। ফলে আমরা ‘দায়ি’ জাতি রূপান্তরিত হয়েছি ‘মাদউ’তে। আমাদের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে খ্রিস্টবাদের দিকে। মুসলিমদের বানানো হচ্ছে খ্রিস্টান। কাদিয়ানি, বাহায়ি, শিয়া—আরও কত বাতিল ফিরকায় মুসলিমদের জাহান্নামি বানানো হচ্ছে! আর আমরা যারা নিজেদের ওয়ারিসে আম্বিয়া দাবি করি⸺পৃথিবীতে এসেছি মানুষের কল্যাণের জন্য⸺তারা আছি ঘুমিয়ে। আল্লাহ যদি কাউকে দ্বীনের কিছু খেদমত করার সুযোগ দিয়ে থাকেন, তাতেই আমরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলি।
মজার বিষয় হলো, মুসলিমদের যারা খ্রিস্টান বানাচ্ছে, তাদের নিজেদের ধর্মের দিকে মুসলিমদের আকর্ষণ করার মতো কিছু তাদের কাছে নেই। ফলে কুরআনের অপব্যাখ্যা করেই তারা মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে। আমরা দাওয়াতের ময়দানে দেখেছি এবং এমনও পেয়েছি যে, ইমাম সাহেব খ্রিস্টান। মানিকগঞ্জ এবং ঝিনাইদহে পেয়েছি পীর সাহেব খ্রিস্টান। শেরপুরে পেয়েছি এক মৌলভি সাহেব খ্রিস্টান। তারা মুসলমান থেকে খ্রিস্টান হয়ে ইসলামি পরিভাষা ব্যবহার করে মুসলমানদের খ্রিস্টান বানায়। বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে টাকার লোভ দেখিয়ে দলে দলে মুরতাদ বানায়। কোথাও আবার অন্য কোনো কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। মোটকথা, নানান রকম প্রতারণা করে মুসলিমদের ধর্মহীন করে।
এই যে আমাদের বিপর্যয়, এর মূল কারণ হলো⸺আমরা দাওয়াত ছেড়ে দিয়েছি, আমরা আমাদের কাজ ভুলে গিয়েছি, ফলে তারা দাওয়াত দিয়ে মুসলমানদের খ্রিস্টান বানাচ্ছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই বাংলায় বাজে গির্জার বাঁশি বইতে। লেখক ওমর আলী আশরাফ ভাই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন দাওয়াতের কথা। বইতে তার দাওয়াতি এবং ব্যক্তিগত সফরের বাস্তব চিত্র ও নির্ভুল তথ্য তুলে ধরেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এবং বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি পেশ করেছেন। তিনি যেমন এনজিও ও মিশনারি সমস্যা তুলে ধরেছেন, তার থেকে উত্তরণের উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই বই পড়ে পাঠকের দাওয়াতি স্পৃহা তৈরি হবে, ঈমান-রক্ষার চেতনা জাগ্রত হবে এবং উম্মতের প্রতি অন্তরে দরদ সৃষ্টি হবে। আল্লাহর পথে কাজের আগ্রহ তৈরি হবে এবং অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে।
-
-
featureপ্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স225 ৳কভার: হার্ড কভার পৃষ্ঠা: ১৬৮ বর্তমান যুগ হলো ...
-
hotডাবল স্ট্যান্ডার্ড
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার400 ৳280 ৳কিছু লোক ইসলামকে সে শত্রু হিসেবে ...
-
hotপ্রত্যাবর্তন
লেখক : সমকালীন সংকলন টিমপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন350 ৳245 ৳মুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়েও আমি হয়ে ...
-
hotআরজ আলী সমীপে
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন260 ৳182 ৳আরজ আলী মাতুব্বর। জন্মেছেন বরিশালে। প্রাতিষ্ঠানিক ...
-
hotজবাব (পেপার ব্যাক)
লেখক : আরিফ আজাদ, জাকারিয়া মাসুদ, ডা. শামসুল আরেফীন, মহিউদ্দিন রূপম, মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনার, রাফান আহমেদ, শিহাব আহমেদ তুহিনপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন315 ৳220 ৳আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, জনপ্রিয় ...
