18 রিভিউ এবং রেটিং - বিয়ে স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর
Showing 5 of 18 reviews (4 star). See all 18 reviews
বিয়ের মতো অনবদ্য একটি আশীর্বাদ দুঃসহ অভিশাপে পরিণত হতে পারে যদি বিয়ের আগের ও পরের কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করা না হয়। কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী সাজানো দাম্পত্য জীবন শুধু স্বামী-স্ত্রী উপরই নয় বরং গোটা সমাজের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ বয়ে আনে। বিয়েকে পার্থিব জীবনের সুখ ও পরিপূর্ণতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার ক্ষেত্রে প্রধান বিষয়গুলো এই বইয়ে আলোচিত হয়েছে। একজন আন্তরিক পাঠক বইটি থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করলে সুখী ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনে সক্ষম হবেন, ইন-শা আল্লাহ।
Out of stock
মারুফ আহমেদ – :
মারিয়াম বিনতে ইউনুস – :
বিয়ে নিয়ে আমরা কল্পনা করতে ভালবাসি, কত শত স্বপ্ন দেখি এই বিয়েকে ঘিরে। আর তার সবটাই রোমাঞ্চকর, আনন্দের। বিয়ে স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর বইটি আমাদের সেই কল্পনার সাথে বাস্তবতাকেও চিন্তা করতে শেখায়। বইটিতে বার বার বলা হয়েছে আপনি বিবাহিত জীবনের দায়িত্ব কর্তব্য পালনের উপযুক্ত না হলে দয়া করে বিয়ে করবেন না। একথাও বলা হয়েছে জোরের সাথে ভালবাসা আগে নয় বরং সত্য বলা + পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ + যত্ন নেওয়া = ভালবাসা। যে দাম্পত্য জীবনে যত বেশি এই তিনটি বিষয় উপস্থিত থাকবে তাদের মধ্যে ভালবাসাও তত বেশি থাকবে। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল এই ভালবাসার চক্রবৃদ্ধি।
যাইহোক, বিবাহিত ও অবিবাহিত সবার জন্য বইটি খুবই উপকারী হবে ইং শা আল্লাহ। আর অবশ্যই বইটি কেউ একবার পড়বেন না। নিজের সংগ্রহে রেখে বার বার পড়বেন রিমাইন্ডার হিসেবে।
জাজাকুমুল্লাহ।
মোঃ মাহমুদ হোসেন – :
sadakalo.shopnoo – :
মির্জা ইয়াওয়ার বেইগের জন্ম প্রাচ্যে হলেও জীবনের বড় অংশ কাটিয়েছেন পশ্চিমে। কর্পোরেট জগত থেকে শুরু করে ইসলামের আলোকিত জীবনের সবদিকেই তার সমান দক্ষতা। জীবনের উদ্ভূত সমস্যাগুলো তিনি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধান করে থাকেন।
পূর্ব কথনঃ
একটু সুস্থ সুন্দর সমাজের ভিত্তি হলো পারিবারিক ব্যবস্থা আর পারিবারিক জীবনের ভিত্তি হলো একটি সুস্থ দাম্পত্য জীবন। অথচ আজ বিশ্বে এমনকি বাংলাদেশেও ডিভোর্সের সংখ্যা মাত্রারিক্তভাবে বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পর পারিবার শব্দটিী হয়তো হারিয়ে যাবে।
বই কথনঃ
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, ” তাঁর নির্দেশসমূহের মধ্যে একটি এই যে, তিনি যে তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের পেয়ে পরিতৃপ্ত হও। তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পারিক প্রেম-ভালোবাসা ও মমত্ববোধ সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন রয়েছে।”
এখানে বিয়ের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে আল্লাহ তায়ালা সুকুন বা প্রশান্তি কথা বলেছেন। জীবনের প্রতিটি কাজে স্বামী-স্ত্রী যাতে একে অপরের জন্য প্রসান্তির কারণ হয়। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হলো আল-মাওয়াদ্দাহ, মানে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি শরীর ও মনের আকর্ষণ অনুভব করবে। আর শেষ উদ্দেশ্য হলো রাহমাহ, মানে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি দয়া, মমতা অনুধাবন করবে।
বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু বিষয়ঃ
১. ইসলামঃ রাসুল (স.) যে চারটি বিষয় দেখে বিয়ে করতে বলেছেন তাঁর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দীনদারি, অর্থাৎ নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ঠিকভাবে পালন করে কিনা।
২. প্রেমে পড়ার কথা ভুলে যান, পড়ে যাওয়া কখনোই ভালো নয়।
৩. ছেলে/মেয়ের আচার-আচারন কেমন টা আগে লক্ষ্য করুন।
৪. তার কথোপকথন খেয়াল করুন, আজগুবি কথাবার্তা বললে সেই প্রস্তাব থেকে বিরত থাকুন।
৫. দুজনের জীবনের কিছু অভিন্ন লক্ষ্য ঠিক করুন, যেটা আপনারা দুজনই পছন্দ করেন এমন কিছু।
৬. পারিবারিক আকিদা কেমন লক্ষ্য করুন, ভিন্ন আকিদার হলে সেই প্রস্তাব থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
বিবাহিত জীবনকে সুখী করার উপায়ঃ
১. সত্য কথা বলা, যত্ন নেওয়া, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ থাকলে বাকি সব এভাবেই চলে আসবে।
২. এমন কাউকে বিয়ে করুন যাকে অনুকরণ করতে ইচ্ছে হয়, যাকে শ্রদ্ধা করা যায়, যার কাছে ক্ষমা করা শিখা যায়। এমন কাউকে বিয়ে করবেন না যাকে আপনি বদলে ফেলতে পারবেন বলে মনে করছেন।
৩. কাজ করে যান, এভাবেই সফলতা আসবে। এর জন্য দরকার উদ্যোগ, সময়, ও শক্তি।
৪. অনুরাগ প্রকাশে পাগলামি করুনঃ
শুধু উপলক্ষ কেন্দ্র করে নয় যখন সম্ভব দুইজন দুইজনকে কিছু উপহার দিন। রাসূল (স.) বলেছনে তোমরা উপহার দাও কারণ টা পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা বাড়িয়ে দিবে।
৫. একসঙ্গে আনন্দ উপভোগ করাঃ
খেলাধূলা, বিনোদন, ঘুরতে যাওয়া, একসঙ্গে উপভোগ করার চেষ্টা করুন।
৬. অসুখী দাম্পত্য জীবনে কীভাবে সুখ ফিরিয়ে আনা যায়?
আগে ঠিক করুন আপনি কি সত্যি চান দাম্পত্য জীবন সুখের হোক? তাহলে চেষ্টা করে যান…
৭. দাম্পত্য জীবনে বাবা-মা ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের জড়ালে ঝামেলা বেড়ে যায়, এসব করা থেকে বিরত থাকুন।
৮. সাংসারিক জীবনে সবকিছুতেই মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন।
৯. একটু সংসারে স্বামীর দায়িত্ব উপার্জন করা আর স্ত্রীর দায়িত্ব সন্তান লালনপালনে খেয়াল রাখা, ঘরকে সুখের নীড়ে পরিণত করা।
১০. বর্তমান জীবনব্যবস্থায় ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার, তিভি সিরিয়াল দাম্পত্য জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। ইন্তারনেত/ফেসবুক থেকে পাত্রপাত্রী নির্বাচন কতটা ফলপ্রসূ হবে একবার ভেবে দেখুন।
১১. দাম্পত্য জীবনে কোন সমস্যায় পরলে দুইজনই যাকে শ্রদ্ধা করেন এমন কাউকে বেছে নিয়ে তার সাথে কথা বলুন।
এছাড়াও বইটিতে আরও বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। বাকি টুকু জানতে পড়তে হবে বইটি।
বইটির যা ভালো লেগেছেঃ
বইটিতে স্বল্প পরিসরে বেশ গুছিয়ে দাম্পত্য জীবনের পূর্বে পাত্র/পাত্রী কিভাবে বাছাই করা দরকার ও দাম্পত্য জীবনকে কিভাবে সুখী করা যায় তা সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। বানান ভুল নেই বললেই চলে। পেইজ, বাইন্ডিং, প্রচ্ছদ অসাধারণ।
বইটির যা খারাপ লেগেছেঃ
বইটির পেইজ সংখ্যা মাত্র ৬২। অনেক কিছু আরো সংযুক্ত করা যেতো। কিছু কিছু বিবরণ আরো বড় করা যেতো। বইটিতে তেমন
কোন রেফারেন্স এড করা হয়নি।
শেষ কথাঃ
একটি সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্য প্রয়োজন দুইজনের প্রতি
দুইজনের কৃতজ্ঞতাবোধ ও খারাপ স্মৃতি ভুলে যাওয়া। অথচ অধিকাংশ মানুষ উল্টাটা করে। দুইজন মিলে একটি ভাষা তৈরি করে ফেলতে পারেন যেটা মুখের না হয়ে হবে চোখের, হৃদয়ের ভাষা। না বলতেই যেন অন্যজন বুঝতে পারে কি বলতে চাচ্ছেন।
মফিজুর রহমান – :