-
hotকষ্টিপাথর
লেখক : ডা. শামসুল আরেফীনপ্রকাশনী : মাকতাবাতুল আযহার360 ৳252 ৳আরবীতে একটা প্রবাদ আছে, كل شيء يرجع ...
-
সংশয়বাদী
লেখক : ড্যানিয়েল হাকিকাতজুপ্রকাশনী : ইলম হাউজ পাবলিকেশন260 ৳ড্যানিয়েল হাক্বিকাতযু। হালের একজন দা'ঈ ইলাল্লাহ। ...
-
hotহোমো স্যাপিয়েন্স রিটেলিং আওয়ার স্টোরি
লেখক : রাফান আহমেদপ্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন392 ৳286 ৳মোট পৃষ্ঠা : ১৮৪ (৪ কালার) কভার: ...
-
hotপ্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২
লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন390 ৳273 ৳ইসলাম কারও শত্রু হতে আসেনি। ইসলাম ...
-
Farhan Habib – :
abdur0rahman99 – :
.
▶সার-সংক্ষেপঃ-
“বাংলায় বাজে গির্জার বাশি” বইটি মূলত লেখক ওমর আলী আশরাফের একটি ব্যক্তিগত সফরনামা। বাংলার জমিনে খ্রিস্টানদের সূদুরপ্রসারী মিশন ও সবরকম অপকৌশল বিস্তারিত ফুটিয়ে তুলেছেন তার এই সফরনামায় । গুলো তুলে ধরতে গিয়ে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সফর করেছেন। তারই গ্রন্থবদ্ধ রুপ হলো “বাংলায় বাজে গির্জার বাশি”। সফরনামা হলেও বইটিকে লেখক ভাগে বিভিন্ন পর্বে ভাগ করেছেন। প্রতিটি পর্বে আবার ক,খ,গ,ঘ এভাবে বিভিন্ন অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে। যাতে পড়তে গিয়ে পাঠকের ক্লান্তিবোধ হবে না ।
,
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। আর এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কৌশলে এনজিও ও খ্রিষ্টান মিশনারীরা বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করছে। বিভিন্ন নামে স্কুল নির্মান করছে যেগুলোতে তাদের দেয়া নির্ধারিত বইগুলোই পড়ানো হচ্ছে। অভাবে পড়ে যারা চিকিৎসা নিতে পারছে না তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এভাবে মুসলমান থেকে খ্রিস্টান হয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। সর্বস্তরের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে খৃষ্টধর্মের ভয়ংকর থাবা। ওই সব অঞ্চল মুসলমান প্রধান হলেও একসময় খ্রিস্টানরাই হয়ে উঠছে সংখ্যাগরিষ্ঠ।
পার্বত্য অঞ্চলের সরলমনা মানুষগুলো অল্পতেই খ্রীষ্ট ধর্মের দিকে ধাবিত হচ্ছে এর অন্যতম কারন হলো তাদের কাছে ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান নেই। জ্ঞান না থাকার কারনে তাদেরকে যখন কয়েকজন মিলে বুঝানো শুরু করে তখন সে একসময় মনে করতে থাকে খ্রিস্টান ধর্মই বুঝি সত্য ধর্ম। তাদের কখনো এটাকে ঈসায়ী ধর্ম হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এভাবে লেখক তুলে এনেছেন তাদের খ্রিস্টান বানানোর সম্পর্কে ভয়াবহ সব তথ্য।
বইটি একটি সফরনামা হলেও বইয়ের পরতে পরতে উঠে এসেছে খ্রিস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতার কথা।বাংলাদেশ কে নিয়ে তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা। সেই সাথে লেখক তুলে ধরেছেন এসব অপতৎপরতা কে মুসলমান সমাজ কিভাবে রুখতে পারবে। সেক্ষেত্রে আমাদের ইমানের জোর বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। মুসলমানদের বুঝতে হবে সেসব অঞ্চলে দাওয়াতের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতার কথা।
.
▶ বইয়ের গুণগত মানঃ-
বইয়ের কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং যথেষ্ট ভালো। ভিতরের পৃষ্ঠাসজ্জা ও পেজ কোয়ালিটি উন্নত মানের। অভিজ্ঞ লেখক ওমর আশরাফের কলমের ছোয়ায় বইটি হয়েছে সহজ, সাবলীল ও প্রাণবন্ত। বিষয়সমূহের ধারা বর্ণনা, ভাষাশৈলী ও উপযুক্ত শব্দচয়ন বইটিকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। প্রচ্ছদশিল্পী আবুল ফাতাহ মুন্না এর দক্ষ হাতের ছোয়ায় বইয়ের প্রচ্ছদটিও হয়েছে আকর্ষণীয় ।
.
▶ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ-
বইয়ের কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ও ভিতরের পাতা মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর। দামের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। বইয়ের প্রতিটি পাতায় রয়েছে লেখকগণের কঠোর পরিশ্রমের ছোয়া।
বইটি পড়ার পর বুঝতে পেরেছি বর্তমান সমাজে মানুষকে খ্রিষ্টান বানানোর অপকৌশল আসলে অনেক ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মুসলিম দের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বইটি গল্পের ছলে সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে । বই এর ভাষাশৈলী ও শব্দচয়ন দেখে মনে হয় এ যেন একজন দক্ষ সাহিত্যিকের লেখা। এমন খুব কম বই আছে যার প্রতিটি বাক্য ভালো লাগার, প্রতিটি পাতায় মিশে থাকে জ্ঞানের ছোয়া ও শিক্ষণীয় মেসেজ ” বাংলায় বাজে গির্জার বাশি ” বইটি তার মধ্যে অন্যতম। বইটি প্রচলিত অন্য সব বই বইয়ের মত না। এর বাইরে এটি একটি দাওয়াতি বই। দ্বীনি দাওয়াতের সফরনামা।
তাই ইসলামী মনোভাবাপন্ন সকলের প্রতি অনুরোধ বইটি একবার হলেও পড়ুন আর খ্রিস্টানদের ভয়াবহ সব চক্রান্ত সম্পর্কে এখনই সচেতন হউন । কারন ধীরে ধীরে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভয়াবহ চক্রান্ত ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে । তাই একনই সচেতন হউন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর চেষ্টা করুন।
Rifat Hasan – :
আমরা মুসলিম জাতি। আমাদের প্রেরণের আছে এক মহান উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য আমরা আজ ভুলতে বসেছি। তাই যেই আমাদের হবার কথা ছিল পথভোলা মানুষের দাঈ, সেই আমরাই আজ বিধর্মীদের ‘মাদঊ’ তে রুপান্তরিত হয়েছি। নবীর উত্তরসূরী দাবি করে আমরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছি। নামাজ,রোজা করে কোনোমতে দিনকাল পার করেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছি।
অথচ উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম–সমগ্র বাংলাদেশে কুচক্রীদের অপতৎরতা বর্ণনাতীত বেড়ে চলেছে। আগামী পঞ্চাশ বছর পর আপনার-আমার ঘরে দু’একজন করে খৃষ্টান সদস্য থাকলে অস্বাভাবিক কিছুই হবে না। মিশনারী ও এনজিওদের কালো থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরলমনা মানুষগুলো। তারা কোনো সাতেপাঁচে নেই, সরল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। অতি লোভ নেই। অল্পে তুষ্টির গুণে তারা সবাই প্রশংসার দাবিদার। সেসব এলাকায় গাছের প্রতিটি পাতা থেকেও যেন দারিদ্রের গন্ধ আসে। পশ্চিমা শ্বেত ভল্লুকেরা তাদের এই দরিদ্রতা ও ভালোমানুষির সুযোগটাই নিচ্ছে।
তাদের ধর্মবিধ্বংসী এসব অসৎ কর্মকান্ডের ফিরিস্তি শুনলে আমাদের অন্তরগুলো কেঁদে উঠে। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। সেই রক্তক্ষরণ ও তার যন্ত্রণা কলমের অশ্রুতে রুপান্তরিত হয়ে অস্তিত্বে এসেছে ‘বাংলায় বাজে গির্জার বাঁশি’ বইটি। বইটি লিখেছেন উদ্যমী তরুণ আলিম ও দাঈ উমর আলী আশরাফ। (বারাকাল্লাহু ফী হায়াতিহী!) বইটিতে তিনি তার দাওয়াতী এবং ব্যক্তিগত সফরের বাস্তবচিত্র খুব দরদমাখা বর্ণনায় তুলে ধরেছেন।
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এবং বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি পেশ করে অন্য ধর্মগুলোর তথ্যবিকৃতি ও ধর্মবিকৃতির বর্ণনা তুলে ধরেছেন।তিনি যেমন মিশনারী ও এনজিওদের সমস্যা তুলে ধরেছেন, তা থেকে উত্তরণের পথও বাতলে দিয়েছেন। পরিস্কার করেছেন হিন্দুধর্মের অসারতা, উদ্ধৃতি দিয়েছেন ইসলাম সমর্থনে বিভিন্ন অমুসলিম স্কলারদের। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন এনজিওগুলোর নগ্নথাবার বাস্তবচিত্র।
খৃষ্টানদের সমস্ত অপকর্মের ফিরিস্তি টাঙিয়ে এ পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অগণিত গ্রন্থ রচিত হয়েছে। তবে এই বইটিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে খৃষ্টবাদ,পৌলবাদ,ইহুদি,হিন্দু,বৌদ্ধ, উপজাতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে কমবেশ আলোচনা হয়েছে।
বইটি আপনাদের বলবে–শ্বেত ভল্লুকেরা কীভাবে ধর্ম নিয়ে প্রতারণা করছে, অর্থের লোভ দেখিয়ে, দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে, নানান মিথ্যাচার ও অপকৌশলে আমাদের সরলমনা ভাই-বোনদের ঈমান নামক মহামূল্যবান সম্পদটি হাতিয়ে নিচ্ছে! কোমলমতি শিশুদের মনে শিক্ষার ছদ্মবরণে রোপণ করছে খৃস্টবাদের বীজ!
বইটিতে এমন এমন ভয়ানক সব তথ্যের উপস্থিতি আছে, যা ঈমানী নূরের মশালধারী তো দূর কী বাত–নিভু নিভু ঈমানের অধিকারী যে-কারো চোখের পানি ঝরাতে বাধ্য। লেখক সেসব অসহায় মানুষগুলোর ধর্মান্তরিত হবার কিছু যৌক্তিক কারণও তুলে ধরেছেন আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে–
মিশরনারীগুলো তাদের দূর্বল জায়গুলো নিয়ে খেলে। আবেগের মূলপয়েন্টগুলোতে ঢিল ছুড়ে। সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে দারিদ্রই সেসব অঞ্চলের নিত্য বন্ধু। তারা নিজেদের মুখে খাবার উঠাতে পারে না। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা সবকিছু থেকেই তারা বঞ্চিত। তাই এসবে যারা তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, পেটের দায়ে পড়ে বিনিময় স্বরূপ নিজের ঈমানটা তাদের হাতে দিয়ে আসে। দায়টা কার? খেতে না পাওয়া সেসব অক্ষরজ্ঞানহীন হতদরিদ্রদের নাকি আমাদের?
খৃষ্টানরা উড়ে এসে জুড়ে বসে কতকিছু করছে, আমরা ঘরের ছেলে ঘরে বসতে পারছি না! এ লজ্জা কোথায় রাখি? ঈমানের দূ্র্বলতা কীসে ঢাকি!
বইটা আপনাকে উম্মাহর দরদে কাঁদাবে, কাঁদতে বাধ্য করবে। যতই পাথরে গড়া কঠিন হোক আপনার মন, মনোযোগ দিয়ে বইটি পড়তে থাকলে সরলমনা মানুষগুলোকে জাহান্নামের পথে নিয়ে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনাগুলো আপনাকে কাঁদতে বাধ্য করবে। মুসলিম তাবলীগ জামাত পেয়ে তাদের অসহায়ভঙ্গিতে বলা আবেগমাখা কথাগুলো আপনাকে শিহরিত করবে। শরীরের লোমগুলো দাড়িয়ে যাবে। বাকরুদ্ধ হবেন আপনি। আহ! আমরা কতই না সুখে আছি।
বইটা আপনাকে বিবেকের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে দেবে–
এখনো এরশাদকে প্রধানমন্ত্রী মনে করা ও শেখ মুজিবকে নবী মনে করা অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষগুলো এসব অতিভক্তি থেকে করছে বলে আপনার মনে হয়? তাদের কানে এরশাদের পরের আর কারো নামই পৌছেনি। আর নবী বলতে তারা বুঝে কেবল মহাপুরুষ জাতীয় কাউকে। সে হিসেবে তারা শেখ মুজিবেরই নাম শুনে এসেছে। এসবের দায় কার? তাদের নাকি আমাদের? যেসব আত্মোৎসর্গকারী দাঈ ঘুরে বেড়াচ্ছেন এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে, শ্বেত ভল্লুকেরা তাদের বিরূদ্ধেও ঠুকে দিচ্ছে নানা মিথ্যা মামলা। নিজেদের ঘরে নিজেরাই মুখ ফুটে কথা বলতে পারি না!
লেখক নিঃসংকোচে বলে গেছেন আমাদের অবহেলার কথা। নির্দ্বিধায় তুলে ধরেছেন রাস্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাগত দূর্বলতা ও দূর্নীতির কথা। সাহসভরা বুকে লিখে গেছেন সেসব এলাকার একসময়ের ভাড়াটে উপজাতিগুলোর দেশদ্রোহী কার্যকলাপের কথা। ইংরেজরা ঠোঙাভর্তি জোঁক এনে সারাবাড়িতে ছিটিয়ে দেওয়ার মতো করে শত শত পাদরি এনে ছড়িয়ে দিয়েছিল এদেশে। জোঁক যেমন রক্ত চুষে, তেমনি এরা চুষে বেড়াচ্ছে মানুষের ঈমান ও বিশ্বাস।
বইটি আপনাকে জানাবে ধর্মপ্রচারের স্বার্থে তারা কী পরিমাণে আত্মত্যাগ করে যাচ্ছে–সেসব কথা। আহ! বিবেকের বন্ধ দুয়ারে খটখট আওয়াজ করে যায় কথাগুলো! ওরা ধর্মান্তরের স্বার্থে বর্ণাতীত কষ্ট করে যাচ্ছে, স্বদেশ ছেড়ে-আরাম আয়েশ ছেড়ে সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে পড়ে আছে, অথচ আমরা!
বইটি আপনাকে জানাবে ব্যক্তির পার্থক্যে দাওয়াতের পার্থক্যের হিকমাহপূর্ণ পদ্ধতি। দেখাবে এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের ধর্মপ্রাণ থাকার কিছু হৃদয়স্পর্শী চিত্র। বলবে তাদের অজ্ঞাতসারে আকীদার ভয়ংকর সব বিভ্রান্তির কথা। কাঁদাবে আপনাকে সেসব এলাকার মানুষের ধর্মশূণ্যতার ভয়াবহতা।
‘আমরা গরীব বলে কী আমাদের ঈমানের মূল্য নেই! অপারগ হয়ে আমাদের ঈমানগুলো তুলে দিতে হয় শ্বেত ভল্লুকদের হাতে।
-হুজুর! আমাদের কাদের হাতে রেখে যাচ্ছেন? আপনারা চলে গেলে আমাদের ঈমানের কী হবে হুজুর! আমাদের উদ্ধার করেন হুজুর! আমরাও তো মুসলমান!’ বইয়ের পরতে পরতে উল্লেখিত তাদের এসব কান্নামাখা কথাগুলো আপনাকে আমাকে গলাছেড়ে কান্না করতে সাহায্য করবে। ছলে,বলে কৌশলে কীভাবে টেনে হেচড়ে জাহান্নামে নিয়ে যাচ্ছে আমার-ই ভাইবোনদের! আহ!
দাওয়াতী সফরের ফাকে ফাকে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন সেসব এলাকার সাদামাটা গ্রামীনচিত্র। তুলে ধরেছেন সেসব এলাকার ভয়াবহ দারিদ্রের কথা।
নিজের অভিজ্ঞতা ও পত্রিকার বিভিন্ন রেফারেন্স বইটির গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া শুরুতে যুক্ত করা হয়েছে আমাদের সকলের সুপরিচিত উম্মাহর দরদি দাঈ মুফতি যুবায়ের আহমদ দা. বা. এর গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা।
বইটি আপনাকে জানাবে বিভিন্ন সময়ের জরিপে উঠে আসা নানা পরিসংখ্যান। আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিবে এমন সব অঞ্চলের সাথে, যেখানে মানুষ মুসলমান হয়েও শ্বেতভল্লুকদের ভয়ে সেই পরিচয়টুকু দেবার সাহস করে না। জ্বী! অঞ্চলগুলো এদেশের বাহিরের নয়, ৯০% মুসলমানের এই বাংলাদেশেই। আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবে এমন এক বাহিনীর সাথে, যারা শান্তিবাহিনী নামে নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকে। ভিনদেশী হয়েও তারা এতটা ক্ষমতাধর যে, আমাদের সবচে শক্তিশালী সেনাবাহিনীও তাদের ভয়ে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না। ভাবছেন, ভুলে অন্য কোনো দেশের খবর লেখক এখানে লিখে দিয়েছে? না, এটি আমাদের সোনার বাংলারই কথা।
ভাবছেন, আমরা কী এতটা কষ্ট করতে পারব? আমাদের দিয়ে এসব হবে? বইটি পড়েই দেখুন! বইটি কোনো কাল্পনিক উপন্যাস নয়। লেখকের নিজেরই দাওয়াতী সফরনামা বইটি। লম্বা বৃন্তের কচকচে পান মুখে পুরে আমরা যখন তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলছি; আমরা তো নিয়মিত আজান দিয়ে নামাজ পড়তে পারছি, আর কী চাই? ঠিক সেই মুহুর্তে গুটিকতক উম্মাহদরদী দাঈ ঘুরে বেড়াচ্ছেন বনে জঙ্গলে, মানুষের দ্বারে দ্বারে,বারে বারে। তেমনি এক দাওয়াতী সফরনামা নিয়ে লেখা বইটি।
বাদামি রঙের প্রচ্ছদ। এর উপরে কালো রঙে আকা প্রিয় বাংলার অর্ধেকটা মানচিত্র। শ্বেতভল্লুকদের হীনচক্রান্ত চলছে এই অর্ধেকটা নিয়েই। কালো মানচিত্রটা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে লাল রঙের ক্রুশচিহ্ন। সব মিলিয়ে প্রচ্ছদ প্রশংসার দাবিদার। পুরো বইয়ের বিষয়বস্তু খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে প্রচ্ছদে। গুণগত মানও বেশ উন্নত। হার্ড কভার, মজবুত বাইন্ডিং, ভালোমানের পৃষ্ঠাসজ্জা ও ভেতররে পাতা সমালোচকদের মুখ খোলার সুযোগটুকু রাখেনি।
বইটি এক,দুই,তিন,চার,পাঁচ করে পাঁচটি পর্বে ভাগ করা। আর প্রতিটি পর্ব ক,খ,গ,ঘ….. পরিচ্ছেদে অভিনব এক পদ্ধতিতে সেজেছে। তাই পড়তে গিয়ে ক্লান্তিভাব আসবে না। বিরক্তি আসবে না। বইয়ের পরতে পরতে যেসব হৃদয়স্পর্ষী আলোচনা উঠে এসেছে, এগুলো পাঠককে ‘ক্লান্তি-বিরক্তি-বিশ্রাম’ এসব কথাই ভুলিয়ে দিবে। আমি এক বসায় দীর্ঘ সময় নিয়ে টানা পড়ে শেষ করেছি। এক বসায় পড়ার মতো বই-ই এটি। পড়তে পড়তে আলোচিত দৃশ্যগুলো আপনার চোখেও ভাসবে। আপনি জাগবেন। ভাববেন। কাঁদবেন। নিজেরও কিছু করা দরকার বলে প্রস্তুতি নিবেন।
বুলি কপচানো না, পড়লে আপনাতেই খুব গভীরভাবে টের পাবেন। আপনার চোখ খুলে দেবার জন্যই বইটি।
আব্দুর রহমান – :
.
সার-সংক্ষেপঃ-
“বাংলায় বাজে গির্জার বাশি” বইটি মূলত লেখক ওমর আলী আশরাফের একটি ব্যক্তিগত সফরনামা। বাংলার জমিনে খ্রিস্টানদের সূদুরপ্রসারী মিশন ও সবরকম অপকৌশল বিস্তারিত ফুটিয়ে তুলেছেন তার এই সফরনামায় । গুলো তুলে ধরতে গিয়ে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সফর করেছেন। তারই গ্রন্থবদ্ধ রুপ হলো “বাংলায় বাজে গির্জার বাশি”। সফরনামা হলেও বইটিকে লেখক ভাগে বিভিন্ন পর্বে ভাগ করেছেন। প্রতিটি পর্বে আবার ক,খ,গ,ঘ এভাবে বিভিন্ন অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে। যাতে পড়তে গিয়ে পাঠকের ক্লান্তিবোধ হবে না ।
,
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। আর এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কৌশলে এনজিও ও খ্রিষ্টান মিশনারীরা বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করছে। বিভিন্ন নামে স্কুল নির্মান করছে যেগুলোতে তাদের দেয়া নির্ধারিত বইগুলোই পড়ানো হচ্ছে। অভাবে পড়ে যারা চিকিৎসা নিতে পারছে না তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এভাবে মুসলমান থেকে খ্রিস্টান হয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। সর্বস্তরের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে খৃষ্টধর্মের ভয়ংকর থাবা। ওই সব অঞ্চল মুসলমান প্রধান হলেও একসময় খ্রিস্টানরাই হয়ে উঠছে সংখ্যাগরিষ্ঠ।
পার্বত্য অঞ্চলের সরলমনা মানুষগুলো অল্পতেই খ্রীষ্ট ধর্মের দিকে ধাবিত হচ্ছে এর অন্যতম কারন হলো তাদের কাছে ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান নেই। জ্ঞান না থাকার কারনে তাদেরকে যখন কয়েকজন মিলে বুঝানো শুরু করে তখন সে একসময় মনে করতে থাকে খ্রিস্টান ধর্মই বুঝি সত্য ধর্ম। তাদের কখনো এটাকে ঈসায়ী ধর্ম হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এভাবে লেখক তুলে এনেছেন তাদের খ্রিস্টান বানানোর সম্পর্কে ভয়াবহ সব তথ্য।
বইটি একটি সফরনামা হলেও বইয়ের পরতে পরতে উঠে এসেছে খ্রিস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতার কথা।বাংলাদেশ কে নিয়ে তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা। সেই সাথে লেখক তুলে ধরেছেন এসব অপতৎপরতা কে মুসলমান সমাজ কিভাবে রুখতে পারবে। সেক্ষেত্রে আমাদের ইমানের জোর বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। মুসলমানদের বুঝতে হবে সেসব অঞ্চলে দাওয়াতের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতার কথা।
.
বইয়ের গুণগত মানঃ-
বইয়ের কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং যথেষ্ট ভালো। ভিতরের পৃষ্ঠাসজ্জা ও পেজ কোয়ালিটি উন্নত মানের। অভিজ্ঞ লেখক ওমর আশরাফের কলমের ছোয়ায় বইটি হয়েছে সহজ, সাবলীল ও প্রাণবন্ত। বিষয়সমূহের ধারা বর্ণনা, ভাষাশৈলী ও উপযুক্ত শব্দচয়ন বইটিকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। প্রচ্ছদশিল্পী আবুল ফাতাহ মুন্না এর দক্ষ হাতের ছোয়ায় বইয়ের প্রচ্ছদটিও হয়েছে আকর্ষণীয় ।
.
ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ-
বইয়ের কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ও ভিতরের পাতা মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর। দামের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। বইয়ের প্রতিটি পাতায় রয়েছে লেখকগণের কঠোর পরিশ্রমের ছোয়া।
বইটি পড়ার পর বুঝতে পেরেছি বর্তমান সমাজে মানুষকে খ্রিষ্টান বানানোর অপকৌশল আসলে অনেক ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মুসলিম দের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বইটি গল্পের ছলে সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে । বই এর ভাষাশৈলী ও শব্দচয়ন দেখে মনে হয় এ যেন একজন দক্ষ সাহিত্যিকের লেখা। এমন খুব কম বই আছে যার প্রতিটি বাক্য ভালো লাগার, প্রতিটি পাতায় মিশে থাকে জ্ঞানের ছোয়া ও শিক্ষণীয় মেসেজ ” বাংলায় বাজে গির্জার বাশি ” বইটি তার মধ্যে অন্যতম। বইটি প্রচলিত অন্য সব বই বইয়ের মত না। এর বাইরে এটি একটি দাওয়াতি বই। দ্বীনি দাওয়াতের সফরনামা।
তাই ইসলামী মনোভাবাপন্ন সকলের প্রতি অনুরোধ বইটি একবার হলেও পড়ুন আর খ্রিস্টানদের ভয়াবহ সব চক্রান্ত সম্পর্কে এখনই সচেতন হউন । কারন ধীরে ধীরে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভয়াবহ চক্রান্ত ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে । তাই একনই সচেতন হউন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর চেষ্টা করুন।
.
শাহরিয়ার হাসান – :